ছাই ফেলতে ভাঙা কুলো। পণ্ডিতরা বলছেন, সত্যজিৎ রায়ের শতবর্ষে আমিই একমাত্র জীবিত লেখক, যাঁদের সাহিত্য নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন এই বিশ্ববিজয়ী চিত্রনির্মাতা। সত্যজিৎ রায়ের সিনেমার পথচলা শুরু বনগ্রামের বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে। এই ‘পথের পাঁচালী’র দেশ বনগ্রামেই আমার জন্ম, বিভূতিভূষণ তো তখনও ইছামতীর তীরে গোপালনগর ইস্কুলে মাস্টারি করছেন।
শুনেছি, সরলমনা বিভূতিভূষণের খুব ইচ্ছা ছিল, তাঁর কোনও একটা বই চলচ্চিত্রে রূপান্তরিত হোক এবং সেই জন্যে কয়েকজন খ্যাতনামা পরিচালককে স্বাক্ষরিত বই উপহার দিয়েছিলেন তিনি, কিন্তু তাঁদের মন গলাতে পারেননি। ‘আমার বই সিনেমার অযোগ্য’ এই ধারণা নিয়েই তাঁর অকালমৃত্যু। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর বেশ কিছুদিন পর একটি অঘটন ঘটল। তাঁর বইয়ের সিগনেট সংস্করণের প্রচ্ছদ-চিত্র আঁকতে গিয়ে বিজ্ঞাপন সংস্থার খ্যাতনামা আর্ট-ডিরেক্টরের মাথায় ভূত চাপল এবং তিনি মোটা মাইনের সুখের চাকরি ছেড়ে নিজের গাঁটের কড়ি খরচ করে ‘পথের পাঁচালী’ তৈরিতে নেমে হাজার ঝামেলায় পড়ে গেলেন। একথা বলা অন্যায় হবে না, বনগ্রামে জন্মেছে বা জন্মাচ্ছে বা জন্মাবে যারা, একেবারে গোড়া থেকেই জড়িয়ে চলচ্চিত্রকার সত্যজিতের সঙ্গে, আমি তো নামমাত্র।
সত্যজিৎ-শতবর্ষে যখন আর কোনও প্লেয়ার মাঠে নেই, তখন সাহস করে বলা যায় আমার কৃতিত্ব অনেক। ‘পথের পাঁচালী’র জয়যাত্রা শুরুর প্রথম দিনেই কলকাতার এক সিনেমা হলে ছবিটা দেখেছি এবং সেই বছরেই আমার সিরিয়াস সাহিত্যযাত্রার শুরু।
আরও কিছু কাকতালীয় কিন্তু স্মরণীয় ঘটনা আছে। অর্থাভাবে সত্যজিতের ছবি মাঝপথে চলমান করতে, তাঁর মায়ের পরিচিতা যে-বান্ধবী ডাক্তার বিধানচন্দ্র রায়ের সাহায্যে ‘পথের পাঁচালী’র সাফল্য নিশ্চিত করেছিলেন, তাঁকে রানিখেতের পথে দুর্নীতিগ্রস্ত রেলকর্মীদের হাত থেকে রক্ষা করবার জন্য রেলকর্মী হিসেবে আমি হাওড়া থেকে লখনউ স্টেশন পর্যন্ত একই কামরায় গিয়েছিলাম এবং যথাসময়ে তাঁর স্নেহলাভ করেছিলাম।
