ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2024

 
 

ডাকবাংলায় আপনাকে স্বাগত

 
 
  • ছায়াবাজি : পর্ব ২৮


    চন্দ্রিল ভট্টাচার্য (July 12, 2024)
     

    স্বেচ্ছা-অগোছালো

    আমরা ‘রোড মুভি’ দেখার সময়ে মনে করি, যে-চরিত্রগুলো সারা সিনেমা জুড়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাবে, তাদের কয়েকজন (বা অন্তত একজন) বোধহয় এই যাত্রার ফলে অনেক পরিণত হবে, বা বন্ধু পাবে, কিংবা প্রেম পাবে, বা কোনওভাবে জীবনশিক্ষা পাবে। কিন্তু শুধু চরিত্রদের অনুসরণ করে তাদের কথাবার্তা ভাবনাচিন্তা আর যাওয়া-আসার কয়েকটা টুকরো পরিবেশিত হবে, ছেঁড়া-ছেঁড়া, অসংলগ্ন, এবং কোনও পূর্ণতার দায়ই নেওয়া হবে না, তা চট করে ভাবি না। কোনও গল্প, কোনও আদ্য-মধ্য-শেষ, কোনও সংকট ও তার মোকাবিলা, কোনও বিশেষ মাধুর্যের পরিচয় ছবিতে নেই, কিন্তু দেখলে মনে হবে এতগুলো চরিত্রের অ্যাক্কেরে স্পষ্ট জীবন দেখলাম— এই হল রস ভ্রাতৃদ্বয় পরিচালিত ‘গ্যাসোলিন রেনবো’ ছবির (চিত্রনাট্য, পরিচালনা: বিল রস, টার্নার রস, ২০২৩) জোরের জায়গা। ছবিটা দেখে অনেকে মনে করবেন এ বোধহয় তথ্যচিত্র, ভুল করে কাহিনিচিত্রের বর্গে দেখানো হল। কেউ ভাববেন এখানে কোনও চিত্রনাট্যই ছিল না, এই চরিত্রেরা সব নিজেরাই কথাবার্তা বলেছে আর সেগুলোকে একটা ক্যামেরা দিয়ে তুলে সম্পাদনা করে ছবি নির্মাণ করা হয়েছে। অনেকে এই ছবির প্রশংসা করেই বলেছেন এ সম্পূর্ণ অন্য ঘরানার ছবি, যেখানে তথ্যচিত্র ও কাহিনিচিত্রের বৈশিষ্ট্যেরা মিলেমিশে যায়। কিন্তু আসল কথা হল, এ একটা জ্যান্ত ছবি। পাঁচজন টিন-এজার বন্ধু (তিনজন ছেলে, দুজন মেয়ে) ঠিক করে, তারা ইস্কুল শেষ করেছে, এবার কোনও একটা কাজের কথা ভাবতে হবে, কিছু একটায় ঢুকে পড়তে হবে, কিন্তু তার আগে তারা সবাই মিলে একটু দূরে একটা শহরে গিয়ে সমুদ্র দেখে আসবে, আর শুনছে সেখানে একটা বড় পার্টি হচ্ছে, ‘পৃথিবীর শেষ প্রান্তে’, সেই পার্টিটায় যাবে। তারপর তারা একটা ভ্যানে চড়ে বেরিয়ে পড়ে। এমন ভ্রমণে যেমন হয়, এ এই বলে, ও এই বলে, এ অমুক গান গায়, সে বলে ওই আর্টিস্টকে পছন্দ না, কেউ রোদ্দুরে মুখটা মেলে শুয়ে থাকে, কেউ বলে আরে আরে ওটা দ্যাখ, কেউ বলে ফিরে গিয়ে সে অমুক ট্যাটু করাবে। অনেক সময়ে বাক্য শেষও হয় না, চিন্তাটা মধ্যপথে ঝুলতে থাকে। অনেক সময়ে সংলাপ যেন কিছু একটার মাঝখান থেকে শুরু হয়। অনেক সময়ে যে কথা বলছে তাকে দেখাই যায় না, আমরা অন্যদের দেখি, বা অন্য কিছু দেখি। কখনও-কখনও এমনকী কোনও একটা চরিত্রের ভাবনা শুনতে পাই, কিন্তু কার ভাবনা, ভাল বুঝতে পারি না, কারণ তার মুখ দেখানো হয় না, অনেকরকম শটের ওপর কথাটা এসে পড়ে। পরিচালক দুজনের একজন একটা সাক্ষাৎকারে বলেছেন, জীবনেরও তো অনেক সময়েই কোনও গল্প থাকে না, তাতে কী হয়েছে। অধিকাংশ জীবনেরই গল্প থাকে না, আমরা সিনেমায় গল্প রাখি তাকে আকর্ষক করে তোলার জন্য, কিন্তু অনেক সিনেমাই তাকে অস্বীকার করে, জীবনের মতোই, কিছু টুকরোর সম্মিলনকে আমাদের সামনে সাজিয়ে দেয়। ছবি দেখার পর কিছু টুকরো মনে থেকে যায়, কিছু টুকরো থাকে না, কিন্তু সব মিলিয়ে চরিত্রগুলোর ভেতর থেকে যে প্রাণ আর চিন্তা উছলে এসে লাগে, তাতে সত্যের তাপ থাকলে, ছবি উতরে যায়।

