নীলপাহাড়ির দেশে যা
এতদিন কলকাতায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল বা জাদুঘরের সামনে দাঁড়িয়ে কী মজাটাই না লাগত, যখন দেখতাম, আমাদের জন্য ২০ টাকা টিকিট আর বিদেশিদের জন্য ২০০। এবার টেরটি পেলাম ওচো রিওসের গেটে দাঁড়িয়ে। টিকিট কাউন্টার পর্যন্ত আর যেতে হল না। বোর্ডের লেখা পড়েই ভিরমি খেলাম। বিদেশিদের জন্য টিকিটের যা দাম করে রেখেছে, আমাদের সাধ্য নেই! ওচো রিওস পৃথিবীর মহার্ঘ ট্যুরিস্ট স্পটগুলোর একটা। কিংস্টন থেকে ঘণ্টাখানেকের পথ গাড়িতে। তবে কি এতদূর এসে ফিরে যেতে হবে? বাঙালির অপমান হবে না? আর সবচেয়ে বড় কথা, একটা দুর্ধর্ষ জায়গার ছবি দেখাতে পারব না আমাদের টিভি চ্যানেলে ‘ক্যারিবিয়ান ডায়েরি’-র দর্শককে? পকেটে অত ডলার না থাকা সত্ত্বেও শেষমেশ কিন্তু ঢুকেছিলাম ওচো রিওসে, প্রাণ ভরে শুটিংও করেছিলাম। কীভাবে, সেটা পরে বলছি। তার আগে বলি যাত্রাপথের কথা।
সকাল সকাল বেরলাম হালকা ব্রেকফাস্ট করে। এখানে বলে রাখি, প্রাতরাশ সবসময়ই হালকা, কারণ কমপ্লিমেন্টারি নয়। হোটেলের রেস্তোরাঁয় খেলে টোস্ট-পোচ। আর ঘরে খেলে সঙ্গে আনা চিঁড়ে, গুঁড়ো দুধ আর জলছিটে দিয়ে। বিশাল-বিশাল কলা অবশ্য পাওয়া যায় এখানে। পেট ভরানোর জন্য একটাই যথেষ্ট।
গাড়ি শহর ছাড়াতেই অসাধারণ পাহাড়ি রাস্তা শুরু হল। ঘন সবুজে ঢাকা ব্লু মাউন্টেনস। কুয়াশার পর্দায় নীলচে আভার কারণে ব্লু মাউন্টেনস নাম। মেঘলা আকাশের চালচিত্রে এই নীল পর্বতমালা যেন ‘নীল অঞ্জনঘন পুঞ্জ ছায়ায় সম্বত অম্বর/ হে গম্ভীর, হে গম্ভীর’। আর কী গভীর নির্জনতা সেই পথে! ক্বচিৎ দু-একটা গাড়ি চলে যাচ্ছে স্পিডে পাশ কাটিয়ে। আমরা চলেছি গদাইলশকরি চালে, জানালা দিয়ে ক্যামেরা তাক করে। ভাল স্পট দেখলেই গাড়ি দাঁড় করাতে বলছে ক্যামেরাম্যান। চড়াইয়ের বাঁকে বাঁকে মাঝে-মাঝেই দু-একটা খাবার দোকান।
আরও পড়ুন : ভারতীয় খাবারের দাম বিদেশে গেলেই ধরাছোঁয়ার বাইরে!
