ছোট থেকেই স্কুলে যাতায়াতের পথে রাস্তায় চোখে পড়ত হলুদ রঙের হোর্ডিং। মাঝখানে একটা উল্টো করা লাল ত্রিভুজ। তার দু’পাশে কালো রঙে কার্টুনের মতো করে আঁকা বাবা-মা আর দুই ছেলেমেয়ের মুখ। সম্ভবত নিচে লেখা থাকত, ‘একটি বা দু’টি, তার বেশি একদম নয়। ছোট পরিবার সুখী পরিবার’। এই সরকারি বিজ্ঞাপনের মাথামুণ্ডু বুঝতে না পারলেও, এটা বুঝতে পারতাম, এমন কিছু বলতে চাওয়া হচ্ছে, যেটা পরিষ্কার করে বলতে হয়তো বাধছে কোথাও। বড় পরিবার যে কেন ‘অ-সুখী’, সেটা ভাবতে ভাবতেই পৌঁছে যেতাম স্কুলে।
সাতের দশকে চোখে পড়ল আরও একটা হলুদ রঙের প্যাকেটের বিজ্ঞাপন— ‘নিরোধ’। মাত্র পনেরো পয়সায় তিনটে। পাশাপাশি দেশে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে। মানে, গণতন্ত্র আর স্বতন্ত্র স্বরের কণ্ঠরোধ। এই সময়ে দেখা যায়, প্রায় ষাট লক্ষ গরিব মানুষকে একরকম জোর করে নির্বীজ করার প্রক্রিয়া। পরিসংখ্যানবিদদের মতে, এই সংখ্যা নাৎজিদের নির্বীজ করার সংখ্যার পনেরো গুণ বেশি। তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার নির্দেশিত জনসংখ্যাবৃদ্ধি রোধের প্রক্রিয়ায় ভুল অস্ত্রোপচারের কারণে মারা যান দু’হাজার মানুষ। তাঁদের বেশিরভাগই মহিলা। যদিও বৈজ্ঞানিকদের মতে, নির্বীজকরণ প্রক্রিয়া পুরুষদের ওপরেই করা সহজ, তা সত্ত্বেও, প্রতিবাদের স্বর ক্ষীণ হওয়ার কারণে এর বলি হন মহিলারাই।
মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে পরিবার পরিকল্পনার প্রয়োজন বুঝল না কেন? কেন রাখ-ঢাক করে তৈরি হল কন্ডোমের বিজ্ঞাপন? কেন ওষুধের মোড়কের মতো করে তৈরি হল সরকারি কন্ডোমের প্যাকেট? অদ্ভুত ব্যাপার, ১৯৪০ থেকেই কন্ডোম পাওয়া যায় ভারতে। ১৯৬৮-তে দেশের চল্লিশ কোটি মানুষের জন্য কন্ডোম ছিল মাত্র দশ লক্ষ। তাই, চল্লিশ কোটি কন্ডোম আমদানি করা হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান আর কোরিয়া থেকে। নামকরণ করা হয়- ‘নিরোধ’।‘কামসূত্র’-র দেশ হলেও যৌনক্রিয়া বা সঙ্গম প্রসঙ্গে কোনও কথা উঠলেই লজ্জায় নিজের জিভ কামড়ে ফেলেন দেশের অধিকাংশ মানুষ। এই লজ্জা আর ভীতির কারণেই বোধহয় যৌনমিলনের প্রক্রিয়া পড়াতে বেগ পেতে হয় স্কুলেও। সবচেয়ে নিন্দনীয় হয়ে ওঠেন মহিলারাই। তাঁদের এই সম্পর্কে কথা বলার কোনও অধিকার একেবারেই ভাল চোখে দেখে না সমাজ।
