ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2024

 
 

ডাকবাংলায় আপনাকে স্বাগত

 
 
  • অসুখ : পর্ব ২


    অনুপম রায় (August 12, 2023)
     

    এইভাবে আরও দু’দিন কেটে যায়। ওরা কারোর ফোন ধরে না। একই রুটিন চলতে থাকে। সিনেমা দেখে শুয়ে শুয়ে।

    দেবু : ‘এবার কিছু একটা করতেই হবে। বাড়ি থেকে বেরোই!’

    রোমিলা : ‘কোথায়? অর্জি করতে?’

    দেবু : ‘আহ! চলো তো!’

    ওরা বেরোয় রাস্তায়। উদ্দেশ্যহীন। ভেবে চলেছে কী এমন করা যায়? একটি শিশুর পা ইচ্ছে করে মাড়িয়ে যায় দেবু। শিশুটি কেঁদে ওঠে।

    রোমিলা : ‘এটা কী করলে?’

    দেবু : ‘ইচ্ছে হল।’

    রোমিলা : ‘কিন্তু কেন? এটাতে কী লাভ?’

    দেবু : ‘লাভ ক্ষতির কিছু নেই তো। আমরা কী পেলাম জীবনে?’

    রোমিলা : ‘কিন্তু শিশুটি তো সফ্‌ট টার্গেট, ক্ষমতা থাকলে পার্লামেন্টে বোমা মারো…’

    দেবু কিছু বলে না। গজগজ করতে করতে হাঁটে।

    রোমিলা : ‘এই ভিড়ে মলেস্টেশন করার ইচ্ছে থাকলে আগে থেকে বলো, আমি ট্যাক্সি নিয়ে ফিরে যাব।’

    দেবু : ‘আমাকে তোমার তাই মনে হয়?’

    রোমিলা : ‘আগে হত না…’

    দেবু : ‘দেখো, ইম্প্রেশানের দিন শেষ। আমরা আমাদের ইমেজ দিয়ে আর কিছু করতে পারব না। ইট ইজ ওভার। আমাদের ভিতরকার আদিম মানুষটাকে জাগাতে হবে। সে কী চায়?’

    রোমিলা : ‘চলো ওই বারটাতে ঢুকি।’

    দুজনে বারে ঢোকে। দু’পেগ মদ আর চিলি চিকেন নিয়ে বসে।

    রোমিলা : ‘তুমি ঠিক কী করতে চাও দেবু?’

    দেবু : ‘জানি না রোমিলা। সব নিয়ম ভেঙে ফেলতে চাই। প্রতিশোধ নিতে চাই!’

    রোমিলা : ‘সব কিছু আমরা ইমেজ বজায় রাখার জন্য করি না। চলে যাওয়ার আগে, আমিও ফেলে দিয়ে যেতে চাই আমার ইমেজ। কিন্তু সেটা একটা শিশুর পা মাড়িয়ে দিয়ে নয়।’

    দেবু : ‘আই এগ্রি।’

    রোমিলা : ‘লোনটা অ্যাপ্লাই করে দিই। ফালতু সময় নষ্ট হচ্ছে। তুমি একটা বন্দুক জোগাড় করার চেষ্টা করো না!’

    দেবু : ‘বন্দুক? না, না, ছুরি-ফুরি দিয়ে খুন করো। বন্দুক ইজ রিস্কি।’

    রোমিলা : ‘তাহলে আমি-ই দেখি। পুলিশের সঙ্গে সেক্স চ্যাট করে যদি…’

    দেবু : ‘কী যা তা বলছ! আমি দেখছি…’

    বার-এ বসে রোমিলা দুটো ঘ্যামা পারসোনাল লোন অ্যাপ্লাই করে দিল। ও’দিকে দেবু অনেক চেষ্টা করেও বন্দুক কিংবা গুলি কিছুই জোগাড় করতে পারল না।

    রোমিলা : ‘তাহলে? ’

    দেবু : ‘অন্য উপায় কিছু একটা বের করব…’

    রোমিলা : ‘সেই…প্ল্যানটা বাদ দিই?’