    এরা টিন-এজার, তাই নিজেদের জীবনে এরপর কী হবে, তা নিয়ে ভয়, অনিশ্চয়তা যেমন আছে, তেমনি আছে মুহূর্তে আনন্দিত ও বিস্মিত হয়ে ওঠার ক্ষমতা। একটা দৃশ্যে, একটা লোক রাত্তিরবেলায় রাস্তায় একা হাঁটছে দেখে তারা থেমে যায়, তাকে জিজ্ঞেস করে, সে লিফট চায় কি না। লোকটা যখন বলে অদূরেই একটা পার্টি হচ্ছে, তারা কি ওর সঙ্গী হয়ে যেতে চায়, তাহলে এখান থেকে হেঁটে যেতে হবে, তখন ওরা অন্ধকারে একটা অচেনা লোককে অনুসরণ করবে কি না ভেবে ভয়ও পায়, আবার পার্টিটায় চলেও যায়। এই হল ছবিটার মুড। সকালে উঠে ভ্যানটার কাছে এসে ওরা দ্যাখে, কে বা কারা টায়ারগুলো খুলে নিয়ে চলে গেছে। ওরা একটু অপেক্ষা করে, একটা গাড়ির কাছে লিফট চায়, সে গোড়ায় থেমে গেলেও তারপর গতি বাড়িয়ে চলে যায়, তারপর ওরা হাঁটতে শুরু করে। অনেকদূর হাঁটে। চারিদিকে মাঠে উইন্ডমিল ঘুরছে, ধূ-ধূ প্রান্তর, কয়েকটা গরু চরছে, লোক নেই গাড়ি নেই। হাঁটতে-হাঁটতে অনেক পরে একটা জনপদে এসে পৌঁছয়। ওখানে ক্যাফে আছে, খায়। এই পুরো সময়টায়, হাঁটতে-হাঁটতে পায়ে ব্যথা নিয়ে কেউ নালিশ করেছে, তার নালিশ করা নিয়ে তাকে খোঁটা দেওয়া হয়েছে হাসাহাসি হয়েছে, কিন্তু বিরাট একটা তিক্ততার— এই পৃথিবীতে জন্মে কেন নিরন্তর চোরের হাতে নাকাল হতে হয়, কেন আমাদেরই ভাগ্যে এমন ঘটে— কোনও চিহ্ন ওদের মনের ওপর পড়তে দেখা যায়নি। বরং একটা জলাশয় দেখে পেল্লায় চান করে নিয়েছে ওরা, একেবারে জলচর পাখির মতোই মহাফুর্তিতে। তারপর ওদের সঙ্গে আলাপ হয় এক ছেলে ও এক মেয়ের, তাদের সারা গায়ে ট্যাটু আর বহু জায়গায় পিয়ার্সিং, তারা ওদের শেখায় মালগাড়িতে হুট করে কখন উঠে পড়তে হবে, যাতে তারা শহরটায় পৌঁছতে পারে। পুলিশের গাড়ি এড়িয়ে সেই প্রায়-চলন্ত ট্রেনে ওঠা, প্রাথমিক ভয়ের পর তাদের উল্লাস, গতির সংক্রমণ, একেবারে পর্দা ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে। তার আগে, ওরা এই ভবঘুরে ছেলে ও মেয়ে কিছু খায়নি দেখে, নিজেদের প্যাক করা গোটা খাবারটাই দিয়ে দেয়। সেই মেয়েটা বলে, আমরা দেখেছি, যাদের কিছু নেই, তারাই বেশি দেয়। তোমাদের ভ্যান অকেজো হয়ে গেছে, এত মাইল হেঁটে এসেছ, তোমরাই আমাদের খাবার দিয়ে দিলে। শহরে পৌঁছবার পর ওদের একজনের তুতো-ভাইয়ের বাড়ি যাওয়ার কথা, কিন্তু তার আজ ফিরতে দেরি হবে, কুছ পরোয়া নেই, ওরা দিব্যি পার্কে শুয়ে থাকে। তারপর সেই বাড়িটায় গিয়ে ভাল খেতে পায়, সিনেমা দ্যাখে। সেখান থেকে অন্য একজনের বাড়ি। সেখানে যাওয়ার আগে, যখন জিরোচ্ছে এক জায়গায়, একজন বলে, যাদের বাড়ি যাচ্ছি, এদের বয়স নাকি তিরিশ-চল্লিশ। মানে খুব বয়স্ক, কে জানে কীরকম হবে, আমার বয়স্ক লোকের সঙ্গে কথা বলতে একদম ভাল লাগে না। শুনে দর্শকের হাসিও পায়, আবার একজন আঠেরো-র কাছে একজন তিরিশ-ও কী অসীম দূরবর্তী, মনে পড়ে গিয়ে একটু চমকও লাগে।

