ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2025

 
 
  • মধুফাঁদ

    আদিত্য ঘোষ (May 22, 2025)
     

    ‘হানি ট্র্যাপ’ শব্দটার মধ্যেই কেমন একটা মায়া আছে! শুনলেই যেন পিছলে পড়তে হয়। যারা পড়েছে, তারা জানে, পিছলে পড়লে কেমন লাগে। আর এ তো যে সে পিছলে পড়া নয়, একেবারে মরণফাঁদ! মিষ্টি কথা এবং যৌন সুড়সুড়ি যে কী ভয়ানক কম্বিনেশন হতে পারে— তার সাক্ষী আছে ইতিহাস থেকে আজকের ডিজিটাল যুগ। হানি ট্র্যাপের সংজ্ঞা আপনি নেট ঘাঁটলেই পেয়ে যাবেন। তবে হানি ট্র্যাপের চাঁচাছোলা বাংলা হল— ফাঁদ। যে ফাঁদ আপনার সর্বস্ব লুটেপুটে নিতে পারে। যে খাদ আপনাকে এক মুহূর্তে বহুতল থেকে মাটিতে ছুড়ে ফেলতে পারে। যে মায়া আপনাকে নেশায় বুঁদ করে রাখতে পারে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শুধু কৌশল বদলেছে, বাকি আদর্শটা এখনও একই আছে। হানি ট্র্যাপ আজও আপনার সর্বস্ব লুটে নেওয়ার সেরা পন্থা। 

    ‘হানি ট্র্যাপ’ বলতে বোঝায়, প্রেম, যৌনতা বা রোম্যান্টিক আকর্ষণের মাধ্যমে কাউকে জালে ফেলে তার কাছ থেকে গোপন তথ্য, অর্থ, রাজনৈতিক সুবিধা বা নিয়ন্ত্রণ আদায় করা। এটি একটি বহুল-ব্যবহৃত গোয়েন্দা ও সাইবার অপরাধ কৌশল, যার গোড়ায় থাকে মানুষকে মনস্তাত্ত্বিকভাবে দুর্বল করার উপায়। ইতিহাসের পাতা ঘাঁটলে এইরকম নিদর্শন অনেক পাওয়া যাবে। মহাভারতেও হানি ট্র্যাপের উদাহরণ পাওয়া যায়।  দ্রৌপদী ছিলেন পাঞ্চাল রাজা দ্রুপদের কন্যা। তিনি স্বয়ংবর সভায় পাণ্ডবদের মধ্যে অর্জুনকে বর হিসেবে বেছে নেন। এরপর পরিস্থিতির পরিণতিতে তিনি পঞ্চপাণ্ডবের সকলের স্ত্রী হন, যা মহাভারতের একটি জটিল সামাজিক ও ধর্মীয় ব্যাখ্যার বিষয়। আধুনিক আলোচক বা সমালোচক দ্রৌপদীর আচরণ, বিশেষ করে কৌরবদের প্রতি তার প্রতিক্রিয়া ও ভূমিকা (বিশেষ করে পাশা খেলায় হারার পরের ঘটনা) বিশ্লেষণ করে প্রশ্ন তোলেন যে, তিনি কি ইচ্ছাকৃতভাবে কুরুবংশকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিয়েছিলেন? কেউ কেউ বলেন, তার অপমানই কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের প্রধান ইন্ধন ছিল।

    আরও পড়ুুন : টিনটিনের অভিযানে লেগে পবিত্র বীরত্বের ছোঁয়াচ! লিখছেন সৌকর্য ঘোষাল…

    প্রাচীন বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত ‘হানি ট্র্যাপার’ বলা যায় ক্লিওপেট্রাকে। রোমান সাম্রাজ্যের দুই প্রভাবশালী পুরুষ জুলিয়াস সিজার ও মার্ক অ্যান্টনির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কেবল প্রেম ছিল না, ছিল কূটনীতি, সাম্রাজ্য রক্ষা ও প্রভাব বিস্তারের কৌশল। ডাচ নৃত্যশিল্পী ও দেহোপজীবিনী ‘মাতা হারি’ ছিলেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মান গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে কাজ করা একজন বিখ্যাত হানি ট্র্যাপার। তিনি বহু ফরাসি ও ব্রিটিশ সেনা অফিসারকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে তথ্য বের করতেন। শেষপর্যন্ত তাঁকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। সোভিয়েত ইউনিয়নের কেজিবি ও মার্কিন সিআইএ মিলে হানি ট্র্যাপ-সংক্রান্ত একটি প্রতিষ্ঠিত টুল বানায়। বহুবার বিদেশি কূটনীতিক বা সেনা কর্মকর্তাকে সোভিয়েত তরুণীদের মাধ্যমে ফাঁদে ফেলে তথ্য বের করা হয়। এমনই এক ঘটনার শিকার হয়েছিলেন ব্রিটিশ এমআই৫ অফিসার জন ভাসসাল, যিনি সমকামী সম্পর্কের ফাঁদে পড়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের হাতে তথ্য তুলে দেন।