নয়ের দশকে ভারতে ‘লিন্টাস’ বিজ্ঞাপন সংস্থার প্রধান অ্যালেক পদমসি অভিনেত্রী পূজা বেদি আর মার্ক রবিনসনকে ব্যবহার করে যখন পাতার পর পাতা ঠাসা সাদা-কালো ছবি দিয়ে ‘ডেবোনেয়ার’ পত্রিকার পাতা ভরান ‘কামসূত্র’ (কেএস) কন্ডোমের বিজ্ঞাপনে, আক্রমণ করা হয়েছিল তাঁকেও। পরবর্তীকালেও দেখা যায়, এই ধরনের কোনও ছবি বা বিজ্ঞাপন, অথবা জনসমক্ষে প্রেমের প্রদর্শন দেখলে ভ্রুকুঞ্চিত হয় দেশের ‘নৈতিক মাফিয়া’-র। তাঁদের মধ্যে জাগ্রত হয় সমাজের ঠিক-বেঠিকের গণ্ডি নির্ধারণ করে দেওয়া পুলিশি ভূমিকা। এছাড়া, মাত্র সাত বছর আগে, ২০১৭-য়, নৈতিকতার অজুহাতে ভারত সরকার সকাল ছ’টা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত ভারতীয় টেলিভিশনে কন্ডোমের বিজ্ঞাপন দেখানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
আশ্চর্যের ব্যাপার, কন্ডোম যে শুধু জনসংখ্যাবৃদ্ধি রোধের জন্য ব্যবহার করা হয়, তা কিন্তু নয়। যৌনরোগ আর ‘এডস’ সংক্রমণ থেকেও রক্ষা করা যার কাজ, তার বিজ্ঞাপনের প্রতি কীসের এত অনীহা? বিজ্ঞাপন আর ছবি চিরকালই সমাজের কুসংস্কার আর কু-দৃষ্টির তোয়াক্কা না করে, সময়ের থেকে এগিয়ে রাখতে চেষ্টা করেছে দেশের মানুষকে। বুঝতে শিখিয়েছে যৌনমিলনে মহিলাদের পরিপূর্ণ, চূড়ান্ত তৃপ্তির সহায়কও কন্ডোম। তাই, কন্ডোমের ব্যবহার এগিয়ে রাখে তাঁদেরই।
‘নেটফ্লিক্স’-এ ‘লাস্ট স্টোরিজ’-এর করণ জোহর পরিচালিত একটি ছবিতে কিয়ারা আদভানির, তার শ্বশুর-শাশুড়ির সামনেই যৌন উত্তেজনার প্রথম পরিপূর্ণ তৃপ্তির অনুভবের দৃশ্য আজও বিচলিত করে পুরুষ দর্শককে। কিন্তু, প্রায় দু’দশক ধরে এই উত্তেজনার কারণেই মহিলারা চিৎকার করে গলা ফাটিয়েছেন বিজ্ঞাপনে। দু’হাজার চারে ‘মুডস’ কন্ডোমের টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে দেখি এক প্রেমিক যুগলের অন্তরঙ্গতা আর যৌন উত্তেজনার দৃশ্য চোখ মেলে দেখতে থাকা মহিলাদের। তখন থেকেই, বিজ্ঞাপনে দেখা যায় নিজস্ব চাহিদার কথা জোর দিয়ে বলতে পিছপা নন মহিলারা। ২০০৩-এর ‘কামসূত্র’-র টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে দেখা যায় আর এক প্রেমিক যুগলকে। হোটেলের ঘর ছেড়ে দেওয়ার মুহূর্তে তারা আরও এক কি দু’ঘণ্টা বাড়তি সময় চান কর্তৃপক্ষের কাছে। শেষে, চান একটা গোটা দিন। বিজ্ঞাপনে যৌন সংগমের উত্তেজনা দীর্ঘস্থায়ী করার আশ্বাস দেয় ‘কামসূত্র’ কন্ডোম। বেশিরভাগ ভারতীয় বিজ্ঞাপনে মহিলারা পালন করেন দায়িত্ব সচেতন মা বা স্ত্রী-র