গল্প / কবিতা

বিমল মিত্র

বিনিদ্র: পর্ব ৩১

‘…তখন কি জানি যে একদিন আমাকেই আবার এ-কাহিনী লিখতে হবে, আর সে কাহিনী এত বড় হবে? তাহলে তো যা-যা দেখেছি, সব লিখে রাখতাম। আজকে গুরুরই তো বেঁচে থাকার কথা, আর আমার চলে যাওয়ার পালা… মনে যখন ভীষণ কষ্ট হয়, তখন কেবল প্রার্থনা করি, যেন আর দেখতে না হয় এত যন্ত্রণা, এত সংগ্রাম, এত দুঃখ।।’ গুরু দত্ত এবং গীতা দত্তের যন্ত্রণার সংসার।

উত্তীয় মুখার্জি

একটি অসমাপ্ত সুইসাইড নোট

‘…বিবিধ ভাবনার পাহাড় কেটে প্রগতি যখন নিজের সামনে রাখা সাদা খাতাটার দিকে তাকাল, তার চোখে পড়ল শুধু তিনটি লাইন, যা সারা রাত জুড়ে লিখতে চেষ্টা করা বাকি দশটা ছিঁড়ে দেওয়া লেখার মতোই এতটাই সাধারণ এবং মেলোড্রামাটিক যে, সেটা প্রগতি দত্তর মতো খ্যাতনামা লেখিকার সুইসাইড নোট হতেই পারে না।’ মৃত্যুর গল্প।

বিমল মিত্র

বিনিদ্র: পর্ব ৩০

‘…আমি কলকাতার ধুলো-শব্দ-ধোঁয়া থেকে সেখানে যেতাম। আমার কাছে সে-বাড়ি তখন স্বর্গ মনে হত। বাগানের বিরাট-বিরাট গাছের তলায় আমার ঘরখানার বারান্দা। সেই বারান্দার ওপর ইজি-চেয়ারটা টেনে নিয়ে আমি কল্পনার পাখায় চড়ে স্বর্গ-মর্ত করতাম। গীতা যাকে বলত কবরখানা, আমার কাছে তাই-ই মনে হত স্বর্গ।’ বদলের সংসার।

মৃড়নাথ চক্রবর্তী

বিবর্তনবাদ

ধ্বংসস্তূপের মাঝখানে দুটো গাছ। একটা সম্পূর্ণ ন্যাড়া, অন্যটায় সামান্য ক’টা পাতা। বেশিরভাগই হলুদ। এরই মাঝখানে দুজন সহায়সম্বলহীন পথিকের সংলাপ দিয়ে এই নাটক শুরু। উঠে আসে দুজনের অতীতের দুঃখময় যাপন। আর শেষে এই বেঁচে থাকার লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে তাঁরা শুরু করে নতুন জীবন।

রাণা রায়চৌধুরী

কয়েকটি কবিতা

‘এ মহাসাগরে তুমি দীপ জ্বেলেছ নখ দিয়ে, দাঁত দিয়ে, সুবিনয় রায়-এর গান দিয়েও হে আমার প্রদীপসুন্দর!/
হে আমার রোদ বৃষ্টি শিশিরের উপস্থিত ভালবাসা!/ দমবন্ধ নিত্য থেকে আমি অনিত্যের চূড়ায় ওই চূড়ান্ত কাঞ্চনজঙ্ঘার শিখা দেখি, কাঞ্চনজঙ্ঘার ক্রন্দনরত উল্লাস দেখি রোজ…’ নতুন কবিতা।

বিমল মিত্র

বিনিদ্র: পর্ব ২৯

‘…এ-সব ব্যাপারে গুরু ছিল শিশুর মতো। কেউ তাকে ভালোবাসলে সে গোলে যেত। কিন্তু তার এই শিশু স্বভাবটার কথা কজনই বা জানত। দুঃখ তো তার ছিল সেই জন্যেই। যারা তার কাছাকাছি আসবার সুযোগ পেত, তারা হয় খোশামোদ করতে আসত, কিংবা স্বার্থসিদ্ধি করতে আসত।’ মানুষ গুরু দত্ত।

