ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2025

 
 
  • কয়েকটি কবিতা

    চিরন্তন দাসগুপ্ত (April 6, 2024)
     

    জীবনমুখী  

    এই তো জীবন, একটা বাঁকানো চাঁদের মতো চিৎ হয়ে বিছানায় শুয়ে- জোছনায় ঢেলে দিচ্ছে দুগ্ধফেননিভসুধা, পরীদের সাবানের জল। আমি তারই দুই আঁজলা অকাতরে ছুঁড়ে দিচ্ছি গন্ধে মাতোয়ারা সব হতোদ্যম বন্ধুদের দিকে। সাদামাটা শাড়িটির দু’পাতা বর্ণনা লিখে চশমাচাপা দিয়ে রাখছি পুষ্পছাপা বালিশের নিচে। শাড়ির আড়ালে যার ছটফটে চলাফেরা আলুথালু নিতম্বের টান, যার অনুমতি নিয়ে সন্তর্পণে ফুটে ওঠে নক্ষত্রের বিষণ্ণ বাগান, তারই অনুপ্রেরণায় পাতার আড়াল থেকে লাল টুকটুকে হয়ে পেকে ওঠে নিষিদ্ধ আপেল, -যে আপেলে হাত দেব, অথচ খাব না কেউ, নষ্ট করে রেখে দেব বারান্দায়, কাগজের ফাঁকে, তবু রোজ সন্ধ্যে হলে দলমণ্ডলে বসে মহাশয় খুবলে খাবে তোমাকে, আমাকে।  

    মনোরমা – ১

    আমাদের ক্লান্তি আর পথভ্রষ্ট কৌতুকের শেষে হাত-পা ছড়ানোর মতো তক্তপোশ রাখা নেই কোনও। বাগানের শেষদিকে আপাদমস্তক একটি শান্ত জলাশয় বসে আছে। সিমেন্টের পৈঠা আছে, লাল। সেখানে পিঠ দিয়ে বসলে অনন্ত জীবন আর সকল জীবনব্যাপী তারার আকাশ দেখা যায়। চন্দ্রযান-তিন দেখা যায়। দিন হয় মনোরম, রাত্রি হয় পূর্ণ মনোরমা। এত স্নিগ্ধ, মনে হয়, আমিই রেখেছি তার কানে কানে কবিতার নাম।

    আমাদের ঝিল্লিপোকা, আমাদের পদ্যসুধা ভাগ

    পোর্টিকোয় ফেলে আসা অসমাপ্ত, ছেঁড়া গল্পবই

    জল্পনার বান্ধবীর অতর্কিত সাহসী সোহাগ

    পরের চ্যাপ্টারে আমি কথা দিচ্ছি শেষ করবই।

    পরের চ্যাপ্টারে থাকবে মোটরকার চেজ আর গুলি

    কান ঘেঁষে চলে যাওয়া সমস্ত সুযোগ, তৃপ্তিফল

    মুম্বাই সেটের মতো জমজমাট সুবর্ণগোধূলি

    প্রণয় নিঙড়িয়ে আনা আঁশগন্ধময় অশ্রুজল।

    হাত পা অবশ করা সম্ভোগের শেষে তুমি সাদার ওপরে লাল ছিট লাগা সুডৌল প্রণয়ের ফল হাতে অন্ধকারের মুখে মুখ দিয়ে বসে থাকবে যতক্ষণ না জলতেষ্টা পাবে? তুমি কি অঞ্জলি ভরে আমার পাঁজর থেকে জল নিংড়ে খাবে; মনোরমা?  