    তারপরে এদের মুখের ক্লোজ-আপ, তারপরে পর্দা জুড়ে একটা ট্র্যাফিক সিগনাল জ্বলে-নেভে।পর পর তিন-চারটে শটে শুধু একটা লম্বা নির্জন অনন্ত রাস্তা, যার একটা সিগনাল অনবরত জ্বলছে-নিভছে। সিগনালটার ইঙ্গিত কী, রাস্তাটা কোথায় চলে গেছে, কে-ই বা জানে। কিন্তু এই রাস্তায় যে কয়েকজন চলেছিল, আর অনেকটা স্বাদ চেখেছিল, সে-কথা মনে রাখব আমরা, যারা সাক্ষী ছিলাম।

    এই টিন-এজারদের চলন আমাদের চেনা, আবার অচেনাও। এরা অনায়াসে লোকের কাছ থেকে নেয়, লোককে দেয়। একবার রাস্তায় একজনের সঙ্গে আলাপ হয়, সে রোলার-স্কেট চড়ছিল। সে বলে, সে অনেকগুলো মার্কিন শহরে থেকেছে, বাবা-মা’র সঙ্গে থাকতে তার একদম ভাল লাগত না, তাঁরা এটা বলতেন সেটা বকতেন, এখন এখানে চলে এসেছে, অন্য কোথাও-ও চলে যেতে পারে। তার সঙ্গে পরে আচমকা দেখা হয়ে যেতে ওরা হইহই করে তার নৌকোয় উঠে সেই শেষ প্রান্তের পার্টিটার উদ্দেশে বেরিয়ে পড়ে। অবশ্য সে-পার্টিতে পৌঁছে দ্যাখে, পুলিশের নৌকো সেখানে দাঁড়িয়ে কীসব ঘোষণা করছে, আর জায়গাটা থেকে ধোঁয়া উঠছে। ওরা ফিরে আসে। এর আগে রাস্তা পেরোনোর সময়ে হঠাৎ একটা পুলিশের গাড়ি দেখে ওরা সিঁটিয়ে গেছিল। এই অচেনা মানুষকে তক্ষুনি বন্ধু করে নেওয়া, তার সঙ্গে নাচতে চলে যাওয়া, কিন্তু পুলিশ দেখলেই আড়ষ্ট হয়ে যাওয়া (দোষ না করেও), ভ্যানটার ওই অবস্থা হয়েছে সেটা ফোন করে বাবাকে জানাতে ভয় পাওয়া— এই বয়সোচিত বিভাজন-প্রবণতা: চেনাকে ভয় বা রক্ষককে ভয়, আর অচেনা ও নতুনকে নিকট মনে করা, তাদের প্রতি অকৃত্রিম উৎসাহ— তা এদের মধ্যে বোনা আছে। আবার একটা ক্যাফেতে এদের মধ্যে একটি