
প্রতিপক্ষ
‘একটা অদ্ভুত শূন্যতা যেন গুঁতো মেরে গলার নীচে আটকে থাকা কান্নাটাকে ঠেলে দিচ্ছিল সুমনার। তবে সামলে নিলেন। মানুষটা যে নেই, সেটা আগেই জানতেন। কিন্তু এভাবে কেউ সামনাসামনি বলেনি।’

‘একটা অদ্ভুত শূন্যতা যেন গুঁতো মেরে গলার নীচে আটকে থাকা কান্নাটাকে ঠেলে দিচ্ছিল সুমনার। তবে সামলে নিলেন। মানুষটা যে নেই, সেটা আগেই জানতেন। কিন্তু এভাবে কেউ সামনাসামনি বলেনি।’

‘বুঝলাম, আসলে জানতে চাইছেন যখন-তখন হামলা করা যায় কি না! এইবার আমি একটু ভয় খেলাম। যতই ফেসিয়ালের গ্লো থাকুক, মহিলা আদতে মা-শাশুড়ির মতোই বিপজ্জনক-বয়সি। মাছটুকু ছাড়া আর কোনও কিছুই কমন নেই তেমন আমাদের। তা নিয়ে আর কতক্ষণই বা বকা যায়? পাশাপাশি আবার একটু যে আহা-উহু হচ্ছে না মনের মধ্যে, তা নয়। নাহয় একটু মাছই খেতে চাইছে, নাহয় দাতা কর্ণ হয়ে বসলামই একটু মাছসত্র খুলে!’ নতুন গল্প।

‘তুমি ফুল তুলেছিলে, তারই দাগ রয়েছে বাগানে।/ যেন অপরাধচিহ্ন, যেন ব্যর্থ অভিমানভাষা।/ যে-মেয়েটি অন্ধ, সেও বিরহের কিছু গান জানে।/ তাকে ফুল দাও। আর কেড়ে নাও দেখার পিপাসা।’ নতুন কবিতা।

‘পিছনে সোমনাথ স্যার বরেনের সঙ্গে কী একটা বলতে আটকে গেছে! এরা একে অপরকে চিনল কী করে? উনি তাকে চিনে ফেলেনি তো? সঙ্গদোষে পরের প্রোমোশনটা আটকে গেলে? ভাবতে-ভাবতে শ্যামলেন্দু আবার সেই একই জায়গায় হোঁচট খেল!’ নতুন গল্প।

‘কনিষ্ঠ আঙুলকে প্রশ্রয়ের দিন শেষ। শৌখিনতার দিন শেষ। এবার সে যেমন-তেমন পার্টও নিয়ে নেবে। শিল্পের জন্য নয়, রোজগারের জন্য অভিনয়টা করবে এবার থেকে। কিন্তু এই ভাবনাগুলি চাউমিনের এক-একটা লম্বা সুতোর মতো পরস্পর জট পাকিয়ে পড়ে রইল।’ নতুন গল্প।

‘ঘুড়ি আটকে আছে পেঁচিয়ে একটা ঝাঁকড়া গাছের ডালে/ আলতো হাওয়ায় জট বাড়ে/ অনুভূমিক অনেক দূরে কত হিজিবিজি লেপটে আছে/ অনেকগুলো ঈশ্বর আর দূতেরা উল্লম্ব দুলছে’ নতুন কবিতা।

‘একটা ধুলোমাখা বাসে ওঠে কিরণ। লেডিস।একটা সিট পেয়ে যায়। ব্রেক ফেল। কন্ডাক্টরের অপূর্ব চামড়ার ব্যাগ থেকে সিকি-আধুলি ছিটকে পরে। ড্রাইভার বসে আছে, নিরুত্তাপ। কিরণ চট করে নেমে গেল, বাস থেকে। বেশি দূর নয়। খোঁজখবর করে দাদার বাড়ি চলে গেল।’ নতুন গল্প।

‘ওই যে ফণা, বাসুকিরাজ/ ইচ্ছেমতন হচ্ছে দরাজ/ লতিয়ে চলে, লুটিয়ে লাজ/ মিলন, বাঁকা দহে…/ ফাতনা নড়ে, অধোবদন/ শিকার বলে, ‘হে উন্মাদন!/ যাতনা এক আমারই ধন/ বুভুক্ষু বিরহে।’ নতুন কবিতা।

‘মৃত্যুর আগে বোনেরা খোদার কাছে ফরিয়াদ করেন, তাঁরা খোদার কাছে অপরাধী কিন্তু মীরনের কাছে তো কোনো অপরাধ করেননি, বরং মীরনের আজ যা আছে সবই তাঁদের দৌলতে। তাঁদের অভিশাপে সে-রাতেই রাজমহলের কাছে মীরন বজ্রাঘাতে মারা যায়।’ খোদার বিচার।

‘ওবেলা চমন আবিষ্কার করে ছোট্ট একটা বাদশাহী ছুরি বিঁধে আছে জানালার কপাটে, বাঁটে কোফত্গার কী সুন্দর সোনার পাতের কাজ করেছে, চুনি-মরকত বসানো একটা ময়ূরকণ্ঠ। বাইরের কেউ কি চিঠি-সহ ছুরিটা ছুঁড়ে মেরেছে বেগমদের? পালাবার বন্দোবস্ত? ছুরি নিয়ে আহ্লাদিত চমন যায় মর্দান বেগকে জানাতে।’ আশঙ্কার সূত্রপাত।

‘মিছিল তোমায় চেনাল এই দেশে/ ওই ভেসে যায় তরণীবক্তৃতা—/ দ্যাখেইনি যে, কী করে আঁকবে সে/ নদীর উপর জ্বলন্ত সেই চিতা?/ বরং তাকে বিচার করা ভাল/ যে-বালিকা প্রবঞ্চনায় ধীর…/ তোমার প্রিয় তরুণ পরিচালক—/ আমার ছিল প্রহরামঞ্জির।’ নতুন কবিতা।
‘এলিয়টও কী ভেবেছিলেন রবীন্দ্রনাথের মতো— শতবর্ষ পরে তাঁর কবিতা কীভাবে পৌঁছবে পাঠকের কাছে? গত এক শতাব্দী জুড়ে ‘দ্য ওয়েস্ট ল্যান্ড’ পড়া ও আলোচনা হয়েছে মূলত প্রথম মহাযুদ্ধের পটভূমিতে। আমাদের প্রজন্ম মহাযুদ্ধ দেখেনি। কিন্তু টানা দু’বছর ভয়াবহ অতিমারীর সঙ্গে লড়াই করেছি আমরা। গত এপ্রিল বা তার আগের মার্চের মৃত্যুমিছিল দেখতে দেখতে, কিংবা ঘরে ফেরার টানে বান্দ্রা স্টেশনের বাইরে অপেক্ষমাণ হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিকের ছবি দেখে মনে পড়েছে এলিয়টের পংক্তি, ‘Unreal city!… I had not thought death had undone so many…’।’
This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.
©2025 Copyright: Vision3 Global Pvt. Ltd.