বিনিদ্র: পর্ব ২০
‘…আমি গুরুর দিকে চেয়ে দেখলাম, গীতার দিকেও চেয়ে দেখলাম। দেখে মনে হল দুজনের সব মনোমালিন্য দূর হয়ে গেছে। আবার যেন দুজনে একাকার হয়ে গেছে। খুব আনন্দ হল দুজনের এই পরিবর্তন দেখে।’ সুখের ভ্রান্তি।
July 9, 2021
‘…আমি গুরুর দিকে চেয়ে দেখলাম, গীতার দিকেও চেয়ে দেখলাম। দেখে মনে হল দুজনের সব মনোমালিন্য দূর হয়ে গেছে। আবার যেন দুজনে একাকার হয়ে গেছে। খুব আনন্দ হল দুজনের এই পরিবর্তন দেখে।’ সুখের ভ্রান্তি।
‘দু’তিনটে লোক সঙ্গে নিয়েছি। তারা জঙ্গলী-লোক, তারা আমার গাইড। তাদের মধ্যে একজন আমাকে জিজ্ঞেস করলে বন্দুক কেমন করে ছোঁড়ে। আমি তাকে বন্দুক ছোঁড়া দেখাচ্ছি, হঠাৎ একটা গুলি দুম করে বেরিয়ে গেল নল দিয়ে…’ গুরু দত্ত-র শিকার।
‘তারপর বলতে লাগল— বোধহয় শোনেননি, আমি আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলুম— আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল। বললাম— সে কি? বললে— হ্যাঁ, বড় কষ্ট পেয়েছি, অনেকদিন ভুগেছি। এখন একটু ভালো হয়েছি। কিন্তু সে যে কি কষ্ট, আপনাকে কী বলব…’ গুরু দত্তের আত্মহত্যা।
‘গুরু দিন-রাত বাইরে। ছেলেকে পাঠিয়ে দিয়েছে দার্জিলিংয়ে। বাড়িটাকে মনে হয় যেন কারখানা। যে-বাড়িটা একদিন দুজনের কাছে স্বর্গের রাজ্য ছিল, সেই বাড়িটাই একদিন আবার পাথর হয়ে দুজনের বুকে চেপে বসল।’ অনন্ত অশান্তির দুর্গ।
‘এতদিন বোম্বাইতে এসেছি, কখনও গীতাকে এই স্টুডিওর ভেতরে ঢুকতে দেখিনি। অথচ এখানে ঢোকবার অধিকার তারও পুরোমাত্রায় আছে, গুরু দত্তের স্ত্রী সে। গুরুর সব কিছুর ওপরেই তার পুরোমাত্রায় অধিকার আছে। কিন্তু তবু যেন তার কিছুই নেই।’ সম্পর্কের দূরত্ব।
‘সারাদিন স্টুডিওর মধ্যে একলা কাটিয়ে রাত্রে বাড়ির ভেতরে একক শয্যায় ছটফট করে করে মনটা আকুল হয়ে উঠত। তখন মনে পড়ত ওই ছবিটা করলে হয়। ওই ‘সাহেব বিবি গোলাম’টার মধ্যে দিয়েই গুরু যেন নিজের মনের কথা বাইরের লোকের সামনে তুলে ধরতে পারবে।’ সিনেমায় মুক্তি।
‘এ-এক নতুন জগৎ আমার কাছে। বিরাট একটা হলঘরের মতো জায়গা। ভেতরে লোকজনের ভিড়। একটা চেয়ারে আমাকে বসতে বললে। আমি বসলাম। সুবিনয়বাবুর বাড়ির দৃশ্য তোলা হচ্ছে। বৃদ্ধ সুবিনয়বাবু আছেন, ভূতনাথ আছে, ব্রজরাখাল আছে, আর আছে জবা।’ সিনেমার শুটিং।
‘একদিন গুরুকেও জিজ্ঞেস করেছিলাম, আপনার ‘গৌরী’ ছবিটা অর্ধেক তুলে বন্ধ করে দিলেন কেন? অনেক টাকাও তো লোকসান গেল আপনার? সত্যিই অনেক টাকা লোকসান গেছিল গুরুর। এক লাখ টাকা যখন খরচ হয়ে গেছে, তখন একদিন গুরু বললে— ছবি বন্ধ থাক।’ গুরু দত্তর অসমাপ্ত ছবি।
‘১৯৬১ সালের ১ জানুয়ারি বোম্বেতে রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী উৎসবের উদ্বোধন করার জন্য আমার কাছে আমন্ত্রণ এল সরকারের তরফ থেকে। সেই ভেবে একটা ফোন করে জানিয়ে দিলাম গুরুকে যে আমি আবার বোম্বে যাচ্ছি, আপনার সঙ্গে দেখা হবে।’ লেখকের মুম্বই যাত্রা।
‘গুরুর কলকাতা সম্বন্ধে অভিজ্ঞতা সেখান থেকেই। কলকাতার সমস্ত অলি-গলি তার মুখস্থ। সেখানেই প্রথম নাচ শেখবার আগ্রহ হয়। তখন কলকাতায় সংস্কৃতি বলতে উদয়শঙ্করের নাচ, মোহনবাগান ক্লাবের ফুটবল খেলা আর নিউ থিয়েটার্সের সিনেমা।’ গুরু দত্ত আর কলকাতা।
‘সেই সন্ধেবেলা সেই ফাঁকা মাঠের মধ্যে ছোট একটা বাংলো বাড়ির ঘরের ভেতরে আমি গুরুর আর এক রূপ দেখলাম। পায়ে রবারের চটি, পরনে চেক লুঙ্গি, গায়ে হাত-কাটা গেঞ্জি। একমনে কাঠের জাফ্রির ওপর বুরুশ চালিয়ে যাচ্ছে।’ অন্য গুরু দত্ত।
‘সেদিন ওরা চলে যাবার পর অনেকক্ষণ ধরে এটাই ভাবছিলাম। বোম্বাইতে এসে পর্যন্ত শুনে আসছি ওয়াহিদার কথা আর গুরুর কথা। সিনেমার জগতে যতরকম গুজবের সৃষ্টি হয়, সাহিত্যের জগতে সে গুজবের শতাংশের একাংশও হয় না।’ সম্পর্কের গুজব।
This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.
©2025 Copyright: Vision3 Global Pvt. Ltd.