ভূমিকা। অথবা খোঁজেন, তাঁদের নিরাপত্তাহীন জীবনে মুক্তির চাবিকাঠি। কিন্তু কন্ডোমের বিজ্ঞাপনে তাঁরা স্বার্থপর। পিছিয়ে থাকতে রাজি নন তাঁরা। তাঁদের পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গে সংগমে, তাঁদের মতোই চান নিজেদের জন্যেও অপরিসীম, পরিপূর্ণ আনন্দ। বিজ্ঞাপনকর্মী আর বিজ্ঞাপনদাতা, দুই-ই জানেন, গর্ভাবস্থা প্রতিরোধের ভূমিকার জন্যেই প্রাথমিকভাবে কন্ডোমের ব্যবহার হলেও, ব্র্যান্ডকে এগিয়ে রাখতে গেলে এগিয়ে রাখতে হবে তাঁদের, যাঁরা শারীরিক তৃপ্তির আগে, মানসিক তৃপ্তি পাবেন ব্র্যান্ডটির এই আশ্বাসে। তাই, পরিবার পরিকল্পনার কথা নিশানায় রেখে একদিন যে সরকারি কন্ডোম ‘নিরোধ’-এর বিজ্ঞাপনে দেখেছি, দুই ছেলেমেয়ের সংসারে তাদের সামনেই বাবা, মা-কে বাজার থেকে ফিরলে ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করে, “আমার জিনিসটা এনেছ তো?”, সেই পিতৃতান্ত্রিক মনোভাব থেকে অনেকটাই দূরে এগিয়ে থাকে আজকের কন্ডোমের বিজ্ঞাপন। পরবর্তীতে সেই ‘নিরোধ’-এর বিজ্ঞাপনেই এক প্রেমিক যুগলকে বাড়ি ফিরতে দেখা যায়। হঠাৎই অসাবধানতায় পুরুষটির হাত থেকে পড়ে যায় ‘নিরোধ’-এর প্যাকেটটি। উঁচু তলা থেকে সিঁড়ি বেয়ে, শরীরকে নানাভাবে কাজে লাগিয়ে, দৌড়-ঝাঁপ করে অবশেষে হাতে পায় প্যাকেট। বিজ্ঞাপনের শেষে তাকে বলা হয় “মুকদ্দর কা সিকন্দর” বা ‘সৌভাগ্য যার হাতের মুঠোয়’।
মহিলা-নির্ভর কন্ডোমের বিজ্ঞাপনে, তাঁদের পরিপূর্ণ আনন্দ উপভোগের বার্তা দিয়ে কন্ডোম ব্যবহারের পদ্ধতিও পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দিচ্ছে ব্র্যান্ডগুলো। পুরুষ সঙ্গীকে বিছানায় কন্ডোম নিয়ে আসতে বলতে তাঁরা যেন লজ্জা না পান। সংকোচ না করেন। অনেক বছর আগে, কন্ডোম-এর ব্যবহার নিয়ে একটা অসাধারণ রেডিও বিজ্ঞাপন শুনেছিলাম, আজও মনে আছে। একটি লোক রেকর্ডিং স্টুডিওতে মাইক্রোফোনে বলছেন কন্ডোম কীভাবে পরতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, তিনি ব্যবহার করছেন মাইক্রোফোনটাই। মাইক্রোফোনটা কাপড় দিয়ে চেপে রেখে কথা বলে যাচ্ছেন। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর গলার শব্দ পালটে যাচ্ছে। যেন কেউ রুমাল দিয়ে তাঁর মুখ বন্ধ করে দিয়েছে। এভাবেই তিনি বলে যাচ্ছেন, গলার আওয়াজ যদি ‘এডস’ ভাইরাস হয়, তাহলে কন্ডোমের ব্যবহার কী ভাবে বাঁচাতে পারে তাঁকে।
