
বিনিদ্র: পর্ব ৪৬
‘গুরু আমার কথায় অবাক হয়ে গেল। সে যেন আমার কথায় নিজেকে খুঁজে পেল। আমি বললাম— আপনি কি বেশিদিন কাউকে ভালোবাসতে পারেন? আপনার যে সবাইকেই কিছুদিন পরে একঘেয়ে লাগে।’ মহাবলীপুরম্-এ গুরুর সান্নিধ্য।

‘গুরু আমার কথায় অবাক হয়ে গেল। সে যেন আমার কথায় নিজেকে খুঁজে পেল। আমি বললাম— আপনি কি বেশিদিন কাউকে ভালোবাসতে পারেন? আপনার যে সবাইকেই কিছুদিন পরে একঘেয়ে লাগে।’ মহাবলীপুরম্-এ গুরুর সান্নিধ্য।

‘এ হল টুকরো কথা, কাহিনি না, অগাধ বাস্তব/ একার গাইড বুক, ভ্রমণের, তাতেও ছাপার কত/ রয়ে গেছে ভুল/ সযতনে তাও পড়ো, শুনো তো আড়ালে নিয়ে/ একেলার এই কলরব/ ধিকি ধিকি ধিকি ধিকি, ছিটকে বেরোবে তবে/ বিবিধ মৃদুল’ নতুন কবিতা।

‘মহাবলীপুরম্’ নাম শোনা ছিল জায়গাটার। এককালে ছিল পহ্লবীদের একটা বিখ্যাত বন্দর। তারপর আছে লাইট-হাউস তারপর পক্ষীতীর্থ। আমরা দেশ-ভ্রমণ করতে আসিনি। একটা নিরিবিলি জায়গা শুধু খুঁজছিলাম, যেখানে দুজন মুখোমুখি বসে গল্প করা যায়। গল্প মানে সিনেমার গল্প।’ শহর ছেড়ে শান্তির খোঁজে।

‘গুরু উঠে নিজের ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ল, আর আমি আমার নিজের ঘরে। বিছানায় শুয়ে শুয়ে ভাবছিলাম কেন এ-মানুষটা এমন করে নিজের জীবনটা নষ্ট করে ফেলছে? কিসের অভিমানে? অভিমান না হয়ে যদি রাগ হয় তো কার ওপর রাগ?’ ঘুমহীন রাত।

‘বিয়ের পর প্রথম ছ-বছর পরিপূর্ণ সুখে কেটেছে। তারপর থেকে যে সেই অশান্তি শুরু হয়েছে তার যেন শেষ নেই। অশান্তির আগুনে জ্বলে পুড়ে বাঁচাটাই যেন নিয়ম হয়ে গেছে। ‘ গুরু আর গীতার জীবনের দুর্যোগ।

‘বাসের জানলায় দেখা দুজন লেবার/
একশো ফুট শূন্যে উঠে দে দোল দুলছিল/ সব দাগ তুলছিল তবু/ কাচে ছায়া লেপ্টে অধোগামী/ মুছে দিতে বলছ/ কিন্তু আহ্নিকে বার্ষিকে আজ প্রশ্ন করি আমি/ নিজেকে কি মুছে ফেলা যায়’ নতুন কবিতা।

‘বড়দিন ধুমধাম করে কেটে গেল, গির্জা আর আশ্রম ঘুড়ির কাগজের রঙিন শিকলি দিয়ে সাজানো হল, সুধীজনকে আপ্যায়ন করা হল গুড়ের পুলি আর পিঠা দিয়ে, জরি মুড়ে দেওয়া হল ক্রিসমাস ট্রি-কে মানে ঝাউগাছকে, শিশুরা পেল উপহার।’ বড়দিনের উদযাপন।

‘একদিন ছোটবেলায় অনেক সাধই তো ছিল। যেমন সাধ থাকে সকলের। একখানা বাড়ি, একখানা গাড়ি, আর একটা নিরিবিলি সংসার। অনেকেই তো তা পায় না। কিন্তু যে মষ্টিমেয় কজন তা পায়, তারাই কি সুখ পায়? যদি সুখ না পায় তো কেন পায় না?’ সুখ বড়, না শান্তি?

‘ছলনা ব্যাধের সঙ্গী। যেরকম রুমাল, তোমার।/ ফেলে কবে গেছ আর তারই সুগন্ধের জেরে আমি/ এ-শহরে বাসা নিই। আসলে শিকার হই তার…/ যে-নিজরহস্য নিয়ে আজও অরণ্যের অনুগামী।’ নতুন কবিতা।
‘স্কুলে গেলে পড়া বলতাম না ইচ্ছে করেই, কারণ পড়া পারলে ভাল ছেলে হয়ে যাব যে! ভাল ছেলে হওয়াটা তখন আমার কাছে কাপুরুষজনোচিত কাজ। ফলে প্রচুর বেত খেতে হত, তাছাড়া ছিল বেঞ্চের ওপর দাঁড়ানো বা নীলডাউন হয়ে থাকা। লাগাতার বেত খেয়ে আমার দু’হাত প্রতিদিন রক্তাভ হয়ে থাকত।’ স্কুলজীবনের স্মৃতি।

‘খ্রিস্টান মেয়েরা দিন-রাত এ-সময় হাত চালায়, তাদের হাতের ভেজা পিঠার মতোই ভক্তিরসে ফুলে উঠবে সকলের মন, এর কতটা ভক্তি আর কতটা আনন্দ কেউ তার তৌল করবে না। গির্জায় খড়ের কুঁড়েঘর গড়া হবে, তাতে মাটির পুত্তলি যিশু-মেরি-যোসেফ আর ব্যগ্র গরু-ভেড়ার দল, যিশুর জন্মস্থান সেই গোশালঘর যত্ন করে আলো দিয়ে সাজানো হবে।’ ক্রিসমাসের প্রস্তুতি।

‘গুরু আর এক মুহুর্ত দাঁড়াল না। টলতে টলতে আবার গাড়ির স্টিয়ারিংটা গিয়ে ধরল। তারপর গিয়ারের একটা ঘড়-ঘড় শব্দ করে গাড়িটা স্টার্ট দিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেল। তারপর পুরো দমে চলতে লাগল ‘চৌধবী-কা-চাঁদ’ ছবি। লখনৌর মুসলিম সমাজের গল্প। সাদিক সাহেব পুরো দমে ছবি চালিয়ে যাচ্ছে, আর গুরু তখন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ওয়াহিদাকে নিয়ে।’ ঘুণ ধরা জীবন।
This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.
©2025 Copyright: Vision3 Global Pvt. Ltd.