সাগুফতা শারমীন তানিয়া

সহগ

পাহাড়ের গায়ে প্রায় নিরালম্বভাবে ঝুলে থেকে যেসব কালো লেমুর খনিজ জল চেটে খায়, তাদের মতো করে এতদিন ঝুলে থেকেছি আমি। প্রেমে অত্যন্ত হ্যাংলা। সেসব ডাকপিয়ন হবার জন্য নয় নিশ্চয়ই। প্রেমের অপ্রাপ্তি।

বিমল মিত্র

বিনিদ্র: পর্ব ২৮

‘…প্রত্যেক মহৎ শিল্পীর জীবনেই কোনও-না-কোনও সময়ে এই সমস্যা একদিন মুখব্যাদান করে দাঁড়ায়। তখনই সিদ্ধান্ত নেবার পালা। সেই সময়ে যে শিল্পী সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে তাকেই লোকে বলে প্রকৃত শিল্পী। সেদিন গুরুকে দেখে আমার সেই সব কথাই মনে পড়ছিল।’ শিল্প ও ব্যবসা।

বিমল মিত্র

বিনিদ্র: পর্ব ২৭

‘…দুদিন কেটে গেল। টেলিফোনে চারদিক থেকে বুকিং-এর রিপোর্ট আসছে। শেষের দিকে নাকি দর্শকরা উসখুস করছে। যেন ভালো লাগছে না তাদের। শেষটা যেন তাদের মনঃপুত হয়নি। তবে কি ছবি চলবে না? টিকিট বিক্রি কেমন এগোচ্ছে? হাউস ফুল চলছে। কিন্তু টান নেই তেমন।’ দর্শকের রায়।

সোহিনী দাশগুপ্ত

কয়েকটি কবিতা

‘আমি বুঝতে চেষ্টা করি/ তুমি আশেপাশেই আছ কি না, তুমিও/ আশ্চর্য হয়ে আমাকে দেখছ কি না/
সন্ধে হলে আমার মনে হয় তোমারও/ আমার জন্য মন কেমন করছে, মনে হয়/ তুমিও হয়তো খাতা টেনে নিয়েছ কোলে আর/ খাতা ছাপিয়ে উঠে আসছে অতলান্তর কালো জল।’ নতুন কবিতা।

স্বর্ণেন্দু সাহা

উদ্বাস্তু

‘সারাটা দিন সে ছাউনির ভিতর চুপচাপ শুয়ে কাটিয়ে দেয়। ঘুম এলে আবছা, ধোঁয়াটে একটা কুয়াশার স্তর ডানা মেলতে থাকে তার মস্তিষ্কে। সেই ডানার পরিসীমা অপরিসীম কোনও সমতলের মতো অসীম। স্বপ্ন আসে না। কিংবা হয়তো আসে, কিন্তু সেই স্বপ্নে স্রেফ আঁধার ঘুরে বেড়ায়।’ নতুন গল্প।

বিমল মিত্র

বিনিদ্র: পর্ব ২৬

‘…গুরুর অবশ্য এ অভিজ্ঞতা প্রথম নয়, আগে আরো পাঁচ-ছখানা ছবি করেছে। প্রতিবার এমনি করে প্রিমিয়ারের দিন দুরু-দুরু বুক নিয়ে মুখে হাসি ফুটিয়েছে। তারপর আসল রায় যা দেবার দিয়েছে জনসাধারণ। যে যত বড় মহাপুরুষই হোক, জনসাধারণের বিচারালয়ে তাকে দাঁড়াতেই হয় আসামী হয়ে। কেউ পায় ফুলের মালা, কেউ নিন্দের। জনসাধারণের প্রীতির ওপর যাদের প্রতিষ্ঠা নির্ভর করে, তাদের এমনি করেই দুরু-দুরু বুক নিয়ে মুখে হাসি ফোটাতে হয।’ ছবির প্রিমিয়ার।