ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2024

 
 

ডাকবাংলায় আপনাকে স্বাগত

 
 
  • সামথিং সামথিং : পর্ব ৪৮


    চন্দ্রিল ভট্টাচার্য (October 27, 2023)
     

    মাল্টিপল চয়েস

    ইজরায়েল গাজায় বোম ফেলে হাজার-হাজার নিরীহ মানুষ খুন করছে, এই সময়ে আমরা ঠাকুর দেখছি, বিশ্বকাপ নিয়ে হইহই করছি, এ কি উচিত হচ্ছে? উত্তরটা অবশ্যই হবে: তাহলে তো পৃথিবীতে কোনওদিন কোনওখানেই কোনও উৎসব পালন করা যাবে না, কোনও খেলাধুলো উপভোগ করা যাবে না, কারণ কোথাও-না-কোথাও যুদ্ধ চলছে, বা ভূমিকম্প হয়েছে, বা গরিব লোকে অনাহারে মরছে। সারা পৃথিবী সুন্দর সুখী সুস্থিত হবে, তবে আমি জন্মদিনে কেক কাটব— এ-প্রতিজ্ঞা করা মানে আমরণ রামগরুড় হওয়ার শপথ। এর উত্তরে অবশ্য বলাই যায়, তাহলে আজীবন বিষণ্ণ হয়েই থাকব, থাকা উচিত, কারণ সাম্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, মজা উদযাপনের চেয়ে। একজনও অভুক্ত না-থাকা অনেক জরুরি, পুজোর সিজনে বিরিয়ানির বিক্রি ভাল হওয়ার চেয়ে। কিন্তু লোকে হইহই করে উঠবে, কারণ তাহলে এ দুর্দশা-রনরন বিশ্বে শিল্প বন্ধ, প্রেম বারণ, রসিকতা নিষিদ্ধ ধরে নিয়ে কালকুঠুরিতে গুঁজে যেতে হয়। পরের প্রশ্ন: আচ্ছা, যদি টিভিতে দেখে বা কাগজে পড়ে এই যুদ্ধটা অসহ্য লাগে, মনে হয় এখানে চূড়ান্ত অন্যায় হচ্ছে, আমার কি তা থামাবার প্রাণপণ চেষ্টা করা উচিত? উত্তর হচ্ছে, কী করবি? ইউক্রেনকে বাঁচাতে তাদের বাহিনীতে নাম লেখাবি? কিংবা প্যালেস্তাইনের সৈন্যদলে? তাদের দেশে গিয়ে বলবি, ওগো তোমাদের হয়ে আমাকে যুদ্ধ করতে দাও? প্রথমত তা বললে ভিসা পাওয়া যাবে কি? দ্বিতীয়ত, যুদ্ধ করলে, ইজরায়েলের লোক মারলে, বা রাশিয়ার লোক মারলে, তা কি নীতিগত ভাবে ঠিক হবে? কারণ তুমিও তো সেই হত্যাই করছ, যা ওই শত্রুরা করছে বলে তাদের অ-মানব বাতলালে। যদি বলো, ইজরায়েল তো বোম ফেলেছে, আমি তার প্রতিক্রিয়ায় ইজরায়েলের লোক মারছি, ইজরায়েল বলবে, হামাস তো আগে আমাদের মেরেছে, আমরা তো তার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় বোম ফেলছি, হামাস আবার বলবে ইজরায়েল তো অমুক দিনে তমুক করেছে, আমরা তো তার প্রতিক্রিয়ায় ইত্যাদি। এই বৃত্তাকার দোষারোপ অনন্ত বলেই, ‘স্যার, ও আগে মেরেছে’ যুক্তিতে হিংসার প্রশ্রয়কে পণ্ডিতরা দাবড়ে গালিয়েছেন। বলেছেন, একজন আগে মারলেই তাকে ফিরতি ও প্রবল মারা যায়— এই বিবৃতি যদি স্বতঃসিদ্ধের মর্যাদা পায়, তাহলে কোনওদিন কোনও হিংসা থামবে না, কারণ গাজায় প্রাণ-হারানো শিশুটির বাবা হামাসে নাম লেখাবেন এবং আজ থেকে আড়াই বছর পরে ইজরায়েলের নিরীহ শিশুর প্রাণ হরণ করে ভাববেন বেশ করেছি।

