একদা ছেলের গলায়

call me by your name final shot

মেয়েটি বলল, আর তোমাকে ভাল্লাগছে না। ফোন আর সম্পর্ক একসঙ্গে কেটে দিল। তাহলে কি আজ বিকেলেই আত্মহত্যা করব? বুদ্ধি বলল, ধুর, মেয়ে আর মিনিবাস— একটা গেলে আরেকটা আসে (কলেজে একটা ছেলের পপুলার ডায়লগ, তাছাড়া তখন উয়োক-জমানা আসেনি, তাহলে এট্টু নারীবিদ্বেষ বাঁচিয়ে বলা যেত: একটা সম্পর্ক একটা গেছে আরেকটা হবে, জীবন পড়ে রয়েছে অযুত-নিযুত, ঘ্যানঘ্যান কীসের?) এর উত্তর: ওগো আমি তো আর সম্পর্ক চাই না, কাউক্কে না, মাধুরী দীক্ষিতও নয়, শুধু ওই ত্বক ওই স্বর, ওই চেনা চরাচর। বুদ্ধির সঙ্গে আমার হৃদয়ের ঝগড়াঝাঁটি লেগেই থাকে, হৃদয়কে গোলটেবিল-বৈঠকে একটু নীচু চোখেই দেখি। সেই বুদ্ধি এবার ফ্যাকফ্যাক হেসে ফেলল। বলল, একটা লোকের সঙ্গে ভালবাসা হয়ে গেছিল বলে তাকে ‘এরে দেখিলে মনে হয় অন্য নারীরা বানরী’ টাইপ কোটেশনে জড়াচ্ছিস? ফ্র্যাংকলি বল তো, এর ফিগার বল্লরীর শরীরের ধারেকাছে? সুছন্দার মুখ ওর চেয়ে ছ’গুণ অপরূপ নয়? পারমিতার ব্যক্তিত্বের চৌকাঠে ও সাতমাইল দৌড়ে পৌঁছতে পারবে? আর মুনমুনের লীলা? ওরে ভাই, মেয়েটি সাময়িক মুগ্ধ হয়েছিল ভাল কথা, কিন্তু প্রাপ্তির আওতার মধ্যে থাকলেই তার মূর্তিতে ফাউ মহিমার রাংতা সাঁটতে হবে কেন? মেয়াদ ফুরিয়েছে, বেদনা হচ্ছে, কিন্তু ড্রামা থামা। এটাকে নয়া স্বাধীনতা দিবস ভাব।

আরও পড়ুন: অনিয়ন্ত্রিত জীবনকে সামাজিক করতে, রিহ্যাবের দিনগুলো খুব জরুরি ছিল আমার মতো অনেকের কাছে! লিখছেন দেবপ্রতিম দাশগুপ্ত…

‘এ পৃথিবী একবার পায় তারে’, কে বললে? মুরোদ থাকলে সতেরোবার পায়, সাতাশিবার পায়। পিকনিকে গিয়ে শুভেন্দু সারি-সারি মেয়ের দিকে কেমন খচাখচ চাউনি হানছিল খেয়াল করেছিস? কিংবা শ্রাবণীদির বাসরে গিটার-সহ সম্মোহন রচছিল ম্যানড্রেকের বাবা অঞ্জন বাগচি? ওই সকল জাদু শিখতে হবে চাঁদু, দৈব প্রসাদে হলিউড রম-কম শুরু হওয়ার সম্ভাবনা কম। শেষপাতে গলা নামিয়ে বলল, মেট্রোয় টিকিট কেটে প্ল্যাটফর্ম থেকে নেমে থার্ড রেল ছোঁয়ার সাহস গজাতে-গজাতে লোকে তোকে পাঁজাকোলা করে ফিরতি টেনে নেবে। আত্মহত্যা করতে গিয়ে ধ্যাড়ানোর গল্প কিন্তু প্রেমে ব্যর্থতার ন্যায় মহতোমহীয়ান ও কাব্য-প্রসবী নয়, আজীবন ব়্যাগিং সইতে হবে, শুধু-শুধু খুঁচিয়ে ঘা বাড়াসনি।

