ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2024

 
 

ডাকবাংলায় আপনাকে স্বাগত

 
 
  • আউট অফ প্রিন্ট : পর্ব ২


    পৃথ্বী বসু (May 25, 2024)
     

    ভালো লেগেছিল

    বিবেকানন্দ রোডে গাড়িটা দাঁড়িয়ে। সন্ধে হব-হব। জিনসের জ্যাকেট গায়ে চুল ঠিক করতে-করতে গাড়িতে উঠলেন তিনি। রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত। গন্তব্য অক্রূর দত্ত লেন। পিছনে আমি, জড়সড়। ঝনঝন করে খুচরো পয়সা পড়ার শব্দ। তাঁর পকেট থেকে আচমকাই পড়েছে সব। আস্তে-আস্তে সামান্য নীচু হলেন। একটা-একটা করে খুচরো উঠছে তাঁর হাতে। আমি তখনও চুপ, আড়ষ্ট। এবারে গম্ভীর গলা। ‘আমায় প্রথম দেখছ, কিছু বলতে ইচ্ছে করছে না?’ প্রথম দেখছি বললে, মিথ্যা বলা হত। প্রথম দেখছি, বলিনি তাই। অথচ বলার ছিল, বলেওছিলাম— ‘আপনি অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন, তাঁকে কাছ থেকে দেখেছেন, মিশেছেন, এটা ভাবলেই আহ্লাদিত হই!’ কিঞ্চিৎ অভদ্রতা হয়েছিল কি? জানি না। হয়তো উনিও এই কথাটা আশা করেননি। যেমন করেননি সন্ধ্যা দে। তাঁর গল্‌ফ গ্রিনের ফ্ল্যাটে এক সন্ধ্যায় আমরা দুই বন্ধু গিয়ে সারাক্ষণ অজিতেশ-মুগ্ধতায় আচ্ছন্ন ছিলাম। তিনি নিজের কথা বলছিলেন। মন দিয়ে শুনিনি। তাঁর বাড়িতে দেখা একটা ছবিই মাথার ভেতরে গেঁথে গেছিল সেদিন— বরফের চাঁই, তাতে শোয়ানো আছে অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেহ। মৃত্যুর শীতলতাকে ছাপিয়ে যাওয়া ওই রাজকীয় ভঙ্গি— আজও আমায় তাড়া করে…


    এলোমেলো কথা দিয়ে শুরু করলাম বটে, তবে এ-লেখার উদ্দেশ্য ভিন্ন। দমদম থেকে বেলেঘাটা— কিংবা আরও নানান অঞ্চল, যা অজিতেশ-সান্নিধ্যে হয়ে উঠেছিল ‘ঐতিহাসিক’, সেই ইতিহাসের রূপকথা যদি তাঁর মৃত্যুর তিরিশ বছর পর কোনও বালকের চোখে জীবন্ত হয়ে ওঠে, তার আর পালানোর উপায় থাকে না। পর্দা পড়ে, পর্দা ওঠে। বদলে-বদলে যায় শুধু দৃশ্যপট, যা যুগপৎ ধূসর এবং বহুবর্ণময়। বছর চারেক আগে কফি হাউসের আড্ডায় একটা বই হাতে আসে। ‘অজিতেশের শেষ ঠিকানা’; লেখিকা— রত্না বন্দ্যোপাধ্যায়। এই অন্তরঙ্গ স্মৃতিচারণায়, অজিতেশপ্রীতি যেন এক লাফে আরও খানিকটা বেড়ে যায়। স্বার্থপরতা-আত্মকেন্দ্রিকতার হেজে-যাওয়া পৃথিবীতে মূর্ত হয়ে ওঠে এমন এক ব্যক্তিত্ব— যার ‘বিচিত্র সৌন্দর্য’ ব্যতিক্রমী, কিন্তু মায়াময়।

    সেই বই থেকে দুটো ঘটনার কথা লিখি :

    ১. দীর্ঘদিন হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর অজিতেশ বাড়ি ফিরছেন। ডাক্তারের নির্দেশ, দিন পনেরো বেড-রেস্ট। সঙ্গে মাসখানেক থিয়েটার বন্ধ। তাঁকে ছাড়াই তখন নান্দীকার শো করছে রঙ্গনায়। বিকেলে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েই করুণ গলায় অজিতেশ অনুরোধ করেন, তিনি একা একবার রঙ্গনায় উঁকি মেরে চলে আসতে চান। অনুরোধ মঞ্জুর হয়। কিন্তু যখন বাড়ি ফেরেন, তখন রাত পৌনে দশটা। উদ্‌বিগ্ন রত্নাদেবী কারণ জানতে চাওয়ায় অজিতেশের কৈফিয়ত— ‘না… মানে ভাবলাম এতদিন পরে রঙ্গনায় এলাম, আবার তো কতদিন আসব না… তাই আজ অভিনয়টা করেই যাই…’

    থিয়েটারের প্রতি এই ভালবাসা অকল্পনীয়!

