ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2024

 
 

ডাকবাংলায় আপনাকে স্বাগত

 
 
  • শব্দ ব্রহ্ম দ্রুম: পর্ব ৭


    রূপম ইসলাম (December 31, 2022)
     

    পর্ব ৬

    একটা ছোট্ট প্রেগন্যান্ট পজ় নিয়ে লতিকা আবার বললেন— আমরা আন্দাজ করতেই পারি, নানা ধরনের মানুষ জোগাড় করে এনে, জোরজবরদস্তি যে জৈব-রাসায়নিক  এক্সপেরিমেন্টগুলো করা হয়েছে, তার ফলশ্রুতি হিসেবেই লোপ পেয়ে গেছে একটার পর একটা জনগোষ্ঠি। গিনিপিগ-মানুষের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে গেছে এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে, হয়তো কান্নার বা বিলাপের বা আর্তনাদের শব্দে, হয়তো বা ভাসিয়ে দেওয়া বা ভেসে যাওয়া মৃতদেহের মাধ্যমে। ফলে আদিবাসীরাও উৎসব করে তাদের ভিনগ্রহী ঈশ্বরকে নিয়মিত অনুরোধ-উপরোধ করেছে— ‘আর এসো না। বিদেয় হও মানে মানে!’ ভিনগ্রহীরাও শেষমেষ এক্সপেরিমেন্টের ফলাফল অনুকূল হল না দেখে পরীক্ষা বন্ধ করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেখুন— আর কোনও জাহাজডুবির ঘটনা কিন্তু নেই। প্রকৃতি এখনও এখানে অন্য সমুদ্রের তুলনায় অশান্ত, কিন্তু একটা ধাবমান অশান্তিতে ব্রেক লাগালে তার সম্পূর্ণ নিশ্চল হতে সময় তো লাগবেই! আমরা এখন সেই সময়েরই মধ্য দিয়ে চলেছি।

    বিলি গিলচার তাঁর হাতে ধরা চুরুটে একটা আয়েশি টান দিয়ে বললেন— আচ্ছা একটু আগে যে পারমাণবিক রিঅ্যাকটরের কথা বললেন আপনি, কোন দ্বীপে ওটা লুকনো আছে বলে আপনার মনে হয়?

    লতিকা সুব্রহ্মণ্যম হাসিমুখে গিলচারের দিকে তাকিয়ে থাকলেন। বললেন— এখনও তো সঠিক জানি না! আন্দাজ একটা করেছি নৌসেনার  রেডিও ইন্টারফেরেন্সগুলোর চরিত্র যাচাই করে, তবে সেটা এখনও ফুলপ্রুফ নয়। আমার গবেষণা শেষ হলে যদি সে জায়গাটার খোঁজ পাই, তখন ভেবে দেখব সব্বাইকে সেটার ঠিকানা জানিয়ে দেওয়া ঠিক হবে, না হবে না।

    — আরেহ কী আশ্চর্য! সবাই জানবে কেন? আপনি জানবেন, আর জানব আমি।— বলে এক চোখ টিপে  করমর্দনের জন্য প্রোফেসরের দিকে হাতটা বাড়িয়ে দিলেন বিলি।

    চমৎকার আলোচনা শেষ হল। প্রোফেসরকে বিদায় জানিয়ে মিউজ়িয়ামের প্রধান ফটকের সামনে এসে দাঁড়ালেন এরিক দত্ত এবং বিল গিলচার। এরিক ভেবেছিলেন রাস্তায় নেমে এলে হয়তো ড: ব্রহ্ম ঠাকুরকে তাঁর জন্য অপেক্ষা করতে দেখবেন। কিন্তু তাঁকে দেখা গেল না কোথাও। মনে হচ্ছে যেন হাওয়াতেই মিলিয়েই গেছে লোকটা…! এরিক সেই প্রসঙ্গেই যেন স্বগতোক্তি করে উঠলেন— ডাক্তারের খ্যাপামির মাঝেমাঝে তল পাওয়াই মুশকিল হয়।

