ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2024

 
 

ডাকবাংলায় আপনাকে স্বাগত

 
 
  • সামথিং সামথিং: পর্ব ৬


    চন্দ্রিল ভট্টাচার্য (May 8, 2021)
     
    মৃত্যুর চেয়ে দড়

    ভারতে এখন কোভিডের প্লাবন আছড়ে পড়েছে, লোকে দু’তিনদিনের নোটিসে মরে যাচ্ছে, এমন কোনও পরিবার নেই যেখানে চেনাজানার মধ্যে কেউ আক্রান্ত নন, বাংলায় অন্তত এই অতিমারীর বাড়ের জন্য দায়ী করা হচ্ছে ভোটের মিছিল-মিটিংকে। সকলেই নেতাদের দোষ দিতে তীব্র ব্যস্ত, তাঁরা ভোট পাওয়ার লোভে ইচ্ছে করে মানুষকে বিপন্ন করেছেন, ক্যাম্পেন চালিয়ে গেছেন, জটলা জোগাড় করেছেন। রাজনীতির লোকেরা সুবিধেবাদী ও নীতিহীন, তাঁরা উপচিকীর্ষার আড়ালে ফিকির সাধেন, মানুষকে ব্যবহার করেন ছাই-ছাই গিনিপিগের প্রায়— এ থিওরি আজ স্বতঃসিদ্ধ। কিন্তু আম-মানুষ তো ন্যাকা ও নিড়বিড়ে শিশু নয়, যে, বাবা কোলে করে নিয়ে গেছে বলে মতামতহীন পুঁটুলির মতো হেলিকপ্টার দেখতে চলে গেছে। সে তো জানত কোভিড হয়, হবে, হয়েছিল। স্পষ্টতই তার তিড়বিড়ে ইচ্ছে জেগেছে সমাবেশে যেতে, বক্তৃতা শুনতে, চায়ের দোকানে তক্ক করতে, হাটেঘাটে মতামত ওগরাতে। কারণ সে মনে করেছে, জীবনের চেয়ে গণতন্ত্র দামি। সে ভেবেছে, কিছু কর্তব্য আছে, যা তার সরু আত্মরক্ষার ভাবনা অপেক্ষা শ্রেয়। ঠিকই, তাকে উসকেছেন নেতানেত্রীর দল, বা অন্তত কর্তৃপক্ষ থেকে বলা হয়নি এ কম্ম বিপজ্জনক ও সুতরাং সোজাপ্রজা ভেবে নিয়েছে লিচ্চয় সকলই সেফ নইলে হুজুর কেন প্রশ্রয় দিচ্ছেন বিন-ভ্রুক্ষেপ, কিন্তু শেষ অবধি তো এ নাগরিকের নিজ সিদ্ধান্ত। ক’জন আর পার্টির ক্যাডার, ক’জন নারকোল-দড়িতে বদ্ধ? সিপিএম সভা ডাকলে অবধি ব্রিগেড গিজগিজ করেছে। মানে, মানুষ ভিড় ভালবাসে, শামিল হতে ভালবাসে হইহই হিস্টিরিয়ায়, তার হৃদয় নিশপিশ করে ভোটের সময় তরজা-স্নান করতে, এবং এ প্রক্রিয়ায় ডুবকি খেতে খেতে থোড়াই কেয়ার করে সে নিজে বাঁচল না মোলো। 