২০০৭-এ, ভারতে ‘ম্যানফোর্স’ কন্ডোম প্রথম নিয়ে আসে চকোলেট স্বাদের কন্ডোম। মহিলাদের কথা ভেবেই, অন্যান্য ব্র্যান্ডের ‘রিবড’ আর ‘ডটেড’ কন্ডোমের থেকে এগিয়ে থাকতে তারা পরপর তৈরি করতে থাকে চেরি, কফি, জুঁই ছাড়াও নানা ফলের স্বাদে কন্ডোম। এই ‘সুস্বাদু’ কন্ডোম যে শুধু রবারের স্বাদ ভুলিয়ে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে ‘ওরাল’ যৌনক্রীড়ার প্রক্রিয়া, তা-ই নয়, নিরাপত্তা নিশ্চিত করে যৌন-রোগের সংক্রমণ থেকেও। এভাবেই, দেশের একহাজার থেকে ১৩০০ কোটি টাকার কন্ডোমের বাজারে পঞ্চাশ থেকে সত্তর শতাংশ অংশ অধিগ্রহণ করে ‘ম্যানফোর্স’ কন্ডোম। পরে ‘কামসূত্র’ আমের স্বাদের কন্ডোমের টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে দেখি একটি মেয়ে আমগাছের নিচে দাঁড়িয়ে লাফিয়ে ছিঁড়ে নিতে চেষ্টা করে ঝুলন্ত পাকা আম। একটি ছেলে এগিয়ে এসে তাকে তুলে ধরে সাহায্য করে আম পাড়তে। মেয়েটি আমের গাছ থেকে ছিঁড়ে আনে ‘কামসূত্র’ আমের স্বাদের কন্ডোম। এখানেও নারীই ঠিক করে নেয় তার কোন স্বাদ পছন্দ। এগিয়ে থাকে সে-ই।
২০১০-এর মাঝামাঝি ‘ম্যানকাইন্ড ফার্মা’ তাদের ‘ম্যানফোর্স’ কন্ডোমের বিজ্ঞাপনে সানি লিওনেকে ব্যবহার করে ব্র্যান্ডের মুখপাত্র হিসেবে। চূড়ান্ত যৌন আবেদনময়ী নারী এখানে পুরুষ ভোক্তাকে উত্তেজিত করে তুললেও, বিজ্ঞাপনের নিশানার কেন্দ্রে ছিল নারীর যৌন সুখ। ‘ডুরেক্স’-এর বিজ্ঞাপনে দেখা গেল রনবীর সিং-এর মতো জনপ্রিয় চিত্রতারকাকে যৌন-স্বাধীনতা আর কন্ডোমের ব্যবহার নিয়ে কথা বলতে। ‘ডুরেক্স’-এর একটি সমীক্ষা অনুযায়ী ‘প্রত্যেকবার যৌনক্রিয়ার সময়ে সত্তর শতাংশ মহিলা চূড়ান্ত যৌন সুখ অনুভব করেন না।’ এর থেকেই তৈরি হয় সামাজিক মাধ্যমের জন্য তৈরি তাদের নতুন বিজ্ঞাপনমালা —#অরগ্যাজমইনইকুয়ালিটি। এখানে পূজা বেদি যৌনক্রিয়া এবং আনুসাঙ্গিক বিষয়ে কথা বলেন। এর ঠিক পরেই, ‘স্কোর’ কন্ডোম তৈরি করে আরও একটি বিজ্ঞাপনমালা #ইন্টারন্যাশনালফিমেলঅরগ্যাজমডে। এর সূত্র ধরেই ‘স্কোর’ বাজারে নিয়ে আসে এক যৌন উদ্দীপক ‘জেল’ যার সাহায্যে সহজেই চূড়ান্ত উত্তেজনা অনুভব করবেন মহিলারা। ‘স্কোর’-এর আর একটি বিজ্ঞাপনে দেখি কপালের টিপ-এর প্রতি নারীর আকর্ষণ সম্বল করে ‘ডটেড’ কন্ডোমের বিজ্ঞাপনমালা— ‘উইমেন লাভ ডটস’। এই সমস্ত নারীকেন্দ্রিক বিজ্ঞাপন কিন্তু প্যাকেটের উপরে চিরাচরিত লাস্যময়ী, স্বল্পবাস মহিলাদের ছবি ব্যবহার করে না আর। তাই, একই পণ্যে নারী আর পুরুষ, উভয়কেই রাখে বক্তব্যের নিশানায়।