    ২. বন্ধুর বিয়ে। অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় নিমন্ত্রিত। হাতে যা টাকা আছে, তেমন কোনও উপহার কেনা সম্ভব নয়। অথচ বন্ধুর বিয়ে, যেতেই হবে। হাতে-থাকা টাকার মধ্যে দুপুরের খাওয়া আছে, সঙ্গে যাতায়াত খরচ। চূড়ান্ত জটিল পরিস্থিতি। খালি হাতে যেতেও লজ্জা। চমৎকার এক উপায় বার করলেন তিনি। সেদিনের সমস্ত সংবাদপত্র কিনলেন, রঙিন কাগজে মুড়লেন, আর সঙ্গে লিখে দিলেন, ‘আজ পৃথিবীতে কতশত ঘটনা, কিন্তু তোর কাছে আজ শুধু তোর বিয়ের দিন!’

    এমন আশ্চর্য উপহার আর কখনও কেউ দিয়েছিল কি না কাউকে, জানা নেই!

    এই অচেনা অজিতেশকে আমার ভাল লেগেছিল। রত্না বন্দ্যোপাধ্যায়ের বই থেকেই প্রথম জানতে পারি, অজিতেশ একখানা উপন্যাসও লিখেছিলেন— ‘ভালো লেগেছিল’, এই নামে। চমকে উঠি। অতঃপর কৌতূহল বাড়ে, কিন্তু সে-বই কিছুতেই হাতে আসে না। এখানে-ওখানে ছানবিন চালিয়ে ব্যর্থ হই। অবশেষে অগতির গতি সেই জাতীয় গ্রন্থাগার।

    ১৯৮৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ভুবনলক্ষ্মী প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় ‘ভালো লেগেছিল’। প্রকাশক অভীক চট্টোপাধ্যায় এবং গৌতম গঙ্গোপাধ্যায়। প্রচ্ছদ এবং অলংকরণ করেছিলেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। দাম ছিল দশ টাকা। লাইব্রেরির বই যেহেতু, মলাট দেখার সৌভাগ্য আমার হয়নি। বইটা পাতলা, চল্লিশ পাতার কাছাকাছি। উপন্যাস শুরুর আগে ‘অজিতেশ’ নামে শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা, তার পরে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের নাতিদীর্ঘ ভূমিকা, এবং পরিশেষে অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনপঞ্জি। বই উৎসর্গ করা হয়েছে দেখছি, অজিতেশের মা-বাবাকে— ‘পিতাঠাকুর স্বর্গত ভুবনমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মাতৃদেবী শ্রীযুক্তা লক্ষ্মীরাণী বন্দ্যোপাধ্যায়-এর উদ্দেশে’। যদিও এই বই যখন প্রকাশিত হচ্ছে, তখন অজিতেশ আর জীবিত নেই। তাঁর মৃত্যুতারিখ ১৪ অক্টোবর ১৯৮৩।


    ‘ভালো লেগেছিল’ উপন্যাসের মুখবন্ধে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছিলেন— ‘তিনি কবিতা রচনা করতেন অনেকদিন থেকেই, কিন্তু আমাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনায় তাঁর কবিতার প্রসঙ্গ উঠলেই তিনি লজ্জিত হয়ে পড়তেন খুব। এতদিন পর জানা গেল, তিনি একটি উপন্যাসও রচনা করেছিলেন… ছোট-ছোট টানে তিনি ফুটিয়েছেন চরিত্রগুলি, কাহিনীর মধ্যে ফুটে উঠেছে গভীর মমত্ববোধ। উপন্যাসটির নাম “ভালো লেগেছিল” কিন্তু এর অন্তর্নিহিত ব্যঞ্জনা শুধু ভালো লাগার চেয়েও অনেক বেশি।’

    এই উপন্যাসের পটভূমি আসানসোলের কোলিয়ারি অঞ্চল, যে-অঞ্চল ছিল অজিতেশের শেকড়। নাট্যব্যক্তিত্ব অশোক মুখোপাধ্যায় অজিতেশ সম্পর্কে একদা লিখেছিলেন, অজিতেশ ‘নিজের একাকী জীবনের বিচ্ছিন্নতার দুঃখকে চারপাশের আরও ভয়ংকর ট্র্যাজিক বিচ্ছিন্নতার শিকার ছিন্নমূল মানুষের দুঃখের পটভূমিতে রেখে তাকে জয় করতে পেরেছেন।’ এবং ‘সাধারণ মানুষকে ভালোবাসার এবং সম্মান করবার শিক্ষা পেয়েছিলেন এই জীবনের শেকড় থেকে।’ কোলিয়ারি অঞ্চলের মানুষ, তাদের সুখদুঃখ, জীবনযাপনের খুঁটিনাটি আমৃত্যু অজিতেশকে ভাবিয়েছে। তিনি পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে যেতে পারেননি তাঁর অতীতকে।

