ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2025

 
 
  • ফ্রম হুসেন’স কান্ট্রি

    ডাকবাংলা.কম (December 16, 2024)
     

    গানের ইতিহাসে আজ একটা কালো দিন। উস্তাদ জাকির হুসেন আর আমাদের মধ্যে নেই। হাজার-হাজার বছর বাদে এরকম এক-একজন শিল্পী আসেন। আমি খুবই সৌভাগ্যবান যে, ওঁর থেকে সারাজীবন প্রচুর স্নেহ-ভালবাসা পেয়েছি। আমার নিজের যে-ফেস্টিভাল, স্বর সম্রাট ফেস্টিভাল, সেখানে উনি গত ১১ বছর ধরে বাজিয়ে আসছেন। ১৬ ডিসেম্বর, এই আজকের দিনেই, আমার সঙ্গে ওঁর বাজানোর কথা ছিল ফেস্টিভালে। সেটা আর হল না। উনি আমায় জানিয়েছিলেন, ডাক্তার কিছুদিন ওঁকে রেস্টে থাকতে বলেছেন, সেরে উঠলেই আবার একসঙ্গে অনুষ্ঠান হবে। সেটা যে আর কখনওই হবে না, এই আক্ষেপ আমার সারাজীবন থাকবে…

    ১৯৮৯ সালে উনি প্রথম আমার সঙ্গে বাজান। তারপর তো প্রচুর অনুষ্ঠান করেছি একসঙ্গে! গত ১১ আগস্ট উনি আমায় ওঁর গুরুপূর্ণিমার অনুষ্ঠানে ডেকেছিলেন। ওটাই আমাদের শেষ দেখা। মনে আছে, চারটে থেকে রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত সবার গানবাজনা শুনেছিলেন, এবং শেষে নিজেও বাজিয়েছিলেন। একটা ছবি সে-সময়ে খুবই ভাইরাল হয়েছিল, উনি মজা করতে-করতে আমায় পিছন দিক থেকে শাল পরিয়ে দিচ্ছেন। কী যে মজা করতে ভালবাসতেন উনি, সেটা যাঁরা ওঁর সঙ্গ করেছেন, তাঁরাই টের পেয়েছেন! এখন চোখ বন্ধ করলে একটার পর একটা দৃশ্য ভেসে উঠছে… অথচ মন এতই ভারাক্রান্ত, সেই সব দৃশ্যের মধ্যে ঢুকে যে তা বর্ণনা করবে, সেই শক্তিটুকুও নেই।

    আমার নিজের যে-ফেস্টিভাল, স্বর সম্রাট ফেস্টিভাল, সেখানে উনি গত ১১ বছর ধরে বাজিয়ে আসছেন। ১৬ ডিসেম্বর, এই আজকের দিনেই, আমার সঙ্গে ওঁর বাজানোর কথা ছিল ফেস্টিভালে। সেটা আর হল না।

    ৭৩ বছর বয়স কি একটা চলে যাওয়ার বয়স? আমি সত্যিই জানি না, কী বলা উচিত। শুধু এটুকু বুঝতে পারি আজকাল, আমাদের এক-একটা জানলা ক্রমশ বন্ধ হয়ে আসছে। আমরা যখন আমেরিকায় ইমিগ্রেশনে ঢুকি এখনও, তখন যে-কয়েকজনের নামের কথা ওঠে তাঁদের মধ্যে জাকিরভাই অগ্রগণ্য। ‘ইউ নো জাকির হুসেন? ইউ আর ফ্রম দ্যাট কান্ট্রি?’— এই বাক্যটা উচ্চারণ করার মধ্যে দিয়ে, তাঁরা আমাদের যে-সম্মানটা দেখাতেন, তার কোনও তুলনা হয় না।

    যৌবনে জাকির হুসেন

    কত কিছু যে ওঁর কাছ থেকে শিখেছি! প্রতিনিয়তই শিখতাম। ওঁর জীবনবোধ, সাধনা— সব কিছুই শেখার মতো। তিনি এমন একজন শিল্পী ছিলেন, যিনি তাঁর বাজনা দিয়ে সারাজীবন আবালবৃদ্ধবনিতাকে ঋদ্ধ করে গেছেন। উনি বারে বারে একটাই কথা বলতেন, আমার আরও অনেক কিছু দেওয়ার আছে। বিষয়ের মধ্যে ঢুকে, বারে বারে পরীক্ষানিরীক্ষা করা ছিল ওঁর সহজাত স্বভাব। সংগীত নিয়ে কত যে চিন্তা করতেন উনি, ভাবা যায় না! ওঁকে শুধু তবলাবাদক বললে, আমার খুবই কষ্ট হয়। কেননা উনি শুধু তবলাবাদক ছিলেন না, সামগ্রিক সংগীত নিয়েই ওঁর কর্মকাণ্ড, চিন্তাভাবনা সব কিছু ছিল। উনি ছিলেন একজন পূর্ণাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী।       

    (সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে অনুলিখিত)

     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     



 

Rate us on Google Rate us on FaceBook