বিখ্যাত কত্থক নর্তকী শাশ্বতী সেন সত্যজিৎ রায়ের ‘শতরঞ্জ কে খিলাড়ি’ ছবিতে তাঁর নাচ সম্পর্কে বলেন, ‘আমার জীবনের এবং কেরিয়ারের একটা মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল ওই সুযোগটা।’ শাশ্বতীকে দেখা যায় একটিই দৃশ্যে, সেখানে নিজের সভায় বসে নবাব ওয়াজিদ আলি শা (যে-ভূমিকায় স্মরণীয় অভিনয় করেছিলেন আমজাদ খান) এক তরুণী নর্তকীর নাচ দেখছেন। শাশ্বতী বলেন, দৃশ্যটি তুলনাহীন, ভারত ও বিদেশের দর্শকদের কাছে তা সমৃদ্ধ আওয়াধি সংস্কৃতির একটি ঝলক তুলে ধরে, যে-সংস্কৃতির সঙ্গে লখনৌ ঘরানার কত্থকের ইতিহাস ওতপ্রোত।
শাশ্বতীর মনে পড়ে, সত্যজিৎ রায় দিল্লিতে পুরনো কত্থক কেন্দ্রে, পণ্ডিত বিরজু মহারাজের সঙ্গে দেখা করতে আসতেন। বিরজু মহারাজ লখনৌ ঘরানার কিংবদন্তি শিল্পী, যাঁর পিতামহ এবং প্রপিতামহ সত্যিই নবাবের সভায় সঙ্গীতকার ছিলেন। সত্যজিৎ ও বিরজু মহারাজ বসতেন কেন্দ্রের একটি ছোট ঘরে, যা ছিল বিরজু মহারাজের প্রিয় ঘর, যেখানে সত্যজিৎ জানতে চাইতেন নবাবের ইতিহাসের কিছু গল্প ও খুঁটিনাটি, যা পারিবারিক সূত্রে বিরজু মহারাজের জানা। আর অবশ্যই, সত্যজিতের দরকার ছিল এমন কিছু নৃত্যশিল্পী, যাঁরা আওয়াধের দরবারের কত্থককে যতটা সম্ভব নিখুঁত ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন। সত্যজিৎ একেবারেই চাননি, কোনও ‘ফিল্মি’ ব্যাপার ছবিটায় থাকুক, তাই তিনি ঠিক করেন একটি ধীর ভৈরবী ঠুংরি ‘কানহা ম্যায় তোসে হারি’ ব্যবহার করবেন, যদিও মহারাজজি একটু সন্দিহান ছিলেন, গানটির ধীর লয়ের জন্য। সত্যজিৎ বললেন, ‘প্লিজ ভাববেন না, আপনাকে আপনার ঘরানার ধারার বাইরে গিয়ে কিছু করতে হবে। আপনি ওই সময়ে যা হত বলে শুনেছেন, তা-ই অনুযায়ী নাচটা তৈরি করুন।’ ফলে তৈরি হল একটা লীলায়িত কোরিওগ্রাফি এবং সঙ্গীত, যা, শাশ্বতীর মতানুযায়ী, ছবির একটা জরুরি মুহূর্তে নবাবের মনের অবস্থা বুঝতে দর্শককে সাহায্য করে:
‘নবাব তখন মানসিক চাপে আছেন, কিন্তু তিনি চাইছেন সঙ্গীত ও নাচ তাঁকে একটু শান্তি দিক। সেটাই ছিল পরিপ্রেক্ষিত। দাদা (সত্যজিৎ) একবারও বলেননি, যেভাবে হোক একটা গান এখানে প্রয়োগ করে দাও। ওঁর ছবি এখনকার ছবির মতো ছিল না, যেখানে কেন ও কোথায় গান ব্যবহার করছি, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তাই করা হয় না।’
