সাধারণ বাঙালির জীবনে আজগুবি ঘটনার সূত্রপাত গল্পকথা মারফত— শহুরে তো বটেই, মফসসলেও নবজাগরণের খোঁচা খেয়ে জেগে ওঠা মধ্যবিত্তের শৈশবে যেহেতু ‘ঠাকু’মার ঝুলি’ বেশ জনপ্রিয়, তারা রাক্ষস এবং এমনকী, খোক্কসেও ভয় পেয়েছে, ভূতের সঙ্গে তো বলতে নেই, রোজকার ওঠাবসা। পরে সোভিয়েত প্রকাশনা সংস্থা প্রায় বিনেপয়সায় রূপকথার বই জোগাতে লাগল, এবং ইউক্রেন থেকে সমগ্র ‘রুশ দেশ’ অবধি সবটা গোগ্রাসে গেলার বন্দোবস্ত হল নিমেষে।
যাদের সেই সাহিত্য-জগতের সঙ্গে মেলামেশা ছিল খানিকটা, তারা বেশ জানেন যে, বিপ্লবোত্তর রাষ্ট্রের খেটে খাওয়া জনগণের চিরায়ত ঐতিহ্য-মোতাবেক বাবা ইয়াগার লগে পরিচয় থাকাটা বাস্তবিকই জরুরি, তবে মুরগির ঠ্যাং-ওলা কুঁড়ের মালিকানা লেনিন, স্তালিনরা কখনওই দাবি করেননি। সিভকা বুরকার পক্ষীরাজ আধুনিক সুখোইয়ের পূর্বসূরি নয়, এবং উড়ন্ত চুল্লিকে হেলিকপ্টার প্রমাণের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার অভাব গ্রিক অর্থোডক্স চার্চের কুসংস্কারে নিমজ্জিত পাদ্রিদের মধ্যেও লক্ষিত হয়েছে। সামাজিক পালাবদলের কয়েকটি সুফল সম্পর্কে বক্তৃতার প্রয়োজন হল না নয়ের দশক অবধি।
আরও পড়ুন : কলকাতা দখলের ইতিহাসে মিশে গেল ব্রিটিশ থেকে বাংলাদেশ!
লিখছেন অমিতাভ মালাকার…
এদেশে অন্যরকম বদলের প্রক্রিয়াগুলিকে ত্বরান্বিত করার জন্য ভৌতবিজ্ঞানীরা ভূত-প্রেতের আবিষ্কারে মন দিলেন। রাবণের রথটি যে আদতে হেলিকপ্টার, তা হিন্দুত্ববাদীদের অস্তিত্ব সম্পর্কিত বুনিয়াদি ধারণার চিকনতর ‘টিক্কা মসালা’-য় পরিণত হল— গেঁজেলরা যে টিকের ব্যবহারে মাহির, এটি সেরকমই ধোঁয়াশাপূর্ণ ধাপ্পাবাজির নামান্তর। যদ্দুর মনে পড়ছে, আনন্দ পট্টবর্ধনের ছবিতে যে নিরন্ন, নিরাশ্রয় বুড়ি রূপ কানোয়ারের সতীদাহর ‘ফটোগ্রাফ’ বিক্রি করছিলেন, তার বক্তব্যের সারাৎসার— ‘ওই দেখো, সতী মা আকাশ থেকে আলোর ফোকাস মেরে আশীর্বাদ বর্ষণ করছেন।’ তাদের সঙ্গে নয়ের দশকেই একই ফুটপাথে বামুনের ছেলেদের জুতো পালিশ-বাবদ সংরক্ষণের বিরোধিতার কোনও পার্থক্য নেই।