    বিল গিলচার বললেন— টেগোরের কথা ছাড়ো। তুমি বলো, কেমন শুনলে প্রোফেসর সুব্রহ্মণ্যমের কথা? তল পেলে? আই হোপ ইউ রিয়ালাইজ়, আন্দামান হ্যাজ় আ লট অফ পসিবিলিটিজ়। আমি তো সিরিয়াসলি ভাবছি, এখানে আমাদের বিটিটু প্রোজেক্টের একটা কেন্দ্র বসানোর কথা। এখানকার সমুদ্রেও, বিশেষ করে টেন ডিগ্রি চ্যানেলে বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের মতোই একটা ব্যাপার আছে। মহাকাশের পর্যটকদেরও এখানে নিয়মিত যাতায়াত যে ছিল, তার প্রমাণ তো শুনলেই! একটা ওয়র্মহোলের দারুণ সম্ভাবনা আছে। যাই হোক, চলো— তোমায় একটা জায়গা  দেখাতে নিয়ে যাই। আমার পরিবারের এক বিশিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে জায়গাটার নিকট সম্পর্ক আছে। পাশাপাশি আগেই যেটা বলছিলাম, আমাদের সংগঠনটাকে একটু প্রয়োগমুখী করতে হবে। চলো, এসব নিয়ে আমার কিছু প্রস্তাবও দেওয়ার আছে…

    এরিক দত্তকে নিয়ে বিলি গিলচার গাড়িতে গিয়ে উঠলেন, যে গাড়িটা করে এখানে এসেছিলেন তাঁরা। গাড়িতে ওঠা মাত্রই সেটা রওনা দিল। গাড়ির চালককে নতুন করে কোনও নির্দেশ দেওয়ার দরকার পড়ল না। এরিক দত্ত অবশ্য তা খেয়াল করলেন না। কী যেন এক ভাবনায় ডুবে রয়েছেন তিনি। 

    ৮। 

    পরিচালক ভবতোষ লাহিড়ী গালে হাত দিয়ে ভাবুকভঙ্গিতে ভাবতে ভাবতেই বললেন— এই খেয়োখেয়ির ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে, একটা চিত্রনাট্যে শুধু খাওয়াখাওয়ির উল্লেখ যে এত লাভজনক হতে পারে, বিশ্বাস করো আশ্চর্য, তা কিন্তু আমি মোটেই আগে ভাবিনি। মানে ভাবতেই কিন্তু পারিনি। এবারে কী হয়েছে জানো? শুনলে কিন্তু তুমি একদম চমকে যাবে! তরুণ স্মৃতিভল্লুক দুঃখের স্মৃতি ভুলবার জন্য রেস্ট্যোরান্টে গিয়ে প্লেটের পর প্লেট খাবার একাই কিন্তু শেষ করে দিচ্ছে, এই দৃশ্যটা শুনেই কিন্তু লাফিয়ে উঠেছে অনিন্দ্য ব্যানার্জি! অনিন্দ্যর নাম শুনেছ নিশ্চয়ই, বিশ্বখ্যাত বাঙালি হোটেলিয়র! ও কিন্তু আমার ছোটবেলার বন্ধু। ও একদম এককথায় বলে দিল, ওর চেইন অফ রেস্ট্যোরান্টকেই মুখ্য প্রযোজক হিসেবে রাখতে হবে কিন্তু! দরকার হলে সিনেমার নামের আগে ও হয়তো এবিসিডি কিছু একটা জুড়ে দেবে, ধরো চাইনিজ় কিচেন প্রেজেন্টস পলাতকপূর্ব বা বিরিয়ানি মহল নিবেদিত পলাতকপূর্ব, কিন্তু বাজেট নিয়ে আর আমাদের ভাবতেই হবে না!

