সমালোচনা— সিনেমা, ‘বার্বি’
মুখ্য চরিত্র— মার্গো রবি, রায়ান গসলিং, উইল ফেরেল প্রমুখ
চিত্রনাট্য— নোয়া বোম্বাখ ও গ্রেটা গারউইগ
সিনেম্যাটোগ্রাফি— রদ্রিগো প্রিয়েতো
পরিচালনা— গ্রেটা গারউইগ
শিল্পের কাজ কী? রসিক পাঠক/দর্শক/শ্রোতা অনেক ক্ষেত্রেই লক্ষ করে থাকবেন, শিল্পকে দু’ভাবে দেখা যায়। যে শিল্প ‘ভাল’ গল্প বলে, আর যে শিল্প ‘ভাল-বিষয়’ নিয়ে গল্প বলে। অনেক ক্ষেত্রেই বিষয়টি তেমন জম্পেশ না হলেও গল্প বলার পদ্ধতিতেই শিল্প উতরে যায়। আবার অনেক সময়ে খুব দরকারি বিষয় নিয়ে শিল্প তৈরি হলেও তার বলা গল্পটা তেমন জমে না। আবার অন্য কম্বিনেশনও হতে পারে। সিনেমাও এই বিন্যাসের ব্যতিক্রম নয়। বিষয়বস্তু (content) এবং গল্প বলা (execution); এই দুইয়ের নিরিখে গ্রেটা গারউইগের নতুন সিনেমা ‘বার্বি’ নিয়ে নাড়াচাড়া করলে কিছু ইন্টারেস্টিং জিনিস চোখে পড়ে। প্রথমত, এ সিনেমা ঠিক কী বলতে চেয়েছে? দ্বিতীয়ত, যা বলতে চেয়েছে তা ঠিক করে বলতে পেরেছে কি?
বার্বির গল্প নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রচুর লেখালিখি, প্রচুর আলোচনা হয়েছে। তা ছাড়া সদ্য বেরনো একটি সিনেমার পুরো গল্প এই লেখাতে ফাঁস করে দিলে অনেকেই রাগ করতে পারেন। তাও প্রেক্ষাপট খানিকটা এইরকম: বার্বিল্যান্ড বলে একটি কল্পরাজ্যে পুতুলেরা সবাই মিলে বাস করে; এরা সবাই ভিন্ন ভিন্ন রূপের, স্বভাবের, এবং চরিত্রের, কিন্তু দিনের শেষে সবাই— হয় বার্বি, নয় কেন। এই দুনিয়া নারীশাসিত বা মেট্রিয়ার্কাল। এখানে মেয়েরা, অর্থাৎ বার্বিরা, সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলায়— কাউন্সিলে বসে বার্বিল্যান্ডের সরকার চালায়, একে অপরের সঙ্গে ভদ্র, শালীন, অতিমধুর ব্যবহার করে। ছেলেরা, অর্থাৎ কেন-রা, একধরণের অকর্মণ্য ‘ট্রোফি-বয়ফ্রেন্ড’; তারা যে বার্বিদের সঙ্গে খুব দুরন্ত প্রেম করে তাও নয়, তবে বার্বিদের কাছে আদর পাওয়া এবং বার্বিদের সান্নিধ্যে থাকাটাই তাদের জীবনের লক্ষ্য। মেয়েদের শাসনে তারা যে খুব সুখেই আছে, তা স্পষ্ট বোঝা যায়। অর্থাৎ, ম্যাটেল কোম্পানি যেভাবে এই পুতুলদের জনমানসে তুলে ধরেছিলেন, ঠিক সেই সামাজিক এবং চারিত্রিক বিন্যাসেই এদের জীবনযাপন।