    কুম্ভমেলা অনুষ্ঠিত হয় ১২ বছর অন্তর, তাই একটা মিস করলে এক যুগ অপেক্ষা, তদ্দিনে হয়তো পুণ্য সঞ্চয়ের সুযোগ গনগনাগন। এ সরকার উগ্র ধর্মবাজ, দৃপ্ত মূর্খ, অবিজ্ঞানের কান্ডারি, আর মনে করে ভগবানের কাঁধে চড়ে ভোট চাইলেই তা লোপ্পা ক্যাচের ন্যায় টুপুটাপ, কিন্তু এটুকু মানতে হবে, সে তো ‘ওগো আসুন প্লিজ চান করুন’ হেঁকে সত্তর লাখ লোক জোগাড় করে আনেনি। ঠিক, মেলাটা নিষিদ্ধ করে দিলে গোল মিটে যেত (পুণ্যার্থীরা অবশ্য ভাবী ভোটের সুইচে ছেড়ে কথা বলতেন না), কিন্তু মনে রাখতে হবে, সরকার ব্যান করলেই লোকের জ্ঞানোদয় হয় না। আমরা এই তর্কগুলোয় ধরেই নিচ্ছি, সরকারের কাজ দুষ্টু অবাধ্য ছেলের হাতের সামনে থেকে ক্রমাগত মিছরি ও ল্যাবেঞ্চুস লুকিয়ে ফেলা, নইলে কৃমি হবে। এখানে সরকারকে অভিভাবক, এবং জনগণকে নাদান লালঝরা হামাগুড়ি-ম্যান ধরা হচ্ছে। সে ধরাধরি কি গণতন্ত্রে শোভা পায়? এমনি সময়ে আমরা নাগাড়ে লিখব-বলব, সরকারে যাঁরা আছেন তাঁরা জনগণের আজ্ঞাবহ ভৃত্যমাত্র, কক্ষনও নিয়ন্ত্রক নন। নিবন্ধে দাপুটে নিদান দেব, সরকার জনগণকে বোঝাতে পারে, কিন্তু কখনওই  ঘাড়ে ধরে কিছু করানো বা না-করানোর অধিকার তার নেই। আর যেই না লোকে পরোয়াহীন দঙ্গল যূথ ঝাঁক পাকিয়ে দায়িত্ব চুলোয় দিয়ে হুড়হুড়িয়ে নিজের ও অন্যের অসুখ ডেকে আনবে, অমনি আমরা বলব, সাধারণ মানুষ কি কিছু বোঝে গা, সে বাচ্চা বুড়ো অজ্ঞান মূঢ়, ওলেবাবালে মুখ্যুদুঃখী, সরকারেরই তো দায়িত্ব তাকে কানে ধরে বাড়িতে বসিয়ে রাখা, ছড়ি মারতে মারতে মেলাপ্রাঙ্গণ হতে বহিষ্কার? এত লক্ষ লোক বুঝতে পারল না, কোভিড আছে এবং ধারেকাছেই, সে সংহার করতে পারে কাতারে কাতারে? নিশ্চয় পেরেছে, কিন্তু তারা ভেবেছে, ঈশ্বর সহায় হলে রোগ হয় না, অথবা, যায় যদি যাক প্রাণ, ভজতে হবে ভগবান। অর্থাৎ, জীবনের চেয়ে ধর্ম বড়।

