ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2025

 
 
  • স্বর্ণশ্যাম স্তব্ধতা

    পৃথ্বী বসু (March 14, 2025)
     

    নিজের গাড়ি, কালো-কোলো দেহাতি নওজওয়ান এবং বলদ ছাড়া দুনিয়ার আর-কিছুতে তার বিশেষ আগ্রহ ছিল না কখনও। জীবনে কসম খেয়েছিল সে দুটো— বাঁশ এবং চোরাবাজারি মাল তুলবে না গাড়িতে। এত কাঠখোট্টা, দৃঢ় যে-ব্যক্তিত্ব, সেই হীরামনের মনের ভেতরে একদিন কী যেন ঘটে গেল। ভোরের কুয়াশামাখা রোদ তাকে মগ্নতা দিল, নদীর ধারে ধানখেত থেকে পাকা ধানের সুবাস ভেসে এল, এমনকী, তার গাড়িতে ফুলও ফুটল, চাঁপা। হীরামন দেখল, সেই চাঁপা ফুলে বসে আছে এক পরি। সারা শরীর শিরশিরিয়ে উঠল তার। সম্ভাবনাময় এক ‘হলুদ’ রঙের প্রতিবেশ ঢুকে পড়ল জীবনে। নৌটঙ্কির হীরাবাঈয়ের সঙ্গে খোশগল্পে চাকা গড়াল। গাড়িরও, মনেরও। কিন্তু হীরামনের জীবনের ধূসর আস্তরণ সরে গিয়ে ঢুকে পড়েছিল এমন এক হলদেটে খোয়াব, যেখানে প্রেম হয় না, মনকেমন হয়। চিনচিনে ব্যথার মতো বুকের ভেতরে বাজতে থাকে অচিন রাগিনী। স্রোতের উলটোদিকে সাঁতার দেওয়া মন, হয়তো টের পেতে থাকে, এই বুঝি কূল পেলাম; কিন্তু দীর্ঘশ্বাস ছাড়া শেষ অবধি কিছুই জোটে না।

    যাঁরা ফণীশ্বরনাথ রেণুর ‘তিসরি কসম’ পড়েছেন, তাঁরা জানেন, হীরামনের পরিণতি। হীরাবাঈয়ের চলে যাওয়া, হীরামনের চোখে জল, এবং সেই জলভরা চোখ নিয়ে দূরের আলোর দিকে তাকিয়ে থাকা… যে-হলুদ আলোয়, মনে হয় যেন অসংখ্য সূর্যমুখী ফুল ফুটে আছে। বিষণ্ণ রূপকথার সেই ‘হলুদ’ আলো অভিমানের, ব্যথার, হতাশার; একাকিত্বেরও নয় কি?

    ‘তিসরি কসম’ ছবির একটি দৃশ্য


    ‘একখণ্ড জমি, একটি দুপুর ও আমার শৈশব’ নামে কবি মণীন্দ্র গুপ্ত একটা কবিতা লিখেছিলেন অল্পবয়সে। শুরুর কয়েকটা লাইন সেখানে এরকম— ‘বাঁশের ঝাড়ের নিচে খসে পড়া বাঁশের বাকল/শুয়ে থাকে নিরিবিলি।/হলদে ছায়া তালি দেওয়া ফালি জামা গায়ে/দুপুরের রৌদ্র ঘোরে একলা-ছেলের মতো,/হেঁটে যায় বাঁশতলি দিয়ে…’। অনেকবার ভেবেছি, ‘দুপুরের রৌদ্র’কে কেন ‘একলা-ছেলে’র সঙ্গে তুলনা করলেন তিনি? দুপুরের রোদরং, যা কিনা ঝলসানো হলুদ, তার মধ্যে কি বিষাদের ছোঁয়া রয়েছে কোথাও? স্তব্ধতা উঁকি মারে কি আশপাশ থেকে? গানে-শোনা ‘দুপুর আকাশে একা চিল’-এর মতো? দুপুরের মধ্যে কেন যে একটা নিঃসঙ্গতার ভাব গুটিসুটি মেরে রয়েছে, তা আজও ঠাহর হয় না। একালের গীতিকারের নিজ-পৃথিবীতে বিকেলের রং যদি ‘হেমন্তে হলুদ’ হয়, রবীন্দ্রনাথ ‘নৈবেদ্য’-তে বর্ণনা করেছিলেন হেমন্তের দুপুরের কথা— ‘আজি হেমন্তের শান্তি ব্যাপ্ত চরাচরে।/জনশূন্য ক্ষেত্র-মাঝে দীপ্ত দ্বিপ্রহরে/শব্দহীন গতিহীন স্তব্ধতা উদার/রয়েছে পড়িয়া শ্রান্ত দিগন্তপ্রসার/স্বর্ণশ্যাম ডানা মেলি…’।

