আন্দামান অভিযানেই ব্রহ্ম ঠাকুর মারা যাবেন, এ কথাটা শুনে আশ্চর্যের বুকটা ছ্যাঁত করে উঠল। ব্রহ্ম এবং এরিকের সঙ্গে সে যখন গাড়িতে করে কৈখালি যাচ্ছিল, তখন ব্রহ্ম নিজেই বলেছিলেন— এবারের অভিযানে জ্যোতিষমতে নাকি তাঁর ‘মৃত্যুযোগ’ অর্থাৎ বড় ফাঁড়া আছে, তিনি মারা যেতেই পারেন! কিন্তু এই কথাটা এইভাবে সত্যি হবে? আশ্চর্য আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিল না। সে পাশেই রাখা ব্রহ্ম ঠাকুরের বিখ্যাত রিভলভিং চেয়ারটায় ধপ্ করে বসে পড়ল। হঠাৎ তার প্রচণ্ড জল তেষ্টা পেল— যেন কতকাল জল খায়নি। এক মুহূর্তেই মুখের ভেতরটা বিস্বাদ হয়ে গেছে।
তার এই ভেঙে পড়া দেখে একটু যেন করুণাই হল অন্ধকারে মিশে থাকা লালচোখো অতিথির। সে গমগমে গলায় বলে উঠল— আশ্চর্য, এভাবে ভেঙে পড়ো না। সব কিছু এখনই শেষ হয়ে যায়নি। আমার পুরো কথাটা আগে শোনোই না!
আশ্চর্য তার হতাশ আর ভারী চোখদুটো যেন খুব কষ্ট করে তুলে অতিথির দিকে তাকাল।
অতিথি বলল— শোনো, এই আন্দামান অভিযানের সময়কালেই বিটিটু প্রকল্পের শত্রুপক্ষ ব্রহ্মের বাড়িতে ঢুকে মূলমেশিন খারাপ করে দিয়েছিল— যা আমরা পরে জানতে পেরেছিলাম, ফলে আমাদের গবেষণার গতি অনেকটাই রুদ্ধ হয়ে যায়। আমাকে এখানে মানে তোমাদের ব্রহ্মাণ্ডে, যা একটি সমান্তরাল ব্রহ্মাণ্ড, পাঠানো হয়েছে অন্তত তোমাদের টাইমলাইনে সেই দুর্ঘটনা আটকাতে। এই মাটিতে পড়ে থাকা লোকটার অপকীর্তি রুখে দিয়ে আমি প্রাথমিকভাবে সেটাই করেছি। এবার আমি চেষ্টা করব ড: ব্রহ্ম ঠাকুরকেও বিপদমুক্ত করতে। তবে আমি সেটা নিজে পারব না, পরোক্ষভাবে একটা সুযোগ নেব তোমার সাহায্যে। শুনলেই তো, আমি এখন সরাসরি ড: ব্রহ্ম ঠাকুর বা এরিক দত্ত যেখানে আছেন, সেখানে যেতে পারব না। ওঁদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারব না। সেটা করলে কালের গতি ঘেঁটে যাবে। আরও যে কী কী হবে— স্পষ্টভাবে তা জানা নেই। তাই ওই ঝুঁকি নেওয়া যায় না।
