

বিশ্বকাপের ডায়েরি: পর্ব ৩
সিঁড়ি ভেঙে উঠে প্রথমবার মাঠের সামনে দাঁড়ানো! এই অভিজ্ঞতাটার তুলনা হয় না! আমি বার বার দাঁড়াতে চাই, ওই বৃহতের সামনে, যেখানে আমার নিজের কোনও স্বার্থ নেই, কোনও ম্যাচের হারাজেতার ওপর আমার কিচ্ছু নির্ভর করে না।
সিঁড়ি ভেঙে উঠে প্রথমবার মাঠের সামনে দাঁড়ানো! এই অভিজ্ঞতাটার তুলনা হয় না! আমি বার বার দাঁড়াতে চাই, ওই বৃহতের সামনে, যেখানে আমার নিজের কোনও স্বার্থ নেই, কোনও ম্যাচের হারাজেতার ওপর আমার কিচ্ছু নির্ভর করে না।
আমাদের পিছনে কিছু ইংলিশ ফ্যানেরা বসে ছিল। বিশাল তাদের গলার জোর, এমন জোর চিৎকার করছে যে আত্মারাম খাঁচাছাড়া হয়ে যাওয়ার জোগাড়! অমন গলা পেলে আমি সত্যিই মাইক ছাড়া গাইতে পারতাম। তার ওপর যা গালাগালি করল ফ্রান্সের গোলকিপারকে!
খেলা দেখতে আসা দর্শকের এ রকম উন্মাদনা আগে সত্যি দেখিনি। আর এই উন্মাদনার একটা কারেন্ট যেন সবার মধ্যে ছড়িয়ে যায়। নিজের উত্তেজনা সব সময় নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। চারদিকে দেখলে মনে হয় একটা বিশাল উন্মাদনার যজ্ঞে আমিও একজন কনট্রিবিউটার।
‘মারাকানায় ঐতিহাসিক ফাইনালে জার্মানির মুখোমুখি হতে যাচ্ছে আর্জেন্টিনা। ক্যামেরা তাক করল পাঁচ ফুট সাত ইঞ্চির আর্জেন্টিনার দশ নম্বর জার্সিধারী মানুষটাকে। তার চোখে জল! মেসি কাঁদছে, মেসি ও কাঁদে! চারটে ব্যালন ডি’অর, বিশ্বের শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড়… দেশ ফাইনালে যাচ্ছে বলে কাঁদছে, কী বোকা!’
‘গোলগাল, মিষ্টি চেহারার পারহামকে এক নজরে দেখে বোঝার জো নেই যে তিনি ইরানের ১ নং পুরুষ দাবা খেলোয়াড়, যিনি ২০১৮-তে দাবা দুনিয়াকে চমকে দিয়ে, ১০-এ ৯.৫ স্কোর নিয়ে জুনিয়র বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের খেতাব জিতেছিলেন।’
দেশে যুদ্ধ, বিদেশে ঠাঁই এখন। বাবা-মা-পরিজনহীন জায়গায় মানিয়ে নিতে হচ্ছে। কিন্তু খেতাব জিতছেন দেশের জন্য। দুই বোন, দুজনেই গ্র্যান্ডমাস্টার। ইউক্রেনের মেয়েরা চালে-চালে কিস্তিমাত করছেন। কলকাতার টাটা স্টিল তেল ইন্ডিয়া ২০২২-এও তার ব্যতিক্রম হল না। সেই মঞ্চেও উজ্জ্বল আনা ও মারিয়া।
একটি সমাজ বা রাষ্ট্র যখন মূর্তি বা স্থাপত্য খাড়া করে, তার গোড়ায় থাকে সেই এলাকার সামাজিক পরিসরের সঙ্গে নিজের সত্তাকে জড়িয়ে ফেলার তাগিদ। অথচ সেই মূর্তি ভেঙে ফেলার মধ্যে থাকে সমস্ত সত্তাকে, বিশ্বাসকে ও প্রত্যয়কে ভাঙার নির্মমতা।
বাদল সরকারের তৃতীয় থিয়েটারের গড়ে ওঠা একেবারে অন্যরকম। অন্য সব নাটক মঞ্চস্থ হওয়ার আগে যে দোর্দণ্ডপ্রতাপ স্ক্রিপ্টের দাসানুদাস হয়ে থাকে, যার নমনীয়তা বলেও কিছু নেই, আর ইম্প্রোভাইজেশনের সুযোগও মঞ্চে খুব কম— তৃতীয় থিয়েটার মোটেই সেরকম ছিল না।
‘দোস্তোজি, তোমার ওই সেলিব্রেশন। ওই ভলির পর ক্যামেরার সামনে গিয়ে দেখিয়ে দেওয়া, দেখো, দেখো আমি দিয়েগো, আমি নম্বর টেন, আমি আলবেসিলেস্তে। তোমার ওই বাইসেপ্স, ট্রাইসেপ্স, ছুটে এসে জড়িয়ে ধরা ক্লদিও ক্যানিজিয়ার সোনালি চুলে মিশে যাওয়া তোমার ট্যাটু।’ স্বপ্নের নাম মারাদোনা।
শেষ মুহূর্তের ব্যাগ গোছাতে-গোছাতে বিশ্বাস হল সত্যিই যাচ্ছি তাহলে! বাবা ইয়াগা, খুদে ইভান আর জাদুকরী ভাসিলিসার দেশে! মুরগির এক ঠ্যাং-এর ওপর ভর করে, আমার দিকে মুখ করে দাঁড়াল এক বিশাল ফুটবল। তারপর ঘুরতে লাগল বনবন করে। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপ থেকে সরাসরি।
কালো মানুষরা সাঁতার জানে না, পারে না— এই গল্পটাই পালটে দিলেন তিনি, রাতারাতি তাঁর নাম হয়ে গেল ‘ব্ল্যাক মারমেড’। ওই একশো ফুট জলের গভীরে গিয়ে যখন প্রথম তিমিদের আওয়াজ শুনতে পান তিনি, সেই মুহূর্তটাই তো জয়ের মুহূর্ত। জীবন্ত মৎস্যকন্যা।
উৎকর্ষ চিরকালই শিক্ষিত সংখ্যালঘু একটা গোষ্ঠীর চর্চার বিষয়। সংস্কৃতি হোক বা জ্ঞানচর্চা, সমাজ-সংস্কৃতি-রাজনীতি-অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা হোক বা বিতর্ক, যে-কোনও ক্ষেত্রেই এলিটদের আর আমজনতার চর্চার মধ্যে একটা বড় ফারাক চিরকালই ছিল। প্রশ্ন হল, সমাজমাধ্যম কি এই ফারাক বাড়িয়ে দিচ্ছে?
This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.
©2025 Copyright: Vision3 Global Pvt. Ltd.