    শুধু ‘স্বর্ণশ্যাম’ শব্দটার মধ্যে দিয়েই, কী আশ্চর্য, ঝকমকে উজ্জ্বলতাটা কোথায় যেন চাপা পড়ে গেল (এই স্বর্ণশ্যাম সময়ের কুহকেই বারংবার ঢুকে পড়তেন জীবনানন্দ দাশ)। জেগে রইল থমথমে একটা পরিবেশ। গুমোট, বিষণ্ণ। খুব গোছানোও হয়তো নয়। কিঞ্চিৎ এলোমেলো, ভাঙাচোরা। এই প্রসঙ্গে মনে পড়ে যাচ্ছে আরও একটা কবিতার কথা, যার শিরোনামেই রয়েছে ‘ভাঙাচোরা’ শব্দটা। কবির নাম অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়। কবিতার নাম ‘একটা ভাঙাচোরা কবিতা’। যৌথ পরিবার ভেঙে আলাদা পাড়ায় উঠে যাওয়া এবং বন্ধুত্বের ভাঙন একদিকে, অন্যদিকে কী কী থেকে গেল জীবনে— এ-ই কবিতার বিষয়। কিন্তু এই কবিতাতেই, আমরা দেখব, কবি এমন এক অনুরোধ জানাচ্ছেন তাঁর কাছের একজনকে, যার সঙ্গে ‘হলুদ’ রঙের কী নিবিড় যোগাযোগ! অনিন্দিতা কবিতায় লিখেছিলেন, ‘অন্ধকার অন্ধকার রাস্তাগুলো পেরিয়ে পেরিয়ে গিয়ে/কাছে আয় পাগল আমার/ঘুগনির তলায় যে হলদে আলো জ্বলে/তাকেও সঙ্গে নিয়ে আয়…’। শিকড় থেকে চ্যুত প্রাণ কী নিয়ে যে বেঁচে থাকবে, বুঝতে পারে না। হয়তো বারে বারে মনে পড়তে থাকে শুরু-হতে-থাকা কোনও প্রেমের মুহূর্ত। যেমন, এই কবিতায় আমরা পাব। ছেলেবেলার প্রেম, প্রেমের উদযাপনে অপার্থিব আনন্দ এনে দেওয়া সামান্য ঘুগনি… মনে হয়, সেই মুহূর্তগুলো ফেরত পেলে বেঁচেবর্তে থাকা যাবে আরও বহুদিন। মাথার ওপরের আকাশটা আরও বড় হবে। তাই এই চাওয়া। মনকেমনের দোলনায় বসে ‘ঘুগনির তলা’র ‘হলদে আলো’র জন্য হাহাকার। আমেরিকান চিত্রশিল্পী মার্ক রথকো-র ‘অরেঞ্জ অ্যান্ড ট্যান’ ছবির যে-হলুদ রং, সেই হলুদের অবসন্ন, নিভু-নিভু ভাব এই কবিতায় ছড়িয়ে রয়েছে যেন-বা!