    এবার আসা যাক আজকের দুনিয়ায়। যখন হানি ট্র্যাপের বিভিন্ন কৌশল এবং সুবিধা বেড়েছে। সমাজমাধ্যমের দৌলতে হানি ট্র্যাপ এখন খুব সহজলভ্য। ভারতের নৌ-সেনার সাতজন অফিসারকে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই সমাজমাধ্যমে হানি ট্র্যাপ করেছিল। এছাড়াও জানা গিয়েছে, পাকিস্তানি নারী সেজে তৈরি করা একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ‘অনু খান’ নামে বিএসএফ-এর এক জওয়ানকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে। জওয়ান সেনার গোপন তথ্য ও ছবি পাঠিয়েছিল। পরে এনআইএ তদন্তে বের হয়, এটি একটি আইএসআই অপারেশন। এছাড়াও ডিআরডিও-র একজন শীর্ষ বিজ্ঞানী সমাজমাধ্যমে এক ‘ডিফেন্স জার্নালিস্ট’ পরিচয়ধারী পাকিস্তানি মহিলার প্রেমে পড়ে সেনা-সংক্রান্ত তথ্য পাঠিয়েছিলেন। মহিলার ফেক পরিচয় ছিল এবং হানি ট্র্যাপটি পরিচালনা করছিল আইএসআই।

    রাজস্থানের জয়সলমীর ও বিকানের অঞ্চলে কর্মরত দুই পুলিশ অফিসার পাকিস্তানি মহিলাদের ফেক প্রোফাইলের প্রেমে পড়ে সেনা মুভমেন্ট সংক্রান্ত তথ্য পাঠিয়েছিলেন। সম্পর্ক হয়েছিল টিন্ডার ও ফেসবুকের মাধ্যমে। আরও জানা যায় যে, এক জওয়ান ‘আলিশা’ নামে এক নারীর ভিডিও কলে নগ্নতা দেখার পর নিজের অনলাইন কনটেন্ট পাঠান। পরে সেটি স্ক্রিন রেকর্ড করে ব্ল্যাকমেইল করা হয়। তদন্তে জানা যায়, ‘আলিশা’ ছিল পুরুষদের একটি চক্র, যারা অর্থ আদায় করে। এক ভারতীয় সেনা অফিসার ইনস্টাগ্রামে একজন মডেলের প্রেমে পড়েন। তাকে গোপন কৌশলগত তথ্য দেন। পরে তদন্তে বের হয়, প্রোফাইলটি একটি পাকিস্তানি অপারেটরের, ছবিগুলি ছিল ইন্টারনেট থেকে নেওয়া। এইরকম ঘটনা এখন হামেশাই ঘটছে।

    আজকের বিশ্বের রাজনৈতিক, গোয়েন্দা কিংবা কর্পোরেট যুদ্ধক্ষেত্রে ‘হানি ট্র্যাপ’ শব্দটি যেন এক রহস্যময় অস্ত্রের নাম। তবে বাস্তবে এটি শুধু যৌন প্রলোভনের কোনও রূপকথা নয়। বরং, এটি একপ্রকার জটিল মনস্তাত্ত্বিক ফাঁদ, যার মূল লক্ষ্য হল, কাউকে মানসিকভাবে দুর্বল করে তার কাছ থেকে তথ্য, নিয়ন্ত্রণ কিংবা প্রভাব আদায় করা।

