কয়েকটি কবিতা
১
আমার বাড়ির মন দ্বিধা থেকে তেরো পা পিছনে।
উঠোনে উড্ডীন লতা, যেন কবেকার অপরাধী…
পালানোর ছুটি পেয়ে সে ঘরে ফেরার গান শোনে
আমি যে কৃষকস্বপ্ন, বেলা পড়ে এলে ভাত রাঁধি।
২
তুমি নেই ব’লে এত ভালবাসা বিষয়ক লেখা
এত দিনরাত্রিব্যাপী সেমিনার, বিরহ বিষয়ে
তুমি নেই ব’লে এত নারী আজ সহজে রেবেকা
জিতে সেই নেশা নেই, যত আছে এই পরাজয়ে।
৩
খামার জানে না তবু, কত দূরে সহিসের গ্রাম
কত সুদে চড়া রোদ কিনেছে সে অতীত বিকেলে
পথে যেতে আমরাও মেঘাতুর ঘোড়া থামালাম…
এ-নগরী সুপ্ত, যেন বিষাদবাড়ির ছোট ছেলে।
৪
এই মন, রণক্ষেত্র, ভেঙে পড়ে থাকা মুকুটেরা
হাওয়া এসে দেখে যায়, কত লুঠ, কত ক্ষয়ক্ষতি…
অতীতের দেহ টেনে কত কত বার ঘরে ফেরা,
জখম কিছুই নয়, স্মৃতিবাহিনীর সেনাপতি।
৫
কী এক আলস্য ছিল বিজ্ঞাপনী মেয়েটির চোখে
যেন যা সে বিক্রি করছে তাতে তার ভালবাসা নেই।
তবে কি আলস্য কেনে, বাধ্যবাধকতা কেনে লোকে?
বাজারে, ফেরার পথে, ফেলে আসে ভালবাসাকেই?
৬
বাঁশিটি অগ্রিম সুর, বায়না করে রাখা এ-রাগিণী
অমুক তারিখে বাজবে। তুমি হবে বিহ্বল, কাতরও।
যে-চাঁদ ঠকায় চোখ, আমি তাকে বহুরাত চিনি।
বাতাসকে তুমি শুধু ফেরারি রাখাল ভেবে ধোরো…
৭
যে-তর সয় না, তাকে ছেড়ে দাও সময়ের হাতে।
ঘড়ি কিনে ফিরে এসো অরণ্যে, নগরে। ঘুম যাও।
অপেক্ষা রোগের মতো, সেরে যায় কারওর সাক্ষাতে…
উপশম মরীচিকা। এ-কথাটি নিজেকে বোঝাও।
৮
অচল টাকার মতো ভাল লাগে তোমাকে, আমার
চালাতে পারি না কিন্তু ফেলেও পারি না দিতে ঠিকই
স্মৃতি বড় মুদ্রাদোষ, প্রীতি বড় ক্ষয়উপহার
বাজারের কাছ থেকে ইদানীং ভালবাসা শিখি।
ছবি এঁকেছেন শুভময় মিত্র