    বেশ, তাহলে যুদ্ধে যাওয়া হবে না, কিন্তু যুদ্ধের বিরুদ্ধে জনমত তো গড়ে তোলা যাবে। মিটিং করব, মিছিল। মিছিল একটা-আধটা করলে লোকে আহা-বাহা করবে, কিন্তু বাড়াবাড়ি করলেই তারা খেপে অস্থির: নিজের দেশে রাজ্যে পাড়ায় শত ঝঞ্ঝাট সহস্র নিগ্রহ, তার সমাধানে তোমার পাঁচসিকে চেষ্টা ও বুদ্ধির প্রয়োগ দেখা যায় না, হঠাৎ অন্যের জন্যে প্রাণ ককিয়ে কেঁদে একসা? এক সময়ে কলকাতায় বামপন্থী দলেরা ইরাক বা রোমানিয়ার প্রতি অন্যায়ের প্রতিবাদে শ্যামবাজারের মোড়ে মানব-বন্ধন করত। তখন ট্র্যাফিক জ্যামে লোকের নাভিশ্বাস উঠত আর তারা বন্দি বাসে বা ট্রামে বসে বা দাঁড়িয়ে তেড়ে চিল্লাত, কোথাকার কোন দেশে কে দুধ খেতে পাচ্ছে না, তা নিয়ে তোরা এত মথিত কেন? এই চিৎকারের মধ্যে অশ্লীলতা আছে, কারণ বিশ্বের সর্বত্র কী হচ্ছে এবং তার মধ্যে কত পোয়া অন্যায়, সে-বিষয়ে সচেতন থাকাই প্রকৃত বিশ্বনাগরিক হওয়া, কিন্তু কলকাতার পাবলিক বলতে চাইত: নিজের ঘরটাকেই গোছাতে পারিস না, তুই কিনা গেছিস ম্যাপের কোথায় ফুটো, ন্যাকড়া দিয়ে তা ঘোচাতে! দলটার অপদার্থতা ও আলস্য এখানে তাদের ‘প্রসারিত সচেতনতা’র কর্মসূচিকে ভণ্ডামি হিসেবে প্রতিভাত করত।

