

মিহি মন্তাজ: পর্ব ১২
যাবতীয় অবান্তর ব্যাপার থেকে নিজেকে সরানোর মতো ইমিউনিটি তৈরি হয়নি। বাধ্য হয়ে বিকল্প খুঁজে চলেছি। অব্যাহত আছে মনের মধ্যে নক্কারজনক কল্পনার স্ট্রিমিং ভিডিও। কেউ বুঝে ফেললে সর্বনাশ। টেনশন হয় সারাক্ষণ।
যাবতীয় অবান্তর ব্যাপার থেকে নিজেকে সরানোর মতো ইমিউনিটি তৈরি হয়নি। বাধ্য হয়ে বিকল্প খুঁজে চলেছি। অব্যাহত আছে মনের মধ্যে নক্কারজনক কল্পনার স্ট্রিমিং ভিডিও। কেউ বুঝে ফেললে সর্বনাশ। টেনশন হয় সারাক্ষণ।
‘দরজার বাইরে দুজন। অন্ধকারে প্রায় এক হয়ে আছে। চোখ সয়ে আসছে। দুটো মাথা কখনও আলাদা হচ্ছে। আবার ডুবে যাচ্ছে অন্যের মধ্যে। এরা কারা? ভাড়াটে? নাকি ওঁর পরিবারের কেউ? এমন একটা জায়গায় ওরা রয়েছে যে, পাশ দিয়ে না দেখার ভান করে নেমে যাওয়া যাচ্ছে না।’ অদ্ভুত পরিস্থিতি।
‘ক্রিসমাসের রাতে ওকে দেখতে পেলাম সেন্ট পলসের পাশের অন্ধকার রাস্তাটায়। দৌড়ে গিয়ে বললাম, ‘এই তো, কোথায় ছিলেন এতদিন?’ লোকটা বলল, ‘জানুয়ারির ফার্স্ট উইকে যাচ্ছি। যাবেন?’ হ্যাঁ বলে দিলাম। পাহাড়ের ব্যাপারটা তখনই শুনলাম। তারপর এই রাতের ট্রেন।’ উদ্ভট অ্যাডভেঞ্চারের পূর্বাভাস।
‘প্লেটে সাক্ষাৎ ভিসুভিয়াস। মনেও। দারুণ রান্না। ন্যাপকিনে কেটারারের নাম ছাপা আছে, আর একটা নিয়ে রেখে দেব। যদি কেউ ধরে, এই ভয়টা আর একবার হল, এদিক-ওদিক নজর রাখছিলাম। সন্দেহজনক লোক খুঁজছিলাম, যে আমাকে সন্দেহ করতেই পারে। পেলাম না।’ অ-নিমন্ত্রিতের গল্প।
‘আমি আবার একা হয়ে গেছি। এদিক-ওদিক দেখছি। আবার যদি সেই ভ্যানটা ফিরে আসে? নিষিদ্ধ বই বিক্রির খবর কি চাপা থাকে নাকি? ঝামেলায় জড়ানোর কোনও মানে হয় না। এক-পা দু-পা করে পিছিয়ে চম্পট দেবার তাল করতেই সবাই মিলে দৌড়ে এসে আমাকে ধরে ফেলল।’ আচমকা ঘেরাও।
‘সব থেকে সেফ জানলা হল পাশের বাড়ির বাথরুমের উল্টোদিক। কারণ সেটা বন্ধ থাকে, ঘষা কাচ। আমি আবিষ্কার করেছি যে, তার মধ্যে কারুর আবছা ছায়া পড়লে, তা স্পষ্ট দেখতে পাওয়ার চেয়েও বেশি ইন্টারেস্টিং। সে তো আর আমাকে দেখতে পাচ্ছে না, এটাই দারুণ স্বস্তি।’ আড়ালে থাকার আনন্দ।
‘এদেশে যা দেখছি, যদিও এ দেখার কোনও সারবত্তা নেই, সবার এক বাড়ি, গাড়ি, চেহারা। সবাই সায়েব। অনেকেই মেম। অনেককে দেখে সন্দেহ হয়, এরা বোধহয় এক ধরনের কালো। কত মিলিয়ন শেডস অফ গ্রে, ব্রাউন, হলুদ, সবুজ, ওরাং ওটাং ভরা ব্রিটিশ দুনিয়া।’ প্রবাসে দৈবের বশে।
আমাদের পাড়াতে অনেক বাজে ফ্ল্যাটবাড়ি হয়েছে। চারতলা হলেও সেখানে লিফ্ট বসানো আছে কায়দা করে। ফলপট্টির কাঠের প্যাকিং বাক্সের চেয়েও ছোট। জেলের মতো গরাদ লাগানো দরজা তার। টোল-বিশু বলেছিল, খরচ কমাতে এইসব বাড়ির তলাটা নাকি তৈরি হয় না। একগুচ্ছ জীবন।
‘…কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে মাথার মধ্যে দিয়ে কত কী বয়ে গেল। কোনও ছোট স্টেশনে ঝড়ের মতো রাজধানী পেরিয়ে গেলে যেমন হয়। একটা ঝমঝমে আওয়াজ আর বেসামাল স্মৃতির পাতাগুলো কিছুক্ষণ উড়তে থাকে রেললাইনের ওপর। দপদপানো লাল আলোটা একসময় মিলিয়ে যায় মাইগ্রেনের মতো। ‘তুমি চললে কোথায়?’ জিজ্ঞেস করায় বলল, ‘খুঁজছি’।’ চেনা-অচেনা কবি।
‘ভোরবেলা সাত তলায় যে-মেয়েটা এক্সারসাইজ করে, তার শুধুমাত্র হাতদুটো চোখে পড়ে। আমার একেবারে উল্টোদিকের জানলায় যারা থাকে, তাদেরই একমাত্র চিনি। ও-বাড়ির একজন মহিলা মাঝে মাঝেই জানলায় এসে এদিক-ওদিক কী সব খোঁজেন। অন্য ফ্ল্যাটগুলোয় যারা থাকে, চিনি না।’ প্রতিবেশীর গল্প।
‘চললাম পেছন-পেছন, দূরত্ব রেখে। একটা গলিতে ঢুকে তৃতীয় বাড়ির দরজায় কড়া নেড়ে হাঁক পাড়ল, ‘এই যে’। দরজা খুলল। একটা বেড়াল বেরিয়ে দৌড় লাগাল একদিকে। এক মহিলা বেরিয়ে এসে আমাকে দেখতে পেয়ে একগাল হেসে বললেন, ‘আজ আপনাকে ধরেছে বুঝি?’’ অপরিচিতের পিছু ধাওয়া।
‘চারখানা পরাজিত হাম্প এখন সামনের আর পিছনের চাকার মাঝখানে। এই অবধি দেখার পরেও দর্শক উদগ্রীব হয়ে রইল। এখনও তো পিছনের চাকা বাকি। নজর পড়ল জানলার ভেতরের ভাবলেশহীন যাত্রীদের দিকে।’ নতুন কলাম।
This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.
©2025 Copyright: Vision3 Global Pvt. Ltd.