পড়ুন ডেটলাইন পর্ব ১৪…
একটু পরে খেয়াল করলাম, একই বস্তু সব জায়গায় দেখে মনে হয়, লালচে পোড়া মাংস। আসলে মশলা-মাখানো গ্রিল করা চিকেন, জামাইকানদের প্রিয় খাদ্য— জার্ক। এত লোভনীয় দেখতে যে, না খেয়ে এগনোর প্রশ্নই নেই। এত চমৎকার খাবারের নাম কেন জার্ক, কে জানে! আমেরিকানরা স্ল্যাং হিসেবে খুব ব্যবহার করে এই শব্দটা! মানে বোকাহাবা, বিরক্তিকর লোক। তুরন্ত হাফ রান্না করা জার্ক ফের কাঠের আগুনে সেঁকে নিয়ে আমাদের দিল এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবক। সে একাই রাঁধুনি, বেয়ারা, বাসন ধোয়ার লোক এবং ক্যাশিয়ার। খাবার তৈরি করতে করতেই হাসিমুখে জানাল, এই খাদ্যবস্তুর ইতিহাস চারশো বছরেরও বেশি পুরনো। আফ্রিকান ক্রীতদাসেদের হাত ধরেই এসেছিল এই মুলুকে। লক্ষ করলাম, ছেলেটি যখন তার পূর্বসূরিদের কথা বলতে গিয়ে ‘গ্রেভ’ শব্দটা উচ্চারণ করছে, সংকোচ তো দূরের কথা, বেশ অহঙ্কার ঝরে পড়ছে গলায়। বুঝলাম, এটাই কালো মানুষের আলো!
ওচো রিওসে পৌঁছে যে সমস্যাটা শুরু হল, সত্যি বলছি, তার সমাধানে আমার এতটুকু উদ্যোগ ছিল না। যখন জানলাম, টিকিটের দাম আমাদের সাধ্যের বাইরে, এত হতাশ হয়ে পড়েছিলাম যে, কিছু ভাবতেই পারছিলাম না। চুপটি করে বসে ছিলাম একটা গাছের বেদিতে। আর ভাবছিলাম, কীভাবে লিখতে পেরেছিলেন, নজরুল, ‘হে দারিদ্র, তুমি মোরে করেছ মহান!’ স্বর্গের দরজায় বসে আছি, অথচ ওপাশে পা রাখার ক্ষমতা নেই, এ কী অসহ্য পরিস্থিতি!
প্রায় চোখে জল আসার অবস্থায় পৌঁছে নজরে এল, একটু দূরে, বিশালবপু এক কৃষ্ণাঙ্গী পয়সা নিয়ে সরু সরু বিনুনি বেঁধে দিচ্ছে। মনে হল, আমার এক্ষুনি এই বিলাসিতাটুকু করা দরকার মুড লিফটিং-এর জন্য। এক-একটা বিনুনির দাম এক ডলার। মাথা পেতে বসে পড়লাম সামনের টুলে। যেমনটা আমাদের গড়িয়াহাটের ফুটপাথে মেহেন্দি পরায় আর কী! মাত্র দুটো বিনুনি করব শুনে খুবই হতাশ হল মহিলা। কারণ এখানকার মেয়েরা মাথা জুড়ে অজস্র সরু বিনুনি করে নানারকম সাজসজ্জা দিয়ে সাজায়। ট্যুরিস্টরাও অন্তত খানদশেক করে তো করায়ই। দু-মিনিটে আমার মাথার দু-পাশে শোভা পেতে লাগল দুটো লিকপিকে টাইট করে বাঁধা বিনুনি, যার খাঁজে খাঁজে রঙিন পুঁতি। আমার এই বিচিত্র সাজ দেখে খুব আহ্লাদ পেল ক্যামেরাম্যান এবং ক্লোজ আপ নিতে লাগল কায়দা করে, যাতে আমার মুখটা বোঝা না যায়।
