ভোগ
কোনও পণ্য বাজারজাত করার আগে অন্যতম জরুরি কাজ হল তার সম্ভাব্য ভোক্তাকে চিহ্নিত করতে পারা। কোনও পত্রিকা যেহেতু বাজারে আসে বিক্রির প্রাথমিক উদ্দেশ্য নিয়েই, লক্ষ রাখতে হয় ক্রমাগত পাঠকসংখ্যা বৃদ্ধির দিকে, তাই সেক্ষেত্রেও এর অন্যথা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু প্রকাশকের বিবেচনা কিংবা সম্পাদকমণ্ডলীর ভাবনাচিন্তায় স্বচ্ছতার অভাব কখনও-বা সেই পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। সারা দুনিয়ার বাণিজ্যিক ভাবে সফল পত্রপত্রিকার ইতিহাস ঘাঁটলে অবশ্য এর বিপরীত ছবিই বেশি দেখা যাবে। সেখানে সম্ভাব্য পাঠক বা ক্রেতার চারিত্র্য অন্তত দশ-বারো আনা নিশ্চিত হয়েই পত্রিকার যাবতীয় পরিকল্পনা ও সেসবের রূপায়ণ করা হয়ে থাকে। মুখ থুবড়ে পড়ার ঝুঁকি যে এর পরেও থাকে না, এমন নয়; কিন্তু সফল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে অধিক। আর শুরুর দিন থেকেই সম্ভাব্য ভোক্তা হিসেবে সমাজের কোনও শ্রেণিকে ষোলো আনার উপরে আঠারো আনা সুনির্দিষ্ট করে নিয়ে এগোলে কী হয়? শতাধিক বছর ধরে বিশ্বজোড়া বাণিজ্যিক সাফল্য পাওয়ার তেমন নজিরও পত্রপত্রিকার জগতে বিলক্ষণ রয়েছে।
‘ভোগ’। নিউ ইয়র্কের এই পত্রিকা জন্মলগ্ন থেকেই খুব সচেতন ও নির্দিষ্ট ভাবে মার্কিন উচ্চবিত্ত, সম্ভ্রান্ত শ্রেণির কথা বলতে চেয়েছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল জীবনের আলোকোজ্জ্বল আনুষ্ঠানিক দিকগুলি তুলে ধরা। আমেরিকার উনিশ শতকের এলিট সমাজও উঠতি বড়লোকদের থেকে নিজেদের আলাদা করার হাতিয়ার হিসেবে এই পত্রিকাটিকে ব্যবহার করার সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে যায়। তাঁদের নিত্যদিনের অভ্যাস, সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান, অবসরযাপন, ভ্রমণবিলাস কিংবা পোশাক-আশাকের সবিস্তার বিবরণ উঠে আসতে থাকে পত্রিকার পাতায়। চাওয়া হয়েছিল যে সমাজের জ্ঞানীগুণি মানুষজন থেকে সম্ভ্রান্ত রমণী কিংবা ধনী ব্যবসায়ীরা যাতে অল্প সময়েই আকৃষ্ট হয়ে পড়েন ‘ভোগ’-এর প্রতি। এর ফলে আরও যেটা হয়, ওই এলিট সমাজে যাঁদের প্রবেশাধিকার নেই কিন্তু প্রবেশের জন্য যাঁরা লালায়িত, তাঁরাও এই পত্রিকার মধ্য দিয়ে ক্রমে তাঁদের অতৃপ্ত বাসনা চরিতার্থ করতে থাকেন।
