কলাম

শ্রীজাত

কবির সঙ্গে দেখা: পর্ব ১৫

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বর্ষা ঋতুকে যে ভাবে তাঁর গান ও কবিতায় প্রকাশ করেছেন, যে ভাবে মূর্ত করে তুলেছেন, আর কোনও কবি বর্ষার বিভিন্ন রূপ ও তার অনুসঙ্গকে সেভাবে আমাদের মনে প্রবেশ করাতে বা ছুঁতে পেরেছেন কি না জানা নেই। আপাত নিত্য ব্যবহৃত শব্দ বসিয়ে তিনি গান বা কবিতার পূর্ণ রূপ দেন, তখন আশ্চর্য হয়ে যেতে হয় সেই গানের বা কবিতার দ্যোতনায়। হয়তো বা সে ইজন্যই তিনি কালজয়ী।

ব্যাকস্টেজ: পর্ব ১৩

‘সেই বৃষ্টির সন্ধ্যা আজও মনে আছে। শুটিং হচ্ছিল, আমহার্স্ট স্ট্রিটের কাছে একটি বাড়িতে। বিকেলে যখন পৌঁছেছি তখন মেঘ করে এসেছে। পৌঁছে দেখি রীনাদির ঘরে সিন বোঝাচ্ছেন মৃণালদা । আমরাও বসে গেলাম। লাইট হচ্ছে রান্নাঘরে, ওখানেই সিন। আমাদের দেখে মৃণালদা কিছুটা বুঝিয়ে লাইট নিয়ে কথা বলতে বেরিয়ে গেলেন। ততক্ষণে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। আমরা তারই মধ্যে পাতা দেখিয়ে নিলাম রীনাদি কে। বৃষ্টির মধ্যেই ফিরে এলেন মৃণালদা, এত বৃষ্টির মধ্যে জানলার বাইরের লাইট বসানো যাচ্ছে না তাই অপেক্ষা করতে হবে।’

অনুপম রায়

বেঙ্গালুরুতে অ্যান্টনি: পর্ব ৪

সময় যখন খারাপ যায়, তখন জীবনে কী কী যে হতে পারে, অ্যান্টনি আমাদের দেখিয়ে যাচ্ছে। বান্ধবী ছেড়ে চলে গেছে, তাকে নিজেকেও শহর ছাড়তে হল, ব্যাঙ্গালোরে ভাড়াবাড়ি নিয়ে ঝুটঝামেলা মেটাতে না মেটাতেই জীবনে এসে ঢুকল নতুন অশান্তি। গাড়িতে অফিস যেতে হলে ফতুর হওয়ার পালা, বাসে গেলে বাদুড়ঝোলা। বোঝো এবার!

শুভারম্ভ: পর্ব ১৬

‘ভারতে আমজনতার কাছে, শব্দের এক্সপোজার থেকে স্বাস্থ্য-সমস্যা তৈরি হওয়া, বা অনেকটা সময় ধরে শব্দদূষণে উন্মুক্ত থাকার বিপদ সম্বন্ধে সচেতনতা এতই কম, এবং উদাসীনতা এতটাই বেশি, যে এই সমস্যা, বা এই ধরনের সমস্যার সমাধান বার করা বা প্রতিরোধ্মূলক ব্যবস্থা তৈরি করা প্রায় অসম্ভব, কিছুটা নিরর্থকও।’ শহরের শব্দ-সমস্যা!

খুচরো খাবার: পর্ব ৯

‘আট বা নয় বছর বয়সের ইস্কুলের আর কোনো স্মৃতি থাকুক বা না-থাকুক, এক চিলতে খেলার মাঠটার কোণে বাঁদর-ঝোলার টঙে বসে আলুকাবলি সাঁটাচ্ছি, সঙ্গে আর এক-দুই বন্ধু, সেটা আমার বেশ মনে আছে। শুধু খাওয়াটা তো নয়, টিফিন টাইমের সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও তাকে টেনে রেখে দেওয়ার এই গোটা ব্যাপারটায় যে দুষ্টুমি মিলেমিশে আছে, আলুকাবলি তো সেই সাময়িক অবাধ্যতারই মেটাফর।’ অতুলনীয় আলুকাবলি-কথা।

চন্দ্রিল ভট্টাচার্য

এক শালিক: পর্ব ১৬

রাজীব গান্ধী হত্যার চক্রান্তে দোষী সাব্যস্ত একজনকে জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হল। কেউ বলছে, এত বড় টেররিস্টকে ছেড়ে দিলে জঘন্য উদাহরণ প্রতিষ্ঠিত হবে। কেউ বলছে, লোকটা ৩১ বছর জেল খেটেছে, তার ১৯ থেকে ৫০ বছর বয়স অবধি জেলেই কাটল, এখনও কি যথেষ্ট শাস্তি হয়নি? আমরা ভাবনা ও আলোচনায় ক্ষমাকে কেন প্রায় কখনও অগ্রাধিকার দিই না, প্রতিশোধপরায়ণতাকেই দিই?