এই সামান্য বিনুনি যে আমাদের টিমের কত বড় সহায় হয়েছিল, জানলে আপনারা অবাক হয়ে যাবেন! আমার এই নতুন কেশসজ্জা দেখেই আর একজনের চোখে বিদ্যুৎ খেলে গেল। আমাদের ক্যাবের চালক। সে ক্যারিবিয়ান হলেও ভারতীয় বংশোদ্ভূত, ত্রিনিদাদের লোক। গাভাসকরের ডাই হার্ড ফ্যান। ফলে আমাদের সঙ্গে বেশ একটা ভাই-ভাই ভাব তৈরি হয়েছে তার। গোটা রাস্তা ক্রিকেট নিয়ে আড্ডা হয়েছে সফরসঙ্গী সাংবাদিকের সঙ্গে। সেও বেশ মুষড়ে পড়েছিল আমাদের রিসর্টে ঢোকাতে না পেরে। এবার সে বলল, ‘আসুন আমার সঙ্গে। ম্যাডামকে তো পুরো ত্রিনিদাদের মেয়ে বলে মনে হচ্ছে। উনি টিকিট কাটবেন। মনে হয় ওকে কোনও প্রশ্ন করবে না কাউন্টারে। তাহলে সস্তায় ঢুকতে পারবেন আপনারা।’
এক মুহূর্তে চাঙ্গা হয়ে উঠলাম আমরা, একটা চান্স নিয়ে দেখাই যাক না! এবং ক্লিক করল সেই ট্রিক। ক্যারিবিয়ানদের জন্য যে দাম লেখা ছিল বোর্ডে, সেটাই দিলাম। কোনও প্রশ্ন না করেই তিনটে টিকিট এগিয়ে দিলেন কাউন্টারের ভদ্রলোক। আমি একমুখ হাসি নিয়ে ফিরলাম।
ডানস রিভার ফলস। এত নদী, এত ঝরনা দেখেছি, কিন্তু ঝরনা-নদী দেখিনি। রিভার ফলস হল সেই বিরল নদী, যা বইতে-বইতে হঠাৎ প্রকৃতির খেয়ালে প্রবল বেগে পাথর বেয়ে নিচে ঝাঁপ দেয়। ওচো রিওসের প্রধান আকর্ষণ এই ডানস। বন্ড ফ্যানেরা ‘ডক্টর নো’ সিনেমায় এই পাগলপারা ডানসকে দেখেছেন। এখানেই দুরন্ত জলকেলি করেছিলেন জেমস বন্ড আর তাঁর গার্লফ্রেন্ড, মানে শন কনারি আর উরসুলা অ্যানড্রেস। জলকেলির আদর্শ জায়গা। ইচ্ছেয় হোক আর অনিচ্ছেয় হোক, হাতে হাত না ধরে, পরস্পরের গায়ে না ঢলে পড়ে এই দুর্গম পথ পাড়ি দিতে পারবেন না কেউ-ই। জলের তোড়ে ভেসে যাওয়ার প্রবল চান্স। সারাক্ষণ সাবধান করছে গাইডরা, পেশাদার ডুবুরিও হাঁটছে আপনার সঙ্গে। তবে সাধারণ পোশাকে ডানসে যাওয়ার নিয়ম নেই। বিকিনি, স্যুইমস্যুট, নিদেনপক্ষে সারং-জাতীয় কিছু পরতে হবে। চেনা-অচেনার বাধা দূরে সরিয়ে ‘আয় তবে সহচরী/ (আপনার ভাগ্যে সহচরও জুটতে পারে পাশে) হাতে হাতে ধরি ধরি’ বলে ডানসের ঝরনাতলায় পা রাখুন আর ধীরে ধীরে আড়াআড়ি হেঁটে চলুন সাগর-সঙ্গমের দিকে।
ডানস হল বিশ্বের গুটিকয় রিভার ফলসের একটি, যা সরাসরি সাগরে পড়েছে। মাঝে মাঝে আবার ছোট্ট ছোট্ট জলাশয়, লেগুন যাকে বলে। গা ডুবিয়ে বোল্ডারে বসে একটু হাঁফ ছেড়ে নিয়ে ফের রওনা হতে পারেন। ততক্ষণে নতুন একটা দল এসে যাবে। এবার আবার নতুন বন্ধুর হাত ধরে হাঁটুন। বন্ডের মতোই ঘণ্টায় ঘণ্টায় সঙ্গী বদল আর কী! ভয়ংকর সুন্দর এই জলপথ খুব দীর্ঘ নয়, ৯৬০ ফুট। কিন্তু পায়ের নিচে পিছল এবড়ো-খেবড়ো পাথর আর মাথার ওপর তীব্র জলধারা সামলে মনে হবে, এই পথ যদি শেষ হয়। তবে মানতেই হবে, ঘণ্টাখানেকের এই অ্যাডভেঞ্চার জীবনে ভোলার নয়।