শোনা যায়, বান্ধবীর অনুরোধে অর্ধসমাপ্ত ছবি দেখে বিধানচন্দ্র রায় নির্দেশ দিয়েছিলেন ‘পথের পাঁচালী’ ছবিটা পশ্চিমবঙ্গ সরকার নেবেন। বড় বড় অফিসারদের বিন্দুমাত্র ইচ্ছে ছিল না, তাঁরা বলেছিলেন, বাজেট অ্যালোকেশন নেই। কম কথার মানুষ বাংলার স্থপতি বিধানচন্দ্র নাকি বিরক্তভাবে বলেছিলেন, ‘পথের পাঁচালী’ যেহেতু, অতএব রোড ডেভেলপমেন্ট খাতে খরচটা যাবে! এসব কথা ‘পথের পাঁচালী’র পরিত্রাত্রীকে জিজ্ঞেস করা হয়নি, রানিক্ষেতে তার রান্না বেশ কয়েকবার পরমানন্দে খাওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেছি। সে অন্য এক গল্প, যার শুরু আছে শেষ নেই।
সত্যজিৎ রায়ের শ্রীমুখেই শুনেছি, কলকাতায় রিলিজের আগেই নিউ ইয়র্কের ভুবনবিদিত মেট্রোপলিটান মিউজিয়াম প্রেক্ষাকক্ষে ‘পথের পাঁচালী’র প্রথম প্রদর্শনীর কথা। তাঁর যথেষ্ট সন্দেহ ছিল অখ্যাত বাংলার গ্রামের সীমাহারা দুঃখের কথা ধনবান আমেরিকানদের কেন ভাল লাগবে, কেন দশ হাজার মাইল দূরের মানুষ অযথা তাঁদের মূল্যবান সময় নষ্ট করবেন! তারপর সেই অভূতপূর্ব দৃশ্য— সায়েবি বিজ্ঞাপন কোম্পানির আর্ট-ডিরেক্টর দেখলেন, চোখ মুছতে মুছতে মানুষ প্রেক্ষাগৃহ থেকে বেরিয়ে আসছে। চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ বুঝলেন, তিনি অখ্যাত এক গ্রামের বেদনাকে বিশ্বের বেদনায় রূপান্তরিত করতে সক্ষম হয়েছেন। এবং তাঁর বিশ্ববিজয় শুরু হয়ে গেল।
সত্যজিতের বিশেষ বন্ধু টাটা স্টিলের পি.আর.ও, আর.পি. গুপ্তর কাছে অনেক গল্প শুনেছিলাম ‘পথের পাঁচালী’র প্রথম যুগের প্রসঙ্গে। কফি হাউসের এক প্রতিভাধর সত্যজিৎ-বন্ধু ছবি দেখে সন্তুষ্ট হননি, তিনি অন্য বন্ধুদের আড়ালে বললেন, ‘কিস্যু হয়নি, পথও নেই পাঁচালিও নেই।’ আর একজন কফি হাউসিয়ান, সেই সুস্বাদু দুঃসংবাদ দেওয়ার জন্যে ট্রামে চড়ে সত্যজিতের তৎকালীন বাসভবনে চলে এলেন। সমকালের এমন নিষ্ঠুরতা কার ভাল লাগে? সত্যজিৎ নাকি মনের দুঃখে বলেছিলেন, ‘অতই যখন বোঝে, তখন একটা ছবি করে দেখাক না।’ কফি হাউসের বন্ধু সঙ্গে সঙ্গে গিয়ে সমালোচককে খবরটা দিয়েছিলেন এবং সঙ্গে সঙ্গে তাঁর হৃদয়হীন উত্তর, যা আজকের ভাষায় ‘ভাইরাল’ হয়েছিল— ‘ওরে বাবা! ময়রার দোকানে গিয়ে নিজের পয়সায় জিলিপি কিনে তা খেয়ে বলা চলবে না জিলিপি ভাল লাগেনি, সঙ্গে সঙ্গে গামছা পরে কড়াইতে জিলিপি ভেজে দেখাতে হবে!’