    ‘চেইন অফ রেস্ট্যোরান্ট’ বলবার অতিরিক্ত অ্যাকসেন্টটা আশ্চর্যের কান এড়াল না। পাশাপাশি সে লক্ষ করল, প্রতিবাক্যে ‘কিন্তু’র সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এর মানে ভবতোষ নিজের স্বতঃস্ফূর্ত সাবলীলতায় পৌঁছে গেছেন। আশ্চর্য অবশ্য এতো ভাল ভাল কথা শুনবার পরও নিশ্চিত হতে পারছে না ছবিটা করবার ব্যাপারে। সে শেষ পর্যন্ত বলেই ফেলল— ভবাদা, মুখোশ পরলে আমার দমবন্ধ হয়ে আসে। আমি মুখোশ পরে একটা গোটা ছবি করতে পারব না।

    — দুত্তেরিকা! নিকুচি করেছে তোমার মুখোশের। এই দ্যাখো—

    এইটুকু বলে ভবতোষ দু’হাতে ধরে ভাল্লুকের জঘন্য মুখোশটা ছিঁড়বার চেষ্টা করলেন। ছিঁড়ল না। ভবতোষ উঠে দাঁড়িয়ে দাঁত মুখ খিঁচিয়ে বললেন— কাঁচিটা কোথায়? ছুরি কাঁচি স্ক্রুড্রাইভার যা কিছু একটা দাও আশ্চর্য। যত নষ্টের গোড়া কিন্তু এই মুখোশটাই— এটাকে আজ আমি—

    — আরে আরে করছেন কী? বসুন বসুন ভবাদা। মাথাটা ঠান্ডা করুন—

    — শোনো হে, ‘স্মৃতিভল্লুক’ মুখোশ কেন পরেছিল সেটাই কিন্তু এক্সপ্লেইন করা হবে এবার! মানবিক মুখটা কিন্তু ক্রমশ ক্ষতবিক্ষত হয়ে একটা দগদগে ভল্লুকের মতো হয়ে ওঠে। তাই এ ছবির শুরুর দিকে তুমি কিন্তু নরম্যাল মুখেই থাকবে। কিন্তু শেষের দিকে, তোমার মুখে অ্যাড করা হবে প্রস্থেটিকস, যাতে তা ভল্লুকের মতো দেখায়।

    — আচ্ছা, শুরুতে স্বাভাবিক চেহারায় যদি করি, দর্শক তো গুলিয়ে ফেলবে যে কাকে দেখছে, তরুণ ‘স্মৃতিভল্লুক’কে না আমার আগের করা চরিত্র ‘পলাতক’কে!

    মুশকিল হচ্ছে এই রকম অপারেশনে সবাই ধরা পড়ে না। বেশিরভাগ সময়েই সাধারণ সৈন্যরা ধরা পড়ে, সুযোগ বুঝে পালিয়ে যায় দলের মাথারা। এক্ষেত্রে ‘মিশন ব্রহ্ম ঠাকুর’ যেহেতু হেভিওয়েট অপারেশন ছিল, দলের অনেক মাথাই সরাসরি যুক্ত ছিল নৈশ অভিযানে। ফলে ধরা পড়েছে অনেকেই। পালাতে যারা পেরেছে তাদের সংখ্যা নিতান্তই কম। উন্নত সব দেশের পুলিশবাহিনীতেই ‘ব্যালেন্স’-এর চর আছে—  ভারতবর্ষকে ‘ব্যালেন্স’ উন্নত দেশ মনে করে না। এখানে তারা তেমন সুবিধেও করে উঠতে পারেনি

    — ফেলুক! গুলিয়ে ফেলুক! —টেবিলে গদাম করে একটা চাপড় মেরে বললেন ভবতোষ— আই অ্যাকসেপ্ট দ্যাট চ্যালেঞ্জ। এটা কিন্তু একটা খণ্ডসত্তার ব্যাপার, বুঝলে না? বললাম না, তুমি নিজেই কিন্তু নিজেকে তাড়া করছিলে আসলে? শোনো হে, দর্শকের পারসেপশন নিয়ে যদি খেলা না করি, তবে ছবি করে কি লাভ? এটা কিন্তু তোমার ওই অভয় কুণ্ডুর ‘বান্টি সোশ্যাল দ্য অ্যান্টি ঘোষাল’-এর মতো ফ্ল্যাট, সেন্টিমেন্টাল বুলশিট মার্কা ক্র্যাপ নয়। আই অ্যাম স্যরি টু সে দিস। ভাল সিনেমা, সিনেমার মতো সিনেমা করতে গেলে কিন্তু এই অধম ছাড়া গতি নেই, এটা তুমি জেনে রেখো, হুঃ!

