গল্প / কবিতা

পরশমণি : পর্ব ২

‘শিরোমণি অবাক হয়ে দেখে, মিছে কথা অবলীলায় বলা যায়, তার বউ বলে, সেও বলে আজকাল। বুড়ি ঠাকুরমার শলা শুনেই রাঁধে ওরা জামাই-বৌয়ে, কিন্তু ঠাকুরমাকে কে পোঁছে! শিরোমণি ওসব নিজের রেছিপি বলেই চালায়।’

পরশমণি : পর্ব ১

‘বছর ঘুরতে একটা মেয়ে হল তাদের। পরের বছর আরেকটা। নিত্যদিনের দারিদ্র সইতে সইতে সকাল-সন্ধ্যার ষোলআনি মাত করে একে অন্যকে বাপান্ত করতে শুরু করল তারা, শিরোমণির মুখ তত চলে না, পলারাণি কলহ পটু মেয়েলোক।’

লাল বল

‘একটা পুঁটলির মতো ছেলেকে কোলের ওপর রাখে। আয়নায় দেখা যায়— ছেলে চোখ বড় বড় করে দেখছে চারদিক। পিছনে হাড় বের করা মুখের একপাশ। কী ক্লান্তি চোখের তলায়। বাঁচার ইচ্ছেটাকে যেন কোলের ওপর বসিয়ে রেখেছে।’

ইমরান পারভেজ

কয়েকটি কবিতা

‘একটা আস্ত জিওল মাছ/
আমার পোশাকের ভিতর খলবল করছে।/
এক সেন্টর আঁকাবাঁকা দৌড়ে চলেছে/
আমার শৈশব পেরোনো নদীর দিকে।’

নীলার্ণব চক্রবর্তী

কয়েকটি কবিতা

‘দুজনেই দুজনের জামার প্রথম বোতামের দিকে তাকিয়ে/ রয়েছি হাঁ-করে—/ বোতাম চকচক করিতেছে শুক্রাণু-সাদা বনজ্যোৎস্নায়…/ আমাদের চোখে বড্ড আরাম দিচ্ছে সেই আলো—/ ঘুম এসে যাচ্ছে, লতানে-পাতানে ঘুম…/ আজানে-পাজানে ঘুম’

গৌতম সেনগুপ্ত

তুই, আমি, ববিদা আর বোর্হেস

‘তখন কৃষ্ণা নায়ার, মানে যে-ছিপলিটা ট্র্যাপিজের খেলা দেখাত, তার সঙ্গে ববিদার তুমুল প্রেম! তার বাপ, সার্কাস ম্যানেজার, দেড় ব্যাটারি নায়ারকে ট্রাম গুমটির গলিতে ঝেড়ে দিল ববিদা। কী করবে? ট্রু লাভের মধ্যে অত হিচখিচাং হলে মার্ডার তো হবেই?’

কৌশিক গুড়িয়া

শরীরগন্ধা

‘ততক্ষণে আমার দু’হাতের মধ্যে থেকে নিজের হাত ফিরিয়ে নিতে চাইছে সে। আমি বেশ বুঝতে পারছি সে-চাওয়া কপট। তেমন অছিলায় তার দুই তর্জনীর নখ বিহত করছে আমাকে। বেশ বুঝতে পারছি সেই ফিরিয়ে নেওয়ার মধ্যে সততা নেই এতটুকুও।’

শুভম চক্রবর্তী

কয়েকটি কবিতা

‘যেমন কাছিমমাংস খেতে গিয়ে খুব বাল্যকালে/ তীব্র বাজে গন্ধ পেয়ে কাছিম খাবার সাধ গেছে।/ তেমনই তোমাকে চেয়ে আমার হালত গেছে ভেসে/ বন্যার উদোম জলে যেন গোসাবার ঘরবাড়ি।’

পম্পা বিশ্বাস

জেম্মা

‘হাওড়া স্টেশনের বড় ঘড়ির নীচে তেইশের এক প্রেম-তরুণীকে দাঁড় করিয়ে রেখে সটকে পড়েছে জলজ্যান্ত প্রেমিকটি। আর, অধীর আগ্রহে, অকথ্য বিশ্বাসে ভর করে সেই তরুণী সময় গোনে। গুনেই চলে। কেউ আসে না।’

চিরন্তন দাসগুপ্ত

কয়েকটি কবিতা

‘সেই একটা আলো বেয়ে উঠে যাচ্ছে মানুষের পোকা/ ল্যাঙচাতে ল্যাঙচাতে যাচ্ছে কাছাখোলা সুন্দরী মানুষ,/ হলুদ স্বপ্নের মধ্যে উঁকি দিচ্ছে মেমেদের খোকা/ উঠোনের মধ্যিখানে সর্দি টানছে ক্ষুদ্র অলম্বুষ।’

অনুপম রায়

অসুখ : পর্ব ২

‘এই ফ্ল্যাটের প্রতিটা জিনিস কীভাবে ওরা কিনেছে, সাজিয়েছে— সব মনে পড়ে যায়। এক মুহূর্তে সব বৃথা হয়ে যাবে? কোনও কি উপায় নেই? উপায় নেই বলেই তো আজকের এই দিনটা, তাই না?’

অনুপম রায়

অসুখ : পর্ব ১

‘এক মাস আগে দেবুর জ্বর হয়। রক্ত পরীক্ষায় দেবুর শরীরে এক মারাত্মক রোগ ধরা পড়ে। ডাক্তার দেবু-কে জানিয়ে দেয়, খুব বেশি হলে আর দু-মাস। এই কিছুদিন আগেও ওরা সিকিম থেকে ঘুরে এলো, একদম সুস্থ। হঠাৎ কী হয়ে গেল?’