ন্যুড বিচের কথা শুনেছি। কিন্তু স্বচক্ষে দেখার সুযোগ এই প্রথম হল। ডানস নদী যেখানে ক্যারিবিয়ান সাগরে পড়েছে, সেখানে দুটো সৈকত লাফিং ওয়াটারস আর ক্র্যাব কি। সাদা বালুর সেই বিচ ইউরোপ-আমেরিকার ট্যুরিস্টদের খুব প্রিয়। প্রাণ হাতে করে নদী পেরিয়ে সেখানে পৌঁছে খুব একটা লাভ হল না। আমাদের তো আর এই বিলিওনেয়ারদের মতো ফুর্তির প্রাণ-গড়ের মাঠ নয়। যেখানে আমরা ক্যামেরা খুলতেই পারব না, সেখানে সময় নষ্ট করে কী লাভ? বাংলার কোন চ্যানেল দেখাবে নারী-পুরুষের এই নগ্ন রৌদ্রস্নানের উৎসব? অতএব, লেন্সের ‘পবিত্রতা’ যথাসম্ভব বজায় রেখে আমাদের ক্যামেরাম্যান অসামান্য নীলিমায় নীল ছবি তোলায় মন দিল। মানে ফিরোজা রঙের সমুদ্র আর সবুজ নারকেল গাছের ছবি আর কী! ‘সুনীল সাগরের শ্যামল কিনারে/ দেখেছি পথে যেতে তুলনাহীনারে’— এমন অনেক সুন্দরী চোখে ধরা দিলেও ক্যামেরা বেচারি বঞ্চিতই রয়ে গেল।
ফিরতি পথে কিন্তু আর ডানস পেরনো নয়। আমরা সৈকতের অন্য প্রান্তে হোটেলের গেট দিয়ে বেরনোর রাস্তা ধরলাম। হোটেলের কাছেই নোঙর করা রয়েছে বিলাসবহুল ক্রুজ। তার থেকে দলে দলে নামছে সাহেব-মেম। তাদেরও ছবি নেওয়া হল। এবার আমাদের গন্তব্য ডিসকভারি বে। মিনিট চল্লিশেকের পথ। সেখানেই নাকি ১৪৯৪ খ্রিষ্টাব্দের ৫ মে ভিড়েছিল ক্রিস্টোফার কলম্বাসের নৌকো। যেমন নাকি ১৬৯০-এর ২৪ আগস্ট কলিকাতার ঘাটে এসে লেগেছিল জোব চার্নকের নৌকো। কলম্বাসই প্রথম ইউরোপীয়, যিনি জামাইকায় পা রেখেছিলেন। যে দেশকে ইনি ইস্ট ইন্ডিজ বলেছিলেন, পরে অবশ্য তা হয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিউবার লোকেদের থেকে তিনি শুনেছিলেন, জামাইকা ‘ল্যান্ড অফ ব্লেসড গোল্ড’। সোনা না খুঁজে পেয়ে অবশ্যই হতাশ হয়েছিলেন কলম্বাস। তবে এর সূত্র ধরেই স্প্যানিশরা বছর ষোলো পরে জামাইকায় উপনিবেশ তৈরি করেছিল। ১৬৫৫ সালে তাদের হাত থেকে যা ছিনিয়ে নেয় ব্রিটিশরা।