    জ্যোতি মালহোত্রা একজন ভারতীয় ইউটিউবার এবং ট্রাভেল ভ্লগার, যিনি ‘ট্র্যাভেল উইথ জো’ নামে একটি জনপ্রিয় ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করতেন। তাঁর চ্যানেলে ভ্রমণ-সংক্রান্ত ভিডিও আপলোড করে তিনি প্রায় ৩.৮৫ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার অর্জন করেছিলেন। তবে সম্প্রতি তিনি পাকিস্তানের জন্য গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন। মে মাসে, হরিয়ানার হিসার থেকে জ্যোতি মালহোত্রাকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে ভারতের সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংবেদনশীল তথ্য ফাঁস করেছেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’ ও ভারতীয় ন্যায় সংহিতার বিভিন্ন ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। জ্যোতি মালহোত্রা ২০২৩ সালে প্রথমবার পাকিস্তান সফর করেন, যেখানে তিনি পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেন। তদন্তে জানা গিয়েছে, তিনি পাকিস্তানের হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন এবং বিভিন্ন হাই-প্রোফাইল পার্টিতে অংশগ্রহণ করতেন। শোনা যাচ্ছে, পাকিস্তানের এক গোয়েন্দা হানি ট্র্যাপের কৌশলে তাকে ফাঁদে ফেলেছেন। জ্যোতি বেশ কয়েকবার বাংলায় এসেছেন। এর আগেও একজন মহিলা পাকিস্তানের চরবৃত্তির শিকার হয়েছেন। মাধুরী গুপ্ত ২০১০ সালের কূটনৈতিক গুপ্তচরবৃত্তির মামলার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, যেখানে তিনি পাকিস্তানের জন্য গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন এবং ২০১৮ সালে দোষী সাব্যস্ত হন। উভয় ঘটনাই ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকির ইঙ্গিত দেয় এবং সামাজিক মাধ্যমের মাধ্যমে গুপ্তচরবৃত্তির নতুন মাত্রা তুলে ধরে ।

    স্প্যারো-রাই ঘটিয়েছিল হানি ট্র্যাপের সূত্রপাত! ‘রেড স্প্যারো’ ছবির দৃশ্যে জেনিফার লরেন্স

    আজকের বিশ্বের রাজনৈতিক, গোয়েন্দা কিংবা কর্পোরেট যুদ্ধক্ষেত্রে ‘হানি ট্র্যাপ’ শব্দটি যেন এক রহস্যময় অস্ত্রের নাম। তবে বাস্তবে এটি শুধু যৌন প্রলোভনের কোনও রূপকথা নয়। বরং, এটি একপ্রকার জটিল মনস্তাত্ত্বিক ফাঁদ, যার মূল লক্ষ্য হল, কাউকে মানসিকভাবে দুর্বল করে তার কাছ থেকে তথ্য, নিয়ন্ত্রণ কিংবা প্রভাব আদায় করা। এই ফাঁদের ভেতরে রয়েছে গভীর নিউরো-কেমিক্যাল প্রক্রিয়া, আবেগের কৌশল, সামাজিক আচরণ এবং মানুষের ‘আমি নিরাপদ’ বোধকে ধ্বংস করার নির্মম গেমপ্ল্যান।

    মানুষ যখন প্রশংসিত হয় বা কারও কাছ থেকে আকর্ষণ, মনোযোগ বা ঘনিষ্ঠতা পায়, তখন তার মস্তিষ্কে ডোপামিন নামক রাসায়নিক নিঃসৃত হয়। এই ডোপামিনই আমাদের আনন্দ দেয়, আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং কাউকে বিশেষ মনে করার বোধ তৈরি করে। হানি ট্র্যাপার ঠিক এই অনুভবকেই পুঁজি করে। তারা প্রাথমিকভাবে এক প্রকার মোহের পরিবেশ তৈরি করে—যেখানে সম্পর্ক, ঘনিষ্ঠতা বা রোমান্টিক আগ্রহ আস্তে আস্তে গড়ে ওঠে। এই পর্বে, টার্গেট মনে করে, যেন সে কাউকে পেয়েছে, যে তাকে গুরুত্ব দিচ্ছে, ভালবাসছে, বুঝছে। কিন্তু সেই বোঝাপড়ার ভিতটা আসলে তৈরি হয় উদ্দেশ্যমূলকভাবে। একবার এই ঘনিষ্ঠতা তৈরি হলে, মানুষের মস্তিষ্কে অক্সিটোসিন নামে এক বিশ্বাস তৈরির হরমোন নিঃসরণ হয়। এই রাসায়নিক মানুষকে সংযুক্ত করে ফেলে, যেমনটি ঘটে মায়ের সঙ্গে সন্তানের বা প্রেমিক-প্রেমিকার সম্পর্কে। একজন হানি ট্র্যাপার এই মনস্তাত্ত্বিক অবস্থাকে কাজে লাগিয়ে টার্গেটকে নিজের ওপর নির্ভরশীল করে তোলে। টার্গেট ধীরে ধীরে সেই ব্যক্তির সঙ্গে মানসিকভাবে এমনভাবে জড়িয়ে পড়ে যে, সত্য-মিথ্যের পার্থক্য হারাতে শুরু করে। হানি ট্র্যাপার টার্গেটের পছন্দ-অপছন্দ, রুচি, বিশ্বাস ইত্যাদিকে নকল করে, যাতে তার মনে হয়, ‘এই মানুষটা তো একদম আমার মতো!’ এই বিশ্বাস তাকে করে আরও দুর্বল, আরও আত্মসমর্পণকারী। এমন সম্পর্ক তখন আর যৌনতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না— বরং হয়ে ওঠে এক ধরনের মানসিক দখল। এই জায়গা থেকেই শুরু হয় নিয়ন্ত্রণের খেলা। একবার যখন কোনও ঘনিষ্ঠ ছবি, গোপন তথ্য, কথোপকথন বা সম্পর্কের প্রমাণ হানি ট্র্যাপারের হাতে এসে যায়, তখন সেই ব্যক্তিকে ব্ল্যাকমেইল বা ভয় দেখানোর সুযোগ তৈরি হয়। মানব-মস্তিষ্ক এমনিতেই ক্ষতি বা সম্পর্ক হারানোর আশঙ্কায় দুর্বল হয়ে পড়ে— একে বলে লস অ্যাভারসন। ফলে টার্গেট তখন সত্য-অসত্য বা নৈতিকতার তোয়াক্কা না করে সেই ব্যক্তির কথামতো কাজ করে, যাতে সম্পর্ক বা সম্মান নষ্ট না হয়। আজকের ডিজিটাল যুগে হানি ট্র্যাপ আরও জটিল এবং বিপজ্জনক রূপ নিচ্ছে। ফেক ফেসবুক প্রোফাইল, ভিডিও কল, রেকর্ডেড ক্লিপ, কিংবা প্রেমের নাটক সাজিয়ে অনেক সময় সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সেনা, আমলা, রাজনীতিক— সবাই এই ফাঁদে পড়ে যাচ্ছেন। ভার্চুয়াল ঘনিষ্ঠতা আর বাস্তবের মধ্যে যখন সীমারেখা ঘোলা হয়ে যায়, তখন তা ভয়াবহ রকমের ধ্বংস ডেকে আনতে পারে। এর ফল কখনও হয় আত্মহনন, আবার কখনও রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার মতো অপরাধ।