মেয়ের সঙ্গে আরেক মহিলার কথোপকথনের সময়ে আমরা জানতে পারি, মেয়েটার বাবাকে বেআইনি ভাবে আমেরিকায় থাকার অপরাধে ‘ডিপোর্ট’ করে দেওয়া হয়েছে, বাবাই ছিলেন ওদের পরিবারের একেবারে মধ্যমণি, তাই তিনি চলে যাওয়ায় মেয়েটার জীবন বিচ্ছিরি হয়ে গেছে। তবে এখন মাঝে মাঝে ফেসটাইমে কথা হয়, এসব আবিষ্কার হয়ে গেছে ভাগ্যিস। মেয়েটা বলতে-বলতে কেঁদে ফ্যালে। আবার কোনও ছেলে ঘুমোবার আগে বলে, তার দুটো ছোট ভাইয়ের জন্যে মনকেমন করছে। কেউ আরেক কথোপকথনে জানায়, সারাক্ষণ তার মা-বাবা মদ খেয়ে ঝগড়া করে, তাই বেরিয়ে পড়লে একটা স্বস্তি, ঝগড়ার আওয়াজে জেগে উঠতে হবে না। একজন বলে গোটা পাড়ায় একা কৃষ্ণাঙ্গ ছেলে হিসেবে বেড়ে ওঠার ঝক্কির কথা। কিন্তু এই ভেতরচাপা কান্না সত্ত্বেও এদের মূল সুরটা কৌতূহলের, ‘আরে!’ বলে লাফিয়ে ওঠার, নাচতে-নাচতে বিখ্যাত গানের সঙ্গে গলা মিলিয়ে উদ্দাম গাওয়ার। গান দিয়ে মোড়া আছে গোটা ছবিটাই, সিনেমার কথাও হয়, কিন্তু আশ্চর্য হচ্ছে, এমন ছবিতে প্রায় যা বাধ্যতামূলক— সেই প্রেম নেই, যৌনতা নেই। এদের একজন ছেলের সঙ্গে এক অচেনা মেয়ের একটা ঘনিষ্ঠতা শুরুর সামান্য আভাস দেওয়া হয়, একটা চুমুও হয়, কিন্তু ওইটুকুই। পাঁচজনের মধ্যে কোনও সমীকরণ, প্রণয় বা বিচ্ছেদ বা যৌন আকর্ষণ, বা একটা মেয়ের প্রেমে দুজন, দুটো মেয়ের প্রেমে একজন— যার বিভিন্ন কম্বিনেশন প্রায় যে-কোনও চিত্রনাট্যকার আবশ্যিক মনে করতেন ছবিটা লিখতে গেলে— তার ধারই মাড়ানো হয় না। শুধু বন্ধুত্ব, অচেনার সঙ্গেও বন্ধুত্ব, প্রকৃতি শহর পৃথিবীর সঙ্গে বন্ধুত্ব, এই দিয়েই ঘিরে রাখা হয় ছবিটাকে।