মুশকিল হয়, যখন মার্গো রবি অভিনীত বার্বিটি হঠাৎ একদিন টের পায়, তার পুতুল-জীবনে কিছু ‘মানুষী দুর্বলতা’ এসে হাজির হচ্ছে। তার পা’গুলো আর বার্বিদের মতো নেই, মানুষের মতো ফ্ল্যাট হয়ে গেছে। আবার তার পেটে মানুষের মতোই সেলুলাইটের দাগ দেখা দিচ্ছে। এর পাশাপাশি তার মনে বাসা বাঁধছে দুঃখ, অস্বস্তি, মৃত্যুচেতনা— যে জিনিস পুতুলের হৃদয়ে থাকার কথা নয়। অসহায় হয়ে সে উপদেশ চায় ‘উইয়ার্ড বার্বি’-র কাছে (যে চরিত্রে স্বমহিমায় দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন কৌতুকশিল্পী কেট ম্যাক্কিনন)। এই উইয়ার্ড বার্বি তাকে জানায়, বাস্তব জগতে যে মানুষটি তাকে নিয়ে খেলছে, সেই মানুষের সমস্ত দুঃখ কষ্ট তার গায়ে এসে লাগছে বলেই তার এই দশা। অতএব যদি সমস্যার সমাধান করতে হয়, সেই মানুষটিকে খুঁজে বের করতে হবে। তার পর…? তার পর কী হল, জানতে হলে সিনেমাটি দেখতে হবে।
এই সিনেমায় সবচেয়ে বেশি যা মনে ধরল, তা হল এর সামগ্রিক ডিজাইন এবং সিনেম্যাটোগ্রাফি। বার্বির কল্পজগৎকে সিনেমার পর্দায় চমৎকার ফুটিয়ে তুলেছেন ডিজাইনার জ্যাকলিন ডুরান (যিনি দু’বার অস্কার জিতেছেন কস্টিউম-ডিজাইনের জন্য) এবং প্রোডাকশন ডিজাইনার সারা গ্রিনউড। এঁদের পাশাপাশি রদ্রিগো প্রিয়েতো-র ক্যামেরায় এই দুনিয়াটির ফ্যান্টাসি ধরা পড়েছে ষোলো আনা। মুখ্যচরিত্রে মার্গো রবিও দুর্দান্ত— গপ্পের গোড়ায় বার্বির যে অতিরঞ্জিত পুতুল-পুতুল আবেগ এবং এনার্জি, সেটার থেকে ধীরে ধীরে তার মধ্যে মানুষী গভীরতা ও সংশ্লিষ্ট দুঃখ-ভয়-যন্ত্রণার জন্মটি— অভিনয় এবং অভিব্যক্তিতে ফুটিয়ে তুলতে এমন দক্ষ অভিনেত্রীরই প্রয়োজন ছিল। ম্যাটেল কোম্পানির তৈরি একটি পুতুল আস্তে আস্তে সচেতন হয়ে উঠছে এবং নিজে গটমট করে নিজেরই স্রষ্টা ম্যাটেলের সদর দপ্তরে ঢুকে পড়ছে, এই দৃশ্য অযুত সম্ভাবনার জন্ম দেয়। সিনেমাটি সঙ্গত কারণেই নারীবাদী চিন্তকদের প্রশংসা লাভ করেছে; পিতৃতান্ত্রিক দুনিয়াতে যেখানে নারীর পরিচিতি প্রতিনিয়তই নির্ধারিত হয় বৃহত্তর সমাজের ইচ্ছেমতো, সেখানে ‘আদর্শ নারী’ রূপে সৃষ্ট একটি পুতুলের উঠে দাঁড়িয়ে নিজের দাবিমতো মানুষ হতে চাইবার যে বাসনা— তা ব্যক্তিস্বাধীনতার ও প্রতিষ্ঠানকে ঝেড়ে ফেলে নিজের পরিচিতি নিজেই গড়ে তোলার সম্ভাবনা তৈরি করে।
কিন্তু সেই সম্ভাবনার বীজ গাছের জন্ম দেয় কি? সিনেমার শেষ অংশ কী বলছে?
