গল্প / কবিতা

বিমল মিত্র

বিনিদ্র: পর্ব ৪২

‘একদিন ছোটবেলায় অনেক সাধই তো ছিল। যেমন সাধ থাকে সকলের। একখানা বাড়ি, একখানা গাড়ি, আর একটা নিরিবিলি সংসার। অনেকেই তো তা পায় না। কিন্তু যে মষ্টিমেয় কজন তা পায়, তারাই কি সুখ পায়? যদি সুখ না পায় তো কেন পায় না?’ সুখ বড়, না শান্তি?

শ্রীজাত

শুধু কবিতার জন্য: পর্ব ১০

‘ছলনা ব্যাধের সঙ্গী। যেরকম রুমাল, তোমার।/ ফেলে কবে গেছ আর তারই সুগন্ধের জেরে আমি/ এ-শহরে বাসা নিই। আসলে শিকার হই তার…/ যে-নিজরহস্য নিয়ে আজও অরণ্যের অনুগামী।’ নতুন কবিতা।

নীল কেটলি: পর্ব ১০

‘স্কুলে গেলে পড়া বলতাম না ইচ্ছে করেই, কারণ পড়া পারলে ভাল ছেলে হয়ে যাব যে! ভাল ছেলে হওয়াটা তখন আমার কাছে কাপুরুষজনোচিত কাজ। ফলে প্রচুর বেত খেতে হত, তাছাড়া ছিল বেঞ্চের ওপর দাঁড়ানো বা নীলডাউন হয়ে থাকা। লাগাতার বেত খেয়ে আমার দু’হাত প্রতিদিন রক্তাভ হয়ে থাকত।’ স্কুলজীবনের স্মৃতি।

সাগুফতা শারমীন তানিয়া

ভবদীয়: পর্ব ৪

‘খ্রিস্টান মেয়েরা দিন-রাত এ-সময় হাত চালায়, তাদের হাতের ভেজা পিঠার মতোই ভক্তিরসে ফুলে উঠবে সকলের মন, এর কতটা ভক্তি আর কতটা আনন্দ কেউ তার তৌল করবে না। গির্জায় খড়ের কুঁড়েঘর গড়া হবে, তাতে মাটির পুত্তলি যিশু-মেরি-যোসেফ আর ব্যগ্র গরু-ভেড়ার দল, যিশুর জন্মস্থান সেই গোশালঘর যত্ন করে আলো দিয়ে সাজানো হবে।’ ক্রিসমাসের প্রস্তুতি।

বিমল মিত্র

বিনিদ্র: পর্ব ৪১

‘গুরু আর এক মুহুর্ত দাঁড়াল না। টলতে টলতে আবার গাড়ির স্টিয়ারিংটা গিয়ে ধরল। তারপর গিয়ারের একটা ঘড়-ঘড় শব্দ করে গাড়িটা স্টার্ট দিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেল। তারপর পুরো দমে চলতে লাগল ‘চৌধবী-কা-চাঁদ’ ছবি। লখনৌর মুসলিম সমাজের গল্প। সাদিক সাহেব পুরো দমে ছবি চালিয়ে যাচ্ছে, আর গুরু তখন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ওয়াহিদাকে নিয়ে।’ ঘুণ ধরা জীবন।

অমিতাভ ঘোষ (Amitav Ghosh)

‘বন্দুক দ্বীপ’: নির্বাচিত অংশ

‘ক্যাপ্টেন ইলিয়াস মনস্থির করে একটি মাত্র যে জায়গা আছে যেখানে মনসা দেবীর হাত থেকে নিশ্চিত রক্ষা পাওয়া যাবে তারা সেখানে যাবে, এবং সেই জায়গার নাম বন্দুক দ্বীপ। রফি বলল এককেন্দ্রিক বৃত্তদুটি এই দ্বীপেরই প্রতীক, কারণ জায়গাটা আসলে দ্বীপের ভেতরে দ্বীপ, তাই একটি বৃত্তের ভেতর আরেকটি।’ বন্দুক দ্বীপের গুরুত্ব।

সাগুফতা শারমীন তানিয়া

ভবদীয়: পর্ব ৩

‘সেকালের মাদাররা সকলের বাড়ি থেকে আসা চিঠি খুলে পড়তেন। বাড়ির কারও সাথে আর কখনও সাক্ষাতের নিয়মই ছিল না। এক-একটি ঘরে এক-একজন চিরকুমারী সিস্টার থাকতেন— খটখটে বিছানা, মামুলি দেরাজ আর একখানা টুল, কেউ কারও সাথে সহসা কথা বলতে পারতেন না, কাউকে ছুঁতেন না, নীরব কর্মযোগী ছিলেন তাঁরা।’ অতীতের দিনযাপন।

বিমল মিত্র

বিনিদ্র: পর্ব ৪০

‘গুরু যখন বিছানায় গিয়ে শোয়, তখন রতন একগাদা বই আর একটা টেবল্‌-ল্যাম্প নিয়ে গিয়ে রাখে তার পাশে। মদের নেশার মতো বই-এরও বুঝি একটা নেশা আছে। সারা জীবনে মদ তাকে শান্তি দিক আর না-দিক, বই তাকে চিরকাল শান্তি দিয়েছে।’ ভেঙে যাওয়া জীবন।

সাগুফতা শারমীন তানিয়া

ভবদীয়: পর্ব ২

‘…চ্যাপেলের এই ছোট্ট মাতৃমূর্তিটি সন্ন্যাসিনীদের খুব প্রিয়, ক’দিন আগে কারা যেন দেওয়াল টপকে এসে ভেঙে দিয়ে গেছে মেরির ঘাড় আর স্তন।’ সন্ন্যাসিনীর ফিরে দেখা।

বিমল মিত্র

বিনিদ্র: পর্ব ৩৯

‘…দুজনের মনের মধ্যেই তখন একঘেয়েমির যন্ত্রণা। গীতা শিল্পী, সে গান-পাগল মেয়ে। আর ওদিকে গুরুও শিল্পী। সে সিনেমা-পাগল মানুষ। একদিন নেশার ঝোঁকে গীতাকে বিয়ে করে ফেলেছিল সকলের অনুরোধ-উপরোধ উপেক্ষা করে। তারপর যা হয়, ক্লান্তি নেমে এল।’ বিবাহ যখন যন্ত্রণা।

প্রতীক

বেড়াল-স্মৃতি

‘তারা বলত ‘বড়দি আসলে ব্যাটাছেলে। মেয়েছেলের অত মেজাজ হয়?’ সব শুনে আমার মনে তৈরি হয়েছিল একজন দশাসই মহিলার ছবি। চোখে মোটা চশমা, নইলে তাকালেই আগুন বেরিয়ে এসে ছাত্রীদের পুড়িয়ে ছাই করে দিত। আমাদের বাড়ির দরজার সমান লম্বা আর জানলার সমান চওড়া।’ নতুন গল্প।

সাগুফতা শারমীন তানিয়া

ভবদীয়: পর্ব ১

‘রেবতী কি আর অত বোঝে? জন্ম-জন্মান্তর ধরে তাদের একটিই আরাধনা ছিল, নরকের কুণ্ডের মতো চিরকাল পুড়তে থাকা পেটের আগুন নেভানো। প্রশ্ন সে তেমন করে না, কখনোই করেনি। এমনকী অ্যাগ্নেস চলে যাবার পরেও তো তার মনে প্রশ্নের উদয় হয়নি যে তার বউ কোথায় গেল, কার হাত ধরে চলে গেল, চলেই যে যাবে তা যেন কেমন করে জানত সে।’ নতুন উপন্যাস।