    দেবু : ‘না, না, যা বুঝলাম মার্ডার ইজ দ্য বেস্ট থিং টু ডু। উড়িয়ে দিয়ে যাও, যাও, যাও গো তোমার যাওয়ার আগে…’

    রোমিলা : ‘আমার লিস্টে, আমার ম্যানেজার-টা। ও ব্যাটা সেক্সুয়ালি হ্যারাস-ও করে কর্মীদের। প্রিয়াঙ্কা তো তাই ছেড়ে দিল আমাদের কোম্পানি। তারপর তোমার ওই কাকিমা।’

    দেবু : ‘কাকিমা আবার কী করল?’

    রোমিলা : ‘ভুলে গেলে? বিয়ের আগে আমার নামে কী বলেছিল তোমার মা-কে? আমাদের গোটা ফ্যামিলি-কে…’

    দেবু : ‘হ্যাঁ, তা বলে মেরেই দেবে?’

    রোমিলা : ‘উনি যথেষ্ট কুচুটে, উনি ডিসার্ভ করেন।’

    দেবু : ‘একটু ভেবে দেখো। একটা পা ভেঙে দিয়ে দেখতে পারো, মেরেই ফেলবে?’

    রোমিলা : ‘আর পাড়ার ওই কোতকা মালটাকে। ওই দীপক-টাকে।’

    দেবু : ‘ওটাকে আমি মারব। প্রতি মরশুমে রং বদলায়। কোনও একটা বেসিক ইয়ে নেই!’

    রোমিলা : ‘ইমেজ? ও কিন্তু দেখো ইমেজের পরোয়া করে না। সার্ভাইভালের উপর খেলে।’

    দেবু : ও বেসিক্যালি মৃত্যুর কাছে, বুঝে গেছে।’

    রোমিলা : ‘তোমার লিস্টে কে?”

    দেবু : ‘আমার বিশাল লিস্ট…

    এভাবে ওদের আলোচনা চলতে থাকে। আর একটা দিন শেষ হয়।

    এরপর চলে আসে সাতাশে মে। লোন এসে গেছে। টাকা ট্রান্সফার করে দিয়েছে নিজেদের পছন্দের মানুষের অ্যাকাউণ্টে। পাবলিকের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার রবিনহুড আইডিয়া, ল্যাদ কাটিয়ে আর সম্ভব হয়নি। বন্দুক পাওয়া যায়নি, তাই একটা খুন-ও করা হয়নি। সব পেন্ডিং। দেবুর ইচ্ছে, মার্ডার সেরে গাড়ি করে সোজা সমুদ্রের ধারে এক হোটেলে চলে যাবে ওরা। সমুদ্র সৈকতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করবে। আর হ্যাঁ, অর্জি হয়নি। 

    দেবু : ‘তুমি আগে মারবে, না আমি?’

    রোমিলা : ‘তুমি যা বলবে।’

    দেবু : ‘তোমার তো অফিস পাশেই, আগে তোমার ওই ম্যানেজার-টাকে উড়িয়ে তারপর আমরা আমার টার্গেটগুলো-কে…’

    রোমিলা : ‘সকালবেলা খুন করব?’

    দেবু : ‘সেটাও ঠিক। তাহলে আগে আমি দীপক-কে খতম করে আসি।’

    রোমিলা : ‘কী ভাবে মারবে? বন্দুকও তো নেই!’

    দেবু : ‘মাথায় একটা আইডিয়া আছে…’

    রোমিলা : ‘দেখো, ধরা পড়ে যেও না, তাহলে আর কিছুই করা হবে না। আমি সঙ্গে যাই?’

    দেবু একটা হাসি দিয়ে জানায় আসতে হবে না। ঘর থেকে বেরোয়। আধ ঘন্টা বাদে আবার হাসি মুখেই ফিরে আসে।

    রোমিলা : ‘কী হল?’