    উপন্যাসের শুরুতে শিবপদর ছোট মেয়ে মুন্নি, শিবপদ বাড়ি ফিরলে তাকে একটা রাংতার মুকুট পরিয়ে দেয়। সেই প্রসঙ্গ তখন অপ্রাসঙ্গিক মনে হলেও, উপন্যাস শেষে আমরা বুঝতে পারি, এই কাহিনির আসল ‘রাজা’ সেই শিবপদই। তাঁকে ঔপন্যাসিক এক মায়াময় ‘রাজা’ করে তুলেছেন এই উপন্যাসে। তাঁর রাজ্যপাট, পাইক-বরকন্দাজ কিছুই নেই— শুধু মনের ভেতর আছে এক আশ্চর্য আলো।

    এই উপন্যাস কোলিয়ারি অঞ্চলের এক ‘বাতিবাবু’র গল্প। শিবপদ চক্রবর্তী, যিনি কিনা জাতে বামুন, একশো টাকা মাইনে, কুলিব্যারাকে থাকেন। এই শিবপদ ‘দৈত্যকুলে প্রহ্লাদ’, কেননা তিনিই বংশে প্রথম ক্লাস সিক্স অবধি পড়াশোনা করেছেন। তিনি বিবাহিত। স্ত্রী উমা, দুই পুত্র এবং এক কন্যা নিয়ে তাঁর টানাপড়েনের সংসার। এতই সাধারণ সেই সংসার, দুই ছেলের নামও আলাদা করে উপন্যাসে বলা হয়নি কোথাও। বড় ছেলের নাম এখানে ‘বড় খোকা’, ছোট ছেলের নাম ‘ছোট খোকা’। মেয়ের অবশ্য নাম একটা আছে, মুন্নি। তার চার বছর বয়স। এবং আমরা বুঝতে পারি, এই পরিবার খানিক যেন অসুস্থ। ধুঁকছে। শিবপদ এবং উমার বিস্তারিত পরিচয় দিতে গিয়ে লেখা হয়েছে— ‘শিবপদর বউ উমা পান খায় জর্দা খায়, সামনের চুল একটু উঠে গেছে, দাঁতগুলো ক্ষয়ে যাওয়া, কালো কালো। শিবপদ নিজেও কিছু সুপুরুষ নয়, ওরও গায়ের রং কালো, গাল ভাঙা, ঢ্যাং ঢ্যাংয়ে লম্বা। সামনের দাঁত একটু উঁচুও। কিন্তু তবু দাড়ি কামিয়ে চুল আঁচড়ে ৯৯৯ বার সাবানে কাচা সাদা হাফসার্ট একটু বেশী নীলে রাঙ্গিয়ে শিবপদ যখন পুরো পরিবার নিয়ে বাইরে বেরোয় তখন ওকে সুখীই মনে হয়, গর্বিতও মনে হয় হয়তো।’ দেখা যাচ্ছে, শ্রীহীন এই দাম্পত্যেও সুখ চুঁয়ে-চুঁয়ে আসে কদাচিৎ। আমাদের মনে পড়ে যেতে পারে হরেন দাসের ‘হ্যাপি পেয়ার’ ছবিটার কথা। যে-ছবিতে কোথাও সেই অর্থে সুখের দৃশ্য নেই। দেখা যায়, একজন পুরুষ ও একজন নারী তাপ্পি-মারা ছাতার তলায় বসে ইট ভাঙছে। অভিব্যক্তিহীন। দূরে আবছা আরও এক যুগল। তারাও ইটই ভাঙছে। গোটা ছবিটা দারিদ্রে মোড়া, কিন্তু উনি নাম দিলেন ‘হ্যাপি পেয়ার’, অর্থাৎ বোঝাতে চাইলেন, দারিদ্র সুখকে চাপা দিতে পারেনি। এখানেও, কার্যত সেই একই কাজ করলেন অজিতেশ।