গাড়ি থেকে নামতে না নামতে এক বিচিত্রদর্শন আধপাগলের খপ্পরে পড়লাম। ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানদের মতো অত কালো নয়, তামাটে গায়ের রং, অনেকখানি লম্বা পেটানো চেহারা, রবীন্দ্রনাথের মতো দাড়ি, বয়স সত্তর হবে মনে হল। তার পোশাক রংচঙে আর গলায় নানা ফলমূল দিয়ে তৈরি মালা। মালার লকেট একটা জাম্বো সাইজের জামরুল। সে আমাদের দেখে খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে গান গাইতে গাইতে এগিয়ে এল। ‘ইন ফোর্টিন নাইন্টি টু কলম্বাস সেইন্ড দ্য ওশেন ব্লু/ ইট ওয়াজ আ কারেজিয়াস থিং টু ডু’। (আসলে এটা আমেরিকা আবিষ্কারের গান। ১৪৯২ সালে আমেরিকায় পা রেখেছিলেন কলম্বাস)। আমাদের ক্যামেরাম্যান এত দারুণ সাবজেক্ট পেয়ে মহা উৎসাহে ছবি তুলেই যেতে লাগল। তাতে ওই ভদ্রলোক পাগলপারা হয়ে গানের সঙ্গে ঘুরে ঘুরে নাচতে শুরু করলেন। তাঁকে আর থামানো যায় না! শেষমেশ হাতে দু-চার ডলার দিয়ে অনুরোধ করা হল, ‘দেখছেন তো আলো ফুরিয়ে আসছে, আমাদের অনেক শুটিং বাকি এখানে। আপনার গান অসাধারণ। কিন্তু আমাদের উপায় নেই।’
ডিসকভারি বে-র নাম আগে ছিল ড্রাই হারবার। কলম্বাস নাকি এখানে পানীয় জলের কোনও সন্ধান না পেয়ে নাম দিয়েছিলেন ড্রাই হারবার। পরে আবিষ্কর্তার সম্মানে এর নাম হয় ডিসকভারি বে। ঠিক যেখানে নৌকো থেকে নেমেছিলেন কলম্বাস, সেই জায়গাটা দেখে কেমন গায়ে কাঁটা দিল। আমেরিকা আবিষ্কারের জেদে দ্বিতীয়বারের অভিযানে এই জামাইকায় এসে পড়লেন, তারপর জল পর্যন্ত না পেয়ে কীভাবে দিন কাটালেন, আবার একদিন বেরিয়ে পড়লেন উত্তাল সাগরে নৌকো ভাসিয়ে, দুঃসাহসী সেই অভিযাত্রীকে স্যালুট জানাতেই হয়।
সাগরপাড়েই রয়েছে কলম্বাস পার্ক ওপেন এয়ার মিউজিয়াম। এখানে সাজানো ওই নোঙরটা কি সত্যিই কলম্বাসের? ভাবলাম, কলকাতার জাদুঘরে যদি মিশরের মমি থাকতে পারে, তাহলে ডিসকভারি বে-তে কলম্বাসের নোঙর তো অবিশ্বাস্য কিছু নয়! একটা পুরনো মডেলের রেল ইঞ্জিন, আখ-মাড়াই কল চালানোর জন্য ওয়াটারহুইল, সিন্দুক, কামান— কত কী যে সাজানো! আর অদ্ভুত কিছু লাঠি দেখলাম, একে নাকি বলে ট্যালি। মিউজিয়াম কর্মী জানালেন, এগুলো আসলে কলা গোনার কাজে লাগত। দাস শ্রমিকরা মাথায় করে কলার কাঁদি আনত জাহাজে তোলার জন্য। সেগুলো গুনতি হত ট্যালিতে।
অনেকক্ষণ ধরেই বেশ চড়া গরম মশলার গন্ধ পাচ্ছিলাম। রান্নার গন্ধ নয়। লক্ষ করলাম, চারপাশে একইরকম অনেক মাঝারি সাইজের গাছ, সাদা ফুলে ভর্তি। সেখান থেকেই কি আসছে এই গন্ধ?
জানলাম, আমার অনুমান ঠিক। ওই গাছই গন্ধের উৎস। গাছের নাম পিমেন্টো। এর থেকে হয় অলস্পাইস মশলা— দারচিনি, লবঙ্গ আর জায়ফলের মিশ্রণ বলা যায় সেটাকে।
জীবনানন্দের দারুচিনি দ্বীপ তো দেখিনি, তাও এই সুদূর জামাইকায় দেখা হল অলস্পাইস দ্বীপ!
ছবি সৌজন্য : লেখক