    দেবু : ‘দীপক তল্লাটেই নেই। কল্যাণী গেছে। কে এখন কল্যাণী গিয়ে ওকে মারতে যাবে?’

    রোমিলা : ‘তাহলে?’

    দেবু : ‘দাও, লিস্ট-টা একবার দেখি…’

    এক ঘন্টা ধরে লিস্ট দেখা হয়। কেউ-ই ঘর ছেড়ে বেরনোর তাগিদ দেখায় না। সন্ধে নামে।

    দেবু : ‘এই এবার বেরোই চলো!’

    কিন্তু বেরোতে আর পারে না। নিজেদের বালিশ, বিছানা ফেলে রেখে যেতে মন তো চায় না। হাউহাউ করে দুজনে দুজনকে জড়িয়ে কাঁদতে থাকে। এই ফ্ল্যাটের প্রতিটা জিনিস কীভাবে ওরা কিনেছে, সাজিয়েছে— সব মনে পড়ে যায়। এক মুহূর্তে সব বৃথা হয়ে যাবে? কোনও কি উপায় নেই? উপায় নেই বলেই তো আজকের এই দিনটা, তাই না? ডাক্তারের কথা কি মিথ্যে হতে পারে না? কিন্তু এত ডাক্তারের কথা কি মিথ্যে হবে? এতদিন এত বোরিং লাগত এই জীবন, তাহলে আজ কেন এত মায়া?

    দেবু : ‘এভাবে কাঁদতে থাকলে আর পারব না রোমিলা। চলো!’

    এরপর ফোন অফ রেখে, সারা রাত ওরা গল্প করে, একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কাঁদে। জীবনের সব স্বপ্ন দু’মাসে ফুরিয়ে গেল। ওরা কেউ ঘুমোয় না। সেক্স করে। সকালে উঠে সমুদ্র সৈকতে যায়। উলঙ্গ হয়ে সমুদ্রে নামে। রোমিলা চিৎকার করে গান গায়। দেবু সমুদ্রের আরও ভেতরে যেতে চায়। রোমিলা বারণ করে।
    জলে ডুবে মরতে যাবে কেন? পেনলেস ডেথ্‌ তো অপেক্ষাই করছে, তাই না?

    ওরা সামান্য একটা সুটকেস নিয়ে নিজেদের গাড়িতে গিয়ে ওঠে। দেবু ড্রাইভ করে রোমিলার অফিস যায়। রোমিলা গাড়ি পার্কিং-এ ঢুকিয়ে দেয় এমপ্লয়ি ব্যাজ দেখিয়ে। তারপর অপেক্ষা করে বসের জন্য। আধ ঘন্টা পর যখন মানুষটিকে দেখা যায়, টিফিন-বাক্স হাতে নিয়ে নিজের গাড়ির দিকে আসছে, রোমিলা আর দেবু সতর্ক হয়। রোমিলার সঙ্গে ধারালো ছুরি ছিল। ওটা হাতে নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে ম্যানেজারের গাড়ির কাছে যায়। বস্‌ ওকে চিনতে পেরে, হাসি মুখে কথা বলে। রোমিলাও উত্তর দেয়। বসের আর একটু কাছাকাছি এগোতেই রোমিলা ক্ষিপ্র গতিতে ছুরি বের করে মানুষটির মুখে বারবার আঘাত করে। বস চিৎকার করতে থাকে। নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করে কিন্তু পারে না। খুব দ্রুত ঘটতে থাকে সব কিছু। নিহত না আহত, এত কিছু বোঝার চেষ্টা না করে, ওকে ওখানে ফেলে রেখে রোমিলা গাড়িতে ফেরত আসে। দেবুর গাড়ি স্টার্ট নিয়ে নিমেষের মধ্যে ওই স্থান পরিত্যাগ করে। বাইরে বেরিয়েই সোজা হাইওয়ের উদ্দেশ্যে।

    সারা রাস্তা রোমিলা কাঁদতে থাকে। দেবুর লিস্টের কোনও গতি হয় না। ওরা রাত দশটা নাগাদ হোটেল পৌঁছয়।