কিন্তু হাতঝাড়া দিলেই তো আর পিঁপড়ে চলে যায় না, অন্য শিরায়-শিরায় বেড়াতে থাকে। হেভি কান্না পেতে লাগল আর হলিউডের ছবির কথাটা ভুলতে না পেরে ঠিক করলাম, চুল কাটতে যাব। বহু ছবিতে বর্তমান জীবন ত্যাগ করে একটা নতুন আমি-তে ঢুকে পড়ার আগে নিজের চুল কেটে ফেলার সিন থাকে। কিন্তু আমি নিজের চুল কাটলে পরের সিনে আর মুখ দেখানো যাবে না, তাছাড়া বড়মামা একবার স্তম্ভিত হয়ে তাকালেও আমার কাঁচি থরথর কাঁপবে (ওঘরে বসে খাতা চেক করছে), তার চেয়ে সেলুন যাওয়াই ভাল। নাপিত সত্যিই অনেকটা চুল ঘসঘসিয়ে কেটে দিল এবং আশ্চর্য, কর্তিত ও বর্জিত চুলের রাশির দিকে তাকিয়ে মনে হল, অনেকটা কষ্ট খসিয়ে ফেলা গেছে। হয়তো খুশকি কিছুটা কমেছিল এবং সুতরাং চিড়বিড়ও।

বেরিয়ে রোদ্দুরে হাঁটতে-হাঁটতে ভাবলাম, তাই তো, কোত্থাও কিছু কম পড়ে নাই। গেরস্থ সমান মনোযোগে বারান্দা হতে গাড়ি-চলাচল দেখছে। একটা বুড়ো টুলে বসে এমন হাই তুলছে যেন হাই তোলাটাই তার সাধনা। একটা শেড-মতো জায়গায় দাঁড়িয়ে মানুষের সাধারণ জীবন নোট করতে লাগলাম। ইস্কুলের সমবেত নামতা, সাইনবোর্ডের ভুল বানান, পাগলের চট, আপিসবাবুর জলদি। সবুজ স্ট্রাইপ ক্ষয়া বালতি থেকে টিউকলের জং-এর গন্ধ অবধি খেয়াল এড়াচ্ছে না এবং ভাবছি বাপরে একটা ক্ষতস্থানের টানা ব্যথা মানুষের নিবিষ্টতাকে কী পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় (রামকৃষ্ণের ধ্যান নিশ্চিত করতে তোতাপুরী কপালে কাচ গেঁথে দিয়েছিলেন), হেনকালে একটি যুগল হেসে পরস্পরের ঘাড়েপিঠে গড়াতে গড়াতে চলে গেল, গলির বাঁকে আঙুল-আঙুল খেলছেও লক্ষ করলাম। যায় কোথা, ফের সানাই (স্যাড ভার্সন) শুরু। ভাবলাম, বাড়ি না ফিরে কাছাকাছি একটা বন্ধুর বাড়িতে ঢুঁ মারি বরং। তার কাছে হৃদয়বেদনা উজাড় করে দিলে নির্ঘাত কিছুটা নিস্তার ঘটবে।

