গল্প / কবিতা

মন্দার মুখোপাধ্যায়

আলোর রং সবুজ : পর্ব ২

‘এই একটা ছবির সামনেই অনেকক্ষণ ধরেই যে দাঁড়িয়ে আছি, অনেকের সঙ্গে শাফিকাও নিশ্চয় তা লক্ষ করেছে। প্রেসের ভিড় থেকে সরে এসে, অপরিচিত আমার পাশে এসে দাঁড়ায় শাফিকা। তার দিকে তাকিয়ে, আমিও উদাসীন ভাবেই হাসি।’

হন্তারক

‘তবু অভ্যাসবশে কোমর থেকে যন্ত্রটা হাতে নিয়ে সাবধানে দরজাটা সামান্য ফাঁক করে অবাক হয়ে গেল মজনু। সুজনি-ঢাকা থালা হাতে অপূর্ব সুন্দরী একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে। হলুদ শাড়ি, কালো ব্লাউজ, ফর্সা ছিপছিপে চেহারা।’

মন্দার মুখোপাধ্যায়

আলোর রং সবুজ: পর্ব ১

‘সবাইকে আশ্চর্য করে দিয়ে ইশারায় কাছে ডাকলেন এক বিধবা কাকিমাকে, বললেন, ‘মিনু খাব, দাও’, আদুল গায়ের আঁচল সরিয়ে তাঁর মুখের কাছে ঝুঁকে এলেন কাকিমা। লজ্জা পেয়ে মুখ ঘোরালেন স্ত্রী। এমন শেষ ইচ্ছে আর কেউ কখনও জানিয়েছে কি!’

নীল খাতা

‘মাথায় আমার বিনবিন করে ঘাম দিল, শরীরটা হালকা লাগল, মনে হল বুকের ভেতর থেকে তিনটে পায়রা উড়ে গলা দিয়ে বেরিয়ে আসতে চাইছে, আর আমি মুগ্ধ চোখে লোরার দিকে তাকাতে গিয়ে দেখলাম কুশল আমার দিকে ভেটকি মাছের মতো মুখ করে তাকিয়ে আছে।’

শ্রীজাত

শুধু কবিতার জন্য : পর্ব ৩১

‘মলিনতা ফিরে আসে। যেন-বা দেজাভু।/ যেরকম লিখেছেন শ্রীশরৎবাবু,/ তেমন অতীত পেলে ভালবাসা হত/ সহজিয়া, অনাবিল, বাঁধুনিতে ছোট। অথচ ভেতরে কেউ কথা বলে। কাঁদে।/ নিজেকে পড়েছি আমি ভুল অনুবাদে।’

একটি তামাশাযোগ্য ঘটনা

‘রাস্তায় খসে পড়া লোকটার মাথাফাটা খুলির রক্তে মাখামাখি দৃশ্যটা দেখতে যারা দাঁড়িয়ে পড়েছিল, তাদের কারও কারও মাথায় হাসপাতালের কথা এলেও, পরে ঝামেলা হতে পারে ভেবে কেউ-ই শেষ পর্যন্ত কাজটা করে উঠতে পারেনি।’

কৌশিক গুড়িয়া

পোষা ভাইরাস

‘সত্যি কথা বলতে কী, তিথির সঙ্গে যে নূরজেলের কোনও দিন সম্পর্ক হতে পারে আমরা ভাবতেই পারিনি। এই দুজনের কোনও কিছুই যে মেলে না। তবুও… সম্পর্ক আসলে এক মায়াসুতো— না আছে তার গঠন না আছে আকার; না আছে তার ধর্ম, না আছে তার বর্ণ।’

কয়েকটি কবিতা

‘যে পুরুষ অস্থিচর্মসার,/
তাকে ছুঁলে রমণের ভয়, লোকাচার,/
কী ভীষণ প্রলয়ে বিষণ্ণ হাড়ের শব্দ,/
নিরন্তর এক নারী,/
হেঁটে যায় কোমল বাস্তবে।’

নীলোৎপল মজুমদার

কমরেড, পরশু নাকি আমাদের পার্টি ভাগ হয়ে গেছে

‘বুলবুলি জানিয়ে দিল বস্তাপচা ধারণা নিয়ে থাকা এইসব সনাতনী ফিউডালদের বিরুদ্ধে ওরাও প্রতিবাদে সামিল হবে, পিছিয়ে যাবার কোনও চান্স নেই। লাল পতাকার নীচে এরা এক-একটা ভাড়। আমাদের পতাকা বাঁচিয়ে রাখতে হবে।’

চিন্ময় গুহ

এক পশলা হাইকু

হাইকু কবিতা যেন এক-একটি দীপমালা, যা ফুটিয়ে তোলে দার্শনিকের বিস্ময়! অসীম সম্ভাবনাময় এই তিনটি করে পংক্তি যেন অমোঘ তুলিটানে আমাদের সীমাবদ্ধ জীবনকে প্রসারিত করে! এতে ফুটে ওঠে কতগুলি অপরূপ ছবি, যা রঙিন ও বাঙ্ময়।

পাটকেল

‘বিয়েটা প্রায় পাকা হয়ে এসেছিল। কথাবার্তা ঠিক, দেনাপাওনা নিয়ে সামান্য দর কষাকষি চলছে, ঠিক এমন সময়ে একটা উড়ো খবরে সবকিছু থমকে গিয়েছিল। এতদিনে বুঝেছে, সুন্দরী মেয়ের নামে অমন দু’একটা কথা রটতেই পারে।’

কয়েকটি কবিতা

‘একটা সোনার তাঁবু বসে আছে দূর মাঠজুড়ে/
আমাদের অন্তরীণ নেই/
আশ্চর্য আশ্রয়ের টোপে/
একটা সোনার হরিণ ঘুরে-ঘুরে গেছে/ বধূটির গায়ে-গায়ে’