ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2024

 
 

ডাকবাংলায় আপনাকে স্বাগত

 
 
  • ব্যাকস্টেজ: পর্ব ৫


    সুদেষ্ণা রায় (July 3, 2021)
     

    মান্নাদা বললেন, তুই আমার ভাই

    প্রি-মিলেনিয়াম বছর। মানে ১৯৯৯ সাল। ডিসেম্বর মাস। হঠাৎ আমাদের পরিচিত প্রযোজক বিশুদা একটি অদ্ভুত প্রস্তাব নিয়ে এলেন। বিশুদার সঙ্গে আলাপ হয়েছিল ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘শুভ মহরৎ’ ছবির শুটিংয়ের সময়। এই ছবিতে অভিজিৎ গুহ ঋতুপর্ণ ঘোষের সহকারী ছিলেন, কিন্তু আমার অন্য কাজ থাকায় আমি থাকতে পারিনি। তবে প্রায়ই শুটিংয়ে যেতাম আর বিশুদার সঙ্গে দেখা হত। উনি ছিলেন অন্যতম প্রযোজক। দারুণ মাইডিয়ার লোক। এক সময় গানবাজনার বড় শো অর্গানাইজ করতেন। ইংরেজিতে যাকে বলে ‘ইম্প্রেসারিও’, তা-ই ছিলেন। বহু নামীদামি গুণী শিল্পীদের সঙ্গে ওঁর তখন ছিল ওঠা-বসা। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে শুরু করে মান্না দে, আরতি মুখোপাধ্যায়, নির্মলা মিশ্র, হৈমন্তী শুক্লা— গানের জগতের সবার সঙ্গে যোগাযোগ ওঁর খুব। সেই বিশুদাই এলেন ডিসেম্বর মাসে একটি আকর্ষণীয় প্রস্তাব নিয়ে। মান্না দে ক্রিসমাসের সময় কলকাতায় আসবেন। ওঁর জন্য একটা চিত্রনাট্য তৈরি করতে হবে। মান্না দে-কে নিয়ে একটা ছবি উনি করতে চান, যেখানে মান্নাদা মান্নাদা হিসেবেই অভিনয় করবেন। কিন্তু ছবিটি ফিচারধর্মী হতে হবে। গল্প থাকতে হবে, যে-গল্পে মান্নাদা থাকবেন এবং ওঁর কিছু জনপ্রিয় গান উনি গাইবেন— সেটাও গল্পে জুড়তে হবে।