    দেবু : ‘এই একটা জিনিসে আমাদের শান্তিটা গেল। সারাক্ষণ একটা ভয়। এই বুঝি পুলিশ এল। এটা না করলেই বোধহয়…’

    রোমিলা : ‘প্ল্যানটা তো আমার ছিল না, তাই না? তোমারই…’

    দেবু : ‘আহ! ঠিক আছে, ছেড়ে দাও। অন্য কথা ভাবি। দেখো আমার ফ্যামিলি বলতে শুধু তুমি। কাল আমার মৃত্যুর পর আমার দেহ তুমি সমুদ্র সৈকতেই ফেলে যেও। সমুদ্রের কাছে। ঠিক টেনে নেবে। এই শরীর নিয়ে…’

    রোমিলা : ‘অসম্ভব। শ্মশানে তো নিয়ে যেতেই হবে।’

    দেবু : ‘পাগল নাকি? কলকাতা-তে নিশ্চয় এতক্ষণে থানা-পুলিশ শুরু হয়ে গেছে। শ্মশানে গেলে তুমি জেলে যাবে।’

    রোমিলা : ‘তোমাকে ফেলে রেখে গেলেও তো আমাকে পুলিশ খুঁজে বেড়াবে তাই না? আমার শেষ তিন দিন পলাতকের মতই কাটবে। একটা কাজ করো, তুমি কাল আমাকে মেরে ফেলো, তারপর তুমি নাহয়…’

    দেবু : ‘ধুর, সে আবার হয় নাকি? আমি পারব না…’

    রোমিলা : ‘তাহলে আমিই নিজেকে…’

    দেবু : ‘এই প্লিজ। আমার আর এক দিন না কয়েক ঘন্টা? এর মধ্যে এসব প্লিজ… তুমি একটা তন্দুরি চিকেন অর্ডার দাও না?’

    এরপর ফোন অফ রেখে, সারা রাত ওরা গল্প করে, একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কাঁদে। জীবনের সব স্বপ্ন দু’মাসে ফুরিয়ে গেল। ওরা কেউ ঘুমোয় না। সেক্স করে। সকালে উঠে সমুদ্র সৈকতে যায়। উলঙ্গ হয়ে সমুদ্রে নামে। রোমিলা চিৎকার করে গান গায়। দেবু সমুদ্রের আরও ভেতরে যেতে চায়। রোমিলা বারণ করে।

    জলে ডুবে মরতে যাবে কেন? পেনলেস ডেথ্‌ তো অপেক্ষাই করছে, তাই না?

    দেবু মেনে নেয়। আরও কিছুক্ষণ জলে কাটিয়ে হোটেলে ফিরতে চায়। কিন্তু ফেরা হয় না। ওখানে জলের মধ্যেই দেবুর চোখ বুজে আসে। রোমিলা বারবার দেবু-কে জাগাবার চেষ্টা করতে থাকে। দেবু সাড়া দিতে চায়, কিন্তু পারে না। শরীরের সমস্ত শক্তি যেন নিমেষে মিলিয়ে যায়। দেবুর প্রাণহীন শরীর জলে, বালিতে মাখামাখি পড়ে থাকে। এদিকে সৈকতে মানুষের ভিড় বাড়ছে। রোমিলা বুঝতে পারে, এখন সবচেয়ে প্রয়োজনীয় গায়ের পোশাক।

    দুপুরের মধ্যে পুলিশ আসে। দেবুর দেহ সমুদ্র সৈকত থেকে পাওয়া যায়। ঝামেলায় জড়ায় রোমিলা। হাজার হাজার প্রশ্ন, ওর কানের পাশ দিয়ে বোমারু বিমানের মতো সাঁ সাঁ করে চলে যায়। বাড়ি থেকে না বেরনোই বোধহয় ভালো ছিল। এখন আর কী করার? পুলিশের গাড়িতে গিয়ে বসা।

