কাজ-নেশাড়ু, রগচটা লোকটা হঠাৎ বড় একা হয়ে গিয়েছে। কঠিন পরিশ্রমে আরাম কিনে নিয়েছে ঠিকই, বড় বাড়ি হয়েছে, দামি গাড়ি হয়েছে, দোষের মধ্যে কেবল প্রথম বিবাহবার্ষিকীর দিন রাগের মাথায় বিবিকে উদ্দেশ করে তিনবার ‘তালাক’ বলে ফেলেছে। ব্যস, বিরহের নিয়ম মেনে সেদিন থেকেই মন-পরিবর্তনের শুরু। আত্মকেন্দ্রিক রুক্ষতা সরে গিয়েছে, বিচ্ছিন্ন স্ত্রীকে কাছে পেলে সে এখন কবি হয়ে ওঠে, ধরা গলায় স্বীকার করে নেয় সমস্ত অপরাধ, বড় সংকোচ নিয়ে কাছে পেতে চায় ছেড়ে যাওয়া ভালবাসাকে। এদিকে, বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে শরিয়া নিয়মনীতি, দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকীর সন্ধেয় অত বড় কেকটা তাই পড়েই থাকে, কাঙ্ক্ষিত মানুষটার অপেক্ষায় আলো-আঁধারির চরাচরে বসে সে ক্রমশ ধ্বংস হয়ে যায়। স্মৃতিমালার তালে তালে বাজতে থাকেন গুলাম আলি, বাজতে থাকে ‘চুপকে চুপকে রাত দিন/আঁশু বাহানা ইয়াদ হ্যায়…’
আর, এভাবেই মৃত্যুর ৩১ বছর পর হঠাৎ বলদেব রাজ চোপড়ার শরিয়তি-বিরোধী ছবিতে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠেন এক উর্দু কবি। ভবঘুরে সে-কবি ফেরি করতেন প্রেম। রাজনীতির মঞ্চে দাঁড়িয়ে ডাক দিতেন মিলিজুলির।
কবি হজরত মোহনী। কিংবা, মৌলানা হজরত মোহনী।
পিতৃদত্ত নাম অবশ্য ছিল সৈয়দ ফজলুল হাসান। উত্তরপ্রদেশের যে উন্নাও হালে শিরোনামে আসে নাবালিকা-ধর্ষণ আর হিন্দুত্ববাদী আস্ফালনের জন্য, সেই উন্নাওয়েরই ছোট পল্লিশহর (কসবা) মোহনে জন্ম হয়েছিল এই প্রেমের ফেরিওয়ালার। জন্মতারিখ ১ জানুয়ারি, সালটা কেউ বলেন ১৮৭৫, সেই অর্থে, এ-বছর তাঁর সার্ধশতবর্ষ; আবার কোনও সূত্র অনুযায়ী, সেটা হিজরি ১২৯৮ সন, অর্থাৎ, ১৮৮০ কি ১৮৮১। ছোট থেকেই পড়াশোনায় অসম্ভব মেধা, কানপুর ভার্নাকুলার মিডল স্কুলে প্রথম হন, পরে ম্যাট্রিকেও রাজ্যের মধ্যে অঙ্কে সর্বোচ্চ নম্বর। আলিগড়ের মহামেডান অ্যাংলো-ওরিয়েন্টাল কলেজের গণিত বিভাগে তখন লেকচারার হিসেবে নিযুক্ত আছেন (কয়েক দশক পরে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হলে তার প্রথম সহ-উপাচার্য হবেন) বিশিষ্ট গণিতবিদ জিয়াউদ্দিন আহমেদ। তাঁর সুপারিশেই কলেজ থেকে বৃত্তি দেওয়ার ব্যবস্থা হল ফজলুলকে। নতুন শতকের শুরুতে যখন স্নাতক হলেন, ততদিনে সরকারের সমালোচনা করে কলেজ থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার নজিরও গড়ে ফেলেছেন।
কবিতা লিখতে শুরু করলে ‘তাখালুস’ (ছদ্মনাম) নিয়েছিলেন হাসরত মোহনী। ‘হজরত’ অর্থে ইচ্ছা, আর জন্মশহর ‘মোহন’-এর সঙ্গে মিলিয়ে ‘মোহনী’। নিষ্ঠাবান মুসলমান, হজ করতে গিয়েছেন একাধিকবার। আবার জন্মাষ্টমী উদযাপন দেখতে মথুরাতেও ছুটে যেতেন প্রবল উৎসাহে। কৃষ্ণপ্রেমে পাগল কবিটির কলম থেকে এক সময়ে বেরিয়েছে— “মথুরা কি নগর হ্যায় আশিকী কা/দম ভরতি হ্যায় আরজু ইসি কা/হার জারা-এ-শর-জমিন-এ-গোকুল/দারা হ্যায় জামাল-ই-দিলবারি কা”। উর্দু গজল আর শায়রির দুনিয়ায় ডুব দিতে দিতে ফজলুল হাসান ক্রমশ গেল হারিয়ে, প্রেম-মিলনের ভারতাত্মিক জ্যোতিষ্কের মতো ফুটে রইলেন সুফিবাদী হাসরত মোহনী – “ইশক নে জব সে কাহা হাসরত মুঝে/কোঈ ভি ক্যাহতা নেহি ফজলুল হাসান”।
