পত্রিকা

সঞ্চারী মুখোপাধ্যায়

দায়িত্ববান সাক্ষী

মানুষ নিজের বাঁচাকে সহস্রভাবে উদযাপন করতে চায়। তাই এই সময়েও সে নিজের পছন্দের শিল্প নিজেই বেছে নেয়। যার মূল্য কোনও অংশে কম নয়। ডাকবাংলা সেই মন-খোরাকের সঙ্গী হতে চেয়েছে। এই এক বছর যেমন অনেক চাপান-উতোরের মধ্যে দিয়ে গেছে, তেমনই সৃষ্টির আনন্দের সঙ্গেও নিয়ত যুক্ত থেকেছে ডাকবাংলা। এই উল্লেখযোগ্য সময়ের দায়িত্ববান সাক্ষী থাকাটাও কালের গায়ে একটা উল্লেখযোগ্য আঁচড়।

মালবিকা ব্যানার্জি (Malavika Banerjee)

Where’s the Party? On Zoom!

‘In India, the watershed moment for Zoom parties was the birthday of a certain Ridhima Sahni, who turned 40 in 2020. Her husband Bharat came up with the plan of getting relatives to dance to ‘Aap Jaisa Koi,’ a song that was the rage in 1980. The video that resulted went viral and inspired many to follow suit. The only hitch was unlike you and me, Riddhima had consistently beautiful and graceful relatives.’

মৈত্রীশ ঘটক

সাহিত্য, বাজার, অস্বস্তি

‘ বিমূর্ত শিল্পও তো বিক্রি হয়। তার শৈল্পিক মূল্য একটা ব্যাপার, আর মানুষের হাতে বিনিময় হবার সময় একটা আর্থিক অঙ্ক যুক্ত হয়ে যায়— সেটা আরেকটা ব্যাপার। আসলে মূল্য (value) আর দাম (price)— বা মার্ক্সের ভাষায় ব্যবহার-মূল্য আর বিনিময়-মূল্য— অনেক সময়ে একই অর্থে ব্যবহৃত হলেও, ব্যাপার দুটো সম্পূর্ণ আলাদা। মূল্য মানুষের মনে, যে মনের গহন রহস্য অনেক সময় বোঝা মুশকিল। আর দাম হল চাহিদা আর জোগানের ঠোকাঠুকিতে ঠিক হওয়া একটা অঙ্কমাত্র, যাতে কোনো জিনিসের বিনিময় হয়।’

জয়া মিত্র

ভিন্নরঙের মহাকাব্য

‘ঋত্বিকের ‘সুবর্ণরেখা’য় পরিত্যক্ত এয়ারপোর্টে সীতার মুখে সেই আলগা ভাসিয়ে দেওয়া মন্তব্যটি মনে পড়ে, ‘কবে একটা যুদ্ধ হয়েছিল, এখনো দেখ তার দাগ পড়ে আছে।’ কোন সেই আদিম যুদ্ধের বীজ— ভূমি আর নারীর দখল নিয়ে, ক্ষমতাশালী পিতৃতন্ত্র যা থেকে তৈরি করে কখনো ইলিয়াড, কখনো মহাভারত, বা রামায়ণ। অন্য কোনো দেশে ক্ষমতাদখলের আরো কোনো গাথা। কিন্তু দেখি, আমাদের নিত্যজানিত এই সীমানার বাইরেও কত অভিনব রূপে বেঁচে ছিল সেই গাথাগুলি— যাদের নাম ‘জয়কাব্য’ নয়।

তরুণ মজুমদার

সৌমিত্র, আপনাকে

‘সেই সৌমিত্র, আপনি, এভাবে কোনও নোটিস না দিয়ে চলে গেলেন? অভিনেতা তো বটেই, আপনার মতো এমন একজন ‘টিম ম্যান’কে হারাবার ক্ষতি আমরা কী ভাবে পূরণ করব? মনে পড়ে কি ‘গণদেবতা’র লোকেশন শুটিংয়ের সেই দিনগুলির কথা? বীরভূমের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে আমরা শুটিং করে বেড়াচ্ছি, ভোর চারটেয় উঠে তৈরি হওয়া, দিনভর দাপাদাপি, তারপর সন্ধে হলে প্যাক‌-আপ।’

সুপ্রিয় রায়

কোথায় পাব তারে

বিদেশে হলে হয়তো তাঁর পড়া বই, বইয়ে দেওয়া দাগ, মার্জিনের নোট এবং সবাইকে লেখা চিঠিপত্রও ইতিমধ্যে দেখতে পাওয়ার সুযোগ হত। এদেশে তিনি শুধুই ভারতরত্ন, শুধুই শতবর্ষীয়ান, শুধুই অতীত— আজকের চিত্রনাট্যকার ন্যূনতম সুযোগেই তাঁর ছবির জনপ্রিয় দৃশ্য বা সংলাপগুলিকে যত্রতত্র ট্রিবিউট দেবেন, এই তো প্রাপ্তি। সত্যজিতের কাজ করার পদ্ধতি।