তখন মোবাইল আবিষ্কৃত হয়নি, তাই গিয়ে হয়তো শুনব সে মাসির বাড়ি বেড়াতে গেছে দু’সপ্তা, দুরুদুরু বক্ষে রাস্তা পেরোলাম। ফুটপাথে লাখ-লাখ হকারের দোকান, তাতে বিক্কিরি হচ্ছে বিশ্বের তাবৎ রংবেরং, কাক বক টেপফ্রক, এক-একটা ডালার সামনে আকুল হাঁকডাক ও ব্যাকুল দরাদরি দেখে মনে হয় না একটা জিনিস ঠিকঠাক দামে কিনে ফেলার চেয়ে জরুরি কিচ্ছুটি এ-মহাবিশ্বে বর্তমান। সত্যিই এক্ষুনি লরির সামনে পড়ে মরে গেলে প্রেমের যাতনা ঘুচবে, কিন্তু কত কী কেনা হবে না। সেই সানগ্লাসটা, তারপর একটা পাঞ্জাবি দেখে রেখেছে বাবা খাদি গ্রামোদ্যোগে (পুজোয় দেবে)। ছোটবেলায় একবার মাইমা কিচ্ছু না-বলে মৌরি লজেন্স কিনে আনল, আবার মেসোমশাই গ্যাসবেলুন উড়ে যেতে তক্ষুনি ফের কিনে দিল, তখন কি বুঝিনি নয়া বস্তু করতলগত করার তৃপ্তিই শ্রেষ্ঠ? প্রেম ঘুচে গেলে যে দর্শনের কতগুলো প্রবন্ধের কুঁড়ি শিং গুঁতোতে শুরু করে, দেখে অবাক হয়ে গেলাম। কে যেন লিখেছিল না, প্রেম চলে গেলে রাস্তায় হাঁটার সময়ে মনে হয়, আমি রাজা? সে নিশ্চয় রক্তঝরা হৃদয়ের শহিদ-পনাকে কুর্নিশ জানিয়েছিল, কিন্তু আমার ভেতরের অনবরত ওজনদাঁড়ির আন্দোলন আমার কাছে নিজেকে সামান্য স্পষ্ট করছিল। দেবাশিসদার কথা মনে পড়ল। ফেস্টের শেষে গাঁজা খেতে-খেতে বিলুকে বলেছিল, যাকে ভাবছিস হৃদয়ের তড়পানি, তা আসলে অণ্ডকোষের। মিস করছিস সেক্সের জোগানটা। হয়তো ঠিক। এতটা কষ্ট কি তপ্ত ঘনিষ্ঠতা আর পাব না বলে? মাংসের তেষ্টা?

ক্লাইম্যাক্সে সানি দেওলকে দুটো থামের সঙ্গে বেঁধে রাখায় তিনি এমন টান মারলেন যে ওই দুটো থাম তো বটেই, গোটা বাড়িটাই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল। আমাদের কী বিস্ময় আর উল্লাস! বারবার দেখা হল, একবার স্লো মোশন করে। এইরকম প্রতিশোধ, এমন তুলনাহীন ধ্বংস! দে, সব শেষ করে দে। চতুর্দিক থেকে চাঙড় ভেঙে পড়ুক, ঝাড়লণ্ঠন গুঁড়ো হয়ে যাক, দেওয়াল ধসে বালি-চুনের ঢিপি হয়ে থাক, আকাশ বাতাস টুকরো-টুকরো চুরমার হোক, ধুলো ধোঁয়া আর ক্রোধের ফেনায় কিচ্ছুটি যেন আর বাকি না থাকে। সব মুছে যাক।

বন্ধুর বাড়ি গিয়ে দেখি তার হাসি ধরছে না। বলল, এসেছিস খুব ভাল করেছিস, এক্ষুনি সানি দেওলের সিনেমার ভিডিও ক্যাসেট দেখব সবাই মিলে, আর মা ভুনি খিচুড়ি করেছে। তার গন্ধ অবশ্য বাড়িতে ঢোকার আগে থেকেই পাচ্ছিলাম, এবং এ-জিনিস আগেও খেয়েছি একথালা-দুথালা, নেহাত ভদ্রতা আছে তাই চারহাতপায়ে সাঁটিনি। সানি দেওল শুনে মুখ ব্যাঁকাতে যাচ্ছিলাম, কিন্তু মনে হল, ধুমধাড়াক্কার উপযোগিতা নেই কে বললে? এখন সিনে ক্লাবের আঁতেল ছবিতে লোকজন চেকোস্লোভাকিয়ার ভাষা আওড়াচ্ছে আর তাদের পদতলে ফকফকে ইংরেজি সাবটাইটেল ফুটে উঠছে দেখলে মন বুঁদ হত, না ভাবনা-ব্যায়াম করতে রুখে উঠত? এবং সত্যিই, বন্ধু, বন্ধুর দাদা, বউদি, বাবা, মা, ছোটকাকা এবং কাজের লোক দু’জন মিলে ছবি দখতে বসার যে কী আমোদ! ছবিটা সিরিয়াস নয় বলেই যা খুশি মন্তব্যও করা যায়, তাতে হেসে গড়ানোও যায়, আবার রিওয়াইন্ড করে ঝাড়পিটগুলো দেখেও নেওয়া যায়। ভাই, মারছিল কী! হাত নয়তো, গদা। সবচেয়ে ভাল লাগছিল, মারের বিরাম নেই, কোনও ক্ষমাই নেই। মারো, শুধু মেরে যাও।

