গল্প / কবিতা

মন্দার মুখোপাধ্যায়

আলোর রং সবুজ : পর্ব ২৭

‘ভূতেশের তীক্ষ্ণ নজর তাই সেই আইনগুলোর দিকেই, যা দিয়ে সাহেবরা একটা মিলজুল করাতে চলেছে পুলিশ এবং আর্মিতে কাজে নেওয়া নেটিভদের। এই নেটিভ অফিসাররাই হবে এদেশে বাস করা সাহেবদের জীবনযাপনে সুখ-সুবিধে এবং সুরক্ষার সেতু।’

রোদ্দুর মিত্র

দাশের দোকান

‘পাড়ার দোকানপাট বন্ধ। সোমবার। আরেকটু এগিয়ে পৌঁছতে হবে চার মাথার মোড়ে। তারার ডানদিকে অন্ধকার একটা গলি। গলিতে নানা বয়সি প্রেম। নানা ছুতোয় হাতধরা। নানা রকমের যৌনতা। যে-গলির বাইরে দাঁড়িয়ে, একা, তার হৃদয় ঝরছে। নক্ষত্রের মতো।’

রূপান্তর

‘মানুষদের সীমিত খাবারে মূষিকরাও লুকিয়ে-চুরিয়ে, কখনও-বা সগর্বে প্রকাশ্যে ভাগ বসানোর সংগ্রাম শুরু করে দেওয়ার ফলাফল হিসেবে স্বাভাবিক ভাবেই নিম্নবিত্তরা বিষাদগ্রস্ত ও ক্ষিপ্ত হতে আরম্ভ করেছে।’

মন্দার মুখোপাধ্যায়

আলোর রং সবুজ: পর্ব ২৬

‘শাফিকা তাকাতেই তার ওপরে বিছিয়ে গিয়ে মিয়া জিজ্ঞাসা করল, ‘কোথায় রেখেছিস?’ ‘বালিশের তলায়!’ ভোরের আলোয় মিলিত হল ইসমাইল এবং তা শাফিকারই শর্তে।’

ধর্মঘট

‘সারারাত বিছানায় শুয়ে ছটফট করেছে সে। তারপর ভোরের শুকতারাকে সাক্ষী রেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছে— এই শেষ, কালকের ধর্মঘটই তার রাজনৈতিক জীবনের শেষ অনুষ্ঠান, রাজনীতি আর নয়!’

মন্দার মুখোপাধ্যায়

আলোর রং সবুজ: পর্ব ২৫

‘কলকাতা থেকে বদলি করে এখানে আনা হয়েছে ম্যাজিস্ট্রেট ডগলাস কিংসফোর্ড সাহেবকে। তাঁর এজলাসের বিচারাধীন মামলায় তাঁর দেওয়া বিভিন্ন রায়ে খেপে উঠেছে বাংলার বিপ্লবীরা। তবে সমস্ত গোপন খবর কি আর দপ্তরে আসে?’

মন্দার মুখোপাধ্যায়

আলোর রং সবুজ : পর্ব ২৪

‘নিজের ইংরেজি জ্ঞানের ওপর ভাল দখল থাকার কারণেই এমন একটা ইচ্ছে তার হয়েছিল। হরশঙ্কর ব্যাকুল হয়ে উঠল মাকে একখানা চিঠি লিখে সব ব্যাপারটা খোলসা করে দেবার। বুঝিয়ে বলা যে, উদ্বেগের কারণ নেই। শান্তিতে জীবন কাটানোর জন্যই সে একটা বিকল্প পথ খুঁজছে।’

মন্দার মুখোপাধ্যায়

আলোর রং সবুজ : পর্ব ২৩

‘দু-একবার তো ভূতেশের সঙ্গে তার মাকে বিছানাতে দেখেও ফেলেছে সে; তাদেরই অসতর্কতার কারণে! ওই অন্ধকার ঘরে, আচম্বিতে নিত্যর উপস্থিতি টের পেয়েও বড়বউ তো কই ভূতেশকে ছেড়ে, বিছানা থেকে সরে যায়নি! ভূতেশও অবশ্য সংকোচ বা ভয়ে ছাড়িয়ে নেয়নি নিজেকেও।’

অনুপম রায়

নীলা-নীলাব্জ : পর্ব ২

‘চাঁদনি থেকে এসপ্ল্যানেডের দিকে চলেছে মেট্রোটা। পরের স্টপেই নামতে হবে নীলাকে। দরদর করে ঘামছে। এই ভিড় থেকে বেরতে পারলে বাঁচে। স্টেশনে নেমে ঊর্ধ্বশ্বাসে হাঁটতে থাকে। কলকাতার এই ধাক্কাধাক্কিতে এখন অবশ্য সম্পূর্ণ অভ্যস্ত নীলা।’

সুনন্দর বাড়িঘর : পর্ব ২

‘সুহাস তখন নিছক একটা ডেডবডি। পুলিশ মেরেছে, পুলিশই তুলবে। পুলিশ মেরে চলে যেত, বা পুলিশের হয়ে অন্য কেউ। রটে যেত অন্য কোনও গল্প। পাড়া থমথম করত। দু-চারদিন সব চুপচাপ। ফিসফাস। আবার সব স্বাভাবিক। যেন কোথাও হয়নি কিছু।’

শুধু কবিতার জন্য : পর্ব ৩৭

‘আজ বুধবার,/
তুমি দেখতে এসেছিলে থিয়েটার,/ এক তরুণীর প্রেম ও দুঃসময়ের বিপ্লবের গাথা।/
কে তোমাকে বলে দেবে,/
চারপাশে চলমান এই শহরই/
আসলে সেই থিয়েটার নয়?’

কয়েকটি কবিতা

‘একে অন্যের আয়নায়/ ছবি এঁকে রেখেছি সারা রবিবার/
ক্লান্তির দেবদূত এসেছেন কাল পরশু প্রতিদিন/
আর খুব কড়া ঘুমের ওষুধের মতন/
এসে গেছে প্রেম’