    হ্যাঁ, অনেকেই মনে করেছিল, বচ্ছর পোয়াতেই কোভিড অটোমেটিক গত হবে, প্রতিটি ভাইরাস মনুষ্য-নির্মিত ক্যালেন্ডার অনুযায়ী হাঁটে-চলে, যেই না ২০২০ চলে গেল অমনি করোনাভাইরাসও আগে-থেকে-কেটে-রাখা টিকিট অনুযায়ী লটবহর গুছিয়ে রানিং-এ ফেরত-যানের ফুটবোর্ডে। এই পঞ্জিকানুগত রোগের বিশ্বাস এত বিস্তৃত, সকলেই জানুয়ারি থেকে মহানন্দে ইতিউতি ঘুরতে বেরিয়ে পড়েছিলেন। হাঁচিকাশির মতো আশাবাদ ছিটকোচ্ছিল: এই তো সিনেমা-হল খুলে যাচ্ছে, সেই তো সার্কাস রমরমাবে। কিন্তু তারপর সেকেন্ড ওয়েভ এল, বিশ্বময় ভারত সম্পর্কে ছিছিক্কার, টিভি চ্যানেলে পর্যন্ত (যা এদেশের মানুষের চিন্তা ও কর্মের প্রকৃত নিয়ন্তা) ডাক্তারেরা এসে ডাঁয়েবাঁয়ে পলিটিক্স-পান্ডাদের অভিসম্পাত। মৃত্যুর গ্রাফ উঁচুতে উঠল, হাসপাতালে বেড অকুলান হল, অক্সিজেন সিলিন্ডারের আকাল পড়ল। আর তারপর বাংলায় ভোটের ফল বেরলো। সকাল থেকে যেই দেখা গেল একটি নির্দিষ্ট দল জিতছে, অমনি সে-দলের সমর্থকেরা রাস্তায় নেমে প্রাণো ভরিয়ে মাস্ক সরিয়ে, ঠেসাঠেসি ঘেঁষাঘেঁষি উদ্দাম ভাসান-নেত্য স্টার্ট, সঙ্গে ‘খেলা হবে’ ডিজে-মিক্স। বাজি রেখে বলা যায়, বিরোধী দলটি জিতলে, তার সমর্থকরাও সমান উল্লাস ফুলিয়ে অঙ্গ দুলিয়ে, মাস্ক চিবুকে ঝুলিয়ে মোচ্ছব মানাতেন। মানে, সকল সতর্কীকরণ শুনে পড়ে হেদিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে ফরওয়ার্ড করে, সরকারকে পার্টিকে লোকাল কমিটিকে ‘কেন ঠিক সময়ে ওয়ার্নিং দাওনি কঠোর হওনি অপদাত্থ হে?’ চিল্লে সহস্র দুয়ো দিয়ে, গাল পেড়ে, যে-মুহূর্তে আনন্দ-সুযোগ পাওয়া গেল, অমনি জনতা জনার্দন দনাদ্দন কোভিড-বিধি লাথিয়ে ফাঁক করে, প্রাক-করোনা মোড-এ ফিরে গেলেন। এবার তো আর পার্টি থেকে রিকশা ভাড়া করে মাইকে প্রচার হয়নি, ভাইয়ো এবং বহনোঁ আসুন সবুজ সমিতির উঠোনে আহ্লাদে হাল্লাক হই? শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে শতস্ফূর্তি করবেন বলে নিজেরা জলে নেমেছেন। অতঃপর বেণী ভিজলে কার দোষ? 