    একদিকে দারিদ্র, অন্যদিকে ক্ষণিকের জন্য হলেও সেই জাঁতাকলের বাইরে বেরোনোর চেষ্টা। শিবপদ তাঁর পরিবার-সহ কল্যাণীশ্বরীতে পিকনিক করতে যাবেন, এই হল গল্প। কিন্তু এই পিকনিক কেবল সাধারণ পিকনিক নয়, এক ‘দৈব পিকনিক’। ‘বড়খোকা চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে উত্তর আমেরিকার নদনদী মুখস্থ করছিলো ষাট পাওয়ারের বালবে’— এই পঙ্‌ক্তির মধ্যে যে-আশাবাদ লুকিয়ে রয়েছে, এই উপন্যাস যেন সেই আশাবাদের কথাই বলতে চায়। ম্লান জীবনের চেনা চৌহদ্দি পেরিয়ে, এক বৃহত্তর জীবনের দিকে যাত্রা। ঔপন্যাসিক অজিতেশ লেখেন, ‘শিবপদ জানে অথবা জানেনা, আমাদের অন্তর্গত রোগ আর অসম্পূর্ণতা কখনো মরেনা। জন্ম থেকেই মৃত্যুবীজ আমরা শরীরে পুঁতে আনি। বহুদিন লালিত হয়ে এইসব ছোট ছোট অসম্পূর্ণতা কোনোদিন বড়ো হয়ে অস্ত্বিত্বকে গ্রাস করে। তবু যে আমরা বাঁচি, ভালোবাসি আর আকাশে তারার ঐতিহাসিক শহরে মনকে পথচারী করি, সে এক সর্বজনীন আশ্চর্য অভিজ্ঞতা।’

    গরিবের পিকনিক, যাকে ‘গরিবের ঘোড়ারোগ’ বলা হয়ে থাকে, এই উপন্যাসেও সে-আবহ ফুটিয়ে তোলা হয়। পিকনিক-হেতু ধারদেনা করে জিনিস কিনতে দেখা যায় শিবপদকে, ওদিকে উমাকে শুনতে হয় প্রতিবেশীদের ঠাট্টা। কিন্তু এ-সত্ত্বেও শিবপদ, ‘তার সমগ্র পরিবারের উত্তেজনাপূর্ণ প্রস্তুতি অনুভব করছিলো। ভালো লাগছিল তার।’ এই আনন্দ তাঁর অপরিচিত। এই উত্তেজনা তাঁর অপ্রত্যাশিত। গোটা পরিবার যেন ‘আনন্দের পাখি’ পুষছিল তাদের ভেতরে। হাজারও প্রতিকূলতা পার করে যখন সত্যিই শিবপদর পরিবার পিকনিকে যেতে পারে, ‘ততক্ষণে সবাই বুঝছে ওরা পরিচিত পরিবেশ ছাড়িয়ে চলেছে। এখানে ওরাই সব। এখানে ওরাই সম্পূর্ণ।’

    উপন্যাসের একদম শুরুতে, শিবপদর ছোট মেয়ে মুন্নি, শিবপদ বাড়ি ফিরলে তাঁকে একটা রাংতার মুকুট পরিয়ে দেয়। সেই প্রসঙ্গ তখন অপ্রাসঙ্গিক মনে হলেও, উপন্যাস শেষে আমরা বুঝতে পারি, এই কাহিনির আসল ‘রাজা’ সেই শিবপদই। তাঁকে ঔপন্যাসিক এক মায়াময় ‘রাজা’ করে তুলেছেন এই উপন্যাসে। তাঁর রাজ্যপাট, পাইক-বরকন্দাজ কিছুই নেই— শুধু মনের ভেতর আছে এক আশ্চর্য আলো, যে-আলো বোধের উত্তরণ ঘটায়, সংকীর্ণতাকে তুচ্ছ করে দ্যাখে। পেশায় যে-শিবপদ একজন বাতিবাবু, যাঁর কাজ খনিশ্রমিকদের আলো দেখানো, পিকনিকযাত্রার মধ্যে দিয়ে তিনি যেন সেই আলোই নিজের এবং পরিবারের সবার জীবনে ফেললেন। আমরা আনন্দে-উত্তেজনায় আলোকিত হয়ে উঠতে দেখলাম প্রত্যেককে।


    বাংলা-বাজারে অজিতেশচর্চা এখনও চলছে। এই বইমেলাতেও ভবেশ দাসের সম্পাদনায় নির্ঝর প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে ‘অগ্রন্থিত অজিতেশ’। অজিতেশের প্রয়াণের পর চেতনা নাট্যগোষ্ঠী থেকে যে-শোকবার্তা মুদ্রিত হয়েছিল, তার বয়ান ছিল এইরকম : ‘মানুষ যায়/ কাজ যায় না/ অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়/ আছেন/ থাকবেন’। নাট্যকার-কবি-প্রাবন্ধিক— এই নানা রূপেই, নানান সময়ে আমরা, অজিতেশ-অনুরাগীরা তাঁকে পেয়েছি— শুধু অনেকদিন চাপা পড়ে রয়েছে তাঁর ঔপন্যাসিকসত্তা। তাকে ফিরিয়ে আনতে, আজকের কোনও প্রকাশক, কোনও উদ্যোগ নেবেন কি?    

     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     




 

 

Rate us on Google Rate us on FaceBook