লিঙ্গপরিচিতির রাজনীতি এবং লিঙ্গভিত্তিক দর্শন নিয়ে সিরিয়াসলি জানলে একটি জিনিস স্পষ্ট বোঝা যায়; যতদিন নারী বনাম পুরুষ— এই বাইনারির ভিত্তিতে বৈষম্যের বা অসামঞ্জস্যের লড়াই চলবে, ততদিন সে লড়াইয়ের কোনও শেষ নেই। একটি দল একবার জিতবে, অন্য দল পরে আবার তাদের হারিয়ে ক্ষমতা দখল করবে— এই চিন্তার মডেলের সমস্যা হল সে স্বাভাবিক ভাবেই লড়াই শেষের কোনও সম্ভাবনা দেখাতে পারে না। সুতরাং যাঁরা এই মডেলের বাইরে এসে একটু দ্বিমাত্রিকতা বা বহুমাত্রিকতা নিয়ে ভেবেছেন, তাঁরা বুঝতে পেরেছেন যে সামগ্রিকভাবে বাইনারি ভেঙে ফেলাই বৈষম্যের একমাত্র সমাধান। বার্বিল্যান্ডে মাতৃতান্ত্রিক সমাজ দিয়ে সিনেমা শুরু হয়, আবার বাস্তব জগৎ থেকে পিতৃতান্ত্রিকতার পাঠ নিয়ে এসে কেন নামক পুরুষ পুতুলেরা একটি পিতৃতান্ত্রিক জগৎ তৈরির চেষ্টা করে। সমস্যা হচ্ছে, এই দুটি দুনিয়াকেই সিনেমায় এতটা অবান্তর, এতটা ঠাট্টার জিনিস হিসেবে দেখানো হয় যে, দর্শককে কখনওই আশার অবকাশ দেওয়া হয় না যে এই দ্বিমাত্রিকতাকে সিরিয়াসলি বিবেচনা করে বার্বিল্যান্ডের গোটা কাঠামোকেই ত্যাগ করা হবে। তাই গ্রেটা গারউইগ যদি এই সিনেমার মাধ্যমে কোনও লিঙ্গভিত্তিক বা রাজনৈতিক বার্তা দিয়ে থাকতে চান (অন্তত, তাঁর সিনেমার প্রচারপদ্ধতির পদে পদে আনুষ্ঠানিক নারীবাদ বা performative feminism-এর উপস্থিতি তারই ইঙ্গিত দেয়), তবে সে বার্তাটি সীমাবদ্ধ হয়ে থাকে একটি ক্লীব এবং অচল কল্পজগতের মধ্যেই।
এখানে বলতেই হয় যে, গ্রেটা গারউইগের কাছে হয়তো এর বেশি করার রাস্তা ছিল না। যে সিনেমা তৈরিই হয়েছে ওয়ার্নার-ব্রাদার্স এবং ম্যাটেলের তত্ত্বাবধানে, সেখানে তাঁর পক্ষে এই বৃহৎ পুঁজিকে (big capital) চটিয়ে সিনেমা বানানো সম্ভব নয়। কিছু সমালোচকরা এ কথাও বলছেন, যে ‘বার্বি’ সিনেমাটির উদ্দেশ্য নারীবাদী সুরাহা দেওয়া নয়, বরং দর্শকদের সামনে নারীবাদের একটি প্রাথমিক পাঠ বা প্রথম পদক্ষেপ পরিবেশন করা। মুশকিল হল, প্রাথমিক পাঠ যে শুধুই প্রাথমিক, এবং তার পরেও যে অনেক কিছু শেখার আছে— এই কথাটি শিল্পে বা সাহিত্যে স্পষ্টভাবে বলে না দিলে মানুষ ওই প্রাথমিক, ভাসা-ভাসা শিক্ষাটিকেই যথেষ্ট মনে করে এগিয়ে যান। ইতিহাস সাক্ষী আছে, প্রগতিশীল সাহিত্য বা শিল্পদক্ষ শিল্পীর হাতে পড়লে, এই সমস্যার মোকাবিলা করেছে একাধিকবার। যেমন, নাইজিরিয়ান সাহিত্যিক চিমামান্ডা এন্গোজি আদিচে তাঁর ‘ডিয়ার ইজিয়াওয়েলে’ নামক আশ্চর্য বইতে নারীবাদী চিন্তার