আমার ভেতরটা যেন প্রতিটা ঘুষিতে, কিল-চড়ে, ধমক ও গর্জনে, উথলে উপচে উঠছিল। মনে হচ্ছিল, যারা-যারা আমার প্রতি অন্যায় করেছে, তারা যেন ঠিইইক এইরকম জীবন-প্রহার খায়। না না, আমি নির্দিষ্ট কারও কথা বলছি না, কাল অবধি যার সর্বৈব ভাল চেয়েছি আজ তার ক্ষতি কামনা করা তো বেদম অভব্যতা, কিন্তু ওই আর কি, ১৩ তারিখের ট্যাক্সিওলাটা আর গত সেপ্টেম্বরের নাটক-দেখতে-আসা লালচোখো লোকটা, আর কেউ যদি আমার মূল্য না দিয়ে গোটা আমিটাকে দলা পাকিয়ে ছুড়ে দিয়ে থাকে, মানে আমার মতো মানুষ তো আর কোনওদিনও জুটবে না, কে আসলে ঠকল ভগবান বুঝিয়েই ছাড়বেন আজ নয় কাল, যাকগে, ইন্টারভ্যাল হতেই ভুনি খিচুড়ি। খেতে বসে রসিকতা, টিপ্পনী, খ্যাপানো, বড়জ্যাঠার সঙ্গে হেমন্তর দেখা হয়েছিল সেই গল্পটা (আগে ১৭৬ বার শোনা), আমিও দুটো হাসির কথা বললাম, আর মাসিমার ডেকচি প্রায় মধুসূদনদাদার ভাঁড়, সঙ্গে আবার কী একটা ঝাল-ঝাল আচার। খেয়ে উঠে ভাজা মশলা চিবোতে-চিবোতে চোখ জুড়ে আসছিল গোড়ায়, বোধহয় তা বুঝেই সানি দেওল আরও ধুন্ধুমার শুরু করলেন। আমার আর বন্ধুর তর্ক চলছিলই, বাড়িটা বানানো সেট না আসল কংক্রিট, আমি বলেছিলাম এত বড় প্রাসাদের সেট বানাতে গেলে ওতেই বাজেট ফুড়ুৎ (এবং তা ছোটকাকার সমর্থনও পেয়েছিল), কিন্তু ক্লাইম্যাক্সে সানি দেওলকে দুটো থামের সঙ্গে বেঁধে রাখায় তিনি এমন টান মারলেন যে ওই দুটো থাম তো বটেই, গোটা বাড়িটাই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল। আমাদের কী বিস্ময় আর উল্লাস! বারবার দেখা হল, একবার স্লো মোশন করে। এইরকম প্রতিশোধ, এমন তুলনাহীন ধ্বংস! দে, সব শেষ করে দে। চতুর্দিক থেকে চাঙড় ভেঙে পড়ুক, ঝাড়লণ্ঠন গুঁড়ো হয়ে যাক, দেওয়াল ধসে বালি-চুনের ঢিপি হয়ে থাক, আকাশ বাতাস টুকরো-টুকরো চুরমার হোক, ধুলো ধোঁয়া আর ক্রোধের ফেনায় কিচ্ছুটি যেন আর বাকি না থাকে। সব মুছে যাক।

