ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2025

 
 
  • শুভারম্ভ : পর্ব ২১

    শুভা মুদ্গল (Shubha Mudgal) (November 18, 2022)
     

    সমুদ্র পেরোলেই সমস্যা

    ভারতীয় সঙ্গীতশিল্পীরা সাধারণত বিশ্বের নানা জায়গায় ঘুরে-ঘুরে অনুষ্ঠান করতে বেশ পছন্দই করেন। সাগরপারের এইসব অনুষ্ঠানের ডাক তাঁদের কাছে খুবই রোমাঞ্চকর, এমনকী তাঁদের সঙ্গীতজীবনে বেশ লোভনীয়ই বলা চলে। কিন্তু গত দু’বছরের কোভিড-অতিমারী পৃথিবীজুড়ে যে হত্যা আর ধ্বংসলীলা চালিয়েছে, তার জেরে প্রায় সব শিল্পীদেরই সমুদ্রপারের এইসব অনুষ্ঠানে ডাক পাওয়া এবং যাওয়া— দুইই একরকম বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সৌভাগ্যবশত, ইদানীং ধীরে-ধীরে অবস্থার কিছুটা উন্নতি শুরু হয়েছে। শিল্পীরা আবার সারা পৃথিবীতে অনুষ্ঠান করতে যাচ্ছেন, নিজেদের দক্ষতা আর শিল্পবোধের জোরে টেনে রাখছেন দর্শকদের। কাজেই এই অতিমারী-উত্তর পৃথিবীতে, পাল্টে যাওয়া সময়ে দাঁড়িয়ে ভারতীয় সঙ্গীতশিল্পীদের পক্ষে সমুদ্র পেরিয়ে বিশ্বের নানা জায়গায় অনুষ্ঠান করা সহজ না দুরূহ, সেটা ভেবে দেখার সময় এসে গিয়েছে। 

    সকলেই জানেন, ভিসা ছাড়া আন্তর্জাতিক ভ্রমণ কোনওভাবেই সম্ভব নয়। আর এখানেই অধিকাংশ ভারতীয় শিল্পী প্রথম এবং প্রধানতম বাধার সম্মুখীন হন। মিডিয়ায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, পৃথিবীর বহু দেশেই ভিসার অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়ার জন্য বেশ কয়েকমাস করে অপেক্ষা করতে হচ্ছে আজকাল, এমনকী কখনও-কখনও মাস ঘুরে বছরও কেটে যাচ্ছে। সম্প্রতি এক সতীর্থের কাছে শুনলাম, আমেরিকায় ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে নির্ধারিত একটি অনুষ্ঠানের জন্য ভিসার আবেদন করায় তাঁকে শুনতে হয়েছে, ২০২৪ সালের মে মাসের আগে কোনও অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্লট খালি নেই। আমার সমসাময়িক অনেক শিল্পীর কাছেই এ-ধরনের অভিজ্ঞতার কথা শুনতে পাচ্ছি। এরকম অযৌক্তিক ও অন্যায্য বিলম্বের ফলে শিল্পীদের শুধু যে যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে তা-ই নয়, অধিকাংশক্ষেত্রেই বিদেশে অনুষ্ঠান করার সুযোগ পেয়েও ছেড়ে দিতে হচ্ছে তাঁদের। যদিও ভিসা অনুমোদনের নীতি ও পন্থা বিষয়ে আমার জ্ঞান অতি সীমিত, তবু মনে হয়, ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকে কেউ একজন কোথাও কখনও শিল্পীদের সপক্ষে এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করবেন, এমনটা আশা করা খুব বাতুলতা হয়তো হবে না। সময় লাগুক, তবু যদি এর একটা সমাধানের পথ পাওয়া যায়, তা সকলের জন্যই মঙ্গলের হবে। আসলে শিল্পী সম্প্রদায় এখন নিজেরা-নিজেরা কাজ করেন। তাঁদের কোনও সংগঠন নেই। গত দু’বছরে এটা প্রায় অলিখিত নিয়মে দাঁড়িয়েছে। ফলে দুঃখজনক হলেও এটাই সত্যি যে, অন্য কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা তাঁদের হয়ে কথা বলবেন, বা কাজ করবেন, এ একরকম অসম্ভবই মনে হচ্ছে। তাহলে শিল্পীরা কী করবেন? উত্তর : সাগরপারে অনুষ্ঠান করার আশা আকাঙ্ক্ষা ছেড়ে ঘরে বসে থাকবেন। 