ব্রহ্ম ঠাকুরকে বাঁচানোর সুযোগ এখনও আছে? আগন্তুকের মুখে এ কথাটা শুনে আশ্চর্য নিজেকে একটু সামলে নিতে পারল এবার। সে প্রশ্ন করল— আপনি সমান্তরাল ব্রহ্মাণ্ড না কী যেন বললেন, সেখান থেকে এসে আমার সঙ্গে কথা বলতে পারছেন, এদিকে ড: ব্রহ্ম ঠাকুরের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না? তাঁকে সাহায্য করতে পারবেন না? কেন? এতো ভারি অদ্ভুত ব্যাপার…
— একেবারেই অদ্ভুত ব্যাপার না। তুমি যদি আরউইন শ্রোডিঙ্গারের জ়ম্বি ক্যাট তত্ত্বের কথা জেনে নাও, তাহলেই জানবে একই ঘরে মৃত বেড়াল আর জীবিত বেড়াল একই সঙ্গে থাকতে পারে না। থাকলেও তারা একে অন্যের উপস্থিতি জানতে পারে না। ওই এক্সপেরিমেন্টের পরিদর্শকও যে কোনও একটি বেড়ালকে দেখতে পাবে, হয় জীবিত, নয় মৃত। একই যুক্তিতে ভবিষ্যৎ থেকে যিনি আমাকে পাঠানোর পরিকল্পনা করেছেন, সেই ড. কিশিমোতো জুনিয়রও তাঁর বর্তমান বয়সে আন্দামানে গিয়ে ঘটমান বর্তমানের, যা তাঁর কাছে অতীত, তার রদবদল করতে পারবেন না। কারণ আন্দামানে ইতিমধ্যেই তোমাদের সময়পংক্তির বা টাইমলাইনের ড. কিশিমোতো উপস্থিত। একই যুক্তি ব্রহ্ম ঠাকুরের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, আমি আরেকজন ব্রহ্ম হয়ে কীভাবে সেখানে উপস্থিত হব? এরিকের কাছেও যেতে পারব না, কারণ বলা তো যায় না, তোমাদের ব্রহ্ম যদি আচমকা সেখানে গিয়ে হাজির হয়ে যান? কালঘাতী এবং কালান্তক ইউনিভার্স ইনটারফেরেন্স হয়ে যাবে। ফলে আমাদের একমাত্র ভরসা তুমি। তুমি আন্দামানে নেই। আমাদের সমান্তরাল বিশ্বে তোমার উপস্থিতি ছিল না, তুমি শৈশবেই সেখানে মারা গেছিলে, তাই ব্রহ্মকেও সেখানে বাঁচানো যায়নি। তোমাদের জগতে মরতে মরতেও তোমার পুনর্জন্ম হয়েছে। তুমি বরাতজোরে দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গিয়ে ওঁর জীবনে হয়ে উঠেছ সত্যিই এক আশ্চর্য যোগাযোগ। আমরা এই ‘যোগ’টা কাজে লাগাতে চাই। তুমি আমাদের হয়ে ব্রহ্মকে বাঁচাতে যদি আন্দামানে যাও, সমান্তরাল ব্রহ্মাণ্ডে-ব্রহ্মাণ্ডে অযাচিত ঠোকাঠুকি হবে না। তবে তাঁকে উদ্ধার করতে পারলে তুমি ঘুণাক্ষরেও ব্রহ্মকে জানাবে না, কীভাবে তাঁর খবর তুমি পেয়েছ। তুমি এসব বলে ফেললে, আবার বলছি, কালের স্বাভাবিক গতি বিঘ্নিত হবে। তার ফলে ফলাফল যা হবে, তা আমাদের জানা নেই। অজানা অনেকসময়ই অশুভ, তাই না? সেই ঝুঁকি নেবেই বা কেন?