    মনোরমা – ২

    কৌতুকের হাসি থেকে চওড়া করে কেটে নেওয়া ফালি

    আত্মার দেওয়াল থেকে আঁচড়ে ঘসে তুলে নেওয়া ক্বাথ,

    ওয়াশ করার পরে মুখভর্তি ফেনা আর বালি,

    সমস্ত রিপোর্টে লিখে, বকায়দা ধুয়ে ফেলব হাত।

    মনোরমা আমাদের আজীব সংসারে দেখো বারান্দার সব টবে ফুল ও ভ্রমর এসে গেছে। যারা কানে শুনতে পায়, গালে হাত রেখে তারা আশ্চর্যচকিত শুনছে ভ্রমরের বম্‌বম্‌ ভিখারির সাদাকালো গান। অন্দরমহলে দেখো লক্ষ্মীর সংসারে সব অন্ধকার কোণে কোণে ঝলসে উঠছে বাঁকাচোরা রোদ। তারই অগোছালো আলো গায়ে লেগে শিউরে উঠছে পিতাশ্রীর ফেলে যাওয়া বিদগ্ধ সরোদ। যারা কানে শুনতে পায় চোখ বড় বড় করে তারা শুনছে অনাহত নাদ। মাটি কাঁপছে দাপে আর সবুজ চিকন হাওয়া কেঁপে উঠছে লক্ষ্মীছাড়া তাপে। হাওয়ায় শরীর রেখে আমাদের দেখে যাচ্ছে দুটো পরী তিনটে আরশোলা। মনোরমা, সর্বনাশ পরিপূর্ণ হলে আমরা প্রকৃত পানীয় খেয়ে কাউকে না দায়ী করে চুপচাপ শুয়ে থাকছি, সদর দরজা থাকছে খোলা। 

    ওরা কাজ করে

    আমাদের আশেপাশে চেনখোলা কত মহারাজ, অচেতনে হেঁটে যাচ্ছে সংসারের সিরিয়াস কাজে; তাদের কি সামান্য একটু ঝিলিক দেবে না কেউ, ক্লিক ফোর ক্যামেরায় সংলগ্ন ফ্ল্যাশের মতো বাহুল্যবর্জিত একটা মৃদু বিচ্ছুরণ?

    রণপা’য় লম্বা হয়ে বিলম্বে তড়পাবে যারা- খুব উঁচু কেদারায় বসে, সন্ধ্যেবেলা খুঁটে খাবে অফিসের কাজ! তাদের কি বাজপাখি নখে নখে বিদ্ধ করে- একবারও দোলাবে না চকমিলান শূন্যের ওপর? আলতো হাতে টপকে দেওয়া সুতলির ঢেলা থেকে ছিটকে পড়া চকচকে জিনিস, ‘ওই-হোই-হোই’- করে মানুষের দৌড়ে যাওয়া শিকারির মতো, ভিখারির মতো ফের পুরনো বন্ধুর কাছে প্রেম ভিক্ষা করা-দেখবে না তারা?  

    তারা কি সুভাষ-মাঠে চাঁদ ওঠা না অবধি চোর চোর খেলে যাবে দাঁতে দাঁত চেপে? 

    সামান্য ক্ষতি

    এই তো সামান্য প্রেম, তাও নষ্ট হয়ে যাবে বলে

    অমর্ত্য প্রতিমা আমি গড়ে রাখছি তোমার আদলে,

    তোমার ভ্রুকুটিভঙ্গ, কোমরের ঈষদুষ্ণ ধাপ-

    অতি আলগা করে রাখা যৌবনের কুহু মনস্তাপ,

    ফোঁটা ঝরা মুক্তো তার আঙুলে বাসনাকাষ্ঠ ভিজে,

    শিহরিত কচ্ছপের ভালোবেসে চলা নিজে নিজে,

    উদাস শাড়িটি যার সঞ্চালিকা তরঙ্গ রঙ্গিন,

    সামান্য, তবুও প্রেম, চেটে খাচ্ছে দীর্ঘদগ্ধদিন

    লেখা থাকছে নিরঞ্জনে প্রতিমার শেষ দীর্ঘশ্বাস,

    যার উষ্ণ ছোঁয়া লেগে দেহমূলে কেঁপে উঠছে ঘাস।

     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     



 

Rate us on Google Rate us on FaceBook