আর সত্যজিৎ যা চাইতেন, তা পেতেন। মহারাজজির একক গানের সঙ্গে ঠিক নর্তকীটিকে বেছে নেওয়ার সময়, সত্যজিতের কিছুতেই কাউকে পছন্দ হচ্ছিল না। উনি মনে করে বললেন মহারাজজির এক তরুণী ছাত্রীর কথা, যাঁর নাচ সত্যজিৎ দেখেছিলেন কয়েক বছর আগে, একটা ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল উপলক্ষে, বিজ্ঞান ভবন-এ। তিনিই শাশ্বতী সেন, যাঁর ওই মুহূর্তে পেশাদার নর্তকী হওয়ার কোনও ভাবনা ছিল না। তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যানথ্রোপলজি নিয়ে পড়ছিলেন, সঙ্গে নাচও শিখছিলেন, কিন্তু তা নিয়ে বিরাট কোনও পরিকল্পনা ছিল না। তাঁর পরিবারও নাচ ব্যাপারটাকে বিরাট কিছু ভাবতেন না।
শাশ্বতী কত্থক কেন্দ্রে তাঁর সঙ্গে সত্যজিতের প্রথম সাক্ষাতের সকৌতুক বিবরণ দেন:
‘আমাকে দেখেই উনি বললেন, ‘এই! তুই নেচেছিলি না বিজ্ঞান ভবনে? তুই আমার সিনেমায় নাচবি।’’ যখন শাশ্বতী বললেন যে তা সম্ভব নয়, কারণ তাঁর পরিবার তা মেনে নেবে না, উনি তক্ষুনি শাশ্বতীর সঙ্গে গাড়িতে করে তাঁর বাড়ি গিয়ে উপস্থিত হলেন।
‘আমার মা দরজা খুলেছিলেন। তাঁর তো মূর্ছা যাওয়ার জোগাড়! আমাকে বললেন, তুই কি পাগল! ফোন করিসনি কেন? সত্যজিৎ রায় আমার বাড়িতে এসেছেন! আমি বললাম, তুমি কি ভেবেছ উনি আমাকে ফোন করার কোনও সময় দিয়েছেন? সত্যজিৎ এইরকমই ছিলেন, উনি দরজাটা খুলে ভেতরে ঢুকে গেলেন। একদম ঘরোয়া ছিলেন।’
যখন শাশ্বতীর বাবাও অরাজি হলেন, বললেন পরিবারের পক্ষে এটা ভাল হবে না, তখন সত্যজিৎ বললেন, ‘আমরা কি বাজে কাজ করি? আমরা কি বাজে লোক?’ দিল্লি ও কলকাতায় শাশ্বতীর পরিবারের লোকেরা শেষকালে মত দিলেন, এবং শাশ্বতীর জীবন বদলে গেল।
তাঁর আশ্চর্য সুযোগ হল দুজন জিনিয়াসের সঙ্গে কাজ করার, সত্যজিৎ ও বিরজু মহারাজ, যে দুজনেই অত্যন্ত খুঁতখুঁতে। আর সত্যজিৎ সে-বিষয়ে পুরোপুরি সচেতন ছিলেন। কলকাতার এইচএমভি স্টুডিওতে ঠুংরির রেকর্ডিং-এর সময় মহারাজজি একের পর এক টেক দিচ্ছিলেন, ফিরে ফিরে গাইছিলেন, প্রতিবার বলছিলেন, না এটা ঠিক হয়নি। সত্যজিৎ শাশ্বতীকে তাঁর কাছে ডেকে বললেন, ‘শোন, আমি জানি আমি কীরকম। তোর গুরুও একইরকম। পারফেকশনিস্ট— আমরা কখনও আমাদের কাজে সন্তুষ্ট হই না। তো, আমার ফিল্ম তৈরি হবে না, যদি তোর গুরুর সঙ্গে কাজ করতে হয়। উনি থামবেনই না। আমি জানি, কারণ আমি একই ধাতুতে গড়া। তাই এবার যেই আমরা সেরা টেক-টা পেয়ে যাব, তোকে ইশারা করে দেব, আর সকলে মিলে তোরা খুব উত্তেজিত হয়ে বলবি, ওঃ, এইটা একেবারে সেরা টেক হয়েছে। এর চেয়ে ভাল আর হতেই পারে না!’ এবং সেভাবেই রেকর্ডিংটা শেষ করা হল!