আশ্চর্য যা শুনল তা প্রায় অবিশ্বাস্য ঠেকছিল। সে আগন্তুকের কাছে এগোতে গিয়ে অদৃশ্য কিছুর একটা ধাক্কা খেয়ে পিছিয়ে এল। আগন্তুক বলল—
উঁহু, এগিয়ো না। আগেই যে বলেছিলাম, আমার প্রোজেকশনের তড়িৎ চুম্বকীয় বিকিরণ তোমাকে পুড়িয়ে দিতে পারে। প্লিজ় দূরত্ব বজায় রাখো।
আশ্চর্য হতভম্ব হয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল অন্ধকারের অতিথির দিকে। তারপর বলল— সমান্তরাল ব্রহ্মাণ্ড বিষয়টা কী? কী করে এটা হচ্ছে? একটু বলতে পারেন আমায়? মাথাটা ভোঁ ভোঁ করছে—
—শোনো আশ্চর্য, এটা উত্তর-আধুনিক বিজ্ঞান পড়ানোর ক্লাস না। এখন ততটা সময়ও নেই। আর আমি তোমার শিক্ষকও নই। শুধু এটুকুই বলব— ড: ব্রহ্ম ঠাকুরের ছাদের ঘরে একটা তানপুরা রাখা আছে, তুমি জানো? লোকে ভাববে তিনি গান গাইছেন, আসলে তিনি ওই তানপুরা বাজিয়ে বাজিয়ে যেটা করছিলেন সেটা হল স্ট্রিং থিয়োরি বিষয়ক নিরন্তর পরীক্ষা-নিরীক্ষা। ব্রহ্ম ঠাকুরের মিশনের মূল নেতা স্টিফেন হকিং-এর এই স্ট্রিং তত্ত্ব নিয়ে বিখ্যাত গবেষণা আছে। আইনস্টাইনের আপাত পরস্পরবিরোধী আপেক্ষিকতাবাদ এবং কোয়ান্টাম তত্ত্বের একটা কমন গ্রাউন্ড তৈরিতে স্ট্রিং থিয়োরি কার্যকরী। তানপুরার তারে আঘাত করে করে ব্রহ্ম ঠাকুর অতি ক্ষুদ্র কণা কোয়ার্ক, কোয়ার্ক থেকে নিউট্রন, সেখান থেকে মূল পরমাণুর গতিবিধি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতেন। এভাবেই নতুন একটি সমান্তরাল অস্তিত্ব তৈরির গবেষণা করতেন তিনি। আচ্ছা সোজা করে বলি। এটা অবশ্য খুব বিখ্যাত ব্যাখ্যা। সরু বাঁশের সাঁকো, একজন মানুষ এবং একটি পিঁপড়ের পরীক্ষা। মানুষটির কাছে সাঁকোটি একমাত্রিক, সে শুধু উপরদিকটা দিয়েই হেঁটে যেতে পারে। পিঁপড়ের কাছে ওটাই আবার বহুমাত্রিক, কারণ সে বাঁশের পরিধি বরাবর ঘুরে আসতে পারে। একটু আগে বলছিলাম না? লম্বালম্বি যাওয়া এবং আড়াআড়ি? এখন দ্যাখো, লোকটি যখন বাঁশের উপরে আছে, তখন সে যে ব্রহ্মাণ্ডে আছে তাতে পিঁপড়েকে দেখা যাচ্ছে না, কারণ পিঁপড়ে তখন আছে বাঁশের নীচে। তাহলে দুটি ব্রহ্মাণ্ডই একযোগে অবস্থান করছে, কিন্তু তারা একে অন্যের উপস্থিতি সম্পর্কে জানে না। তোমার আজকের সিচ্যুয়েশনে আসল ড: ব্রহ্মাণ্ড ঠাকুর বা ছোট করে যাঁকে ব্রহ্ম ঠাকুর বলে ডাকা হয়, তিনি একমাত্রিক ডাইমেনশনে আছেন। আমি, তাঁর প্রোজেকশন, আছি বহুমাত্রিক ডাইমেনশনে, অর্থাৎ ধরে নিতে পারো, পিঁপড়ে আর মানুষের এক্সপেরিমেন্টে আপাতত পিঁপড়ের ভূমিকায় রয়েছি আমি।