‘কামসূত্র’-এর বিজ্ঞাপনে দেখি প্রেমিক যুগলের মিলিত সুখের তুলনায় এগিয়ে থাকে শুধুমাত্র নারীর সম্ভোগসুখ। আগের বিজ্ঞাপনের যৌনক্রিয়ায় দীর্ঘস্থায়ী সময়ের কথা না বলে, বলা হয় নারীর অন্তহীন সুখের কথা।‘স্কোর ও’ ব্র্যান্ডটিও সরাসরি বিজ্ঞাপনের নিশানায় রাখে মহিলাদের। এইভাবে পণ্যের বাজার বিস্তারিত হয় স্বাভাবিকভাবেই। এভাবেই শুকনো কথায় নিরাপদ যৌনক্রিয়া বা জনসংখ্যাবৃদ্ধি রোধের কথা না বলে, সম্ভোগ উপভোগ করার দিকেই ইঙ্গিত করে আজকের কন্ডোমের বিজ্ঞাপন।
ভারতীয় কন্ডোমের বিজ্ঞাপন নানা স্তর পেরিয়ে এসেছে স্বাভাবিকভাবেই। শুরু হয়েছিল জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধ করতে পরিবার পরিকল্পনার উপদেশ দিয়ে। তারপর, আসে নিরাপদ যৌনক্রিয়ার সঙ্গী হিসাবে। আর এখন, তারা বলে নারীর স্বতন্ত্র সুখের কথা। এখানে নারী কোনও খেলার পুতুল নয়, আবার বিশেষভাবে লাস্যময়ীও নয়। যে দেশে যৌনতা পর্দায় ঢাকা অন্দরমহলের ব্যাপার, যেখানে আজও মেট্রো স্টেশনে প্রেমিক যুগলের চুম্বনকে প্রকাশ্যে নিন্দা করে গোপনে সেই ছবি দেখে সুখ অনুভব করেন মানুষ, সেই দেশে কন্ডোমের বিজ্ঞাপন এগিয়ে থেকেছে নিঃসন্দেহে। প্রজননের জন্য যৌনক্রিয়া থেকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে পরিপূর্ণ সুখের জন্য যৌনক্রিয়ার সংজ্ঞা নিশ্চিত করেছে তারা।
ছোটবেলায় ফ্র্যাঙ্ক ওয়াইল্ডারের নাম শুনিনি। অনেক পরে জেনেছি ১৯৬৮-তে তিনিই পরিবার পরিকল্পনার চিহ্ন হিসাবে উল্টো লাল ত্রিভুজের ব্যবহার নিশ্চিত করেন আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা আর ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ; ইজরায়েল, জাপান আর দক্ষিণ কোরিয়া বাদে সমগ্র এশিয়া; আর অস্ট্রেলিয়া-নিউ জিল্যান্ড বাদে সমগ্র ওশানিয়ায়। উল্টো ত্রিভুজ নারীত্ব, মাতৃত্ব আর চাঁদের প্রতীক। এর বিপরীতে আছে সূর্য আর পৌরুষের প্রতীক—সোজা ত্রিভুজ। লাল ত্রিভুজ আর তার সংকেত আজ আর নেই। তার প্রয়োজনও নেই আর। এক সময়ের ‘মুডস’ কন্ডোমের বিজ্ঞাপনে দোকানের কাউন্টারে দাঁড়িয়ে এক পুরুষের আমতা আমতা করে, ঢোঁক গিলে আজ আর চাইতে হয় না ‘ওই’ জিনিসটা। আজকের মহিলারা জানেন তাঁদের কী চাই শুধু নয়, কোনটা চাই। তাই, সেটা চাইতে বা তা নিয়ে খোলামেলা কথা বলতে আজ আর কোনও সংকোচ বোধ করেন না তাঁরা।