এই একটা দৃশ্যে নাচার জন্য শাশ্বতী মহারাজজির কাছে যেরকম ট্রেনিং পেয়েছিলেন, তা তাঁর গোটা জীবনের সম্পদ, বলেন শাশ্বতী। তিনি তার আগে ১৫ বছর ধরে নাচ শিখেছেন, কিন্তু ওই কয়েক মাসে তিনি কত্থকের সূক্ষ্মতা সম্পর্কে গভীর বোধে দীক্ষিত হলেন, যা কোরিওগ্রাফিতে অমন কাব্যিক ভাবে ফুটে ওঠে।
‘প্রতিটি অ্যাঙ্গল, প্রতিটি অভিব্যক্তি, কী করে আমি মাথা তুলব, তাকাব, লজ্জায় চোখ সরিয়ে নেব, এবং এগুলো সবই করব মুসলিম দরবারি রীতিতে, আমার হাসিটা কতটা সূক্ষ্ম হবে, কীভাবে অল্প হাসতে হবে এবং তারপর তা মিলিয়ে যেতে দিতে হবে, এই সবকিছু মহারাজজির কাছে শিখেছি ওই দু-তিন মাসে।’
শুটিং-এর অভিজ্ঞতাও দারুণ। তাঁকে পরতে হয়েছিল একটা সূক্ষ্ম কাপড়ের তৈরি (শামা জাইদির ডিজাইন করা) সাংঘাতিক দামি পোশাক, সঙ্গে গয়নাগাঁটি, হিরে, চুনি, পান্না, মুক্তো বসানো— সব মেটিয়াবুরুজের আসল নবাবি সংগ্রহ থেকে নেওয়া। ওইসব গয়নাগাঁটির দাম এত ছিল, সেটে কস্টিউম পরে তিনি যেখানেই যেতেন, সঙ্গে দুজন সশস্ত্র প্রহরী যেত। আমজাদ খানের পোশাকও নবাবের ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে তৈরি করা হয়েছিল, আর দরবারের ঝাড়লণ্ঠনটাও।
দৃশ্যটার সময় সত্যজিৎ শাশ্বতীকে বলেছিলেন, এটাকে শুধু দরবারের কিছু দর্শকের জন্য নাচছেন এরকম ভাবতে, সিনেমার শুটিং-এর কথা ভেবে নার্ভাস না হতে। আর রোজই কিছু দর্শক আসতেন সত্যজিতের প্রথম রঙিন হিন্দি ছবির শুটিং দেখতে— অপর্ণা সেন, সৌমিত্র চ্যাটার্জি, উৎপল দত্ত, তাঁরা সবাই ওখানে ছিলেন।
‘দুজন অসামান্য শিল্পীর কাছ থেকে আমি প্রতিটি মুহূর্তে শিখেছি, সবকিছু— তাঁরা এত একনিষ্ঠ, এত নিবেদিতপ্রাণ, নিজেদের কাজ বিষয়ে এত প্যাশনেট! তাঁদের থেকে জীবনের অনেক কিছু শিখেছি।’
তারপর আবার অদৃশ্য বেড়ালের ব্যাপারটাও ছিল!