উচ্চবর্ণের ইসপেশাল ঈশ্বর-প্রদত্ত ক্ষমতার ধারণাটি কম আজগুবি, এমনটা মেনে নিতে অসুবিধে হয় বিলকুল। তবু, এই গল্প ছাড়া ‘শ্রাদ্ধে’ বামুনদের এবং সন্তোষী মাতার সন্তোষ বিধানে গরুকে ছোলা খাওয়ানো, পাঁচ সিকে দক্ষিণা (গরুকে নয়, বামুনকে), গুরুবাড়ির কচি ছেলেদের পায়ে হাত দিয়ে, বা ‘মুচি মেথর আমার ভাই’ টাইপের হলে খানিকটা তফাত থেকে, বুড়োদের প্রণিপাতের সঙ্গে রামমন্দিরে দলিতদের ঢুকতে না দেওয়ার হিন্দুত্ববাদী ই-ইজিকাল্টু বিজ্ঞান-চেতনায় এমসিস্কোয়ার যুক্তির নিবিড় যোগটি পোষ্কার হয় না।
বাঙালির জীবনে ‘অধরা মাধুরী’-র গুরুত্ব অসীম। ছেলেবেলায় পাড়াতুতো দিদিকে ভূতে পেল, বেবাক জনগণ চান করে চুল আঁচড়ে ভাত খেয়ে মুখে পান ঠুসে ঝেঁটিয়ে গেলাম দেখতে। নর্মাল সবকিছুই, তবে খাটে এমনভাবে ছটফট করছিল যে, কী বলব, হেলেন দু’পায়ে নেচে যা পারে না, ও শুয়ে তার ডাবল করে দিল— অতএব, সেই সরল নবপ্রস্ফুটিত কৈশোরেই ঠিক করেছিলাম, ভূতে-পাওয়া মাগি ছাড়া বে করব না। যাক, সে বিষাদময় কৈশোরের কথা বাদ দি’, রবিবাবু তো কবেই লিখে গেছেন, ‘কিছুই তো হল না।’ তবে ওঝা এল। রেলের পয়েন্টসম্যান বা ওইরকম পদে খোদায় মালুম কেন ওই বৃদ্ধ বয়সেও বহাল মালটা, চোলাই গিলে ফি হাটবারে হেব্বি বাওয়াল দিত। একটা দুধের কৌটোয় সবরকমের মাংস ভরে বাড়ি ফিরত সন্ধের আগে, গভীর রাত অবধি ওর গানের আওয়াজে আমাদের ছোট্ট তরাইয়ের জনপদটি তটস্থ থাকত। এই দিন দেখলাম লাল ধুতি, লাল চাদর এবং দশ-বারোটা মালা পড়েছে। গলায় পৈতে, পায়ে খড়ম, মাথার ঝাঁকড়া চুল চুড়ো করে বাঁধা— যারা রাস্তায় দেখলে ইসে-টিসে বলে গাল দিত, আজ তারা বাবা বলছে, পিঁড়ি এগিয়ে দিচ্ছে, সিএসডি ক্যান্টিনের সস্তা রামের বোতল এগিয়ে ধরছে। এলাহি কারবার। সবটা মনে নেই, তবে ধোঁয়া-ধুনো-ধূপের ঝামেলা মিটলে দেখা গেল, উঠোনের একপাশ থেকে মাচার বড় লাউটা হাওয়া। দিদি হপ্তাখানেক পরে ডিসপেনসারির ছোকরা হেল্পারের সঙ্গে পালাল– কাকিমার যেটুকু গয়না ছিল, তাও শুনলাম ভ্যানিশ। পাড়াময় ফিশফাশ, ‘কেটে নেওয়া লাউয়ের বোঁটা বেয়ে রক্ত গড়িয়ে পরছিলো।’ বুড়োরা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললে, ‘কিছু একটা আছে।’ ব্লাডি ভ্যানিশিং লাউ এবং জাইরেটিং দিদি বাঙালির ‘অধরা মাধুরী’— এনআরআই-রা বিদেশে নরেন্দ্র মোদির বক্তৃতা শুনে বুঝেছে, চোলি কে পিছে কেয়া হ্যায়, বাকিদের জীবনে পাশের বাড়ির বউদির ইসেদুটো ছাড়াও মরণোত্তর স্বর্গবাসের কালে ফিরিতে বিলোনো লাড্ডুর সাইজও বড় এবং ‘কিছু একটা তো আছেই, নাহলে অমন…!’