    কিন্তু পেল্লায় প্রশ্ন: এই কাণ্ডাকাণ্ড কি মানুষ-জাতটা সম্পর্কে মন্দ বাক্য বলে, না তার মহত্ত্বই প্রকাশ করে? এই যে একটা প্রজাতির এতগুলো সদস্য নিজের জীবনের চেয়ে কোনও এক ধারণাকে অধিক মূল্য দেয়, এ প্রবণতা কি সহস্র স্যালুটের যোগ্য নয়? একটা লোক যখন ভাবছে, আমার মৃত্যুর সম্ভাবনা আছে ঠিকই, কিন্তু তা অতিক্রম করেই আমায় প্রিয় রাজনীতির দলটির প্রতি সমর্থন জানাতে হবে, বা আমার প্রিয় কবির প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তাঁর শোকমিছিলে হাঁটতে হবে, বা আমার পূজ্য দেবতাকে জানাতে হবে আমার সমর্পণ ও প্রণতি, তখনই কি সে বিশিষ্ট হয়ে উঠছে না? একটা আইডিয়া, একটা বিশুদ্ধ অমূর্ত ভাবনা, যখন লোকের কাছে, এতগুলো লোকের কাছে, নিজের তড়পাতে তড়পাতে মরে যাওয়ার আশঙ্কা পেরিয়ে দামি হয়ে উঠছে, তা কি তাকে অন্য সব জীবের তুলনায় ভিন্ন আলোয় উদ্ভাসিত করছে না? মনে রাখতে হবে, ভগবান ভজলে মানুষ হাতে-গরম কোনও ফল পায় না, বড়জোর ভাবতে পারে, পরলোকে মসলা দোসার সম্ভাবনা সামান্য বাড়ল। গণতন্ত্র বলবান না হলে, ভোটে অপছন্দের দল জিতে গেলে মানুষ তখুনি মরে যায় না, প্রত্যক্ষ সর্বনাশ অনেক সময়ই ঘাড়ে এসে পড়ে না। কবি মারা গেলে তিনি তো আর দেখতে পান না কে শবানুগমন করল, ফলে তাঁর কাছে নম্বর বাগানোর প্রশ্ন ওঠে না, অন্যের কাছেও খুব একটা নয়, কারণ ওই ভিড়ে কে-ই বা কাকে লক্ষ করছে? কিন্তু মানুষ মনে করে, যে-ঈশ্বর আমাকে সৃষ্টি করেছেন ও লালন করেছেন, তাঁকে ভজনা করতে হবেই, তাতে মরণ হলে, হবে। যে দলের আদর্শকে আমি সমর্থন করি, তা যাতে জেতে, ঈপ্সিত সমাজ যাতে আসে, সেজন্য আমায় চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে, তা করতে গিয়ে মরণ হলে, হবে। যে মানুষটিকে আমি সর্বান্তঃকরণে সম্মান করি, তাঁর নিষ্প্রাণ দেহটির সঙ্গে হাঁটাই হবে তাঁর অবদানের প্রতি মর্যাদা প্রদান, আর তা করতে গিয়ে মরলে মরব, যাঃ। এই ভাবনাগুলোকে কেউ ব্যঙ্গ করতেই পারে, বলতেই পারে ভগবান নেই, গণতন্ত্র এক ধাস্টামো, আর কবির প্রতি প্রকৃত সম্মানজ্ঞাপন তাঁর কাব্যের প্রতি মনোযোগে, নিষ্প্রাণ দেহের প্রতি নয়। কিন্তু যা লক্ষ করার, এই প্রতিটি ক্ষেত্রে, মানুষ তার ভাবনার কাছে, তার মতানুযায়ী ন্যায্যতার কাছে, নিজের দেহকে (অর্থাৎ অস্তিত্বকে) বলি দিচ্ছে, বা অন্তত, বাজি রাখছে। সে ভাবছে, প্রাণই আমার সর্বস্ব, কিন্তু তা হারানোরও ঝুঁকি নেওয়া যায়, নিতে হবে, কারণ প্রাণের চেয়েও বড় শ্রেয়তার দাবি। ঔচিত্যের সমীকরণ যখন গভীরতম আঁতের ভয়কে অতিক্রম করতে প্রণোদিত করে, তখনই কি মানুষ মারের সাগর পাড়ি দেয় না? বোর্হেস বলেছিলেন, মানুষ ছাড়া প্রতিটি প্রাণীই অমর, কারণ তাদের মৃত্যুর ধারণা নেই। মৃত্যুর ধারণা থাকা সত্ত্বেও যে প্রাণী বারেবারে তাকে সরিয়ে রেখে সমীচীনতার দিকে নিজেকে নিক্ষেপ করে, সে ডবল-অমর। 

