কয়েকটি কবিতা
১
আমাদের চিমনিহাত, আমাদের কারখানামন
দু’চোখে ঝোলানো তালা, দাবি ও বিক্ষোভ লেখা পিঠ
তুমি দেখেছিলে, যেন দূর থেকে অকালশ্রাবণ…
এখন সেসবও নেই। পাখি এসে নিয়ে গেছে শীত।
২
কুড়োতে পারিনি ব’লে কষ্ট হয় তোমার ব্যথাকে
এড়িয়ে খুচরোর মতো অন্য কোনও দিকে হেঁটে গেছি
ভাঙাতে পারিনি মন, যদি কিছু কথা পড়ে থাকে…
এখানে ব্যথার চেয়ে আজও ওষুধের দাম বেশি।
৩
আলোবদলের খেলা, বিকেল শেখার নিচু ক্লাস
গ্রামীণ বিষাদ বিক্রি, এইসব ধুলোহাট নিয়ে
এসেছি তোমার কাছে, গরিবের প্রজাপতিমাস –
বন্ধুর দেনার মতো, যেন কোনও দূর দেশে বিয়ে…
৪
আশা কি করাও যেত, কোনও কথা হবে এ-সফরে?
দেখা কি পেতাম কোনও সমুদ্রে তীরে গেলে, দূর?
এখন তো মনে হয় দূরে থাকা পায়ে পায়ে ঘোরে
বিজন বেড়াল যেন। আয়নার পাশে রাখা ক্ষুর।
৫
সবজির মতো যে-মন, তাকে কেটে উনুনে চাপাও
ফুলের মতো যে-হাত, তাকে রাখো বারান্দার টবে
কান্নার মতো যে-দিন, তাকে বয়ে চলে যেতে দাও।
শুধু বলো ভাল হবে। কোনও দিন ঠিক ভাল হবে।
৬
দূরদেশে যেও না হে পথিকা, ওখানে একা লাগে।
এখানে, ভিড়ের মধ্যে থাকো তুমি, খুশি, একাকিনী,
লিখিও না নাম আর অবসরে, বিদায়বিভাগে
চিনে নাও এ-শহর, যেমন তোমাকে আমি চিনি…
৭
কিছু-বা পুরনো মুদ্রা ফেলে গেলে, নিজের মতোই
ফেলে গেলে কথা কিছু, নিজেরই পুরনো দিন থেকে
যেখানে শীতের সন্ধে, আমিও তোমার কেউ নই,
কেবল পাতার ছায়া বিঁধে আছে সোনার পেরেকে…
৮
পুরনো কাজের মতো ক্ষত দেখি। ভাঁজ করে রাখা।
যেন সে দামিও ছিল কোনওদিন, এমন গুমোর।
মাঝে তুমি যাতায়াত, মাঝে তুমি কুয়াশাপতাকা
আমিও সাহস পাই, এতদিনে, চোখ নামানোর।