১৮৯২ সালের ১৭ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয় ‘ভোগ’ পত্রিকার প্রথম বর্ষ প্রথম সংখ্যা। দাম দশ সেন্ট। প্রকাশক ছিলেন মার্কিন ব্যবসায়ী আর্থার বল্ডউইন টার্নার। বেশ কয়েক বছর এটি বেরোতে থাকে সাপ্তাহিক সংবাদপত্র হিসেবে। ফ্যাশন সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষ জোর দেওয়া হলেও, স্পোর্টস বা সাম্প্রতিক অন্যান্য খবরাখবরও কিছু থাকত। প্রকাশ পেত বই, নাটক বা সংগীত বিষয়ক আলোচনা। তবে সামগ্রিকভাবে লক্ষ্য ছিল ওই উচ্চবিত্ত শ্রেণিই। প্রথম সংখ্যায় সম্পাদকীয় গোত্রের একটি শুরুয়াতি গদ্যে সুকৌশলে মার্কিন জনসমাজে এই শ্রেণিবিভাজনের প্রকৃতি ও প্রাসঙ্গিকতা ব্যাখ্যা করা হয়। কোনো বিষয়-নির্দিষ্ট শিরোনামবিহীন সে-লেখায় খুব স্পষ্টতই মেনে নেওয়া হয় সমালোচকদের দাবি— ‘That with us class distinctions are as finely drawn, social aspirations as pronounced, and snobbishness as prevalent as in any nation that confers titles and ignores the principle of eqaulity.’ একইসঙ্গে মার্কিন সমাজকাঠামো সম্পর্কে সদর্থক ভঙ্গির বহিঃপ্রকাশের উদ্দেশ্যে এ-কথাও যোগ করা হয়— ‘It has in the highest degree an aristocracy founded in reason and developed in natural order. Its particular phases, its amusements, its follies, its fitful changes, supply endless opportunities for running comment and occasional rebuke.’ এই পরিপ্রেক্ষিতেই যাত্রা শুরু করে ‘ভোগ’ পত্রিকা।
পত্রিকার নাম ‘ভোগ’ কেন? অধিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের রাস্তায় না গিয়ে প্রথম সংখ্যাতেই ‘The Century Dictionary’ থেকে ‘Vogue’ শব্দের এন্ট্রিটি ব্যবহারের যাবতীয় নিদর্শন-সহ অলংকৃত ফ্রেমের ভিতরে আগাগোড়া তুলে ধরা হয়। পাঠক বুঝে নেন, ফরাসি ভাষায় কথাটি মুখ্যত ‘ফ্যাশন’ অর্থে ব্যবহৃত হলেও তার আরও নানা প্রয়োগ রয়েছে। যেমন, ‘rumor’ বা গুজব অর্থেও এই শব্দ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কাজেই পত্রিকায় আলোচ্য বিষয়ের অভিমুখ প্রধানত ফ্যাশন সংক্রান্ত দিকে থাকলেও, তা হয়তো এক বহুমুখী আবেদনের প্রতিও ইঙ্গিত করতে চায়।
প্রথম সংখ্যা থেকেই চোখে পড়ে পত্রিকাজুড়ে ছড়িয়ে থাকা অসামান্য সব অলংকরণ! কিছু ছবির সঙ্গে সংক্ষেপে দেওয়া ছবিতে দেখানো পোশাক বা আনুষঙ্গিক সামগ্রী ব্যবহারের নির্দেশাবলি। এমনকী, কোন পোশাক কীভাবে পরা উচিত এবং কীভাবে নয়—এলিট শ্রেণির আদবকায়দার এই কেজো বিবরণও জায়গা পায় নান্দনিক অবস্থান থেকে কণামাত্র বিচ্যুত না হয়ে। কখনও-বা ছবির নীচে ছোট হরফে বলা থাকে বিস্তারিত বিবরণের জন্য পত্রিকার শেষে সংযুক্ত ‘Vogue Society Supplement’ অংশটি দেখতে। সেখানে অলংকরণ ধরে-ধরে সামগ্রীর খুঁটিনাটি বর্ণনা তো থাকেই, আবার সাদা-কালো ছবির পরিপ্রেক্ষিতে রঙের আন্দাজ দেওয়া হয়। চাইলে কোথা থেকে সেটি কিনতে পাওয়া যাবে, তারও উল্লেখ থাকে।