    আমরা, অর্থাৎ অভিজিৎ ও আমি, তখনও বিভিন্ন সিনেমার সহকারী। টেলিভিশনে কিছু ফিকশন ও নন-ফিকশন করেছি। কিন্তু ঋতুপর্ণর সহকারী হিসেবে কাজ করার মধ্যেই ছবির স্বাদ পেয়েছি। এই প্রথম একটা কাজ পেলাম স্বাধীনভাবে ছবি করার। অবশ্য ফিল্ম-মাধ্যমে নয়, টেলিভিশনের জন্য বিটা টেপ-এ। যাই হোক, দুধের স্বাদ ঘোলে মিটলেও চলে। তাই মরিয়া হয়ে ফরমায়েশ অনুযায়ী চিত্রনাট্য লেখার কাজ শুরু হল। মান্নাদার এক পাগল দিলদরিয়া ফ্যানকে ধরে গল্প ফাঁদা হল। চিত্রনাট্যের জন্য দু’তিন ঘর ঘুরে যখন পৌঁছলাম স্নেহাশিস চক্রবর্তীর কাছে, মাত্র দু’দিন বাকি মান্নাদের সঙ্গে সাক্ষাতের। দু’দিনের মধ্যে চাই এমন চিত্রনাট্য, যা মান্না দে-র মনপসন্দ হবে। ২৫ ডিসেম্বর এল। ১৯৯৯। বিংশ শতাব্দীর শেষ ক্রিসমাস। আর সেই দিনটা আমার কাছে স্মরণীয়, কারণ ওটা মান্না দে-র সঙ্গে আমাদের প্রথম সাক্ষাতের দিন। সকাল থেকেই তোড়জোড় শুরু। ক্রিসমাস কেক কেনা। চিত্রনাট্যের জন্য ভাল একটা ফাইল খুঁজে বের করা। শাড়ি পরব না সালোয়ার কুর্তা, তা-ই নিয়ে দ্বন্দ্ব। তারপর পরলাম জিনস ও কুর্তা। তখন আমার নিজের গাড়ি নেই। বিশুদাই তুলে নিলেন আমাদের। বিবেকানন্দ রোড। ওয়াই এম সি এ-র সামনে গাড়ি রেখে, হেঁটে চলে এলাম সিমলে স্ট্রিট। পাশেই। গলি দিয়ে ঢুকে গেলাম সেই পুরনো কলকাতার জগতে। গায়ে-গায়ে লাগানো বাড়ি। পর পর সবই প্রায় মান্না দে-র পরিবারের। একটি বাড়ির একতলার ঘরে বসলাম। বিশুদা জানালেন, মান্নাদা প্রাত‌ঃরাশ সেরে আসছেন। আমাদের জন্য এল চা ও সিঙাড়া। আমি অল্প নার্ভাস, কারণ চিত্রনাট্যটা পড়তে হবে। পুরোটা হাতে লেখা। গতকালই পেয়েছি রাতে। স্নেহাশিসের হাতের লেখাটা পড়া তখনও মকশো হয়নি। আর চিত্রনাট্য পড়ার সময় হোঁচট খেলে হবে না। এসব ভাবতে ভাবতে সবে সিঙাড়ায় কামড় দিয়েছি, ঘরে ঢুকে এলেন মান্নাদা। সবাই সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাঁড়ালাম। মান্নাদার পরনে গেঞ্জি, পাজামা ও গায়ে বড় একটা আলোয়ান। মান্নাদা সবার দিকে তাকিয়ে আমাকে বললেন, ‘তুমি তো মহিলা, তোমার না উঠলেও হত। বোসো!’

    ‘মহিলা বা পুরুষ বলে আমি আলাদা করে ভাবি না। আপনি সম্মাননীয় মানুষ, যাঁর গান শুনে বড় হয়েছি, এই প্রথম চাক্ষুষ দর্শন করলাম, তাই শরীরটা নিজের ইশারায় নিজে নিজেই উঠে দাঁড়াল।’

    ‘বাঃ বেশ কথা বলো তো! আমার গান শুনে বড় হয়েছ বুঝলাম। কোন কোন গান গাইতে পারবে?’

    ‘মনে মনে, না জোর গলায়?’

    হেসে উঠলেন উনি। ‘মনে মনে কোন গান গাও?’ 

    ‘সব। অ্যায় মেরি জোহরা জবিঁ থেকে জিন্দেগি ক‍্যায়সি হ্যায় পহেলি…’

    ‘এই সমস্যা তোমাদের নিয়ে, তোমরা শুধু হিন্দি গানই শোনো।’

    ‘না স্যার…’