১৯০৩ সালে শুরু করেছেন এক মাসিক পত্রিকা, নাম ‘উর্দু-ই-মওলা’। উর্দু কবিতা ও কবিদের নিয়ে গভীর আলোচনা, বিশ্লেষণের এক গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ তৈরি হয়েছে। তার সঙ্গেই ছাপা হচ্ছে রাজনৈতিক নিবন্ধ। ১৯০৪-এ হাসরত যোগ দিলেন জাতীয় কংগ্রেসে, পত্রিকার পাতাতেও মুসলিম প্রতিনিধিদের কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার জন্য ক্রমাগত অনুরোধ করে যাওয়া। এরই মধ্যে, ১৯০৮ সালে আলিগড় কলেজের এক ছাত্র মিশরে ব্রিটিশ নীতির কড়া সমালোচনা করে এক নিবন্ধ লিখলেন। নিবন্ধকারের নাম প্রকাশ করলেন না সম্পাদক হজরত, প্রত্যাশামতোই পত্রপাঠ কারাদণ্ড। মেয়াদ প্রায় দু-বছরের।
পরবর্তী কয়েক দশক চলবে এক ভবঘুরে রাজনীতিক-জীবন। ১৯১৬ সালে আরেকবার বন্দি হয়েছিলেন, আর পাঁচ বছরের মধ্যেই জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হয়ে উঠবেন তিনি। ১৯২১ সালের ডিসেম্বরে আহমেদাবাদে পরপর বার্ষিক অধিবেশন বসল জাতীয় কংগ্রেস আর মুসলিম লিগের। জাতীয় কংগ্রেসে সভাপতিত্ব করলেন হাকিম আজমল খান, আর মুসলিম লিগে, আশ্চর্যজনকভাবে, স্বয়ং হজরত মোহনী।
আরও পড়ুন : ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী রক্ষার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নাম মৈত্রেয়ী দেবী…
তখন অসহযোগ আন্দোলন চলছে, গ্রেপ্তার হয়েছেন মতিলাল নেহরু, চিত্তরঞ্জন দাস, এমনকী, মতিলালের ছেলে, তরুণ তুর্কি জওহরলালও। চৌরিচৌরার ঘটনা ঘটতে তখনও কিছুদিন বাকি, কংগ্রেসের সাড়ে তিন দশকের ইতিহাসে এই প্রথম দাবি উঠল পূর্ণ স্বরাজের। বেতোয়াক্কা দুঃসাহসের নেপথ্যে উঠে এল দুটো নাম— একজন ধর্মপ্রাণ হিন্দু বাঙালি সন্ন্যাসী, দ্বিজেন্দ্রকুমার নাগ থেকে হয়েছেন স্বামী কুমারানন্দ (তখন গান্ধীর নির্দেশে বেওয়ারে কৃষক-প্রতিরোধ গড়ে তুলছেন, পরে রাজপুতানা আর মধ্যভারতে বামপন্থী আন্দোলনের সংগঠক হবেন), আরেকজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান, কিশোর বয়সেই দীক্ষিত হয়েছিলেন কাদিরি সিলসিলা আর চিস্তি সবরি সিলসিলায়, সৈয়দ ফজলুল হাসান থেকে হয়ে উঠেছেন মৌলানা হজরত মোহনী। শোনা যায়, এই অধিবেশনে ‘কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো’-র প্রতিলিপিও বিলি করেছিলেন কুমারানন্দ। গান্ধীর আপত্তিতে সে-দাবি তখনকার মতো খারিজ হয়ে যাবে বটে, দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যাবে মুক্তিসংগ্রামী সমাজ, কিন্তু তরুণ জনমানসে জাগিয়ে দেবে উথালপাথাল আত্মবিশ্বাস। ক-দিন পরের মুসলিম লিগের অধিবেশনেও পূর্ণ স্বরাজের কথা তুলবেন সভাপতি, ডাক দেবেন এক ঐক্যবদ্ধ ভারতীয় প্রজাতন্ত্র গঠনের, পূর্ণ সমর্থন জানাবেন দক্ষিণের মোপলা বিদ্রোহের প্রতি।