    অপদার্থতা নিশ্চয়ই তিরস্কারযোগ্য, কিন্তু এইবার বলা যেতে পারে, নিজের ঘরটাকেই আগে ঠিক করতে হবে, এ-কথার মধ্যে কি সংকীর্ণতা নেই? আমার পাড়ার লোককেই আগে সেবা করতে হবে কেন? উত্তর হচ্ছে, ভালবাসি বলে। আমার মা-বাবাকে বেশি ভালবাসি, তাই অন্যের মা-বাবাকে আগুনের হাত থেকে বাঁচাবার আগে, তাঁদের বাঁচাব। কিন্তু এই উত্তর দেওয়ার সময়ে মনে একটা খচাৎ বিঁধতে বাধ্য। আমার বাবা-মা’র মূল্য অন্যের বাবা-মা’র চেয়ে বেশি কীসে? স্রেফ এই কারণে যে, আমি তাঁদের কাছে মানুষ হয়েছি, তাঁদের সঙ্গে অনেকটা সময় কাটিয়েছি? এ তো একটা অভ্যাসের, একটা কাকতালের দাসত্ব। এখানে আসল যুক্তিটা আর কিছুই নয়, নৈকট্যের আবেগ। আমি ক-বাবুকে অনেকদিন ধরে চিনি বলে তার দিকে ঝোল টানব, আর খ-বাবুকে অনেকদিন ধরে চিনলে তার দিকে ঝোল টানতাম। নিজের মা-বাবার প্রতি পক্ষপাত স্বাভাবিক, নিজের জাতি বা দেশের প্রতি পক্ষপাত স্বাভাবিক, কিন্তু স্বাভাবিক বলেই তা কাম্য হতে হবে কেন? এগুলোকে একবার বেদিতে তুলে পুজো শুরু করলে, সাম্প্রদায়িকতাকেও স্বাভাবিক, সুতরাং পূজ্য মনে হবে। তখন বলব, আমার ধর্মকে আমি বেশি আঁকড়ে রাখব না তো কে রাখবে? এই মনোভাব আসলে বলে, আমার ভালবাসার লোকগুলোকে আঁকড়ে ধরার সময় যুক্তিগুলো পাপোশের তলায় ঠেলে, বিচারবুদ্ধিকে এট্টু শান্টিং করতে হবে। কিন্তু সৎসাহস অনুযায়ী: আমার দেশ যদি বোম ফ্যালে, তাহলে অন্য দেশের পক্ষে (এবং নিজের দেশের বিপক্ষে) দাঁড়াতে হবে। বা, দক্ষিণ সুদানের গণধর্ষিতা মেয়েদের পক্ষে লড়াই শুরু করা যদি বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়, তবে কাঁকিনাড়ার প্রাইমারি স্কুলের সমস্যা আপাতত পাশে সরিয়ে রাখব। আমি মেদিনীপুরের, তাই আমাকে মেদিনীপুরের পক্ষে সবসময়ই প্রধান সমর্থন ঝলকাতে হবে, এর মধ্যে চেনা-শিবিরের-কেনা-গুণ্ডা ভাব রয়েছে, যা মানুষের জাগ্রত স্টেটাসকে অপমান করে।

    নিজের জাতি বা দেশের প্রতি পক্ষপাত স্বাভাবিক, কিন্তু স্বাভাবিক বলেই তা কাম্য হতে হবে কেন? এগুলোকে একবার বেদিতে তুলে পুজো শুরু করলে, সাম্প্রদায়িকতাকেও স্বাভাবিক, সুতরাং পূজ্য মনে হবে। তখন বলব, আমার ধর্মকে আমি বেশি আঁকড়ে রাখব না তো কে রাখবে? এই মনোভাব আসলে বলে, আমার ভালবাসার লোকগুলোকে আঁকড়ে ধরার সময় যুক্তিগুলো পাপোশের তলায় ঠেলে, বিচারবুদ্ধিকে এট্টু শান্টিং করতে হবে।

    বেশ, তাহলে ধরলাম, নিজের হোক পরের হোক, যে-সমস্যাকে যখন বেশি ওজনদার মনে হবে, তার সমাধানের জন্য ঝাঁপাব। কিন্তু সমাধানটা কী? বিপ্লব? সে তো একটা সমাজে আনতে গেলেই একটা গোটা জীবন বিলিয়ে দিতে হবে। না কি অদ্দূর না ভেবে, কিছু লোককে লাগাতার বুঝিয়ে সচেতন ও সম-মনোভাবাপন্ন করে তুলব? ধরা যাক, আমি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টানা দু’মাস ছুটে বেড়িয়ে ৪৫ জনকে স্পষ্ট বিশ্বাস করালাম, গাজায় যা হচ্ছে তা ঘোর অপরাধ। তাতে কী হবে? আমার রাজ্যের কাগজে চিঠি বেরোলে, আমার পাশের লোকটা গাজার লোকের দুঃখে আন্তরিক হাউ-হাউ কাঁদলে, ইজরায়েলের কিছু যাবে-আসবে? আমি আমার স্টাডি সার্কলে প্রস্তাব গ্রহণ করব যে ইজরায়েল ভারি দুষ্ট, এবং তারপর বাড়ি গিয়ে সেই তৃপ্তিতে রেজালা খাব? প্রতিরোধের রূপটা তাহলে কী? প্রতিবাদের পদ্ধতিটা কী? এমনকী কোনও দল গড়া যাবে, যা প্রধানমন্ত্রীকে এমন প্রভাবিত করবে যে, তিনি ইজরায়েলের সঙ্গে কথা বলে তাঁর যুদ্ধ-আপত্তি জানাবেন? সেই দল গড়তে লাগবে, ধরা যাক, ৫০ বছর। তদ্দিনে যে-অন্যায়গুলো আমায় পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে যাবে, তাদের কী হবে? আবার, যে-পদ্ধতি বাস্তবে ব্যর্থ, উপযোগিতাহীন, তা কি বাধ্যতামূলক ভাবে পরিহার্য? ‘ও বলে-কয়ে কিস্যু হবে না, ভারতের প্রধানমন্ত্রী বললেই বা ইজরায়েলের রাষ্ট্রনায়ক তা শুনবেন কেন? সারা পৃথিবী আপত্তি জানালেই বা রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি বোম ফেলা থেকে বিরত থাকবেন কেন?’ এই বাক্যনিচয় আউড়ে, বলা বন্ধ করে দেব? চেষ্টা ডকে তুলে দেব? তাতে তো আরওই কাজ হবে না, এক-আধটা চিন্তার বীজ অবধি উড়ে গিয়ে পড়বে না কোত্থাও।