কোনও বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে ও যথাসম্ভব গুরুত্ব দেওয়ার ব্যাপারটি যে ‘ভোগ’-এর সার্বিক চরিত্র ছিল, তা আরও বুঝতে পারা যায় বিজ্ঞাপনের প্রতি তাদের অবস্থান দেখলে। প্রথম সংখ্যাতেই প্রকাশকের তরফে সরাসরি বিবৃতি দিয়ে জানানো হচ্ছে, তাঁরা কী ধরনের বিজ্ঞাপন ছাপতে চান এবং কীভাবে ছাপতে চান। এই সুযোগে নিজেদের বেশ খানিক উচ্চতায় তুলে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও কোনও দ্বিধা প্রকাশ পায় না— ‘Special attention is asked for the quality and character of the advertisements. … It is apparent also that pains have been taken to make these pages distinctly attractive, and it is the intention to have them grow steadily in interest so that the advertising sections of Vogue shall become an extensive, accurate and invaluable guide to buyers of fine goods and shall be enhanced as far as possible by illustration.’ শতকাধিক পূর্বের কোনও পত্রিকায় বিজ্ঞাপন সম্পর্কে এই সচেতনতা আজও শিক্ষণীয় বলেই বোধ হয়।
বিশ শতকের গোড়া পর্যন্ত এইভাবেই এগোতে থাকে ‘ভোগ’। প্রথম প্রকাশক টার্নার-এর মৃত্যুর তিন বছর পর ১৯০৯ সালে মার্কিন শিল্পপতি কোন্ডে মন্ট্রোজ ন্যাস্ট-এর সদ্য-প্রতিষ্ঠিত সংস্থা ‘ভোগ’-এর যাবতীয় স্বত্ব কিনে নেয়। এরপর থেকে ক্রমে পুরোদস্তুর ফ্যাশন বিষয়ক ও মহিলাদের পত্রিকা হিসেবেই ‘ভোগ’ পরিচিতি লাভ করে। অন্তর্বাস থেকে শিশুদের জামাকাপড়, গ্রীষ্মকালীন সাজপোশাক থেকে স্বল্প রোজগেরেদের জন্য টোটকা— ফ্যাশন-জগতের নানা কিছু নিয়ে একের পর এক সংখ্যা প্রকাশিত হতে থাকে। বিক্রি বাড়ে, বিশ্বজুড়ে ‘ভোগ’ পত্রিকার প্রভাবও বৃদ্ধি পেতে থাকে। ১৯১৬ সালে প্রকাশিত হয় প্রথম আন্তর্জাতিক সংস্করণ— ‘ব্রিটিশ ভোগ’। তারপর ‘ভোগ প্যারিস’, ‘ভোগ ইতালিয়া’ ইত্যাদি। ২০০৭ সাল থেকে প্রকাশিত হচ্ছে ভারতীয় সংস্করণ— ‘ভোগ ইন্ডিয়া’। একশো বছরের উপরে হয়ে গেল, এখনও এই কোন্ডে ন্যাস্ট সংস্থার হাতেই রয়েছে ‘ভোগ’-এর মালিকানা।