    ১৮৮৮ সালে প্যারিস থেকে আলো-ঝলমলে শহর আর্লসে চলে আসেন ভিনসেন্ট ভ্যান গঘ। এক বছরের একটু বেশি সময়ের মধ্যে এঁকে ফেলেন তিনশোরও বেশি ছবি, যার প্রধান রং হলুদ। এমনকী সেই বিখ্যাত ছবি, ‘ক্যাফে অ্যাট দ্য টেরেস’, সেই রাতের ছবিতেও সিংহভাগ হলুদ রং। বুঝতে অসুবিধে হয় না, আর্লসের চোখ-ঝলসানো সূর্যালোকের হলুদ, আচ্ছন্ন করে রেখেছিল ভিনসেন্টের মন। ভাই থিওকে লেখা চিঠিতে লিখেওছিলেন সে-কথা, ‘কী সুন্দর এই হলুদ!’ সঙ্গে যোগ করেছিলেন এই আক্ষেপটুকুও, যে, আর্লসের প্রকৃতি-উপচানো এই ‘হলুদ’-কে তিনি যথাযথভাবে তাঁর ছবিতে ফুটিয়ে তুলতে পারছেন না। অসহায় লাগছে তাঁর।

    ‘পোর্ট্রেট অফ ডক্টর গ্যাচেট’। শিল্পী : ভ্যান গঘ

    কিন্তু খটকা লাগে, সত্যিই কি হলুদ রং তাঁকে ভীষণভাবে পেয়ে বসেছিল, যে-কারণে মাঠ-ঘাট-ফুল-মানুষ সবেতেই তিনি ওই রঙের প্রয়োগ করতেন? বিশ্বাস করতে মন চায় না। নানান ঘটনায় ছোট থেকেই একাকিত্ব ছিল তাঁর নিত্যসঙ্গী। অস্থিরতা ঘিরে থাকত সারাক্ষণ। কিঞ্চিৎ উদ্ভট এই ব্যক্তির সঙ্গে কারোরই সেভাবে সখ্য গড়ে ওঠেনি কখনও। এই চোরা বিষণ্ণতাই কি ‘হলুদ’ রং হয়ে বেরিয়ে আসত ক্যানভাসে? আর্লসের বাড়িতে থাকাকালীনই চাউর হয়ে যায় তিনি ‘পাগল’। কান কেটে গণিকাকে উপহার দেওয়ার ঘটনা তো সবারই জানা! এমনকী পল গঁগ্যাও ভিনসেন্টের সঙ্গে বেশিদিন থাকতে পারেননি আর্লসে গিয়ে, তাঁর ওই পাগলামির কারণে। হাসপাতাল, অ্যাসাইলাম করতে-করতে এর কিছুদিন পর মৃত্যু। মৃত্যুর আগে, অসুখী সময়ের বৃত্তান্তই কি উঠে আসেনি ছড়ানো-ছিটানো হলুদ রঙের মধ্যে দিয়ে? অনেকে মনে করেন, ভিনসেন্টের হলুদ রঙের এই বহুল ব্যবহার, তাঁর চিকিৎসার সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে। জীবনের শেষদিকে ফক্সগ্লোভ দ্বারা তাঁর চিকিৎসার কারণে দৃষ্টিশক্তিতে পরিবর্তন আসাও অস্বাভাবিক নয়। নানান বস্তুকে হলুদাভ রঙে দেখা, তারই প্রভাবে কি? ‘দ্য স্টারি নাইট’ ছবির তারাদল কেন হলুদ বলয়ে মোড়া, কে বলে দেবে? মৃত্যুর সময় আসন্ন, কোথাও গিয়ে কি টের পাচ্ছিলেন তিনি? আরও একটা ছবির কথা মনে পড়ে যায়, ‘পোর্ট্রেট অফ ডক্টর গ্যাচেট’। গ্যাচেটই সেই ব্যক্তি, যিনি ভিনসেন্টের শেষজীবনে ফক্সগ্লোভ দ্বারা তাঁর চিকিৎসা করেছিলেন। ঘননীল প্রেক্ষাপটে গ্যাচেটের হলুদ মুখ, পাশে ফুলদানিতে রাখা ফক্সগ্লোভ। এই আঁকার মধ্যে দিয়ে ভ্যান গঘ কি আমাদের কিছু বোঝাতে চেয়েছিলেন?