    খতিয়ে যদি দেখি, কোনওদিনই মানুষের আন্দোলন দীর্ঘমেয়াদি ভাবে সফল হয়নি, স্বৈরাচার বিনষ্ট হয়ে স্রেফ আরেক স্বৈরাচারের জন্ম দিয়ে গেছে, সমাজ বদলে গিয়ে হয়েছে আগের সমাজেরই তেরছা আয়না-ল্যান্ড, শুধু টাকাখোর ও হত্যাকারী মুখগুলো পাল্টেছে, তাহলে কেন এই আন্দোলনবাজিতে ঝাঁপাব? কিন্তু আন্দোলন (বা যে-কোনও মহৎ প্রচেষ্টা) কি সাফল্য নিশ্চিত জেনে, তবে শুরু হয়? বা, বলা ভাল, ব্যর্থতা নিশ্চিত জেনেও কি মানবকল্যাণের আকুল প্রয়াস জারি থাকা উচিত নয়? যে-কাজ ঠিক, সঙ্গত, শ্রেয় বলে বুঝেছি, তা অবশ্যম্ভাবী প্রকাণ্ড প্রতিকূলতায় ব্যর্থ হবে জেনেও কি আমায় উদ্যত বর্শা বা বিদ্রুপ বা বন্যার সম্মুখে এগিয়ে যেতে হবে না? ধরে নিই, হবে। কারণ, ব্যর্থ হলেও চেষ্টার ছাপ থেকে যায় এবং তা থেকে আরও জেদ ও দৃঢ়চোয়াল জন্ম নেয়। যদি ভেবে দেখি আমার জীবনের উদ্দেশ্য অমুক হওয়া উচিত, তাহলে তার ব্যর্থতার ভয়ে উদ্দেশ্যের খোপে সহসা তমুক চালান করা যায় না।

