কয়েকটি কবিতা
১
শরীরে মনের মতো বসে আছ। যদি যেতে চাও—
বৃষ্টিকে বোঝাও ধারা, আগুনকে বোঝাও তবে স্বাহা
এ-দাগ যাবার নয়। ফুটে উঠবে আবার কোথাও…
সহজ সমস্যা তুমি। তুমি বড় কঠিন সুরাহা।
২
রোজগারসীমানা থেকে কিনে আনা এই ছোট কুপি—
আলো বড় কথা নয়। জোনাকির আত্মীয়, সেটাই।
তল্লাশি চালাও যদি, বড়জোর মোহ-তছরুপি।
ভাঙানি সন্ধের খুচরো। এর বেশি আর কোথা পাই!
৩
তুমি ফুল তুলেছিলে, তারই দাগ রয়েছে বাগানে।
যেন অপরাধচিহ্ন, যেন ব্যর্থ অভিমানভাষা।
যে-মেয়েটি অন্ধ, সেও বিরহের কিছু গান জানে।
তাকে ফুল দাও। আর কেড়ে নাও দেখার পিপাসা।
৪
এ-জীবন জটিলতা। বিদেশের তরিতরকারি।
দেখায় সুন্দর, কিন্তু কীভাবে যে রাঁধে তা বুঝি না।
তুমি কাটাকুটি করলে আমিও আগুন জ্বালতে পারি
সন্ধে হলে দেখা যাবে, অল্প আঁচে রান্না হলো কি না!
৫
তলানি-নির্ভর মায়া। শেষে এসে ঠেকলে তবে মজা।
তবে যেতে-নাহি-দিব, তবে কেউ-নেই-তুমি-ছাড়া।
নাহলে শ্বাপদ। হিংস্র। রক্তের কাঙাল। পদব্রজা।
নাহলে বিপদকাব্য। সন্ধেশেষে রক্তমাখা পাড়া।
৬
ঘোড়া নিয়ে ডুবে গেছ। জলে মাখামাখি তার হ্রেষা।
রেশম ও কেশররাশি ভেসে ওঠে পরদিন ভোরে…
গোয়েন্দা এসেছে আজ। কিছু না, সন্দেহ তার পেশা।
ছায়াশিরোনাম ভাসে, দেহহীন জলের খবরে।
৭
এই ছোট পাড়াগাঁয়ে আমার শরীর মণিহারি।
কিছু পুরাতন ক্রেতা, ধারে কেনে চিরুনি, সিঁদুর…
তাদের দুঃখের গল্পে আমি ম্লান হয়ে যেতে পারি।
নাহলে তো ব্যবসাপ্রাণ। সন্ধের মুঠির মতো ক্রূর।
৮
আসন্ন ভোটের মতো চোখ তার। প্রতিশ্রুতিময়।
সাধারণ নাগরিক তাকালে কী বিপদই না হবে,
এই ভেবে ভয়ে থাকি। কখন গণনা শুরু হয়…
এই দৃষ্টি লুঠ হোক, আমাদের পরের বিপ্লবে!