আছে সেটা গত পঞ্চাশ বছর যাবৎ আমজনতার বিশ্বাস, তবে খুব নাকি ‘ডিপ’ বিষয়, সকলের বোঝার উপায় নেই। না-হলে ছেলেবেলা থেকে স্টেশনে চা বেচার মাঝে পঁয়তিরিশ বছর ভিক্ষান্ন গিলে হিন্দি সাহিত্যের এরোডাইনামিক্সিতে এমএ পাশ হয়? অসাম-ভাও! অবিশ্যি যে মানুষের পেটে জন্মিয়েও জন্মায়নি, এবং ডাইরেক্ট ভগবানের সঙ্গে রিলেশন, সে যখন চারশো টাকার গ্যাস সিলিন্ডার এগারোশোয় পৌঁছে দেয়, তখন চাচ্চুজান যে আলাদা কিসিমের চিড়িয়া, সে তো বলাই বাহুল্য। তার ওপর বিশ্বগুরু টাকার দাম মিট্টি মেঁ মিলায়কর, চাকরির বাজারকে কফিনে পুরে, শিক্ষাব্যবস্থাকে ডকে তুলে, জাতপাতের ভিত্তিতে দেশকে টুকরো করে রাষ্ট্রকে ক্রমশ এগিয়ে নিয়ে চলেছে। নতুন পাল্লামেন্টের ছাদ দিয়ে জল পড়ে, নয়তো চিন-ফিন থরহরি কম্পমান। আমেরিকা তো রোজ অর্ণব গোসওয়ামিকে বলে, ‘দেখ ভাই, আমাদের মাল ফাল তোদের কনট পেলেস, পালিকা বাজারে বেচার ব্যবস্থা করে দে না— ঠোমারও ঠাকিবে ঠুফাইস।’ অর্ণব ঠুফাইস নেয় না বলিয়াই হামাডের ব্যবসার বাজারে এহেন মন্ডা ড্যাখা ডিয়াছে, টবে সট্টের জয়ও চলিটেছে। ওরা তো ইলন মাস্ক থেকে ট্রাম্প অবধি সকলকে কুম্ভমেলায় ন্যাকেড করে স্নান অবধি করিয়ে দিল। এরপরেও হিন্দু খতরে মেঁ। গান্ধী, ইন্দিরা, রাজীব কাউকে মুসলমান খুন করেনি, তবু খতরা। দেশে সাড়ে সাত কোটি বাচ্চা স্কুলে যায় না, কেবল উত্তর প্রদেশেই সাতাশ হাজার সরকারি স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, হিন্দুর খতরা তো বটেই, তবে অন্য কারণে— স্মৃতি ইরানি টের পেয়েছে ভালরকম, এবং সীতারমণের হাড় মুড়মুড়ি বেরামের ওষুধও আছে জনগণের ডিসপেনসারিতে। সেই কারণেই এবারের কুম্ভে ইসপেশাল ভোগের ব্যবস্থা, এক পুলিশ-কর্মী বেলচায় মাটি বালি তুলে গরিবের জন্য রান্না খিচুড়ির ডেগচিতে মিশিয়ে দিল, কারা যেন পাথড় চিবিয়ে খেত শরীর-মন গঠনের কালে! যোগীভাই সে ব্যবস্থাই করেছে। বাকিরা পদপিষ্ট হয়ে সোজা বেম্মোলোকে পাড়ি দিয়েছে… বাগেশ্বরটা কেবল পড়ে রইল। দুখ্যু হয়।
তবে যে বিষয়ে কোনও সন্দেহই নেই তা হল, রামায়ণের বাকি সমস্তটা কল্পনা হলেও, লঙ্কা পৌঁছনোর সেতু হনুমান, জাম্বুবান ইত্যাদি বাঁদরের বানানো। সম্প্রতি বিহারে একের পর এক ব্রিজ ভেঙে পড়া থেকেই পরিষ্কার যে বাঁদরামো ছাড়া ওই স্পেস টেকনোলজির মালের ডিজাইন সম্ভব নয়।