    — ভবাদা, এই নাশপাতিটা খুব ভাল। একটা খেয়ে দেখবেন? কেটে দেব কুচি কুচি করে?

    — নিকুচি করেছে তোমার নাশপাতির! ওসব পাতি কথা রাখো তো! বলে ফ্যালো কালকে কী করছ? রাতের দিকে ফ্রি আছ তো? আমি কিন্তু খবর নিয়েই এসেছি, কাল সন্ধে সাতটার পর কিন্তু শ্যুটিং থাকতেই পারে না তোমার। টেকনিশিয়ান ইউনিয়ন বনধ ডেকেছে পরশুদিন থেকে অনির্দিষ্টকাল। কবে আবার শ্যুটিং চালু হবে এক্ষুনি কিন্তু বলা যাচ্ছে না। কাল সন্ধেবেলা কিন্তু ওদের ইউনিয়নের মিটিং থাকতে বাধ্য—

    আশ্চর্য ঠোঁট কামড়াল। আজ সারাদিন ড: ব্রহ্ম ঠাকুরের বাড়ির ওদিকটায় যাওয়া হয়নি। ব্রহ্মদা তাকে একটা দায়িত্ব দিয়ে গেছেন। তিনি এবং এরিক দত্ত জরুরি মিশনে আন্দামান গেছেন। তাঁর অবর্তমানে বাড়িটার দিকে অন্তত একদিন অন্তর নজর রাখতে হবে। ওঁদের শত্রুপক্ষ ধরা পড়েছে। বাড়ির সামনে পুলিশ পোস্টিং আছে। তবুও যদি কেউ বাড়িতে ঢুকে মহাকাশের সঙ্গে সংযোগসাধনকারী ট্রানসমিটারটা বন্ধ করে দেয়, আশ্চর্যকেই তা আবার চালাতে হবে। এ দায়িত্ব গুরুদায়িত্ব। এটায় ফাঁকি দিলে চলবে না।

    — না ভবাদা, কাল সন্ধেয় আমার একটা কাজ আছে। একটা বিশেষ বাড়ি পাহারা দেওয়ার একটা ব্যাপার আছে—

    — কিন্তু তোমার সঙ্গে বাড়ি পাহারার কী সম্পর্ক?  তুমি বাড়ির দারোয়ান কবে থেকে হলে? আমি কিন্তু তোমায় একজন ‘স্টার’ হিসেবে চিনতাম, বাংলা ছবির নক্ষত্র আশ্চর্য… শোনো ওসব ধানাইপানাই ছাড়তে হবে কিন্ত! কাল রাত আটটায় কিন্তু তোমার মেকআপ টেস্ট হবে। শ্যুটিং শেষ করেই চলে আসবে আমার বাড়ি। কাল এটা কিন্তু করতেই হবে আশ্চর্য। পরশুদিন থেকে টেকনিশিয়ানদের বনধের চক্করে আবার কবে লেজেন্ডারি মেকআপশিল্পী বাপন শিকদারকে পাব, তা বলাই  কিন্তু শক্ত। তবে বেশিক্ষণ কিন্তু লাগবে না তোমার। রাত দশটার মধ্যেই ছুটি হয়ে যাবে। তারপর যেও’খন তুমি বাড়ি পাহারায়—

    *****

    বাংলা চলচ্চিত্রের তরুণ নায়ক আশ্চর্য এবং স্বনামধন্য পরিচালক ভবতোষ লাহিড়ী তাঁদের পরবর্তী ছবি নিয়ে আলোচনায় যখন মশগুল, শহর কলকাতায় তখন নেমে আসছিল রাত। ট্র্যাফিকের কোলাহল নিশ্চিতভাবেই কমছিল। বাড়িতে বাড়িতে গমগম করে উঠছিল টেলিভিশনের শব্দ। একটু আগেই যে বাড়িটির কথা আশ্চর্য উল্লেখ করেছিল, ড: ব্রহ্ম ঠাকুরের নিবাসস্থল সেই উত্তর কলকাতার পুরনো বাড়িটায় কী ঘটছিল এই সময়ে?

