কয়েকটি কবিতা
কাঞ্চন
কে কাঞ্চন কুড়িয়ে নিলো অসাবধানী
বিলাসখানি তোড়ি’র মতো নিরক্ষর…
পাহাড়ি গ্রামে বড় অভাব জোনাকিদেরও
সন্ধে যেন গরিবদের স্বয়ংবর।
সাজাই তাকে রাত্তিরের খানিক পরে
যেখানে থাকে বিরহদের গুঞ্জরন
নতুন কনে দেখবে ব’লে গাছেরা আসে।
আলো তখন লজ্জাহীন পান্থজন।
যে কাঞ্চন কুড়িয়েছিল, পরাগধানী
তাকে সবাই ভেবেছে চোর, খারাপ লোক
তারও যে প্রেম আটকে আছে চিঠির মতো
তারও ছুটির খামে খরচ আরণ্যক।
আদতে মন এখানে খোঁজে সরাইখানা।
সস্তা দরে দেখার মতো সূর্যোদয়।
কিছু মানুষ বাধ্য থাকে রাস্তা নিতে।
অন্য কিছু হতে না-পেরে পথিক হয়।
কুচি
তরুণদের বালিশে ওড়ে চাঁদের কুচি।
যেন সে কোনও খুচরো আভা। নখের দাগ।
নীল দোতলা জানলা থেকে ঝাঁপায় কারা…
অল্প ভাড়া মেসের ঘর। গোলাপবাগ।
স্বপ্নে আসে ফেরতচিঠি। গ্রামের বাড়ি।
ক্ষুণ্ণ কোনও গাছের নাম, ফুলের দোষ।
প্রেমের চেয়ে কাছের কেউ বেকারভাতা।
হৃদয় নয়। মিছিল চায় অসন্তোষ।
‘তফাত যাও’ চেঁচায় তবু পাহারাওলা।
তারুণ্যের সঙ্গী হয় চিবুক। খুর।
এই চাদরে আটকে ছিল তোমারও আলো…
এখন ভাঁজ করায় রাত অনেক দূর।
এক কাগজ ভাগ করেই সকলে পড়ে।
সেখানে আজও তোমার কোনও খবর নেই।
তরুণদের বালিশ যায় কবরখানা…
খবরে তুমি দেখতে পাবে, অনেককেই।
শাড়ি
এসব দিনে অপেক্ষারও বয়স বাড়ে।
তোমাকে চিনি শাড়ি তোলার ব্যস্ততায়।
কী অহমিকার রৌদ্র নাও আঙুলে বেঁধে…
শরীর থেকে অতীত নাম ছিটকে যায়।
আমার পাড়া অন্যদিকে। জীবনও ছোট।
সানাই থেকে ডানদিকের রাস্তা ভাগ।
বিদেশ থেকে আসেনি কোনও চিঠি কখনও।
রেডিও জানে, মনের নাম মারুবেহাগ।
আসা-যাওয়ার পথে অথচ পলকহারা।
চিলেকোঠাও তোমার চোখে কী ভাসমান!
রিক্সা কোনও খেলনা যেন। পথিকপ্রিয়।
এনেছি এই রাংতা মোড়া মাঝির গান।
এসব রাতে অপেক্ষার দুঃখ একা।
দূরের গ্রহ গড়িয়ে দেয় মাতাল সুর…
তোমাকে চিনি শাড়ি ভাঁজের উষ্ণতায়।
আমার থেকে তোমার পাড়া অনেক দূর।