এই ডায়ালগের সত্যাসত্য আজও জানি না, তবে এইটা স্পষ্ট, ছবি নিয়ে সমকালের কারও কারও সন্দেহ ছিল এবং আজকের সন্দেহাতীত শিল্পীকে সবরকম মতামতের অগ্নিপরীক্ষা দিয়ে বিশ্ববিজয়ীর স্ট্যান্ডে দাঁড়াতে হয়েছিল।
নন্দনের ছোট্ট কক্ষে, এক সন্ধ্যায় আমার আর সত্যজিৎ রায়ের একসঙ্গে ‘পথের পাঁচালী’ বিষয়ে কিছু কথা বলার সুযোগ এসেছিল। সুরসিক সত্যজিৎ বলেছিলেন, ‘ছবিটার একটা ভুল ধরুন।’ আমি মাথা চুলকোতে লাগলাম, তখন সত্যজিৎ বললেন, ‘আমার মস্ত অপরাধ, ওই যে কুকুরটা— তার কনটিনিউটি নেই, শুটিং-এ অনেক সময়ের ব্যবধান হওয়ায় ভিন্ন কুকুর ব্যবহৃত হয়েছে, প্রায় কেউ বুঝতে পারে না, কিন্তু আমার চোখে লাগল।’
সেদিন সন্ধ্যায় জিজ্ঞেস করেছিলাম ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইটের ডিরেক্টরকে, ‘এখন ছবি করলে ছবিতে কি কালার ব্যবহার করতেন না?’ সত্যজিৎ বললেন, ‘না, ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইটই করতাম।’ সেদিন রাত্রে হাওড়ায় বাড়ি ফিরে এসেই একটা ফোন পেয়েছিলাম, অন্যদিক থেকে বিশ্ববিজয়ী চলচ্চিত্রকার বললেন, ‘আপনাকে ঠিক বলিনি, ‘পথের পাঁচালী’ ছবিটা এখন করলে কালারেই করতাম।’
নন্দনে আরও কিছু কথা হয়েছিল। ‘বিখ্যাত বিজ্ঞাপন কোম্পানির আর্ট-ডিরেক্টর আপনি, অমন মহামূল্যবান চাকরিটা ছেড়ে দিলেন কেন?’ সত্যজিৎ বললেন, ‘আমার দুঃখ, বিজ্ঞাপন লাইনের অনেকের দুঃখ, বিজ্ঞাপনে ‘অ্যাননিমাস’ স্রষ্টার নাম থাকে না। কিন্তু তারিফ না থাকলে স্রষ্টার মন ভরে না। তাছাড়া অনেক ভাল ভাল কাজ পার্টির অ-দূরদর্শিতায় শুরুতেই রিজেক্ট হয়ে যায়, এটা মোটেই ভাল কথা নয়। চলচ্চিত্রে কিন্তু স্রষ্টা এবং দর্শকের মধ্যে কেউ দাঁড়িয়ে থাকে না, মিথ্যে তৈরির হাজার অসুবিধার মধ্যে মস্ত সুবিধে এটা।’
এসবের আগেও যা ঘটেছে, তা জানতে চান কেউ কেউ। ‘সীমাবদ্ধ’র যোগাযোগ কীভাবে হল? না, আমি তেমন কিছু চেষ্টা করিনি। ডানলপে কাজ করতাম। আমাদের বিভাগীয় প্রধান রামতনু লাহিড়ীর নাতি সনৎকুমার লাহিড়ী ছিলেন মানিকবাবুর বিশেষ অনুরাগী ও শাঁটুলবাবুর নিকট বন্ধু। আমি প্রতি বছর বাৎসরিক ছুটিটা নিয়ে পুজো সংখ্যার লেখাটা লিখে ফেলতাম। তারপর কাজে যোগ দিয়ে আরও কয়েকটা দিন লেগে যেত প্রুফ সংশোধন করতে। সনৎ লাহিড়ী বলতেন, ‘ডেলিভারি কেস, প্রি-নেটাল ও পোস্ট-নেটাল লিভ অবশ্যই দরকার।’