    ভূমেন্দ্র গুহ তাঁর বইতে যেখানে জীবনানন্দের মৃত্যুশয্যার নানান বর্ণনা দিয়েছিলেন, সেখানে বলা আছে কবির উচ্চারণ করা শেষ কয়েকটা কথা। তিনি নাকি বলেছিলেন, ‘ধূসর পাণ্ডুলিপির রং সারা আকাশ জুড়ে, ধূসর পাণ্ডুলিপি সারা আকাশ জুড়ে…’।


    নীল ছাড়াও, মৃত্যুর সঙ্গে হলুদ রঙের কখনও-কখনও যোগসূত্র গড়ে ওঠে তাহলে! ভিনসেন্ট তাঁর শেষ জীবনে যেভাবে অবাক করে দিয়েছিলেন তাঁর ছবিতে ‘হলুদ যুগ’ এনে, তেমনই সারাজীবন ধরে আমাদের অবাক করেছেন জীবনানন্দ দাশ। পৃথিবীর রূপ তিনি খুঁজতে যাননি ঠিকই, কিন্তু সোনালি-হলুদ রঙে মোড়া এই আবহমান পল্লি-প্রকৃতির যে-রূপ তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন তাঁর কবিতায়, সেই রূপ ঠিক কেমন? মনে পড়বে তাঁরই কবিতার পঙ্‌ক্তি— ‘যেইখানে সবচেয়ে বেশি রূপ— সবচেয়ে গাঢ় বিষণ্ণতা’। প্রকৃতির চিত্ররূপময়তার মধ্যে দিয়েই মলিন এক-একটা ছবি তিনি চিরকাল এঁকেছেন। সুন্দরকে সামনে রেখে তার অ-সুন্দরকে চিহ্নিত করেছেন বারংবার। ছবি দেখিয়েছেন গ্রামের, শব্দ শুনিয়েছেন ‘গ্রাম পতনের’। ‘হলুদ’ রং তাঁর কবিতায় এত বিচিত্র স্তর তৈরি করেছে, এত বিষাদ ওই রং চুঁয়ে-চুঁয়ে পড়ে, ভাবলে আশ্চর্য লাগে! উদাহরণ দিতে বসলে, এই লেখা আর শেষ হবে না। ‘অবসরের গান’ কবিতায় লিখছেন, ‘শুয়েছে ভোরের রোদ ধানের উপরে মাথা পেতে/অলস গেঁয়োর মতো এইখানে কার্তিকের ক্ষেতে;/মাঠের ঘাসের গন্ধ বুকে তার,—চোখে তার শিশিরের ঘ্রাণ,/তাহার আস্বাদ পেয়ে অবসাদে পেকে ওঠে ধান…’।