ব্যাপারটার সঙ্গে আস্তেআস্তে ধাতস্থ হচ্ছিল আশ্চর্য। ধাতস্থ না হয়ে উপায়ও নেই। ‘সময়াভিযান এবং ইতিহাসের বাঁকবদল’ যাঁদের গবেষণার বিষয়, তাঁদের গবেষণায় তো এমন কিছুই ঘটবার কথা ছিল। আশ্চর্য ব্যাপারটা ভাবতে ভাবতে আনমনে দোল খেতে থাকল চেয়ারটায়।
আগন্তুক বলে চলল— আমি যে রশ্মি তোমার ওপর ফেলেছিলাম তার মাধ্যমে আমি মেপে নিয়েছি তোমার ক্ষমতা। তাতে দেখেছি তোমার মস্তিষ্কের ধারণক্ষমতা অতি সীমিত, কর্মক্ষমতাও খুব একটা ভাল না। সময় নষ্ট করবার তাই উপায় নেই। শোনো তোমায় কী করতে হবে। প্রাথমিকভাবে তোমাকে যোগাযোগ করতে হবে এরিক দত্তের সঙ্গে। সেখান থেকেই ব্রহ্মের সন্ধান পাওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকবে, যে সন্ধান অত্যন্ত যুক্তিপূর্ণ কারণেই আমি জানি না। ঠিকই শুনলে, আমি ‘জানি না’ কথাটা উচ্চারণ করেছি। ব্রহ্ম ঠাকুর এখন কোথায়, তা আমার জানা নেই। কেন জানা নেই বল তো? উত্তরটা আসলে খুব সোজা। বলছি শোনো—
২৫।
ড. কিশিমোতো তাঁর তাঁবু থেকে হেলতে দুলতে বেরিয়ে এলেন যখন, তখন ভোর সাড়ে চারটে। এই ক্যাম্পটা পূর্বমুখী। সমুদ্র আর আকাশ যেখানে মিশেছে, দিগন্তরেখাটা লাল হয়ে আছে। বোঝাই যাচ্ছে সূর্য উঠতে আর খুব বেশি দেরি নেই।
কিশিমোতো খানিকক্ষণ সমুদ্রের পাড়টা ধরে ডানদিক-বাঁদিকে অনির্দিষ্ট হাঁটাহাঁটি করলেন। তাঁর চোখ কিন্তু খুঁজছে একজন বিশেষ কাউকে। তাঁর পিছু নেওয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত খয়েরি রঙের জ্যাকেট আর লাল বেসবল ক্যাপ পরা লোকটা এখন কোথায়? সে কি পাহারা দেওয়ার কাজ ছেড়ে ঘুমিয়ে পড়েছে? মনে তো হয় না! সতর্কতার মার নেই। অ্যাবারডিন বাজারের দিকে রওনা দেওয়ার আগে একটু সব দিক খতিয়ে দেখে নেওয়াই ভাল।
ওই তো, একটা ঝাউগাছের আড়ালে লোকটার লাল টুপির আভাস পাওয়া যাচ্ছে মনে হচ্ছে না? ঠিক তাই। কিশিমোতো এটাই ভেবেছিলেন। এ শহরে ঠিকে কাজের লোক চট করে পাওয়া যায় না। এখানে ক্যাম্প বসানোর প্রাথমিক পরিকল্পনা যখন বাস্তবায়িত হচ্ছিল, কিশিমোতো নিজেই এই অসুবিধের সম্মুখীন হয়েছেন। হঠাৎ নির্দেশ দিয়ে নজরদারির জন্য একাধিক লোক লাগানো এখানে অসম্ভব। একজনই নিযুক্ত হয়েছে। কিশিমোতো দ্রুত পায়ে দৃশ্যমান লাল টুপির দিকে এগিয়ে গেলেন।
লোকটার এখন ন যযৌ ন তস্থৌ অবস্থা। সে জানত একজনের পিছু নিতে হবে। সেই লোকটি স্বয়ং তার দিকে এগিয়ে এলে কী করতে হবে তা তার জানা নেই। সংক্ষিপ্ত নির্দেশ পেয়েছে সে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে। বেশি কথা জানবার সুযোগ ছিল না।