    দেবুর দেহ পোষ্ট-মর্টেমে পাঠানো হয়। রোমিলা-কে নিয়ে যাওয়া হয় সংশোধনাগারে। কোথায়? সে খবর রোমিলা রাখেনি। ওর জীবনের আর শেষ তিন দিন। সারাদিন নিজের সেলের জানলার দিকে তাকিয়ে থাকে। চোখের সামনে আকাশ নীল থেকে কালো হয়। তারা ফোটে আকাশে। সব দেখে রোমিলা। পুলিশ প্রশ্ন করলে বিশেষ কিছু বলতে পারে না। ঘোলাটে চোখে শূন্যে তাকিয়ে থাকে। নির্দিষ্ট সময়ে খাবার আসে, ভালো লাগে না খেতে। খিদেও পায় না তেমন। ৩১-এ মে রাতের দিকে হঠাৎ গান গাইতে শুরু করে রোমিলা। কেউ বারণ করে না ওকে। ওই জানলাটুকু দিয়ে একটা চৌকো অন্ধকার আকাশের দিকে তাকিয়ে গাইতে থাকে। চোখে জল আসে। মনে পড়ে স্কুল, কলেজ, প্রেম, প্রথম চুমু, প্রথম মাইনে— সব কিছু। কাল থেকে আর কোনও মানে থাকবে না কিছুর। গতকাল মামা-রা দেখতে এসেছিল, রোমিলা দেখা করেনি। আদালতে মামলার জন্য উকিল এসেছিল, দেখা করেনি। ওর বেস্ট ফ্রেন্ড দীপা, মুম্বাই থেকে এসেছিল, দেখা করেনি। আর তো কয়েক ঘন্টা মাত্র। তারপর সবকিছু থেকে মুক্তি। আফসোস একটাই, যে নিজের বাড়িতে, নিজের বিছানায় শুয়ে যদি চলে যেতে পারত তাহলে হয়তো অনেক ভাল হত। দেখা যাক, কাল কখন ডাক আসে। ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়ে রোমিলা।

    এরপর পয়লা জুন আসে। সারাদিন কেটে যায়, রোমিলাকে মৃত্যু স্পর্শ করে না। রাতের দিকে রোমিলা ঠকঠক করে কাঁপতে থাকে। প্রতি মুহূর্তে মনে হয়, এই বুঝি কিছু ঘটবে কিন্তু কিছু না। দুপুরে অসম্ভব দুশ্চিন্তা নিয়েই ঘুমিয়ে পড়েছিল, বিকেলে ঠিক ঘুম ভেঙে যায়। রোমিলা তখনও জীবিত। তারপর সারা রাত কেটে যায়, রোমিলা মৃত্যুর অপেক্ষায় ছটফট করতে থাকে। এ’রকম তো হওয়ার কথা ছিল না? পরদিন ভোরবেলা চিৎকার করতে থাকে। ছুটে আসে রক্ষীরা।

    রোমিলা : ‘আমার দরজাটা খুলে দাও।’

    রক্ষী : ‘সেটা তো আমরা পারব না।’

    রোমিলা : ‘কাউকে একটা ডেকে দাও, আমাকে কথা বলতে হবে। অনেক কথা বলতে হবে!’

    রক্ষী : ‘এখন তো কেউ নেই, আপনি ঘুমিয়ে পড়ুন, সকালে না হয়…’

    রোমিলা : ‘না, না, এখুনি চাই!’

    রক্ষীরা পাত্তা দেয় না, চলে যায়।

    রোমিলার সামনে সব কিছু কেমন আবার অনিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে। মৃত্যু কোথায়? ডাক্তার কোথায়? দেবু কোথায়? দীপা কোথায়? অনেক কথা বলার আছে যে রোমিলার। কেন এত অস্থির লাগছে? আজ দোসরা জুন। তবে কি সেরে গেছে ওর অসুখ? তবে কি আবার বাঁচার আশা দেখছে রোমিলা?

    (সমাপ্ত )

    ছবি এঁকেছেন শুভময় মিত্র

     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     




 

 

Rate us on Google Rate us on FaceBook