    জীবনানন্দ দাশের জীবনে হলুদ রং এসেছে ঘুরেফিরে

    ‘অবসাদ’ শব্দটা কীভাবে হলুদ রং তৈরি করল, ভাবুন! এই অবসাদ শুধু ধান নয়, ক্রমশ পাকিয়ে তোলে কবির জীবনও; নিঃসঙ্গতা যেখানে প্রজাপতির মতো এসে বসে। ম্লান হলুদ রঙে আঁকা হয় সেই জীবনপট। ভূমেন্দ্র গুহ তাঁর বইতে যেখানে জীবনানন্দের মৃত্যুশয্যার নানান বর্ণনা দিয়েছিলেন, সেখানে বলা আছে কবির উচ্চারণ করা শেষ কয়েকটা কথা। তিনি নাকি বলেছিলেন, ‘ধূসর পাণ্ডুলিপির রং সারা আকাশ জুড়ে, ধূসর পাণ্ডুলিপি সারা আকাশ জুড়ে…’। ধূসর পাণ্ডুলিপির রং কি শুধুই ধূসর? হলুদের ক্ষীণ আভা কি লেগে থাকে না তাতে? মৃত্যুশয্যায় শুয়ে কেন ওই ধূসর-হলুদাভ রঙের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছিলেন তিনি, তা রহস্য। কিন্তু সত্যিই রহস্য কি? অনেক জটিল কথা ভেতরে চেপে রেখে, যে-প্রাণ লাট খেতে-খেতে জীবন ফুরিয়ে দেয়, তার রং কি ম্লান হলুদ নয়? নইলে কেনই-বা তিনি লিখবেন, ‘হলদে পাতার মতো আমাদের পথে ওড়াউড়ি’!


    পথচলতি আড্ডায় কয়েক বছর আগে আলাপ হয়েছিল বাবলুদার সঙ্গে। পরিচিতদের ‘বাবলুদা’, সেই সূত্রে আমারও। ভাল নাম প্রদীপ ভট্টাচার্য। কবি ভাস্কর চক্রবর্তীর ঘনিষ্ঠজন। অনেক সুখে-দুঃখে তাঁরা জড়িয়ে ছিলেন নানান সময়ে। এই বাবলুদার মুখেই শুনেছিলাম কোনো-এক ওষুধ কোম্পানির আশ্চর্য বিজ্ঞাপনের কথা, যার পোস্টার নাকি কিছুদিনের জন্য ভাস্করের ঘরে টাঙানো ছিল। ওষুধ প্রসঙ্গে তার আগে একটা কথা বলে নিতে চাই শুধু। যে-ভাস্কর একদা লিখেছিলেন, ‘দুপুরবেলা, আরও কতো কী করতে ইচ্ছে করে— হলুদ শাড়ি পরে/যখন তুমি দাঁড়িয়ে থাকো বারান্দায়’, সেই তিনিই লিখবেন, ‘সকালে সাদা ট্যাবলেট। দুপুরবেলায় হলুদ…’। কামনার হলুদ রং, বদলে গেল ওষুধে। ঢুকে পড়ল অসুখ। তো, যা বলছিলাম— বাবলুদা কথিত ওই বিজ্ঞাপনের ছবি ছিল একটা বহুতল বাড়ির; ঘুটঘুটে অন্ধকার, শুধু একটা ঘরে হলুদ আলো জ্বলছে। আসলে মাঝরাতের ছবি, যেখানে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে, কেউ একজন জেগে। ডিপ্রেশনের ওষুধের এত সহজ এবং একইসঙ্গে জটিল বিজ্ঞাপন কল্পনা করা যায়!

    এখন মাঝে মাঝে মনে হয়, কমবেশি আমাদের সবার জীবন বোধহয় ওরকমই। হলুদ আলোর নীচে অনন্ত জেগে থাকা। হলুদ পাতার মতো পথে-পথে উড়ে বেড়ানো। হেমন্তের দুপুরের স্বর্ণশ্যাম স্তব্ধতা নিয়ে পার করে দিই বছরের পর বছর। মাঝে মাঝে শুধু রং বদল হয়। যেরকম রং বদল হয়েছিল মার্কেসের চরিত্র উলিসেসের জীবনে। এরেন্দিরার সঙ্গে আলাপের পর মরুভূমি থেকে ফিরে সে কাচের জিনিস ছুঁলেই যখন সব নানান রঙে ঝলমল করে উঠেছিল, তখন তার মা জানিয়েছিল, ‘ওরকম হয় শুধু প্রেমে পড়লেই।’ এই অপেক্ষাটুকুই সব। এই আশাটুকুই শাশ্বত। বাকি সব গড়পড়তা, মামুলি।

     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     



 

Rate us on Google Rate us on FaceBook