সে-দশকটা ছিল বিশ্বদর্শনের দশক। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর গণমাধ্যম আর বিনোদন প্রযুক্তির উল্কা-বেগী উত্থান ঘটেছে, পাশ্চাত্য দুনিয়া উন্মুক্ত হয়ে যাচ্ছে ভারতীয় তরুণদের কাছে। রুশ বিপ্লবের খবর এসেছে। সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে, রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে অন্যত্রও শুরু হয়েছে অসন্তোষ, সেসব খবরও উপনিবেশবাদের শিকলের ফাঁক দিয়ে ঢুকে পড়ে ইতিউতি। সম্ভাব্য সমাজতান্ত্রিক আবহাওয়ার আঁচ পেয়ে ভয় পেতে শুরু করেছে ব্রিটিশ। ১৯২৫-এর ডিসেম্বরে ভারতের মাটিতে প্রথম ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠার আগে থেকেই দেশ জুড়ে হরেক ছোট-বড় কৃষক সংগঠন, মজদুর সংগঠন কাজ শুরু করে দিয়েছিল। বিচক্ষণ হজরত মোহনী সে-ঢেউ থেকে নিজেকে দূরে রাখেননি। ১৯২২ থেকে ১৯২৪ অবধি কাটল পুনের জারবেদা জেলে। পরের বছর, কানপুরে তাঁর বাড়িতেই শুরু হয়ে গেল ডিসেম্বরের সর্বভারতীয় বামপন্থী সম্মেলনের প্রস্তুতি। কংগ্রেসের একসময়কার একনিষ্ঠ সদস্য, মুসলিম লিগের ভূতপূর্ব সভাপতি এবার নির্বাচিত হলেন কমিউনিস্ট পার্টির অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতি— ভারতীয় রাজনীতিতে এমন জটিল বাউণ্ডুলে মিশেল আর সেভাবে দেখা যায়নি বোধহয়।
এমনকী, এরই কাছাকাছি কোনও এক সময়ে ফরাসি বিপ্লব-জাত স্লোগান ‘ভিভা লা রেভোল্যুশন’-এর ভারতীয়করণও করে ফেলেছেন প্রেমের কবি হাসরত, আরও বছর কয়েক পর অ্যাসেম্বলি হলে বোমা ছুড়তে গিয়ে, তারপর দিল্লি হাই কোর্টে যৌথ বিবৃতি দেওয়ার সময়েও, যে স্লোগানকে অমরত্ব দিয়ে যাবেন ভগৎ সিং-বটুকেশ্বর দত্তরা— ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’।
এরপর, তিনের দশকে ফ্যাসিবাদী হায়েনার দাপাদাপি আর সাম্রাজ্যবাদী সিংহের হুহুংকারে যখন আরও এক আকালের প্রমাদ গুনছে বিশ্ব-রাজনীতি, তখন ইউরোপের মনস্বী সাহিত্যকুলের ফ্যাসিবাদ-বিরোধী সাংস্কৃতিক সংগ্রামের ধারাতেই তৈরি হচ্ছে জোরদার হচ্ছে ভারতীয় প্রগতিশীল সাহিত্য আন্দোলন। লন্ডনে বসে যে কাজ শুরু করেছিলেন মূলকরাজ আনন্দ, সাজ্জাদ জাহির, হীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের মতো প্রবাসী ছাত্ররা, সে-কাজ ধারে-ভারে বাড়ল এদেশেও, বিশেষত অবিভক্ত বাংলায় আর যুক্তপ্রদেশের লক্ষ্ণৌতে। বামপন্থী ধারার সেই প্রগতিশীল লেখক সংঘই যখন, স্বাধীনতা-লাভের কিছু আগে-আগে, সাহিত্যে অশ্লীলতার বিরোধিতা করতে গিয়ে কাঠগড়ায় তোলার ব্যবস্থা করছে সদত হসন মন্টোর মতো কাউকে (১৯৪৫ সালের হায়দ্রাবাদের সম্মেলনে), তখনও সেই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মুখ হিসেবে উঠে আসছে ‘ধর্মভীরু’ হজরত মোহনীরই নাম।