তথাকথিত আর্ট ম্যাগাজিন না হওয়া সত্ত্বেও এই পত্রিকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল সম্ভবত এর প্রচ্ছদ ও অলংকরণ। প্রথম চার দশক অত্যন্ত আকর্ষক সব অলংকরণে ভর করে প্রচ্ছদ নির্মাণ করা হয়। এই সময়ের প্রচ্ছদে কীভাবে সমকালীন শ্রেষ্ঠ চিত্রকলা কিংবা উইলিয়াম মরিস-এর মতো ডিজাইনারের কাজের প্রভাব পড়েছে, তা নমুনা-সহ ব্যাখ্যা করেছেন উইলিয়াম প্যাকার। The Art of Vogue Covers 1909-1940 বইয়ে তিনি লিখছেন— ‘By the end of the thirties the Vogue cover had changed utterly and forever. It was still decorative and arresting after its new, conventional fashion, but the old deliberation and attention had gone, replaced by something more cursory, temporary and consciously ephemeral.’ সময়ের অভিঘাতে এই সচেতন পরিবর্তনের শুরু ১৯৩২ সালের জুলাই সংখ্যা থেকে। সেই প্রথম রঙিন ফোটোগ্রাফ ছাপা হয় ‘ভোগ’ পত্রিকার প্রচ্ছদে। এই ছবিতে একজন সাঁতারুকে একটি বিচ বল হাতে করে তুলে ধরে থাকতে দেখা যায়। ছবিটি তুলেছিলেন লুক্সেমবার্গীয় মার্কিন ফোটোগ্রাফার এডওয়ার্ড স্টাইকেন।
কালক্রমে ‘ভোগ’ পত্রিকার প্রচ্ছদে স্থান পাওয়া হয়ে দাঁড়ায় বিশেষ ভাবে আলোচ্য বিষয়। প্রথম দিকে যেসব বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব এই কৃতিত্বের অধিকারী হয়েছিলেন, তাঁর মধ্যে অন্যতম অভিনেত্রী সোফিয়া লোরেন। মে ১৯৬১-র সেই প্রচ্ছদে উঠে এসেছিল স্রেফ তাঁর চোখ ও ঠোঁট। ভিতরে লেখা হয়েছিল— ‘Brows with a quizzical unexpected slant (the peaks, high and outside); and a deep, sweeping curve of mouth.’ বিশ্বের তাবড় বহু মডেল, অভিনেত্রীর ছবি প্রচ্ছদে ছাপা হয়। জর্জ ক্লুনি, জাস্টিন বিবার কিংবা রিচার্ড গেরে-র মতো কতিপয় পুরুষও এই মূল ‘ভোগ’ পত্রিকার প্রচ্ছদে ঠাঁই পাওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেন।
ব্রিটিশ কবি জন বেচ্যম্যান তাঁর A Russell Flint কবিতায় লিখেছিলেন— ‘I could see you in a Sussex teashop,/ Dressed in peasant weave and brogues,/ Turning over, as firelight shone on brassware,/ Last year’s tea-stained Vogues.’ নিছক ফ্যাশন আর সেলেব্রিটির মুখাপেক্ষী হয়ে থাকা নয়, ‘ভোগ’ পেরেছিল পশ্চিম বিশ্বের একটা বড় অংশের মানুষের স্মৃতির ঘরে ঢুকে পড়তে— যা নিরবচ্ছিন্ন এই যাত্রার অন্যতম কারণও বটে। ২০০০ সাল থেকে ‘Nostalgia’ নামে একটি কলামই শুরু হয় এই পত্রিকায়। অতীতের কোনও একটি সংখ্যায় ছাপা ফোটোগ্রাফ নিয়ে নিজেদের স্মৃতির কথা নথিবদ্ধ করেছেন লেখকরা। সঙ্গে ছাপা হয়েছে আর্কাইভ ঢুঁড়ে তুলে আনা অতীতের গন্ধমাখা সেইসব ছবি। কখনও ১৯৩৭-এর ফ্রিডা কাহলো-র দাপুটে উপস্থিতি দিয়েছে স্বাধীনতার সন্ধান, কখনও ১৯৭৪-এর জেরি হল তাঁর রঙিন ওষ্ঠের পাউটে জাগিয়েছেন যৌনতার বোধ। পাঠকের স্মৃতি একাকার হয়ে গিয়েছে পত্রিকার ইতিহাসের সঙ্গে।