    ‘স্যার আবার কী? বলো মান্নাদা। বাঙালি বাংলার সাহিত্য-সংস্কৃতি ভুলতে বসেছে… এই তো ক’দিন আগে কলকাতার অভিজাত পাড়ার এক গানের অনুষ্ঠানে গেছি। আয়োজকদের আবদার, শুধু বাংলা গান হবে। আমি খুব খুশি। হারমোনিয়াম নিয়ে গান গাইতে বসেছি। প্রেক্ষাগৃহে তিলধারণের জায়গা নেই। আশি বছরের যুবকের গান শুনতে এসেছে এরা। শুরু করলাম গান। একটা দুটো তিনটে বাংলা গান গাইলাম। হাততালি পড়ল, কিন্তু মন ভরল না। তাই জিজ্ঞেস করলাম, বাংলা গান গাইব, না কি হিন্দি? উত্তর এল, ‘না না, বাংলা।’ শুরু করলাম আর একটি বাংলা গান… কিন্তু অডিয়েন্স কেমন ঠান্ডা মনে হল। গান মাঝপথে থামিয়ে দিলাম। তাকালাম আমার সঙ্গীতশিল্পীদের দিকে। ওরা বুঝে গেল আমার ইঙ্গিত। সবাই চুপ। আমি হারমোনিয়ামে এক লাইন বাজিয়ে ধরলাম, ‘জিন্দেগি… ক্যায়সি হ্যায় পহেলি’। ব্যাস, হাততালির পর জাস্ট হাততালি। হল যেন ফেটে পড়ল। আমি গান থামিয়ে বললাম, সত্যি কথাটা বলেই পারতেন, হিন্দি গান শুনতে চান শুনুন… এভাবে ‘বাংলা গান শুনতে চাই’ বলে প্রতারণা না করাই ভাল।’

    স্নেহাশিসের হাতের লেখাটা পড়া তখনও মকশো হয়নি। আর চিত্রনাট্য পড়ার সময় হোঁচট খেলে হবে না। এসব ভাবতে ভাবতে সবে সিঙাড়ায় কামড় দিয়েছি, ঘরে ঢুকে এলেন মান্নাদা। সবাই সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাঁড়ালাম। মান্নাদার পরনে গেঞ্জি, পাজামা ও গায়ে বড় একটা আলোয়ান। মান্নাদা সবার দিকে তাকিয়ে আমাকে বললেন, ‘তুমি তো মহিলা, তোমার না উঠলেও হত। বোসো!’

    কেউ কিছু বলছে না দেখে আমি আবার বলে উঠলাম, ‘না মান্নাদা, বাংলা গানও আপনার অনেক জানি। খুব ভাল লাগে। মন থেকে বলছি, সেগুলো গাইতে চেষ্টাও করি। যেমন, ‘ললিতা, ওকে আজ চলে যেতে বল না’,  বা ‘মানুষ খুন হলে পরে, মানুষই তার বিচার করে’, ‘আমি শ্রীশ্রীভজহরি মান্না’, ‘সে আমার ছোট বোন’।

    ‘ঠিক আছে, ঠিক আছে. একটা গেয়ে শোনা।’

    আমি তখন মরিয়া। যে করে হোক মান্না দে-র মন ছুঁতে হবে, তাই গান গাইতে তৈরি হচ্ছিলাম। বেগতিক দেখে অভিজিৎ ভয়ে বলে উঠল, ‘ওটা করতে বলবেন না দাদা, তাহলে আজকে যা শোনাতে এসেছে তা-ও আপনার বেসুরো লাগবে। আর আপনার গান গাওয়ার মতো ক্ষমতা ওর নেই, তাও আপনার সামনে!’