মিথ্যে ইতিহাস শিখে ফেললে জাতির মেরুদণ্ড বেঁকে যাবে বলেই উত্তর ভারত জুড়ে ইতিহাসের বইয়ে কাঁচি চলছে দেদার— কর্তনের সেলিব্রেশনই বলা যায় একরকম। ছেলেপিলেদের মোগল সাম্রাজ্যের পতন, নিউট্রন, ইলেকট্রন কিছুই আর পড়তে হবে না। কোনও মোগল সাম্রাজ্যই ছিল না। তাজমহল আসলে তেজো মহাদেবের মন্দির, কুতুব মিনার শিবের লিঙ্গুপিঙ্গু, এবং ‘লালকিলা’-র নাম কিছুদিনের মধ্যেই ‘নন্দলাল কিলা’ রাখা হবেন, ওখানে কিচনোঠাকুর মাকোম ঝেরে খেতেন। তবে স্বাধীনতা আন্দোলনে সংঘ পরিবারের আত্মত্যাগের গল্পগুলো শুনলে লোম দাঁড়িয়ে শার্ট উঁচু হয়ে যায়। বিশেষ করে, যেবার সাভারকার ইংরেজদের পা ধরে বলেছিল, ‘দয়া করে ছেড়ে দিন ছ্যার, নইলে টান মেরে ছিলিপ খাইয়ে মেঝেয় ফেলে দোবো, খুব নাগবে।’ এরকম রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের নিদর্শন… জিয়া ও, জিয়া ও জিয়া কুছ বোল দো!
তবে যে বিষয়ে কোনও সন্দেহই নেই তা হল, রামায়ণের বাকি সমস্তটা কল্পনা হলেও, লঙ্কা পৌঁছনোর সেতু হনুমান, জাম্বুবান ইত্যাদি বাঁদরের বানানো। সম্প্রতি বিহারে একের পর এক ব্রিজ ভেঙে পড়া থেকেই পরিষ্কার যে বাঁদরামো ছাড়া ওই স্পেস টেকনোলজির মালের ডিজাইন সম্ভব নয়। মোদি-নীতিশ একেবারে আশা পারেখ-শাম্মি কাপুর নাচানিয়া জুটি— ‘পেয়ার চুলবুলা হ্যায়, হাসিনা দিলরুবা হ্যায়, ঝুট বোলতা হ্যায়, মগর জ়রা জ়রা… তো বোলো জী, ফির কেয়া করে দিবানা?’ দেখুন মশাই, পেয়ার যে চুলবুলা, সে তো ক্ষমতায় টিকে থাকার সমর্থন জোগানো থেকেই পরিষ্কার। তাছাড়া হাসিনা (বিহারের, বাংলাদেশেরটা নয়) তখনই চুলবুলা যখন সে অকপটে চাড্ডি মিথ্যে কথা বলে— অর্থাৎ, জ়রা জ়রা… কারণ, পরের নির্বাচনেই নীতিশকে অন্য কারও পা চাটতে দেখা যাবে হিসেব না মিললে– কিন্তু কেয়া করে দিবা না? ফ্রিভোলাস টাইপের বিহারি, সন্ধের মেঘমালা টাইপ, এই আছে এই নেই, মম শূন্য গগন ছেড়ে যে কোনও সময়ে অন্য কারও জিন্দেগি গুলজার করে ডানা ঝাপটাবে, দু’কান কাটাদের এসবে অসুবিধে হয়-টয় না। তবে পরের কথাগুলো আরও লাগসই, ‘আমি আপন মনের মাধুরী মিশায়ে তোমারে করেছি রচনা।’ জাতীয় রাজনীতির লাগাম হাতছাড়া না করার জন্য অর্থনীতি, সামাজিক সমস্ত প্রতিষ্ঠান এবং জাতপাতের ভেদাভেদকে ওই মাধুরী কোথায় টেনে নামিয়েছে, তা পরিষ্কার। তার পরও আমরা মধুসূদন দাদার ভাঁড়ের অপেক্ষায় আছি, সবার অ্যাকাউন্টে পনেরো লাখ ঢুকবে, সবার বাচ্চা আমেরিকায় চাকরি পাবে, সবাই সানি লিওনির সঙ্গে শোবে দু’বেলা। ওই যে ছেলেবেলা থেকে শুনছি– কিছু একটা আছে। কথাটা কিছুতেই মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারছি না পুরোপুরি— মনে হচ্ছে, পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাবে। জানি, গড়িয়ায় পেপসি কারখানার কাছে রাস্তার মাঝখানে মন্দির বানিয়ে একদল দুষ্কৃতী নোট কামানোর ধান্দা ফেঁদেছে, তবু পুরসভার বুলডোজ়ার তা ভাঙতে এলে যখন বলা হল, ভিত নড়ানো ইস্তক ড্রাইভারের কচি মেয়ে মুখে রক্ত তুলছে, তখন ‘কত কচি’ ইত্যাদি প্রশ্ন সরিয়ে ডিভাইন ইন্টারভেনশনের ভয়টাই দেখলাম বেশিরভাগ শুভবুদ্ধিসম্পন্নকে আচ্ছন্ন করল।
মাঝে মাঝে মনে হয় আমরাই রূপকথার চরিত্র। আমরাই আসলে নেই। মহিলাদের একটানা ধর্ষণের পর কথা ফোটে না, রাজনৈতিক নেতার রক্ষিতার খাটের তলা থেকে দশ-বারো কোটি টাকা পাওয়ার পর মাংসপিণ্ডের মতো ব্ল্যাবারিং মহিলার স্তনের সাইজ নিয়ে মাথায় চলতে থাকা কাটাকুটি একমাত্র বেঁচে থাকার লক্ষণ, একের পর এক সরকারি স্কুল তুলে দেওয়ার পর নিরব, পুলিশ ইউপিএসসি ছাত্রদের ফেলে ক্যালোনোর পর টেলিভিশনের সামনে কোকাকোলাহলের বিজ্ঞাপনে মোহগ্রস্ত মৌনী বাবা… আমরা সত্যি সত্যিই বেঁচে আছি? না কি মরে গেছি বহুকাল আগে, তাই এখন কিছুতেই কিছু যায় আসে না?
বেঁচে থাকলেও অন্য কারও বাস্তবতা থেকে ধার করা চেতনার দ্বারা চালিত না হলে এমনটা সম্ভব? দেশে রোজ সাড়ে চার হাজার বাচ্চা অপুষ্টিজনিত কারণে মারা যায় আর প্রধানমন্ত্রী ধ্যানে বসছে, সাড়ে পাঁচশোর বেশি গুজরাতি ব্যবসায়ী দেশের কয়েক লক্ষ কোটি ডলার চুরি করে বিদেশে মৌজমস্তিতে বে-এক্তিয়ার আর পাড়ার আরএসএস জেঠু হাফপ্যান্ট পরে স্বচ্ছ ভারতের লক্ষ্যে রাস্তা ঝাঁট দিচ্ছেন, নতুন জামাপ্যান্ট পরার কারণে বামুনরা দলিতদের কেটে গ্রামের গাছ থেকে ঝুলিয়ে দিচ্ছে আর এক স্বঘোষিত যোগী বলছে, ‘বাটেঙ্গে তো কাটেঙ্গে।’ এই বৈপরীত্য আমার দেশ?
যদি না হয়, তাহলে উপকথার উপত্যকায় আমরা সবাই দম দেওয়া পুতুল, অন্য কারও স্মৃতির ভেতরে তড়বড় করে ঘুরে বেড়াচ্ছি। মুশকিল হল, এটি যদি সত্যিই আমার দেশ হয়, আমরা তাহলেও পুতুল, শুধু দম দেওয়ার চাবিটা কেউ নিজের জিম্মায় রেখেছে। কৌটোর ভেতর, আর সে চাবির পাখনা, হাত, পা-ও আছে রাক্ষসদের প্রাণভোমরার মতো। কোনটা বেশি ভয়ংকর অবস্থা বুঝে উঠতে পারছি না। অসীম ক্ষুধায় শেষে কি নিজেকে খাবে?