আবার এই মানুষকেই কয়েক বছর পরে দেখা যাবে, কাশ্মীরকে বিশেষ সুবিধা-দানের ভূত-ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে। ততদিনে ভারত-ভাগ হয়ে গিয়েছে, সংখ্যালঘুর স্বার্থে ভারতেই থেকে গিয়েছেন হজরত মোহনী। সংবিধান রচনা চলছে, গণপরিষদে তাঁর মতো মানুষের উপস্থিতি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। যদিও সরকারি সুবিধা-টুবিধার ধার ধারেন না, মসজিদে রাতটুকু কাটিয়ে, আর পাঁচটা লোকের সঙ্গে এক টাঙ্গায় চড়ে পার্লামেন্টে চলে যান। তৃতীয় শ্রেণির রেলকামরায় যাতায়াত করেন, কারণ জিজ্ঞাসা করলে বলেন, চতুর্থ শ্রেণি নেই, তাই। ১৯৪৯ সালের অক্টোবরে জোর তর্ক বাঁধল জম্মু-কাশ্মীরের ভূতপূর্ব প্রধানমন্ত্রী নরসিংহ গোপালস্বামী আয়েঙ্গারের সঙ্গে।
বস্তুত, ২০১৯-এ দ্বিতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসে যখন ৩৭০ ধারা বাতিল করে দীর্ঘদিনের ‘স্বপ্নপূরণ’ করল বিজেপি সরকার, সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলাকালীন বুদবুদের মতো উঠে এসেছে হজরত মোহনীর নাম। স্থান-কাল-পাত্রের প্রেক্ষিতকে ভুলিয়ে দিয়ে দুই ভিন্ন মেরুর মতাদর্শের আপত্তিকে এক করে দেখার সুকৌশলী চেষ্টাও হয়েছে, ইন্টারনেট ঘাঁটলে দিব্যি সেসব চোখে পড়ে। কিন্তু, ১৯৪৯ সালের ১৭ অক্টোবর, পরিষদে আয়েঙ্গারের ৩০৬এ ধারার (পরে, ৩৭০) প্রস্তাবনার প্রতিক্রিয়ায় হজরত মোহনীর বক্তব্য যদি একবার ফিরে পড়া যায়, তাতে তিনি যে কাশ্মীরের এই সাংবিধানিক উপহারের বিরোধী ছিলেন, এমন সরলীকরণ কেবল ইতিহাস-বিকৃতিই হবে—
“আমি শুরুতেই এটা পরিষ্কার করে দিতে চাই যে, আমার বন্ধু শেখ আবদুল্লাকে যেসব সুবিধা দেওয়া হল, তারও যেমন আমি বিরোধী নই, তেমনই মহারাজাকে এ-রাজ্যের প্রধান শাসক হিসেবে মেনে নিতেও আমার কোনও অসুবিধা নেই। মহারাজাকে যদি আরও কিছু শাসন ক্ষমতা দেওয়া হয়, তাতেও আমি খুশিই হব। আমার আপত্তি কেবল এই জায়গায় যে, কেবল এই শাসকের জন্যই কেন এই বিশেষ ব্যবস্থা?”
মোহনীর আপত্তির গোড়ায় আসলে ছিল বরোদা রাজ্যের ‘অন্যায়’ (অন্তত তিনি তেমনটাই মনে করতেন) সংযুক্তি। ‘কাশ্মীর যদি সুবিধা পায়, বরোদা কেন নয়, যেখানে বরোদার শাসনব্যবস্থা ভাল?’ এই ছিল তাঁর সোজাসাপটা প্রশ্ন, যার যুক্তিসংগত উত্তর দিতে পারেনি সে-দিনের পরিষদ। অবশ্য, ইতিহাসের ফলাফল বিচার করলে তাঁর এই অবস্থানও প্রশ্নাতীত নয়। কোন প্রেক্ষিতে জম্মু-কাশ্মীরকে বিশেষ ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল, বরোদার পরিস্থিতির সঙ্গে যে তার কোনও তুলনাই হয় না, সে বিষয়ে তিনি অবগত ছিলেন না, একথা বিশ্বাসযোগ্য নয়। তার উপর, যিনি বরাবর সোভিয়েত সোশ্যালিজমের ধাঁচে ভারতেও এক যুক্তরাষ্টীয় পরিকাঠামো দেখতে চেয়েছেন, সেখানে কতিপয় রাজতান্ত্রিক শাসনের হয়ে তাঁর এমন সওয়াল-নীতি, তা যতই পরিস্থিতি-উদ্ভূত হোক, ইতিহাসের কাছে তাঁকে জবাব দিতে বাধ্য করে।
ইসলাম আর সাম্যবাদে আশ্চর্য সাযুজ্য খুঁজে পাওয়া হজরত মোহনী, অবারিত প্রেম আর কঠিন বিপ্লবকে বুকে ধারণ করা হজরত মোহনী, এক ফজলুল হাসানের মধ্যে একাধিক হজরত মোহনী— এ-বছরটা তাঁর সার্ধশতবর্ষ হোক ছাই না-হোক, উপমহাদেশের জটিল রাজনীতি-প্রতিবেশকে বুঝতে এই আরেক ‘লাল মৌলানা’-কেও বুঝতে চাওয়া জরুরি, আরও জরুরি বোধহয় তাঁর সঙ্গে সংলাপে যাওয়া।