    ছবিটা শুটিং করা হয়েছে ছ’সপ্তাহ ধরে, তারপর ওই অতগুলো শুটিং-হওয়া দৃশ্য ও কথাবার্তা সম্পাদনা করা হয়েছে বেশ কিছুদিন ধরে, তারপর যা নির্মিত হয়েছে, তার মধ্যে এমন সাবলীল অনায়াস একটা ভঙ্গি রয়েছে, ‘স্লাইস অফ লাইফ’ বা জীবন-টুকরো যেন একেবারে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কারও কোনও কথা বা ভঙ্গির মধ্যে এতটুকু চেষ্টা বা কৃত্রিমতার ছাপ নেই, হয়তো এই কারণেই এটাকে তথ্যচিত্রের সঙ্গে এত বেশিবার তুলনা করা হচ্ছে। যেহেতু দৃশ্যেরও তেমন শুরু-শেষ অনেক সময়েই নেই, সংলাপও এতটুকু পরিকল্পিত মনে হয় না, কখনও আবার প্রচুর স্থিরচিত্র জুড়ে দেওয়া হয়েছে, কখনও মোবাইলের ফুটেজ, কোনও শট এত চমৎকার যে ক্যামেরা-বাহাদুরিকে কুর্নিশ জানাতে ইচ্ছে করে, কোনও শট হুট বলতে জুম-ইন করে বেশ বিসদৃশ রকমের হয়ে ওঠে— সব মিলিয়ে এটার চেহারা হয়েছে যেন একটা নিজেদের কাছে রেখে দেওয়ার জন্য তৈরি একটা দৃশ্য-ডাইরির, যা এই ছেলেমেয়েরাই বানিয়েছে, বা তাদের কোনও সহযাত্রী, যাকে আমরা দেখতে পাচ্ছি না। পরিচালক দুজনের মূল কৃতিত্ব এখানেই, এই ভঙ্গির মধ্যে দিয়ে অযত্নলালিত একটা ছবি বা জোড়াতাড়া দেওয়া একটা কাঁথা তৈরি হয়নি— যা হওয়ার পনেরো আনা সম্ভাবনা ছিল— বরং তৈরি হয়েছে আশ্চর্য স্বতঃস্ফূর্ত, একটা সরস ও দরদময় সময়খণ্ড। এই ছেলেমেয়েরা বড় হয়ে যাবে, তাদের জীবন সম্পূর্ণ ভিন্ন দিকে চলে যাবে, হয়তো এই বন্ধুত্বও থাকবে না, কিন্তু এই যাত্রাটা তাদের মনে থেকে যাবে। তাদের সমুদ্রসৈকতের পার্টি শেষ হলে, পরেরদিন সকালে তারা খুব কষে নিজেদের জড়িয়ে ধরে, যেন এই মুহূর্তগুলোকে কক্ষনও ছাড়তে চায় না। তারপরে এদের মুখের ক্লোজ-আপ, তারপরে পর্দা জুড়ে একটা ট্র্যাফিক সিগনাল জ্বলে-নেভে। এবার পর পর তিন-চারটে শটে শুধু একটা লম্বা নির্জন অনন্ত রাস্তা, যার একটা সিগনাল অনবরত জ্বলছে-নিভছে। সিগনালটার ইঙ্গিত কী, রাস্তাটা কোথায় চলে গেছে, কে-ই বা জানে। কিন্তু এই রাস্তায় যে কয়েকজন চলেছিল, আর অনেকটা স্বাদ চেখেছিল, সে-কথা মনে রাখব আমরা, যারা সাক্ষী ছিলাম।

     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     




 

 

Rate us on Google Rate us on FaceBook