    হানি ট্র্যাপ মোকাবিলায় নির্মিত বিজ্ঞাপন

    তবে এই প্রক্রিয়াটি শুধুই নারীদের দিয়ে ঘটানো হয় না। পুরুষ হ্যানিট্র্যাপারও থাকে, যারা নারীদের বা অন্য পুরুষদের টার্গেট করতে পারে। ফলে এটিকে কোনও নির্দিষ্ট লিঙ্গ বা চরিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা এক ধরনের সামাজিক ও নৈতিক সরলীকরণ, যা বাস্তবের হানি ট্র্যাপের জটিলতাকে আড়াল করে।

    তবে একটা সময় এই ধরনের ফাঁদ পাতা হত সুকৌশলে। অনেক পরিকল্পনা করে। বিদেশে রীতিমতো এইসবের ট্রেনিং হত। যেমন, ‘স্প্যারো’। গুপ্তচরবৃত্তির পরিভাষায়, ‘স্প্যারো’ শব্দটি এমন নারী গুপ্তচরদের বোঝাতে ব্যবহৃত হয়, যারা যৌন আকর্ষণ বা সম্পর্কের মাধ্যমে টার্গেটদের কাছ থেকে গোপন তথ্য সংগ্রহ করেন। এই কৌশলটি বহু বছর ধরে বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলির দ্বারা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অনেক রিপোর্ট ও সূত্র অনুযায়ী, ‘স্প্যারো’-র পিছনে পাকিস্তানের আইএসআই বা চীনের এমসস-এর মতো শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থার হাত থাকতে পারে।

    কিন্তু এখন আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে এই ফাঁদ পাতা হচ্ছে। ইদানীং, ভুয়ো নম্বর থেকে ফোন আসা, ডিজিটাল অ্যারেস্ট, সেক্স টেপ বানিয়ে হুমকি, ব্যক্তিগত ছবি ভাইরাল করে দেওয়ার প্রবণতা আমাদের সামাজিক অঙ্গ হয়ে উঠেছে। হানি ট্র্যাপ আজ শুধুই গুপ্তচরদের খেলা নয়, এটা এক ধরনের সামাজিক, প্রযুক্তিগত ও মানসিক যুদ্ধ। এটা আমাদের ব্যক্তিগত সীমা, বিশ্বাস, সম্পর্ক সবকিছুকে ব্যবহার করে। তাই শুধু সেনা বা রাজনীতি নয়, সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে। 

     
      পূর্ববর্তী লেখা
     

     

     



 

Rate us on Google Rate us on FaceBook