একটি সহজ পাঠের পাশাপাশি এ কথা বারবার লিখে গিয়েছেন, যে এই বই প্রথম ধাপ মাত্র। অনেকটা একইভাবে শ’দেড়েক বছর আগে কার্ল মার্ক্স ও ফ্রিডরিখ এঙ্গেল্স পাঠকদের জানিয়ে গিয়েছিলেন— কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো বা পার্টির পুস্তিকা পড়ে সর্বহারার রাজনীতির প্রতি আগ্রহী হওয়াটা যথেষ্ট নয়— আরও অনেক কিছু পড়ার আছে, জানার আছে। সচেতন ভাবেই হোক, বা অ-চেতন ভাবে, ‘বার্বি’ এই সতর্কতা না দিয়ে উল্টে ‘সব ভাল যার শেষ ভাল’ পজিটিভিটি-তেই কাজ সেরে ফেলতে চেয়েছে। গারউইগের অনুরাগীরা বলতে পারেন, গল্পের প্রেক্ষাপট যেখানে মেয়েবেলা-র পুতুলদের একটি কল্পজগৎ, সেখানে কল্পনার জগৎ থেকে বাস্তবে মুখ্য চরিত্রদের যাতায়াতকে আর কতই বা র্যাডিকাল করে দেখানো যায়? সেক্ষেত্রে মনে পড়ছে আর একটি সিনেমার কথা, যে সিনেমার নাম ‘দ্য ট্রুমান শো’ (‘The Truman Show’)।
১৯৯৮ সালের এই সিনেমায় দেখানো হয়, বার্বিল্যান্ডের মতোই একটি নকল, বানানো জগতে ট্রুমান বলে একজন লোক বসবাস করে। সে জন্ম থেকেই এই জগতে বড় হয়েছে, অতএব তার কোনও ধারণা নেই যে তার আশেপাশের জগৎটা নকল, এবং সেই জগতের বাসিন্দারা আসলে পেশাদার অভিনেতা। ট্রুমানের জীবনের গল্পটা লুকোনো ক্যামেরায় তুলে রাখা হয় এবং চব্বিশ ঘণ্টা ধরে রিয়ালিটি শোয়ের মতো সেই গল্প দেখেন বাস্তব জগতের দর্শকেরা। গল্প যত এগোয়, ট্রুমান তত বুঝতে পারে যে আসলে বাস্তব জগৎ আছে সেই ফিল্মের সেটের বাইরে, এবং গল্পের শেষে সে কার্ডবোর্ডে আঁকা ‘আকাশের’ গায়ে একটি দরজা খুলে সেট থেকে বেরিয়ে যায়। বার্বি নিজেও সিনেমার শেষে বার্বিল্যান্ড ত্যাগ করে বটে, তবে তফাত একটাই— ট্রুমান সেট ছেড়ে বেরিয়ে যায় তার সাজানো-দুনিয়ার মালিকদের অনুরোধ উপেক্ষা করে (সাজানো অনুষ্ঠানটি তার বেরিয়ে যাওয়ার ফলে ধ্বংসও হয়ে যায়), কিন্তু বার্বি বাস্তব জগতে পাড়ি দেয় মালিকদের মানে ম্যাটেল কোম্পানির কর্তাদের দাক্ষিণ্যে। তাই দিনের শেষে স্বাধীনতা তাকে ‘দেওয়া হয়’; তার একা-র বেরিয়ে যাওয়ার পরেও বার্বিল্যান্ড যথারীতি চলতে থাকে— যদিও সেখানকার মালিকেরা ‘দয়া’ করে কিছু নতুন, কিছু প্রগতিশীল নিয়ম নিয়ে আসেন।