তৃণাঙ্কুর বন্দ্যোপাধ্যায়

এলেভূত

‘ম্যাপ যে কী দেখাচ্ছে! অঙ্কুরের নিজের ফোনেও দেখেছে, পুরো ভুলভাল। কানেক্টিভিটি তো পুরো, সব ক’টা বার আছে, কিন্তু কোথায় যাচ্ছে, কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। অ্যাপের ওপর ভরসা আছে? খেয়াল না করলেই আরেক জায়গায় এনে ফেলবে। এ তো হল এলেভূত, ভেবে আবার হেসে ফেলল সে।’ নতুন গল্প।

শ্রীজাত

কবির সঙ্গে দেখা: পর্ব ১৩

অমিয় চক্রবর্তী বাংলা সাহিত্যের এক অসামান্য কবি, যাঁর কবিতায় আমরা পাই অভিনব চিত্রকল্প, পুরনো ও সমসাময়িক শব্দ পাশাপাশি সাজিয়ে তৈরি করা আশ্চর্য আবেদন, সময় নিয়ে অপূর্ব খেলা। মাত্র একটা শব্দের স্থান বদলে তিনি জাদু সৃষ্টি করেন, নরম অথচ সপ্রতিভ কবিতায় কখনও মিলিয়ে দেন ঝোড়ো হাওয়া আর পোড়ো দরজার বৈপরীত্যও।

খান রুহুল রুবেল

ঢাকা ডায়েরি: পর্ব ১২

‘একজন অন্তর্মুখী মানুষ যে উপায় নিতে পারেন কাজী আনোয়ার হোসেন তাই করলেন। কুয়াশা নামে একটা রহস্যভেদী চরিত্র তৈরি করে দুই খণ্ড রহস্যকাহিনী লিখলেন। শুরু হলো প্রকাশকদের দুয়ারে দুয়ারে ঘোরা। এক প্রকাশক দুই বইয়ের বিনিময়ে দুইশ টাকা দিতে চাইলেন। কিন্তু দুইশ টাকায় তো রাইফেল কেনার পয়সা উঠবে না। অতএব তিনি পাণ্ডুলিপি ফেরত নিয়ে এলেন। লেখালেখিতে আপাতত কিছুটা বিরতি। শিকারী হওয়া আর হলো না। তবে, মাছ শিকারের নেশা ছাড়তে পারেননি সমস্ত জীবন। মাছ শিকার করতে তো আর বিলেতি রাইফেল লাগে না।’ কাজী আনোয়ার হোসেন এবং তাঁর রহস্যকাহিনি।

চন্দ্রিল ভট্টাচার্য

এক শালিক: পর্ব ১৩

রাশিয়ায় এক আর্ট গ্যালারিতে এক প্রহরী একটা ছবিতে দুটো মুখে ছোট্ট চোখ এঁকে দিল। হুলুস্থুলু। সে বলল, কী করব, বোর লাগছিল। এই স্বীকারোক্তি এত সরল ও ভানহীন, চমক জাগায়। আর মনে হয়, একঘেয়েমি থেকেই কি নষ্টামির মতোই, সমস্ত শিল্প বা বিনোদনেরও জন্ম নয়?

উপল সেনগুপ্ত

অ্যাবরা কা থ্যাবড়া ৫১

কথা থাকবে না, শুধু ছবি। মানে কার্টুন, ব্যঙ্গচিত্র। অবশ্য শুধু ব্যঙ্গ কেন, থাকবে হিহি, খিলখিল, ঠোঁট টিপে মুচকি, একলা দোকলা ফোকলা হাসি। ব্যঙ্গচিত্র কখনও হবে বঙ্গ-চিত্র, কখনও স্রেফ তির্যক দৃশ্য। ছোট্ট ফ্রেম, বিশাল ক্যানভাস।

জয়ন্ত সেনগুপ্ত

হেঁশেলের হিস্‌সা: পর্ব ১২

‘আমাদের পূর্বপুরুষ ও পূর্বমাতারা উনিশ শতক থেকে পশ্চিমের দেশগুলিতে যাতায়াত শুরু করেন, কিন্তু বিদেশ বিভুঁইয়ে তাঁরা খেতেন কী? রামমোহনের সমস্যা ছিল না, তিনি ১৮৩১ সালের বিলেতযাত্রায় সঙ্গে করে নিয়ে গেছিলেন পাচক শেখ বক্সকে। আর বাবুর্চি নিয়ে গেছিলেন দ্বারকানাথও, যদিও বেলগাছিয়া ভিলার নিয়মিত পার্টিতে বিলিতি খানা ও মদিরায় অভ্যস্ত প্রিন্সের এ-ব্যাপারে কোনও অসুবিধে হওয়ার কথা ছিল না।’ প্রবাসে বাঙ্গালি-ভোজন।