    অনেকেই এমন আছেন, যাঁদের পেশাগত কারণে বাদ্যযন্ত্র নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। বহু সময়েই দেখা যায়, সেই বাদ্যযন্ত্র হয় গন্তব্যে এসে পৌঁছয়নি, কিংবা আরও খারাপ, পৌঁছতে গিয়ে ভেঙেচুরে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ফলে শিল্পীর মাথায় বজ্রাঘাত। অবশ্য এ-সমস্যা নতুন নয়, আগেও ছিল। তবে ইদানীংকালে এই মাল পৌঁছতে দেরি এবং ক্ষেত্রবিশেষে তা হারিয়ে যাওয়া, নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঘটনা অনেক বেশি শোনা যাচ্ছে।

    এদিকে, যেসব ক্ষেত্রে শিল্পীদের ভাগ্যে শেষমেশ শিকে ছেঁড়ে এবং তাঁরা ভিসা-সহ যাবতীয় কাগজপত্র নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমান, তাঁদেরও কি উদ্বেগ আর ক্লান্তির নিরসন হয়? হয় না। কারণ, জোড়া-উড়ানে মালপত্র নিরুদ্দেশ হওয়া কিংবা মাত্রাতিরিক্ত দেরিতে আসার সমস্যা, যা প্রত্যেক শিল্পীর কাছেই দুঃস্বপ্নের শামিল। অনেকেই এমন আছেন, যাঁদের পেশাগত কারণে বাদ্যযন্ত্র নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। বহু সময়েই দেখা যায়, সেই বাদ্যযন্ত্র হয় গন্তব্যে এসে পৌঁছয়নি, কিংবা আরও খারাপ, পৌঁছতে গিয়ে ভেঙেচুরে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ফলে শিল্পীর মাথায় বজ্রাঘাত। অবশ্য এ-সমস্যা নতুন নয়, আগেও ছিল। তবে ইদানীংকালে এই মাল পৌঁছতে দেরি এবং ক্ষেত্রবিশেষে তা হারিয়ে যাওয়া, নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঘটনা অনেক বেশি শোনা যাচ্ছে। এর কারণ সম্ভবত, বহু উড়ান সংস্থাই অতিমারী-পরবর্তী সময়ে কর্মী সংকোচন করেছে। কম কর্মী নিয়ে কাজ চালাতে হওয়ায় এইসব বিপত্তি বাধছে বেশি। 

    সমস্যার আরও একটা দিক দেখা যাক। ইউনাইটেড কিংডম-এর (ইউকে) মতো দেশগুলোতে ক্যাশলেস অর্থ লেনদেনের প্রক্রিয়া বেশ চালু। ধরুন আপনি একটা উবার বুক করছেন, বা রেস্তোরাঁয় খাবারের বিল মেটাচ্ছেন, অথবা ফুড ডেলিভারি অ্যাপ দিয়ে খাবার আনাচ্ছেন— কোনওক্ষেত্রেই কিন্তু নগদ টাকা গ্রাহ্য হবে না। এদিকে আপনার ভারতীয় ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডটি সেখানে কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে, সে যতই আপনি আন্তর্জাতিক লেনদেন চালু রাখার জন্য দেশীয় ব্যাংকে গাঁটগচ্চা দিন না কেন! কখনও রিজার্ভ ব্যাংকের মুহুর্মুহু বদলে যাওয়া নিয়ম, কখনও প্রযুক্তিগত গোলমাল, এমন নানাবিধ কারণে আপনাকে এই সমস্যার মুখে পড়তে হতে পারে। সমস্যাটা সত্যিই অদ্ভুত, যেখানে আপনার কাছে নগদ টাকা এবং ক্রেডিট কার্ড দুইই আছে, কিন্তু কোনওটা দিয়েই কাজ হচ্ছে না। কারণ, নগদ টাকা নেওয়ার নিয়ম নেই আর ক্রেডিট কার্ড প্রয়োজনের সময় অকেজো হয়ে বসে আছে। 

    এ-কথা অনুমান করা কঠিন নয় যে, শিল্পী হিসেবে সারা দুনিয়া ঘুরে অনুষ্ঠান করার রোমাঞ্চ যতই আমাদের প্রাপ্য হোক না কেন, এসব দুরূহ পরিস্থিতির জেরে তা থেকে প্রায়শই আমরা বঞ্চিত হই। অনেকক্ষেত্রেই বিদেশযাত্রার উৎসাহে ভাটা পড়ে যায়।

    ছবি এঁকেছেন শুভময় মিত্র

    Read in English

     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     



 

Rate us on Google Rate us on FaceBook