‘আমার দৃশ্যে আমজাদজির কোলে একটা সায়ামিজ বেড়াল ছিল। তিনি ওটাকে আদর করছিলেন। দু’দিন শুটিং-এর পর, বেচারা নিশ্চয় খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিল। রাত্রে পালিয়ে গিয়ে সেটেরই একটা জায়গায় লুকিয়ে পড়েছিল। কিছুতেই বোরেবে না। কেউ চেষ্টা করলেই তাকে আঁচড়ে দিচ্ছে। এবার কী হবে? বেড়াল ছাড়া তো শট নেওয়া যাবে না, কন্টিনিউয়িটি নষ্ট হয়ে যাবে। তাই আরেকটা বেড়াল নিয়ে আসা হল, কিন্তু এটা ছিল হুলো, অন্যটার জুড়ি। যেই সেট-এ তাকে আনা হল, সে ম্যাও-ম্যাও করে রীতিমতো গর্জন করতে শুরু করল, লোম-টোম সব খাড়া করে কী তার ফোঁসফোঁসানি! আমজাদ ভাই বললেন, দাদা এ কী এনেছেন! ও-ও একটা হুলো বেড়াল, আমিও একটা হুলো বেড়াল। কী করে আমাদের বন্ধুত্ব হবে? আগেরটা মেনি বেড়াল ছিল, তাই আমার কোলে বসতে রাজি হয়েছিল। এ তো আমার কাছে আসবে না কিছুতেই। তখন সত্যজিৎ কী করলেন? উনি কাউকে দিয়ে একটা লোমশ জিনিস আনালেন, বেড়ালটার লোমের মতো একই রঙের, একই ধরনের। সেটাকে একটু বান্ডিল মতো পাকিয়ে আমজাদভাইকে দিয়ে দিলেন, লং শটে উনি সেটাকেই আদর করছেন!’
সত্যজিৎ এতটাই চেয়েছিলেন যে আমজাদ খান ওয়াজিদ আলি শা’র ভূমিকায় অভিনয় করুন, তিনি এক বছর ফিল্মটা বন্ধ রাখেন, যখন আমজাদের একটা বিরাট অ্যাক্সিডেন্ট হয়। হিন্দি ছবিতে ভিলেনের অভিনয় করে বিখ্যাত আমজাদের ক্ষেত্রে এই রোলটা ছিল একদম আলাদা। ছবির গোড়ায় একটা ছোট নাচের দৃশ্য ছিল, যেটায় অনেকের সঙ্গে আমজাদও নাচছেন। সেটা করতে গিয়ে আমজাদ মহারাজজিকে বলেছিলেন, ‘মহারাজ! এ আমাকে কোথায় এনে ফাঁসিয়ে দিলেন! হাতে একটা বন্দুক দিলে তবু ভাল হত। হাতে বাঁশি দিলে, তা নিয়ে আমি কী করব? হা ভগবান! আমার তো খুব ভয় করছে!’
শাশ্বতীর আমজাদকে মনে আছে একজন নম্র মানুষ হিসেবে, যাঁর সঙ্গীতের প্রতি খুব ঝোঁক, যিনি নিজে গান গাইতেন, আর মহারাজজির কাছ থেকে গান শুনতেন শুটিং-এর ফাঁকে ফাঁকে।
শাশ্বতীর মতে, ওযাজেদ আলি শা’র ভূমিকায় আমজাদের নির্বাচনটাই বুঝয়ে দেয়, অভিনয় ও চরিত্রায়নের প্রতি সত্যজিতের কেমন জহুরির চোখ ছিল। ছবির অন্য সব অভিনেতাকেই— সঞ্জীবকুমার, সইদ জাফরি, শাবানা আজমি, লীলা মিশ্র— একইভাবে নিখুঁত নিক্তি মেপে নির্বাচন করা হয়েছিল। সত্যজিতের সব কাজে এইরকমই প্রতিটি খুঁটিনাটি বিচারের পরিচয় পাওয়া যায়। শাশ্বতী ছবিটা চলাকালীনও অনেকবার সত্যজিতের বিশপ লেফ্রয় রোডের বাড়িতে গেছেন, তার পরেও। তিনি দেখেছেন, প্রতিটি ছবির জন্য সত্যজিৎ কী মোটা অ্যালবাম তৈরি করেছেন, যেখানে প্রতিটি শটের স্কেচ আঁকা আছে। ডিটেলের প্রতি এই নজর সত্যজিতের কাজের একটা বড় পরিচয়, তাঁর সঙ্গে যারাই কাজ করেছে তারাই এটা দেখেছে এবং এ থেকে শিক্ষা নিয়েছে। সারা পৃথিবী তাঁকে ভালবাসত, তবু উনি ছিলেন সরল এবং নিজের আন্তর্জাতিক খ্যাতি ও প্রভাব সম্পর্কে নির্বিকার।