‘সীমাবদ্ধ’ এইভাবেই বেরিয়েছে। তারপর একদিন সত্যজিৎ রায়ের ফোন, ‘মণিশংকর রায়ের সঙ্গে কথা বলছি?’ বললুম, ‘আমি রায় নই, মুখার্জি।’ ওপার থেকে ভারী গলায় চলচ্চিত্রের অধীশ্বর জানালেন, ‘শারদীয় সংখ্যায় আপনার ‘সীমাবদ্ধ’টা আমার বেশ ভাল লেগেছে, কাউকে এখন কিছু বলবেন না।’ সেই হল যোগাযোগের শুরু। শেষপর্যন্ত ওঁর প্রযোজকের সঙ্গে দেখা হল। অত বড় পরিচালক, কোনওরকম দরদাম হয়নি, চুক্তিপত্রে নজরও দিইনি।
সেই থেকেই আলাপ। বাড়িতে ডেকে পাঠাতেন মাঝে মাঝে। সত্যি কথা বলতে কী, চিত্রনাট্য নিয়ে কোনও কথাই হয়নি, আমিও জানতে চাইনি। তবে মাঝে মাঝে সত্যজিৎ প্রশ্ন করতেন, ফ্যান কোম্পানি সম্বন্ধে, কারা কারা এইসব তৈরি করে, কী কী গোলমাল হয়, ইত্যাদি। একবার জিজ্ঞেস করলেন, ‘এত জায়গা থাকতে পাটনার দিকে নজর গেল কী করে?’ বললাম, ‘রেলে কাজ উপলক্ষে প্রায়ই এক সময় পাটনায় যেতাম, থাকতাম দানাপুরে।’
‘সীমাবদ্ধ’র শুটিং-এ গিয়েছি বলে মনে পড়ে না। তবে মাঝে মাঝে বিশপ লেফ্রয় রোডের বাড়িতে নানা গল্প হত। দেখতাম কলিংবেল বাজালে তিনি নিজেই দরজা খুলে দিয়ে বসতে বলতেন। ওঁর ইঙ্গিতে আর একজন চা নিয়ে আসত, তার সঙ্গে সর্বদা ‘টা’ও থাকত। প্রায়ই বাংলার সাহিত্য ভাণ্ডার ও মিষ্টান্ন ভাণ্ডার নিয়ে সিরিয়াস আলোচনা হত। একবার জানালেন, তাঁর মিষ্টান্ন আবিষ্কারের কথা— প্রাচীন মণ্ডার সত্যজিৎ সংস্করণ ডায়ামণ্ডা, এই মিষ্টান্নের ছাঁচ সম্পর্কেও গবেষণা। একদিন টেলিফোনে আর্জেন্ট মেসেজ— ‘ডায়ামণ্ডা’ এসে গিয়েছে, তবে দু’দিনের মধ্যে না এলে স্টক থাকবে না। তা বলে সত্যজিৎ রায় অন্য খাবার খান না এমন মোটেই নয়। ঢাকা থেকে এক প্রকাশক জ্যান্ত মাছ টিনে করে নিয়ে এসে একবার তাঁর মন জয় করার চেষ্টা চালিয়েছিল বলে শুনেছি।
সত্যজিৎ রায়ের পার্ক স্ট্রিট রেস্তোঁরা-প্রীতির কথা ‘স্কাইরুম’ মালিকের মুখে শুনেছি এবং প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে তাঁকে ভেটকি-মেওনিজ আস্বাদন করতেও দেখেছি। ওজন ঠিক রেখেও যে ভোজন সম্ভব তার জ্বলন্ত নিদর্শন আমাদের সত্যজিৎ। তিনি ছবি এঁকেছেন, বিজ্ঞাপন তৈরি করেছেন, চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন, ডায়ামণ্ডা ডিজাইন করেছেন, বেস্টসেলার লিখেছেন, নন্দনের নাম দিয়েছেন— কী না করেছেন আমাদের জন্যে! বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত কার লেখা না সত্যজিৎ চলচ্চিত্রায়িত করেছেন! রবিশঙ্করকে দিয়ে সুর দিয়েছেন, অ্যাটেনবরোকে দিয়ে অভিনয় করিয়েছেন। তিনি স্বীকার করতেন, সিনেমা এখনও কম্পোজিট আর্ট, স্বনির্ভর আর্টের স্বীকৃতি এল বলে। কেউ কেউ চিন্তা বা দুশ্চিন্তা করত যে, পারফেকশনের সন্ধানে ক্রমশ তিনি ক্যামেরা চালান, লাইটিং ঠিক করেন, গল্প লেখেন, চিত্রনাট্য তৈরি করেন, মিউজিক করেন, পোস্টার আঁকেন, কেবল বসুশ্রী সিনেমার কাউন্টারে বসে টিকিট বিক্রি ছাড়া আর কোনও কাজ তাঁর বাকি নেই। এই মন্তব্য আমারও কানে এসেছে, কিন্তু স্বীকার করেছি, যাতেই হাত দেন তা-ই তো সোনা হয়ে যায়! সেকালের এক সুরসিক সম্পাদক কিন্তু ছাড়বার পাত্র নন, তাঁকে প্রশ্ন করা হল, ‘টাকা থাকলে কী হয়?’ তাঁর তাৎক্ষণিক সরস উত্তর, ‘ল্যাম্পপোস্টের পোস্টারে সত্যজিৎ রায়ের ওপরে আর ডি বনশলের নাম ছাপা হয়।’ পরিচালক সত্যজিৎ কেন প্রযোজক হলেন না, সে নিয়েও গবেষণা হয়েছে হিংসুটে মহলে। কিন্তু তিনি নিচে নামেননি, ইন্দিরা গান্ধী কেন একজন ইন্ডিয়ানকে ‘গান্ধী’ ছবি করার দায়িত্ব না দিয়ে ইংরেজ অ্যাটেনবরোর পিছনে টাকা ঢাললেন, সেই অভিযোগের অংশীদার তিনি হননি।
আরও কত কথা শোনা যায়, দশপ্রহরণধারিণী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক সম্বন্ধে। আমার ‘জন্য অরণ্য’-এর একটি দৃশ্য নিয়ে ইমার্জেন্সির সময় আশঙ্কার কারণ ঘটেছিল। পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন পুলিশমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশংকর রায় ছবিটার একটা প্রিন্ট দিল্লি পাঠিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর নির্জন-নিভৃত দর্শনের জন্য। কিন্তু তিনি ছবি দেখেও কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানাননি। আমরা হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছি। পরে একসময়ে স্বরাষ্ট্র দফতরের এক উচ্চপদস্থ অফিসারের কাছে শুনেছি, এক বার পদ্মশ্রী-পদ্মভূষণ ইত্যাদির তালিকা নিয়ে তিনি গিয়েছিলেন মিসেস গান্ধীর কাছে। তালিকায় চোখ বুলিয়ে নিয়ে ঝর্না কলম তুলে নিয়ে একটিমাত্র নতুন নাম বসাতে বসাতে অস্ফুট স্বরে তিনি নাকি বলেছিলেন, ‘হোয়্যার ইজ রে?’
সত্যজিৎ গল্পের শেষ নেই। সুচিত্রা সেনকে তিনি কেন নির্বাচন করলেন না? উত্তমকুমার কেন এক-আধবারেই থেমে গেলেন? অপু কেন বার বার ফিরে এল? বক্স-অফিসকে তোয়াক্কা না করে যাত্রা শুরু করে কেমন করে তিনি স্মরণীয় বক্স-অফিস হিট ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ হাজির করলেন? আরও অসংখ্য অনুসন্ধান অসমাপ্ত রয়েছে। সেসব বলতে গেলে একটা মহাভারত হয়ে যায়। কিন্তু কম কথায় বেশি বলার অপ্রতিদ্বন্দ্বী শিল্পী আমাদের সবার সম্পদ ও সম্পত্তি এই সত্যজিৎ রায়। তাঁর শতবর্ষে আমাদের প্রণতি নত মস্তকে। এসব নিয়ে মাথা ঘামাবে মানুষ তাঁর দ্বিশতবর্ষ উদযাপনের সময়। তাঁদের এখনও জন্ম হয়নি, কিন্তু তাঁরা অবশ্যই পরবর্তী মূল্যায়নের সুযোগটা পাবেন।