কয়েকটি কবিতা
১
তোমার প্রতিভা আছে, আমাদের শ্রমবিভাজন।
রুটিতে দাবির কথা লিখে রাখি, রুমালে প্রেমের
তোমাকে দিয়েছি তবু মিছিলে হারিয়ে যাওয়া মন…
এ-বিরোধে বাঁধা পড়ে পৃথিবীরও দিন গেল ঢের।
২
ব্যথাকে বাজার দিয়ে হাঁটিয়ে এনেছি ভোর-ভোর
বিরহ বন্ধক রেখে এনেছি শুকনো ফুল কিছু
এখানে শোকের জামা বিক্রি হয়, এমনই শহর
তাকানো যেমনই হোক, চাহনি চোখের চেয়ে নীচু
৩
বাড়ির বারান্দা নয়, আসলে তা দুঃখের প্রকাশ।
আসলে বেরিয়ে আসা বুক ঠেলে ব্যর্থতার বোধ।
যে-গাছ লতিয়ে ওঠে, সে জানে সকল হা-হুতাশ,
বাকি যা অপারগতা, সেটুকু মুছিয়ে দেয় রোদ।
৪
কত পিশাচের মন রঙিন করেছি ভালবেসে
কত হরিণের চোখ করেছি খেলার ছলে প্রিয়…
এখন হয়েছি থিতু আগুন ভাঙানো মহাদেশে
তোমার দরিয়া যদি পারো তবে আমাকে পাঠিও।
৫
এবার বন্দরে কোনও হাওয়া নেই। নাবিকেরা মৃত।
পাখির পুরনো ডাক কেবল আকাশে বিঁধে আছে…
যা কিছু কথার ছল, সবই যেন বিষাদজনিত
মানুষ অতীতহারা। জাহাজের স্মৃতিরা ছোঁয়াচে।
৬
সিম্ফনি দূরের বন্ধু, বেজে ওঠে বেদনার মতো
একাকী পিয়ানো তার যেন-বা না-পাঠানো কবিতা
যে-আমি কেবল শ্রোতা, দিয়েছি প্রবেশমূল্যে ক্ষত—
তাকে তুমি সুর দিলে, এটুকু তোমার পারমিতা।
৭
তারাপাহারার কাজে সারারাত জেগেছে আকাশ
জেগেছে শরীর থেকে ধূমকেতু ছাড়ানোর কাজে
এখন জুয়ার লোভে ছড়িয়েছে মেঘেদের তাস…
যদি কেউ জিতে ফেরে শেষ বাজি, কুহকসমাজে!
৮
মৃত্যুর পরে যে-ফুল, তারও দরদাম করে লোকে
তুমি কম কথা বলো, আমিও হিসেব করে কাঁদি
কালো ছাতা মুখ ঢাকে, চশমায় ঢেকে যায় চোখ…
সব শেষে পড়ে থাকে নীরবতা, বাতাস, সমাধি।