শাশ্বতী বলেন, ‘উনি ছিলেন একজন অসামান্য মানুষ! তোমরা এরকম লোক দেখতে পাবে না। আমরা ছবিতে কাজ করি, আমরা এখনও পাই। কিন্তু খুব কম মানুষই আছেন, যিনি সত্যজিতের মতো মহান অথচ এত সাদাসিধে।’
একটা ঘটনার কথা বলেন শাশ্বতী। সেট-এ, দরবারের উঁচু দরজায় একটা পর্দা লাগাবার দরকার ছিল। একজন বেঁটে লোক একটা মোড়ার ওপর দাঁড়িয়ে খুব চেষ্টা করছিলেন উঁচুতে নাগাল পেতে। সত্যজিৎ তা দেখে, ওঁর কাছে এসে বললেন, ‘এই ছোটু! সরে যা! এটা আমার কাজ, তোর কাজ নয়। ভগবান আমাকে এত লম্বা বানিয়েছেন এই কাজটাই করার জন্য। তুই কেন করবি? এটা আমার কাজ।’ এবং উনি পেরেক আর হাতুড়ি নিয়ে, পর্দাটাকে লাগিয়ে দিলেন।
শাশ্বতী আবেগবিহ্বল হয়ে বেলভিউয়ের আইসিইউ-তে শেষবার সত্যজিৎকে দেখার কথা বলেন, ‘বোধহয় এটা ওঁকে অস্কার দেওয়ার পর পরই, ভারতরত্নও ওঁকে দেওয়া হয়েছিল যখন উনি হাসাপাতালে খুব অসুস্থ। আইসিইউ-তে একটা রঙিন কাচে একটা ছোট গর্ত ছিল। সেটা দিয়ে উঁকি মেরে দেখি, উনি দরজার দিকে তাকিয়ে, সব রোগীই এদিকেই তাকিয়ে থাকে পরিজনরা কে আসছে দেখার জন্য। তাই আমি তাড়াতাড়ি সরে এলাম। উনি নার্সকে বললেন, ‘যিনি বাইরে আছেন তাঁকে ভিতরে নিয়ে আসুন।’ নার্স এসে আমাকে বললেন, ‘উনি আপনাকে ডাকছেন।’ আমি বললাম, ‘না না, আমি ওঁকে ডিসটার্ব করতে চাই না। আমি ওঁকে শুধু দু’মিনিটের জন্য দেখতে এসেছি।’ কিন্তু নার্স বললেন, ‘উনি ডাকছেন আপনাকে।’ আমি হাত ধুয়ে, জুতো খুলে, ভেতরে গেলাম। উনি আমার হাত ধরে বললেন, ‘কী হল? আসছিলি না?’ আমি বললাম, ‘না দাদা, আমি আপনাকে ডিসটার্ব করতে চাই না, আপনার ক্ষতি করতে চাই না।’ উনি বললেন, ‘না, তুই এলে আমার ভাল লাগে। তুই তো আমার মেয়ের মতো। তুই এলে কখনও আমি ডিসটার্বড হব না।’’
‘শতরঞ্জ কে খিলাড়ি’ করার পর চার দশকেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে, এখনও শাশ্বতী এই জীবনের মোড় ঘোরানো ছবির দৌলতে যশ কুড়িয়ে থাকেন, ধ্রুপদী সঙ্গীত বা নাচের জগতের বাইরের মানুষের সঙ্গে এখনও লোকে তাঁর পরিচয় করিয়ে দেন এই বলে, ইনিই ‘শতরঞ্জ’-এর নর্তকী।
‘উনি আমার মা-বাবাকে বলেছিলেন, আমরা আপনার মেয়েকে কোনও এমন কাজ করতে বলব না, যা ওর রুচিকে আঘাত করবে। ওর গুরু ওকে যা শিখিয়েছেন, ও সেই অনুযায়ী নাচবে। আর উনি গ্যারান্টি দিয়েছিলেন, যেদিন ফিল্মটা রিলিজ করবে, আপনার মেয়ের নাম বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে, আর পৃথিবীতেও ওর নাম ছড়াবে। আর তা-ই হল!’