    বাড়িটার সদর দরজার সামনে রুটিন পাহারা দিচ্ছে যে দু’জন পুলিশ, তারা বন্দুক মজুত রেখেছে বটে, কিন্তু হুট করে হামলা হলে সামলাতে পারবে বলে মনে হয় না। অবশ্য হুট করে হামলা হবে বলেও মনে হয় না। ব্রহ্ম ঠাকুরদের প্রতিপক্ষ সেই কুখ্যাত দল ‘দ্য হিডেন ব্যালেন্স’-এর স্থানীয় শাখা ‘দ্য ব্যালেন্সকিপারস’-এর অনেকেই গত রাতে ধরা পড়েছে পুলিশের হাতে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ডাকাতির। তারা বাড়ির সদর দরজার তালা গলিয়ে ঢুকতে গেছিল ব্রহ্মের ফাঁকা বাড়িতে। সূক্ষ্মভাবে পুলিশ চেষ্টা করছে ব্রহ্ম ঠাকুরের ভাই প্রোফেসর অম্বরীশের হত্যায় ওদের দায় প্রমাণ করবার। ব্যাপারটা সময়সাপেক্ষ। আপাতত ধরা যারা পড়েছে, তাদেরকে হাজতে রাখা গেছে। এটুকুই নিশ্চিন্তি।

    মুশকিল হচ্ছে এই রকম অপারেশনে সবাই ধরা পড়ে না। বেশিরভাগ সময়েই সাধারণ সৈন্যরা ধরা পড়ে, সুযোগ বুঝে পালিয়ে যায় দলের মাথারা। এক্ষেত্রে ‘মিশন ব্রহ্ম ঠাকুর’ যেহেতু হেভিওয়েট অপারেশন ছিল, দলের অনেক মাথাই সরাসরি যুক্ত ছিল নৈশ অভিযানে। ফলে ধরা পড়েছে অনেকেই। পালাতে যারা পেরেছে তাদের সংখ্যা নিতান্তই কম। উন্নত সব দেশের পুলিশবাহিনীতেই ‘ব্যালেন্স’-এর চর আছে—  ভারতবর্ষকে ‘ব্যালেন্স’ উন্নত দেশ মনে করে না। এখানে তারা তেমন সুবিধেও করে উঠতে পারেনি। নইলে এখানকার পুলিশ সরাসরি ‘ব্যালেন্স’-এর বিরোধিতা করতে পারত না, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ফোন চলে আসত। তো যাই হোক, পুলিশের হাত থেকে নিষ্কৃতি পেয়েছিল যারা, তারা আজ একটু আগে গোপনে মিলিত হয়েছে, মিটিং করেছে। তাদের মধ্যেই একজন এখন ব্রহ্মের বাড়ির ডান পাশের একটা বাড়িতে ঢুকে পড়েছে কৌশলে। সে ওই বাড়ির একটা জানালা দিয়ে নজর রাখছে ব্রহ্মের বাড়িটায়।

    সে জানে, অভিযান যদি করতে হয়, ধরা পড়লে চলবে না। অতএব বাড়িটার দিকে লক্ষ রেখে সমস্ত গতিবিধি সে নোট করে নিচ্ছে। তার মনে হল, অভিযান চালানোর সেরা সময় হবে রাত সাড়ে আটটা থেকে ন’টা। ওই সময়ে বাড়ির সামনে বসা দুই রক্ষীরা, পালা করে একজন-একজন করে গিয়ে পাশের গলিতে একটা পাইস হোটেলে রাতের খাবার খায়। রাতের অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে পাশের বাড়ির ছাদ টপকে আগামীকাল যদি বাড়িটাতে ঢুকতেই হয়, ওই সময়টাই হল বেস্ট অপশন।

    (ক্রমশ)

    ছবি এঁকেছেন শুভময় মিত্র

     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     




 

 

Rate us on Google Rate us on FaceBook