    মান্নাদা হাসি-হাসি মুখে বললেন, ‘শুধু ও কেন হবে, অনেক তাবড় তাবড় তারকাও আমার গান গাইতে গিয়ে ল্যাজেগোবরে হয়ে যায়। মনে আছে একবার একটা শো-র পর, বেশ কিছু অল্পবয়সি সঙ্গীত-রসিক ব্যাকস্টেজে অটোগ্রাফ নিতে এল। সবাই খুব উচ্ছ্বসিত। একজন আর-একজনকে ছাপিয়ে আমার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। কেউ বলছে আমি সবচেয়ে বড় গায়ক। কেউ বা বলছে অপনার গলা দিয়ে যে সুর বেরোয় তা সোনালি তরঙ্গ তোলে মনে। বাঙালি কাব্যিক, তাই এই ধরনের বহু প্রশংসা শুনতে শুনতে, হঠাৎ একটা বেসুরো কথা কানে এল। ‘দাদা, আপনার গান ভাল লাগে, কিন্তু হেমন্তবাবুর গান আরও ভাল লাগে।’ পাশ থেকে আমারই দলের কেউ ভয় পেয়ে ওই বোদ্ধাকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করল। আমি তাকে নিরস্ত করে বললাম, ‘তা ভাই, হেমন্তদা খুবই গুণী শিল্পী, ওঁর গান ভাল লাগাটা অস্বাভাবিক নয়। তবে ‘আরও’ ভাল লাগে কেন?’ সঙ্গে সঙ্গে উত্তর, ‘ওঁর গান শুনে গাওয়া যায়। আর আপনার গান শুনে গাইতে চেষ্টা করলে পোঁয়া ফেটে যায়! গাওয়াই যায় না!’ এরকম প্রশস্তি জীবনে প্রথম শুনলাম। অন্যরা সেই ছেলেটিকে সরিয়ে নিতে চেষ্টা করলে, আমি আবার বাধা দিয়ে বললাম, ‘তুমি ঠিক বলেছ। তাই বলি কী, বাবা, আমার গান তুমি শুধু শুনো, গেও না। পোঁয়াটা সাবধানে রাখতে হবে তো! ফেটে গেলে কেলেংকারি হবে!’ কথাটা বলে জোরে হেসে উঠলেন। 

    সবাই হাসছে। আমিও! হঠাৎ মান্নাদার খেয়াল হল, আমি মহিলা। জিভ কেটে বললেন, ‘ইস! তুই যে রয়েছিস ভুলে গেছিলাম, খারাপ কথা বলে ফেললাম।’ উত্তরে আমি ওঁকে আশ্বস্ত করলাম, বললাম, মহিলা হলেও আমি কোনও পুরুষের থেকে কম নই। খারাপ কথার তালিকা আমারও কম নেই! মান্নাদা উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘আয় বুকে আয়, আজ থেকে তুইও আমার ভাই!’ আলোয়ানটা খুলে যায়, গেঞ্জির গলার ওপর থেকে বুকে কাটা দাগ দেখে ফেলে একটু হকচকিয়ে যাই। তা লক্ষ করে মান্নাদা বলে ওঠেন, ‘বুক চিরে হৃদয়টাকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে ডাক্তাররা। কিন্তু আবার আমি তরতাজা যুবকের মতোই গান গাইছি, এখন আবার অভিনয় করব।’

    কয়েক বছর আগেই মান্নাদার বাইপাস সার্জারি হয়েছিল। আর ১৯৯৯, ওঁর সঙ্গে যখন আলাপ, তখন উনি ৮০ বছরের যুবক। হিল্লিদিল্লি ঘুরে শো করছেন। আবার বিশুদার অনুরোধে আমাদের মতো আনকোরা ফিল্মমেকারের ছবিতে অভিনয় করতে রাজি হয়েছেন। অবশ্যই চিত্রনাট্য পছন্দ হলে। মান্নাদার মধ্যেকার সেই উদ্দীপনা, উদ্যম আজও আমার কাছে একটা বড় শিক্ষা। মানুষ বহুদিন কাজ করতে পারে, সৃষ্টিশীল থাকতে পারে, এমন উন্মুক্তমনা হলে তবেই।

    সবাই হাসছে। আমিও! হঠাৎ মান্নাদার খেয়াল হল, আমি মহিলা। জিভ কেটে বললেন, ‘ইস! তুই যে রয়েছিস ভুলে গেছিলাম, খারাপ কথা বলে ফেললাম।’ উত্তরে আমি ওঁকে আশ্বস্ত করলাম, বললাম, মহিলা হলেও আমি কোনও পুরুষের থেকে কম নই। খারাপ কথার তালিকা আমারও কম নেই! মান্নাদা উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘আয় বুকে আয়, আজ থেকে তুইও আমার ভাই!’

    আলাপচারিতার পর এবার আমার চিত্রনাট্য পড়ার পালা। খেরোর খাতাটা ফাইল থেকে বার করতেই মান্নাদা বললেন, ‘ও বাবা, এ তো বিশাল ব্যাপার! এত বড় চিত্রনাট্য, কতক্ষণের ছবি?’