    তাই আশেপাশের লোক কী বলল, কেয়ার না-করে, আমায় পৃথিবীকে আরেকটু ভাল জায়গায় পরিণত করার কাজ করে চলতে হবে। তাতে নিজের স্বাচ্ছন্দ্য নষ্ট হবে। মোমবাতি মিছিল, লিফলেট বিলি, পথসভা, পিটিশন জমার মতো ছোটখাটো ও একঘেয়ে কাজ করতে হবে। আবার লোককে বুঝিয়ে আন্দোলন বা ধর্মঘট আয়োজন করার মতো বড় ঝামেলা পোয়াতে হবে। লাঠি খেতে হবে ও হাঁটু কোনওদিনই ঠিক হবে না, খুঁড়িয়ে হাঁটতে হবে। এবং একটা বয়সের পর দেখতে হবে, যাদের আমি গামবাট স্বার্থসর্বস্ব টাকা-শকুন বলে নীচু করেছি, তারা দাড়ি-কামানো তকতকে নীল গাল স্ফারিত করে অকৃত্রিম হাসছে এবং গাড়ির মসৃণ কাচ নামিয়ে কৃপা ছুড়ে দিচ্ছে আমার টালির চালে, যার দহন আমি উপেক্ষা করতে পারছি না। আদৌ ঠিক দিকে হাঁটলাম কি, একটা দাগও এ-বিশ্বম্যাপে রাখতে পারলাম কি, এই সন্দেহ আক্রমণ করছে, এবং প্রবল বদরাগ ও আত্ম-অনীহা চাপতে অনেক ঘণ্টা কেটে যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা, বছর-মাস-দিন ধরে সারাক্ষণ ঘিরে থাকছে হুল-ফোটানো প্রশ্ন। এটা ঠিক না ওটা, সেটা কৌশলগত ভাবে ঠিক হলেও কি আদর্শগত ভাবে ভুল, আমার কথা লোকে নিল না কি আমার অক্ষমতায় না তাদের আধার-হীনতায়, প্রশাসনের সঙ্গে লড়ে কি কখনওই ছোট সমিতি টিকে থাকতে পারে না, না কি প্রকৃত বিদ্রোহীর কাজই হচ্ছে কক্ষনও ক্ষমতাবানদের ধারেকাছে না যাওয়া? গ্রামের লোকের মধ্যে কাজ করে চলব না বিদেশ গিয়ে ওদের সংগ্রাম বুঝে আসব, দলের মধ্যে আকচাআকচি নিয়ে ভাবব না আন্তর্জাতিক সমস্যা নিয়ে পড়াশোনা করব, মৌলবাদীর বাকস্বাধীনতাকে কি প্রকাশ্যে সমর্থন করব, প্রকৃতপন্থীর ক্ষুদ্রতাকে কি প্রকাশ্যে নিন্দে করব? দিনমান এই প্রশ্নের পতঙ্গেরা এসে কানেমুখে ঢুকে গেলে এক-এক সময় জীবনের হাঁড়িটাকে আছড়ে ভাঙতে ও ডাক ছেড়ে কাঁদতে ইচ্ছে হবে, পালাতে ইচ্ছে হবে, ছুটি নিতে ইচ্ছে হবে। কিন্তু এই চাকরিতে ছুটি নেই, কারণ অন্যায় কখনও থেমে থাকে না। এইজন্যেই বিশ্বকাপে হার্দিক পান্ডিয়া না খেলতে পারলে কাকে নামানো হবে তা নিয়ে ব্যস্ত থাকার বন্দোবস্ত। গাজা দেখানোর চ্যানেলটা না ঘোরালেই হল। উল্টে একবার সচেতনতার চুক্তিতে সই করে দিলে, তা থেকে বেরোনো অসম্ভব, মানে, আত্মশ্রদ্ধা না-খুইয়ে। তা বুঝেই এবং হজমির বদলে পেরেক মুখে পুরেই অভিযান শুরু করতে হবে, যদি ধক থাকে। এও বুঝতে হবে, মূল্যবান প্রশ্নের উত্তর আসলে আগে থেকে দেওয়া যায় না, তার একটা নির্দিষ্ট উত্তরও হয় না, জলে নেমে পড়ে তবেই স্রোত বিষয়ে বিচার নির্ধারণ করতে হয়। ফলে প্রথমে পাড়ে দাঁড়িয়ে, বহুক্ষণ ধরে, একটু আঙুল চুবিয়ে আবার তুলে নিয়ে, ‘পথে এবার নামো সাথী’ এবং ‘পথে নামব না হাতি!’ লোপালুপি করে, তবে বুঝতে হবে, গাজা না মজা। আর যা-ই করি, ইংল্যান্ডের হারের দুঃখ আর গাজার শিশুমৃত্যুর কান্না যেন গুলিয়ে না ফেলি। সেটা বিচ্ছিরি।

     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     




 

 

Rate us on Google Rate us on FaceBook