সাংঘাতিক ক্ষতি হয়ে গেল! শুধুই সংগীতের ক্ষেত্রে নয়, দেশের জন্যও। কারণ ও ভারতের একজন ‘স্টার’ ছিল, নিঃসন্দেহে। এই দেশকে ও বাণিজ্য যেমন দিয়েছিল, তেমনই শিক্ষাও দিয়েছিল, পরের প্রজন্মের জন্য রেখে গিয়েছে রসদ। এরকম প্রতিভা তো ক্ষণজন্মা! আমরা বন্ধুর মতোই ছিলাম। একসঙ্গে বাজিয়েওছি। কাল থেকে ওঁর অসুস্থতার খবর পেয়েই মনটা ভীষণ ভারাক্রান্ত হয়ে ছিল, তারপর তো এই নক্ষত্রপতন।
শরীরের ওপর অসম্ভব অত্যাচার করত জাকির। স্বাস্থ্য নিয়ে একদম সচেতন ছিল না। আমরা জানতাম সেকথা। খুবই চাপ নিয়ে ও ইন্টারন্যাশনাল ট্যুরগুলো করত। কয়েকবছর আগেই ওর হার্টে স্টেন্ট বসেছিল। তারপরেও এতগুলো ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইটে যাতায়াত করে গিয়েছে, সেটাই আর সহ্য হল না ওর। এই ধরনের ফ্লাইটে শরীরের ওপর খুবই চাপ পড়ে। এই ধকলটা অনেকটাই ক্ষতি করেছিল ওর। আমি নিজে ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইটে যাতায়াত করা কমিয়ে দিয়েছিলাম, ওকেও বারণ করেছিলাম। ও বলেছিল, ‘চতুর্দিক থেকে এত ডাকাডাকি করে, না বলতে পারি না। সকলেই তো আমার বন্ধুর মতো। যাতায়াত কমাতে পারলে তো ভালই হত।’
আন্তর্জাতিক স্তরে বাজানোটা ও বজায় রেখে গিয়েছিল। আমিও কিছু ফিউশন বাজিয়েছি। কিন্তু জ্যাজ বা ফিউশনটা ও চালিয়ে গিয়েছে। পশ্চিমি সংগীতের সঙ্গে একটা যোগাযোগ ও রেখেই গিয়েছে। রবিশংকরজির পরেই ওর এই আন্তর্জাতিক খ্যাতিটা ছিল। ও পশ্চিমি সংগীতকারদের সঙ্গে কাজ করেছে টানা। ‘হিট অ্যান্ড ডাস্ট’ বা ‘দ্য পারফেক্ট মার্ডার’-এর মতো কিছু ছবিতেও কাজ করেছে।
অসময়ে চলে গেল। তবে ঈশ্বরের ওপর ভরসা রাখি, হয়তো ওর প্রতিভাকে আবারও তিনি ফিরিয়ে আনবেন কোনওভাবে।
(সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে অনুলিখিত)