    ‘১০০ মিনিট থেকে ২ ঘণ্টা। এর মধ্যে আপনার ছ’টা গানই তো ২০ মিনিট নেবে…’

    ‘সেসব বুঝলাম, কিন্তু এত বড় চিত্রনাট্য শুনতে তো ঘণ্টাদুয়েক লাগবে। আমার তো অত সময় নেই। মেদিনীপুরে অনুষ্ঠান বেরোতে হবে…’ আমি ও অভিজিৎ দুজনেই তখন মুষড়ে পড়েছি। বিশুদাও ঠিক সেই মুহূর্তে কোথায় হারিয়ে গেছেন… আমি আমতা আমতা করে বললাম, ‘আমি খুব তাড়াতাড়ি পড়ি… আধঘণ্টায় নামিয়ে দেব।’

    ‘মানে, কোনও মুখড়া নয়, সোজা অন্তরা?’

    ‘না দাদা, সবই থাকবে, শুধু রিপিট আর কোরাসটা বাদ দিয়ে পড়ব।’

    ‘বাঃ, পড়ো।’

    পড়তে শুরু করলাম। পড়তে পড়তেই নিজে ছাঁটতে থাকলাম। মজার ঘটনাগুলো, ডায়ালগগুলো যতটা পারি তাড়াতাড়ি পড়লাম। দৃশ্যান্তরগুলো মাঝে মাঝেই ডায়লগ ব্রিজ করে পড়লাম। মিনিমাম দেড় ঘণ্টার চিত্রনাট্য আধঘণ্টায় পড়া সহজ নয়। যখন শেষ হল, অভিজিৎ বলল, ‘বত্রিশ মিনিট!’ মান্নাদা চুপ। বিশুদা তখন, মান্নাদার সঙ্গে যিনি ছিলেন তাঁর দিকে ভুরু নাচিয়ে নিঃশব্দে জিজ্ঞেস করলেন, কী হল?

    মান্নাদা চুপ।

    রানা আমাকে ফিসফিস করে বলল, ‘অত তাড়াহুড়ো করায় অনেক জায়গা পরিষ্কার হয়নি।’

    মনটা খারাপ হয়ে গেল। তাহলে হবে না।

    হঠাৎ মান্নাদা উঠে দাঁড়ালেন, কোনও কথা নেই। আমরাও উঠে দাঁড়ালাম। আমাদের মুখে বিষাদ। ঘুরে দরজার দিকে গেলেন। বুঝলাম, পছন্দ হয়নি। বাইরে দাঁড়ানো একজনকে বললেন, ‘বৌদিকে বল খাবার পাঠাতে। আর বলবি সাজিয়ে-গুছিয়ে পাঠাতে। আজ থেকে আমি তো সিনেমার হিরো!’ 

    তখনও বুঝিনি ঠিক। এবার ঘুরে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘কী হল, এসো, আমার দুই ভাই বুকে এসো। বলো প্রযোজককে কনট্র্যাক্ট আনতে। আর, শুটিং কবে করবে?’

    ছবিটা হয়েছিল মোট আটদিনের শুটিং-এ। পাঁচদিন মান্নাদা ছিলেন। ছবির নাম ‘পাগল তোমার জন্য যে’। মান্না দে অভিনীত একমাত্র সিনেমা। তৈরি হয় ও প্রদর্শিত হয় ২০০০ সালের ১ মে, মান্নাদার জন্মদিনে।। দূরদর্শনের পর্দায়। দুঃখের বিষয়, আমাদের কাছে ছবির কোনও কপি নেই। ছবিটি প্রযোজক দূরদর্শনকে বিক্রি করে দেন। কে জানে কোথায় কোন আর্কাইভে ধুলো জমছে সেই বিটা-ক্যাসেট-বন্দি ছবিটিতে!

     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     




 

 

Rate us on Google Rate us on FaceBook