সিনেমাটি যে বিপুল সম্ভাবনার সৃষ্টি করে প্রথম অংশে, দ্বিতীয় অংশের এই প্রতিক্রিয়াশীলতা তাতে বেশ খানিকটা জল ঢেলে দেয়। ম্যাটেল কোম্পানির মালিকেরা যে এই সিনেমায় খানিকটা আত্মপ্রসাদ লাভ করতে চেয়েছেন এবং ‘দেখো, আমরা কেমন নিজেদের নিয়ে উদারভাবে ঠাট্টা করতে পারি’ বলে তলায়-তলায় নিজেদের পণ্যীকরণের দুনিয়াটি নিয়ে খুব একটা প্রশ্ন তুলতে দেননি, তা মোটামুটি টের পাওয়া যায়। বিশেষ করে উইল ফেরেল অভিনীত ম্যাটেলের সিইও চরিত্রটিকে যেভাবে প্রায় ক্যারিকেচারের ভাঁড়ামি করতে দেখানো হয়েছে, তাতে সিনেমার শেষে ম্যাটেলের বার্বির দাবি ‘মেনে নেওয়া’কে সিরিয়াস দার্শনিক বা রাজনৈতিক আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে নয়, বরং খানিকটা কার্টুনের হিরোর জিতে যাবার মতো করেই তুলে ধরা হল। বার্বির ম্যাটেল অভিযান প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ ধাক্কা দিতে পারল না— বরং ‘সদর দপ্তরে বোমা হানার’ বদলে (শব্দবন্ধটি ধার করলাম মাও সে তুঙের থেকে) কর্তৃপক্ষ একজন অখুশি কর্মচারীকে একটু বোনাস দিয়ে বাকি বার্বিল্যান্ডে শান্তি বজায় রাখলেন। যেভাবে আধুনিক আপিসের বসেরাও রাখেন আর কি!
‘বার্বি’ যে দুর্দান্ত সাফল্য লাভ করেছে, তা বলাই বাহুল্য। ইতিমধ্যেই সিনেমাটি ওয়ান বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করেছে, বোঝাই যাচ্ছে আরও করবে। সিনেমাটি দেখতেও ভাল লাগে— ‘ফিল গুড’ আবেগ নিয়ে প্রেক্ষাগৃহ থেকে বেরোনো যায়। তবে ‘ফিল গুড’ শিল্প দিয়ে মানুষকে বিনোদন যতটা দেওয়া যায়— মূল যে রাজনৈতিক চিন্তা নিয়ে সিনেমাটি এগোনোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল— সেটাকে ততটা প্রকাশ করা যায় না। নিও-লিবেরাল যুগের রাজনীতির ধর্ম মেনে যারা— ‘সেফ অ্যাকটিভিজম’ (safe activism) ও ধনতান্ত্রিক নারীবাদ (capitalist feminism) পদ্ধতিতে বিশ্বাস রাখেন— অর্থাৎ ওপরে ওপরে একটি বাইনারিকে টিকিয়ে রেখে সেই বাইনারিতে পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে নিজেকে লড়াকু প্রতিপন্ন করার রাজনীতি, তাদের এই ধারার শিল্প ভাল লাগার কথা। কারণ দেবী চৌধুরাণীর মতোই বার্বিও নিজের সাজানোগোছানো বাগান ছেড়ে বেরিয়ে নানা রকম অ্যাডভেঞ্চারে যায়, আর সেইজন্য স্বাধীন, স্বাবলম্বী নারী হিসেবে হাততালিও পায়।
তবে বলে রাখা ভাল যে, বঙ্কিমের ‘দেবী চৌধুরাণী’-র মতোই এখানেও গল্পের শেষে দেবী বা প্রফুল্লর আবার সেই পুকুরপাড়েই ফিরে আসার একটা আশঙ্কা থেকে যায়, সেটা একটু মাথায় রাখা দরকার। ফুটবলে যাঁরা ম্যাচ-জেতানো মুহূর্তে পেনাল্টি পেয়েও মিস করেছেন, তাঁরা কিন্তু জানেন সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেও তাকে ফলপ্রসূ করতে না পারার হতাশা কতটা।