হেঁশেলের হিস্‌সা: পর্ব ১৫

‘কলকাতায় রেস্টোর‍্যান্ট-পদবাচ্য বাঙালি খাবারের দোকানগুলির সূত্রপাত হয়েছিল এই পাইস হোটেলের ঘরানাকে খানিক ‘আপগ্রেড’ করে নিয়েই। বহুদিন পর্যন্ত এই ওই অনাড়ম্বর কিন্তু অসামান্য হোটেলগুলি বা ঘরোয়া হেঁসেলের চৌহদ্দির বাইরে বাঙালি রান্নার স্বাদ নেওয়া ছিল অসম্ভব, যদিও মোগলাই বা চিনে রান্নার স্বাদ নেওয়ার জন্য রেস্টোর‍্যান্টে ছুটতে বাঙালি কসুর করেনি। সেই শূন্যস্থান প্রথম পূর্ণ হতে শুরু করল ১৯৬৯ সালে, যখন তালতলার এলিয়ট রোডে প্রতিষ্ঠিত হল ‘সুরুচি।’

হিয়া টুপটাপ, জিয়া নস্টাল: পর্ব ১৫

সকাল থেকেই মেঘ করে আসত যেসব দিন, সেসব দিনে স্কুলের চেহারাটাই পাল্টে যেত। বারান্দা আর করিডোরগুলোয় অল্প ঠান্ডা হাওয়া আর মেঘ-লাগা-সবুজের ক্লোরোফিল-আলো। স্কুলের দরজা দিয়ে ঢোকামাত্র একখানা বড় চত্বর ছিল, যেখানে বিশাল এক জলের ট্যাঙ্ক থাকত। আমরা সেখান থেকে জল খেতাম, হাতমুখও ধুতাম। তার উপরটা ছিল খোলা আকাশ। আর তার গায়ে গাছের ডালে বসে থাকা হরেকরকম পাখি আঁকা ছিল।

চন্দ্রিল ভট্টাচার্য

সামথিং সামথিং: পর্ব ৩০

নস্টালজিয়া আমরা বাঙালির গুণ বলে মনে করি, কারণ বাঙালি এমনিতে জবজবে টাইপ গবেট। কিন্তু গুণের জন্য যদি গুণাগার দিতে হয়, ব্যাপারটাকে যদি সম্পদ থেকে বিপদে রূপান্তরিত করি, তখন ‘নষ্ট’ দিয়ে বানানটা শুরু হবে, আর উত্তর-প্রজন্মের কাছে উত্তর দেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। নস্টালজিয়া তৈরি ভয়ানক ভারি।

শ্রীজাত

কবিতার আড্ডাঘর: পর্ব ১৪

‘বাইরে তখন বৃষ্টিসড়ক চুঁয়ে
জল চলে গেছে গতজন্মের পার…
মনখারাপেরা উড়ে যাক এক ফুঁয়ে-
সন্ধে হলে তো বন্ধুকে দরকার।’ বর্ষা এমন একটা কাল, যা ঘাড়ে ধরে কবিতা লিখিয়ে নেয়। মনে এমন বৃষ্টির জল জমে, তাতে কবিতার নৌকা না ভাসালে মহাপাপ হয়। মেঘদূতের চর্চা।

মুখঋত: পর্ব ১৯

‘থিয়েটারের অলিখিত শর্ত: দর্শকের আসন আর মঞ্চের শিল্পীদের মিলিত আদান প্রদানে একটা সৃষ্টি হবে, সেটা বিদেশের থিয়েটারের দর্শক হয়ে বারবার অনুভব করলাম তীব্র ভাবে। আদান প্রদানটা আসলে সম্মান, শ্রদ্ধা, স্নেহের। হাততালি বা স্টান্ডিং ওভেশন ছাড়াও একটা অদৃশ্য শ্রদ্ধা ও ভালবাসা দিয়ে আড়াই ঘণ্টা অডিটোরিয়াম ভরিয়ে রাখা! ভিন্ন ভাষার, প্রদেশের, চিন্তার ও বয়সের মানুষ এক বোধে আবদ্ধ হচ্ছেন! এখানেই তো নির্মাণের বৃত্ত পূর্ণ!’

অনুপম রায়, শুভ চক্রবর্তী

বেঙ্গালুরুতে অ্যান্টনি: পর্ব ৩

কলকাতা থেকে অ্যান্টনি এল বেঙ্গালুরু। ব্যাচেলর জীবন এমনিতে উড়ু-উড়ু হলেও, অ্যান্টনির সেই ‘নন্দলালের মন্দ কপাল’ মার্কা কেস! অতি কষ্টে ব্রোকার ধরে একটা বাড়ি জুটল ঠিকই সেখানে, কিন্তু তার হাল? দেখলে আপনাদেরও মায়া হবে। বেচারা অ্যান্টনি!