উৎসব শেষ হলে
১.
শরীরে আঘাত এত, হাত বুলোলে ব্যথা হয়
শ্যামাসঙ্গীত আর পদাবলীর ভেতর শব্দ খুঁজতে গেছিল সব কবি—
বুঝে দেখি, এমন ঐশ্বর্য ভালো – মরার গায়ের গয়না
খুলে খুলে আনে ছন্দের দোহাই
এখন সেজেছি বধূবেশ, স্বামী নেই, সংসার নেই
আমাদের শরীরে হাহাকার
মিষ্টির গায়ে সোনা-রুপোর তবক লাগাই একমনে, রক্তে মধুমেহ
মরা সোনার তাল গলে পড়ছে
২.
কৌশি অমাবস্যায় আমরা দুর্গামূর্তির নগ্নতার ছবি তুলি
পশ্চিমে সুন্দর পায়ের ছবি চার হাজার টাকায় বিক্রি হয়
একটি মেয়ে পালিয়ে গেছে জাদুকরের হাত ধরে
তার নগ্নতার ছবি নেই, হবে না কখনো তবু সে দশহাতে আগলে রাখবে ভ্রাম্যমান সংসার
৩.
আমাদের তো পালানো নেই—
শুধু অল্পদামে বিক্রিবাটা আছে
মাংসের হাট এত সুন্দর, ঢুকতে পারি না
নিজেকে বেচতে এলে ভয়ে ভয়ে গয়নাগুলো খুলে রেখে আসি
মানুষ দারিদ্র কেনে
মানুষ মরে গেলে গয়না বেঁচে থাকে
৪.
একটা সোনার তাঁবু বসে আছে দূর মাঠজুড়ে
আমাদের অন্তরীণ নেই
আশ্চর্য আশ্রয়ের টোপে
একটা সোনার হরিণ ঘুরে-ঘুরে গেছে বধূটির গায়ে-গায়ে
তাঁবু মানে সেই ঘর
ঘর হতে গিয়ে যার হয়ে ওঠা হয়নি কখনো
৫.
বাণ-বেঁধার সময় কোলে মাথা ফেলতে হয়, শুনছ জাদুকর?
একটামাত্র বাণ
দেবী দক্ষিণ-ভুজা
অদ্ভুত মমতায় তোমার অপেক্ষায় থাকে
যে পথ দিয়ে যন্ত্রণা চলে গেছে
সেখানে একটা গাছের গুঁড়ি আদ্ধেক কাটা
৬.
বঁধুর আঁচল ছুঁয়ে আছে মৃত্যুর সালমা জরি
আত্মহত্যার দিন আলাদা শহরে কাটবে মনে হয়?
এত অবিচার ধম্মে সইবে না নিশ্চয়ই
শরীরে আঘাত এত—
ওহে জাদুকর,
তুমি হাত বুলোলেও কি ব্যথা হবে?