ফেরার সময়ে বাসে খুব হাওয়াও আসছিল, বসার জায়গা পেয়ে একটু আরামও হচ্ছিল। কান্নাটা সামান্য ঘাই মারছিল, কিন্তু আমি (বুদ্ধির সঙ্গে বসে) একটা স্ট্র্যাটেজি ছকে ফেলছিলাম। জানতাম, রাতে বিছানায় অসহ নরকের গর্তে পড়ে যাব, ওখানে স্রেফ হৃদয়ের রাজত্ব, কাল নিশ্চয় অমুক বন্ধুকে বলব ‘ওরে লওকে প্লিজ একটু বোঝা’, তমুক বন্ধুকে বলব ‘এই চিঠি যে লিখতে পারে সে কোন প্রাণে এমন করল’। ভয় হচ্ছিল, বিলাপ প্রলাপ মিনতি দীনতা টানা চলবে এবং লোকে আমায় দেখলে রাস্তা পেরিয়ে পালাবে। কিন্তু এই সিনারি যাতে সাড়ে-সত্য না হয়, জিভের স্বাদ ও নিজেকে চিমটি কেটে ঠা-ঠা হেসে ওঠার ক্ষমতা যাতে শুকিয়ে না যায়, তাই ঠিক হল: একদিকের ক্রাচ বন্ধু, অন্যদিকের ক্রাচ সিনেমা-নাটক। নিজেকে ঝুঁটি ধরে ডুবিয়ে দেব আড্ডায় আর হ্যারিসন ফোর্ডের অ্যাকশনে। আর সত্যি, ঈশ্বরের সেরা সৃষ্টি এই এসপ্ল্যানেড ও হাতিবাগান, অ্যাকাডেমি ও গিরিশ মঞ্চ। সমুদ্রের মতো, প্রতিদিনের পসরা, এতটুকু কামাই নেই। এ যে একটা অমোঘ আড়াল, মুখ গুঁজে দেওয়ার পালক-বালিশ, হৃদিফোড়া ঢেকে রাখার প্রকৃষ্ট পুলটিশ, কে জানত? আর অবশ্যই তাঁর সেরা-তর সৃষ্টি বন্ধু। বিশেষত ছেলেবন্ধু। যাদের মুখের কোনও আগল নেই, নৈতিক ঠিকতার বালাই নেই, সন্ত-শয়তান বাছবিচার নেই, এক্ষুনি কড়া কথা বলে হৃদয়ে কড়া ফেলে দিচ্ছে তো পরমুহূর্তে প্রশ্রয়ের চোটে তুলোয় মুড়ছে, যাদের নাওয়া নেই খাওয়া নেই শুধু সঙ্গ দেওয়া আছে, বাড়িঘর ছেড়ে যারা ‘আসবি?’ শুনলেই পাজামা লুটিয়ে পথে নেমে আসে ও টিটকিরি নিকনেম পাত্তা না দিয়ে কাঁধে হাত রেখে অনন্ত হাঁটে, কান্নাফোঁটাদের নেড়ঘেঁটে ধামসে খামচে থেঁতো করে দেয়। যারা ‘ন্যাকা!’ ঝাঁঝিয়ে উঠলে উচ্ছ্বসিত যন্ত্রণাও মুখ লুকোতে পথ পায় না, আর ‘ধুর শালা, তুই ভ্যানরভ্যানর ছেড়ে ওই বেঁটে মেয়েটার সঙ্গে ভিড়ে যা না’ পরামর্শ দিলে চমকে ভাবতে হয়, কী করে সবে-শুরু মনোবাঞ্ছা পড়ে ফেলল? প্রেম কেড়ে নেওয়ার তরবারি যেমন কতটা ছেদ করে যায় বোঝা যায় না, তেমনি আরোগ্য-কাণ্ডের কোলকুঁজো স্টান্স এবং ভিটভিটে রেলাও তার তুখড় খেলা আবডালে রাখে। আগে কে জানত, তেড়ে ফুচকা খেয়ে নিলেই যে-জ্বালাটা ধরে, তেঁতুলজল আর অশ্রুজলে তফাত গুলিয়ে যায়!