    অবশ্যই কেউ হেসে কুটিপাটি হয়ে বলতে পারে, ভোটের নেত্য বা কুম্ভের পুণ্য-কালেকশন আদৌ কোনও মহতী দর্শনজাত নয়, তা সেরেফ উদ্দাম হুজুগ ও কালব্যাপী অভ্যাসের কম্বো-মেশিনে মগজ-দান, প্রথা-সড়কে গড্ডল-সঞ্চার। মানুষ চুপচাপ একটা ঘরে চেয়ারে থিতু হয়ে বসে থাকতে পারে না, এ-ই তার দুঃখের মূল: পাসকাল বলেছিলেন। লোকে অতিমারীর ঠেলায় বহুদ্দিন হাত-পা পেটের মধ্যে ঠুসে বসেছিল, তারপর ভোটের বা ধর্মের দিব্যি খেয়ে, কিংবা সেলেব্রিটির প্রয়াণের অজুহাত পেয়ে, কাছা খুলে বেরিয়ে পড়েছে, কারণ তার অন্ত্র থেকে আত্মা অবধি গোটা যন্ত্র চুলবুলোচ্ছিল, হাজার বচ্ছরের হাঁটাহাঁটির প্র্যাকটিস এবং অপরিচিতের ঘাড়ে হাত রেখে ‘কী দিনকাল পড়ল মহায় ছ্যাছ্যা’-র নোলা সে সংবরণ করবে কী উপায়ে? এ ন্যালাখ্যাপা আতিশয্যে একুনে প্রতিভাত: সংযম ও বুদ্ধির অভাব, নিজের ও অন্যের প্রতি অযত্ন। যা দায়িত্বজ্ঞানহীন, তা হতে পারে যাথার্থ্যে লীন? একথা ঠিক, সভ্যতা অ্যাদ্দিন জানত: সারভাইভাল, বা বেঁচে থাকার ছটফটানিই প্রবৃত্তি-পিরামিডের অ্যাক্কেরে তুঙ্গে ঝকঝক। আর এই উৎকট বিনাশ-স্রোত চলেছে যখন সারা পৃথিবী জুড়ে, আবিষ্কৃত হল আশ্চর্য তত্ত্ব— মানুষের আসলে মৃত্যুভয় নেই। বা আছে, কিন্তু তা মোটেই সর্বাধিক আতঙ্ক নয়। মানুষের সর্বোচ্চ ভয়— তার অভ্যাসবিশ্ব তছনছিয়ে যাওয়া। খাট থেকে পা নামানোমাত্র পোষা চটিজোড়া না পেলে তার পৃথিবী উল্টে বীথিপৃ।

    নিন্দুকের এই লাইন অফ আপত্তি যদি-বা ঠিক ধরা হয়, এ তো মানতে হবে, বদ্ধ ঘরে ওটিটি-মশারি ছিঁড়ে সমষ্টির স্রোতে বেরিয়ে পড়ার মধ্যে— সে অভ্যাসের নেশায় বা নেশার অভ্যাসেই হোক না— এই থিম বাজছে: যে-কোনও প্রকারে প্রাণধারণই মানুষের সবচেয়েতম কাজ নয়। এই ‘ধুত্তোর ছাড় তো!’ বেপরোয়াপনাকে যদি অবিমৃশ্যকারিতাই বলি, তবু তা তো নিজ শরীরের লোপকে প্রধান পরাজয় ধরছে না, ধরছে জীবন-মানের অবলুপ্তিকে। হিন্দি ছবির গান বলে: একশো বছরের প্রেমহীন জীবনের চেয়ে প্রেমের দু-চারটি দিনও ভাল। সেই সুরেই, লোকে ভাবছে, সারবান জীবন সংক্ষিপ্ত হলে ক্ষতি নেই। আর, জীবন লম্বা কিন্তু অর্থহীন হলে, সেই ক্ষিপ্ত জীবন যাপন করে লাভ নেই। বাঁচব যদি, ভোটোৎসব নিংড়ে পালন করে, পুণ্যপ্রয়াসে পূর্ণ নিমজ্জনান্তে, যেমন-ছিল-তেমন বাঁচব। আনন্দামৃত ঠেলে রেখে, ‘শুধু শ্বাস নিচ্ছি মানেই বেঁচে আছি’ পানসে মোটোখান গেরোয় পড়ে কণ্ঠ-লকেট করব না। এ কম কী? উচ্চ আদর্শকে যদি ধাত মেজাজ স্বভাবপ্রেরণা, দস্তুর রীতি ধারা দিয়ে স্থানপূরণও করি, তাতে তো প্রাণবাদী মানবের উত্তোলিত কলার নতমুখী হয় না। মানুষ ডবল না হোক, পৌনে অমর, খচিত রইল!

    ছবি এঁকেছেন সায়ন চক্রবর্তী
     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     




 

 

Rate us on Google Rate us on FaceBook