এই দীর্ঘ যাত্রায় নানা বাঁকবদল, ওঠা-পড়ার মধ্য দিয়ে গিয়েছে ‘ভোগ’। কখনও বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব পড়েছে, কখনও ফরাসি ফ্যাশন পত্রিকা ‘এলে’-র সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে যেতে হয়েছে। কিন্তু অচিরেই আবার নিজের জায়গা ফিরে পেয়েছে তারা। পত্রিকার বিষয়বিন্যাস বা বাহ্যিক চেহারাই শুধু নয়, নিজেদের কাজের পদ্ধতি, দৃষ্টিভঙ্গি, সৌন্দর্যের ধারণা— এসবও বদলেছে সময়ের সঙ্গে। অতীতে যেমন বিশ্বযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত মহিলা ও শিশুদের পাশে দাঁড়াতে ফ্যাশন শোয়ের আয়োজন হয়েছে, তেমনই দেড় দশক আগের আর্থিক মন্দার সঙ্গে জুঝতে দেশ-বিদেশে নেওয়া হয়েছে বিশেষ উদ্যোগ। বিতর্কও ঘনিয়েছে নানা সময়ে। তার কেন্দ্রে কখনও থেকেছে কোনও বিজ্ঞাপন, কখনও-বা প্রকাশিত ফোটোগ্রাফ। আবার বর্তমান সম্পাদক অ্যানা উইনটুর-এর কাজকর্ম নিয়েও মাঝে বয়ে গিয়েছে বিতর্কের ঝড়। এই দাপুটে মহিলার একদা সহকারী লরেন ওয়েজবার্গার তাঁকে বিদ্ধ করে লিখে ফেলেছেন আস্ত একটি উপন্যাস— The Devil Wears Prada। বাস্তব ঘটনার ঢঙে এই কাহিনিতে দেখানো হয়েছে অ্যানা-র আদলে গঠিত সম্পাদকের চরিত্রটির হাতে তার অধস্তন কর্মীদের তীব্র মানসিক নির্যাতন। ২০০৩ সালে প্রকাশিত এই উপন্যাস থেকে ছবিও বানিয়েছে হলিউড।
যদিও এসব অভিযোগে ‘ভোগ’-এর গতিপথ রুদ্ধ হয়নি, ক্ষণিকের হোঁচট লেগেছে মাত্র। উলটে আরও সাফল্যের দিকেই এগিয়েছে এই পত্রিকা। ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে ‘ভোগ’ প্রকাশ করে আটশো অধিক পৃষ্ঠার একটি সংখ্যা! কীভাবে ধাপে-ধাপে গড়ে উঠল সেই সুবিশাল কাজটি, তা নিয়ে ২০০৯ সালে মুক্তি পেয়েছে একটি তথ্যচিত্রও— The September Issue। এই রেকর্ডও অবশ্য ভেঙে যায় ২০১২-র সেপ্টেম্বরে এসে— প্রকাশ পায় ন-শো ষোলো পাতাজুড়ে বিন্যস্ত একশো কুড়ি বছর পূর্তির বিশেষ সংখ্যা।
একদিন যাত্রা শুরু হয়েছিল শুধুই উচ্চবিত্ত সমাজের কথা মাথায় রেখে। ভাবে, ভঙ্গিতে কালক্রমে বদলালেও ‘ভোগ’ যে শেষমেশ ভোগবাদের কথাই বলে এসেছে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আজও তার সাফল্যকে বিলক্ষণ কাটাছেঁড়া করা যেতে পারে। কিন্তু নারীর কথা বলা, নারীর ক্ষমতায়ন ও স্বাধীনতার জন্য সরব হওয়া— সেই ভূমিকা ‘ভোগ’ কোনওদিনই অস্বীকার করেনি। তবে এ-কথা ঠিক, তার পণ্যসর্বস্ব প্রয়াসের তলায় সেই ভূমিকা আদতে কতটা সফল হয়েছে— শতাধিক বর্ষের এই বাণিজ্যিক সাফল্যের পাশে রেখে তা খতিয়ে দেখারও হয়তো প্রয়োজন আছে।
ছবি সৌজন্যে : লেখক