ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2025

 
 
  • কায়ান্তর

    শর্মিষ্ঠা মাইতি, রাজদীপ পাল (February 20, 2021)
     

    কায়ান্তরের কথা 

    বহুরূপী আলি, তার দুই সন্তান আসিয়া এবং আসলাম— তিনজনের এই পরিবার ‘কায়ান্তর’-এর মুখ্য চরিত্র। পটভূমিকায় গ্রামবাংলা, একটি লুপ্তপ্রায় লোকশিল্প এবং মৌলবাদের ছায়া।

    ২০১৯ কল্পনির্ঝর আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসব-এ ‘বিশেষ জুরি উল্লেখ’ পুরস্কারপ্রাপ্ত এই ছবিটি তুলে ধরে দুই সহোদরের ভালবাসা ও ঈর্ষার এক গল্প, যার মূলে আছে লিঙ্গবৈষম্য এবং এই ২০২১-এও নারী ও পুরুষের সমাজনির্ধারিত ভূমিকা। গল্পে, মুখে-গায়ে কালো রং লেপে মা কালী সেজে ভিক্ষা চেয়ে বেড়ানো বহুরূপী আলি, মুসলমান হয়েও হিন্দু দেবীর বেশ আপন করে নেয়। চুপ করে মেনে নেয় স্থানীয় মসজিদের ইমাম হাজি সাহেবের তিরস্কার। কিন্তু পুত্র আসলামের বদলে কন্যা আসিয়ার এই পেশায় নামা কখনওই মেনে নিতে পারে না আপাত মুক্তমনা এই লোকশিল্পী। অন্যদিকে, কালী সাজা আসলামকে হেনস্থা করে হিন্দু মৌলবাদীদের মিছিল।

    ‘কায়ান্তর’-এর পরিচালক দু’জন। রাজদীপ পাল এবং শর্মিষ্ঠা মাইতি ২০১৪-এ জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন তাঁদের ডকুমেন্টারি ‘অ্যাট দ্য ক্রসরোডস: নন্দন বাগচী লাইফ অ্যান্ড লিভিং’-এর জন্য। তাঁরা ভাই এবং বোনের সম্পর্কের উপর একটি ছবি বানাতে চেয়েছিলেন। রাজদীপ জানান, ‘বাংলার গ্রামের এক বহুরূপীর গল্প ‘কায়ান্তর’, কিন্তু আমরা প্রত্যেকেই একটি বহুরূপীর জীবন যাপন করি, ‘কায়ান্তর’-এর বিষয়বস্তুর আবেদন তাই বিশ্বজনীন।’ শর্মিষ্ঠা বলেন, ‘ভারতবর্ষে সহোদরদের উপর বানানো অধিকাংশ ছবিতে পাওয়া যায় দুই ভাই বা দুই বোনের গল্প; ভাই এবং বোনের উপরে তৈরি ছবি তুলনায় বিরল। ‘কায়ান্তর’-এ আসিয়া এবং আসলাম একে অপরের প্রতিবিম্ব। আমাদের সামাজিক ধারণায়, ভাই এবং বোনের সম্পর্ক পবিত্র গণ্য হয়। কিন্তু তা অনেকটাই, একটি মাতৃতান্ত্রিক পরিপ্রেক্ষিতে। মায়ের অনুপস্থিতিতে এই ধারণা বদলে যেতে পারে। অনূভুতি যে অনেক সময়ই সামাজিক শালীনতার খাঁচায় বন্দি, এবং আদপে মানুষ যে বন্য এবং আদিম— সেই ধারণারই মুখোমুখি হয় ‘কায়ান্তর’-এর দুই সহোদর।’ আমরা ছবিতে খেয়াল করি, আসিয়া তার জীবনের দুই পুরুষকে আগলে রাখে সমস্ত মনপ্রাণ দিয়ে। আবার সে-ই ঈর্ষায় জ্বলে ওঠে, ভাই আসলামের প্রেমিকার কথায়।

    সমাজের প্রান্তিক, ধূসর চরিত্রদের কাহিনি ‘কায়ান্তর’ জুড়ে রয়েছে বাংলা চলচ্চিত্রের প্রবাদপ্রতিম কিছু ছবির দৃশ্য ও ফ্রেমের প্রায় হুবহু অনুসরণ (‘পথের পাঁচালী’, ‘সুবর্ণরেখা’, ‘উত্তরা’), যাকে বলা যায় কিছু উদ্ধৃতি, এবং তা অনেকাংশেই সার্থক। ছবিটির শুটিং লোকেশন— বিশেষ ভাবে আলি-আসিয়া-আসলাম’দের বাড়ি— মুর্শিদাবাদের প্রত্যন্ত একটি গ্রামের এক বৈষ্ণব সাধুর আশ্রম, যিনি জন্মসূত্রে মুসলমান। হিন্দু এবং মুসলমান পাড়ার মাঝের এই আশ্রমে গড়ে তোলা ‘কায়ান্তর’, ধর্ম নিয়ে হিংসার বিরুদ্ধে একটি খোলা চিঠি। কিন্তু ‘কায়ান্তর’-এর মূল বিষয় মুক্তি— যে মুক্তি পুরুষের না এলে, নারীর ক্ষেত্রেও অপ্রাসঙ্গিক।  

     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     



 

Rate us on Google Rate us on FaceBook