সহিস
তোমাকে দেখি ধুলোর পার ছুটিয়ে যেতে।
কেন যে শেষে ঘোড়ার পায়ে নামাও মন,
পাহাড়ে ছিল অপরিণামদর্শিতারা
তাদের কিছু হারিয়ে যেতে কতক্ষণ?
কেন যে তুমি জানালাদিন ঘুরিয়ে নিয়ে
শুকিয়ে আসা বাগানদিকে ফোটাও চোখ,
এখানে কোনও পর্যটন ভাল থাকে না।
প্রতি শীতেই বেড়াতে আসে অন্ধ লোক।
তোমাকে দেখি বাজারে একা দাঁড়িয়ে আছ।
যেন বা ক্রয় বিক্রয়ের সংজ্ঞাহীন—
‘কোথায় যেন দেখেছি’ ব’লে এগিয়ে যাই
এখানে রোদ গরিব, আর ত্বকমলিন।
আবার যদি দেখাই হল, চলো এবার
বাকি কথার নিরুদ্দেশ খুঁজে বেড়াই।
যতই তুমি ঘোড়ার পায়ে নামাও মন
দিনের শেষে কুড়িয়ে আনে সহিসরাই…
বানান
এই অলীক দূরত্বের ভিড় পেরিয়ে রোজ
তোমাকে যেন ডাকতে পারি। তুমিও যেন শোনো।
বানান ভুল হতেও পারে, ছন্দ ঠিক রাখি।
লেখার খাতা মিলিয়ে নেন অলোকরঞ্জনও।
তোমাকে ফুল পাঠাতে এসে দাঁড়িয়ে থাকি একা
খুচরো নেই, উধাও হল দোকানি মেয়েটিও
মনে মনেই পাঠাই তাই ব্যর্থ অভিসারী
তোমার হাতে সময় এলে ফুলদানি সাজিও।
ভেবো যে, কোনও ছুটির দিন দূরের ডাকঘরে
চিঠিবিলাস পিওন একা গুনছে শীলমোহর
তোমার কোনও ঠিকানা নেই। তবুও মন বলে
একদিন তো ঠিকই আগুন জ্বালবে বিদ্রোহ!
তোমাকে আমি ডাকতে চাই। যেমনভাবে কেউ
তোমাকে এই ভিড়ের মাঝে ডাকেনি কক্ষনও…
বানান ভুল হতেও পারে, ছন্দ ঠিক রাখি।
লেখার খাতা মিলিয়ে নেন অলোকরঞ্জনও।
দরিয়া
দরিয়াপার অন্ধদল, স্রোতের কথা বলে
কেমন ছিল তিমির মন, মাঝির গঞ্জনা
কোথায় তারা যাচ্ছিল সে কোন বিপদপারে
কাছিম কিছু জানে না। তার সময় ঢেউ গোনা।
অন্ধদল জানায়, তারা কোন আকাশ থেকে
শুনছিল যে আসছে ডাক দেবদূতের মতো
একটু হলে উলটে যেত নৌকাটি তাদের
কেবল ছিল নিয়তি খুব বাঁচায় সম্মত।
এসব থেকে অনেক দূরে ছোট্ট পায়ে হেঁটে
প্রাচীন কচ্ছপের মন কিছুটা দূর যায়
নোনা বাতাস, পর্যটক, বিস্ময়বেলুন…
এসব থেকে তার বয়স সমুদ্রের প্রায়।
দেখা কি হবে কখনও, ওই অন্ধে ও কাছিমে?
শুনবে তারা সমুদ্রের যত অভিজ্ঞতা?
এই অপার দৃষ্টিহীন স্থবির ইতিহাসে
সবই তো আছে। কেবল নেই মাঝির কোনও কথা।