কিশিমোতো গিয়ে লোকটার সামনে দাঁড়িয়ে জাপানি কায়দায় অভিবাদন জানালেন বিগলিত হেসে। তারপর একেবারে কাছাকাছি, প্রায় গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে মধুর স্বরে বললেন— হ্যালো। আমি এই ক্যাম্পের অন্যতম ডিরেক্টর ড. কিশিমোতো। আপনি বুঝি আমাদের নতুন রিক্রুট? আলাপ হয়নি যে! গতকাল রাতে আপনার জন্য কিছুটা কাবাব কিনেছিলাম। কিন্তু তারপর আপনাকে খুঁজে পেলাম না। আসুন— আমার তাঁবুতে আসুন। আপনাকে উৎকৃষ্ট কফি খাইয়ে আলাপটা সেরে ফেলা যাক। চলুন— তাঁবুর ভেতরে— জলদি। পা চালিয়ে।
কিশিমোতোর বলা শেষ দিকের শব্দগুলো রুক্ষ হয়ে উঠতেই লোকটা তাঁর দিকে সচকিত হয়ে তাকিয়েছিল। এবার খেয়াল করল, কিশিমোতোর হাতে নিচু করে এখন ধরা আছে একটা রিভলবার— সোজা তার পেটের দিকে তাগ করা। লোকটা কী করে জানবে এই রিভলভারটা ব্রহ্ম ঠাকুরের সেই খালি রিভলভারটা, যার ভেতরে একটাও গুলি নেই?
তাঁবুর ভেতরে পা রাখবার সঙ্গে সঙ্গেই মাথার পেছনে রিভলভারের বাটের এক মোক্ষম আঘাত খাওয়ায় লোকটাকে ‘আঃ’ বলে পড়ে যেতেই হল। কিশিমোতো চটপট লোকটার খয়েরি জ্যাকেটটা নিজের গায়ে চাপিয়ে নিলেন। মাথায় পরে নিলেন লাল রঙা বেসবল ক্যাপটা। দূর থেকে কেউ যদি দূরবীনে লক্ষ রাখে এই দিকটা, কিশিমোতোকে আর চিনবার উপায় রইল না। তাঁর প্রহরীর ছদ্মবেশেই তিনি বেরিয়ে এলেন তাঁবুর বাইরে। জ়িপটা টেনে বাঁদিকের রাস্তা ধরে রওনা দিলেন সোজা অ্যাবারডিন বাজারের দিকে। লক্ষ্য এবার— ওঙ্গে চৌধুরির বাড়ি খুঁজে বের করা।
হেঁটে, খোঁজ খবর নিতে-নিতে বাড়িটায় পৌঁছতে পৌনে সাতটা বেজে গেল। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার হাঁটা পথ। শেষমেষ দরজাটা খুঁজে পেয়ে লাল রঙের বিচ্ছিরি টুপিটা পাশের ফুটপাথে ছুড়ে ফেলে দিলেন কিশিমোতো। তারপর নক করলেন একরাশ সংশয় নিয়ে।
ওঙ্গে চৌধুরি দরজাটা খুলে অচেনা অতিথিকে দেখে খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলেন। অতিথি ততক্ষণে তাঁকে বাও করে ইংরেজিতে জিজ্ঞেস করেছেন— আপনিই কি মি. ওঙ্গে চৌধুরি?— ওঙ্গে অবশ্য প্রশ্নটা শুনেও তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দিলেন না। তিনি এমনিতেই একটু কম প্রতিক্রিয়ার লোক। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে অতিথিকে মেপে নিতে নিতে ভাবতে থাকলেন অনেক কিছু। সক্কাল সক্কাল বাড়িতে এসে হানা দেওয়া এই লোকটি কে? চেনাচেনা লাগছে— তারপরেও ঠিক ঠাহর করতে পারছেন না— লোকটিকে আগে কোথায় দেখেছেন!
হঠাৎ ওঙ্গের মুখে হাসি ফুটে উঠল। ভুরু কপালে তুলে তিনি বললেন— মাই গড! ইউ মাস্ট বি কিশিমোতো জুনিয়র। প্লিজ় কাম ইন! কাম ইন!
(ক্রমশ)
ছবি এঁকেছেন শুভময় মিত্র