এক দেওয়ালের তফাতে
একটা সুখী আর সম্পন্ন পরিবার। পাঁচ ছেলেমেয়ে, কর্তা ও গিন্নি। অপূর্ব নদীর ধারে তাদের পিকনিক। ফিরে আসতে-আসতে গাড়িতে সন্তানদের নির্মল খুনসুটি। তারপর দম্পতির মধ্যে একটা ভ্রমণের স্মৃতিরোমন্থন আর আবার বেড়াতে যাওয়ার স্বপ্ন বয়ন। আশ্চর্য তকতকে তাদের ঘরদোর, ভীষণ সুন্দর বাগান, নধর ফুল, স্বচ্ছ সুইমিং পুল। সব মিলিয়ে গোটা পরিবারে বৈভব, লাবণ্য ও প্রসন্নতা আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে। প্রচুর চাকর-বাকর সারাক্ষণ কাজ করে চলেছে, অপূর্ব রান্না হচ্ছে, বন্ধুরা বেড়াতে আসছে, কোথাও হাসি ও খুশির এতটুকু অভাব নেই। কোত্থেকে কে জানে হঠাৎ অনেকগুলো জামাকাপড় আসে, গিন্নি সেগুলো দাসীদের মধ্যে বিলিয়ে দেন, তারপর নিজে একটা সাংঘাতিক দামি পোশাক গায়ে চড়িয়ে দেখতে-দেখতে সেটার পকেটে একটা লিপস্টিক আবিষ্কার করেন, সেই পূর্ব-ব্যবহৃত লিপস্টিক দিব্যি ঠোঁটে লাগানও। পরে অনেকজন মহিলার কথাবার্তায় আমরা বুঝতে পারি, এই সমস্ত পোশাক আসলে ইহুদিদের। তা নিয়ে হাসাহাসিও হয়, কোন গৃহিণী একবার একটা ইহুদির পোশাক পছন্দ করে পরতে গিয়ে দেখেন সেটা খুব আঁটো হচ্ছে, বা কোন গৃহিণী একজন ইহুদির মাজনের মধ্যে লুকিয়ে রাখা হিরে পেয়েছিলেন, তারপর থেকে অনেকগুলো মাজনের অর্ডার দিয়েছেন। ক্রমে আমরা বুঝতে পারি, এই পরিবার আউশউইৎজ কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের মূল কর্তার পরিবার। এই বাড়ির লাগোয়া পাঁচিলের ঠিক পাশেই ক্যাম্প, যেখানে প্রতিদিন ট্রেনে করে হাজার-হাজার ইহুদিকে আনা হচ্ছে এবং খুন করা হচ্ছে।
কিন্তু সেটা তো কর্তার ‘অফিস’। পরিচালক আমাদের সারাক্ষণ দেখান তাঁর বাড়ি। কর্তা ক্যাম্প থেকে ফিরে আসামাত্র তাঁর জুতো একজন ইহুদি তাড়াতাড়ি পরিষ্কার করে দেয়, আর তিনি ঘরে বসে নিমগ্ন থাকেন কয়েকজনের সঙ্গে গম্ভীর আলোচনায়: কী করে আরও বড় একটা গ্যাস চেম্বার তৈরি করে আরও বেশি মানুষকে একইসঙ্গে পুড়িয়ে মারা যায়। যদিও যারা তাদের নতুন মেশিন বিক্রি করতে এসেছে, তারা মানুষ বলে না, বলে ‘মাল’, ইংরেজিতে ‘load’। কর্তা রাতে সদর দরজায় ছিটকিনি দিয়ে ধীরে-ধীরে উঠে যান, বাচ্চাদের রূপকথার গল্প বলে ঘুম পাড়ান, সুইমিং পুলের ধারে গিয়ে যখন একটা উদাস সিগারেট ধরান, দেখতে পান পাশের ক্যাম্পের চিমনি থেকে ধোঁয়া উঠছে। আলাদা করে এই পরিবারে কোথাও কোনও জার্মান আদর্শ আলোচনা করা হয় না, এ যেন আর পাঁচটা পরিবারের মতোই, শুধু ইস্কুল যাওয়ার সময়ে সন্তান ‘টাটা বাই বাই’ না বলে, ‘হেল হিটলার’ বলছে। একদিন গিন্নির মা বেড়াতে আসেন। বাড়ি ঘুরে দেখে তো তিনি স্তম্ভিত। এত বড় বাড়ি, এমন সাজানো-গোছানো সংসার, পাশে এত বড় একটা বাগান, অপূর্ব সমস্ত ফুল! তিনি মেয়েকে প্রশংসা করে বলেন, সত্যিই তুই জীবনে এবার একটা চমৎকার সমৃদ্ধি পেয়েছিস। কিন্তু বৃদ্ধা ঘুমের মধ্যে চটকা ভেঙে-ভেঙে জেগে ওঠেন, কারণ সারাদিন ধরে ঠিক পাঁচিলের ওপার থেকে ভেসে আসছে গুলির আওয়াজ, অনেকগুলো মানুষের আর্তনাদ। এবং রাত্তিরবেলা মাঝে মাঝে জানলা উদ্ভাসিত হয়ে উঠছে অসম্ভব লাল আলোয়। তা হচ্ছে আগুন, যাতে অনেক মানুষকে এই মুহূর্তে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। মা একটা চিঠি লিখে কাউকে কিছু না বলে পালিয়ে যান। সেই চিঠিতে কী লেখা আছে আমরা জানতে পারি না, কিন্তু তা পড়ে গিন্নির মুখ কঠোর হয়ে যায়, তিনি সেটাকে চুল্লিতে ফেলে দেন এবং এক পরিচারিকাকে ধমকে বলে ওঠেন, এই বাসনগুলো সরাওনি কেন, জানো, আমার স্বামীকে বলে এক্ষুনি তোমার মৃতদেহের ছাই অমুক জায়গায় ছড়িয়ে দিতে পারি!
পরিচালক এই সিনেমাটা সম্পর্কে বলেছেন, এখানে দুটো সিনেমা আছে, একটা দৃশ্যের, আরেকটা ধ্বনির। সত্যিই, গোটা ছবিতে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের একটা নিষ্ঠুর ঘটনাও একবারও দেখানো হয় না। কিন্তু শুধু আওয়াজের মধ্যে দিয়ে একটা সমান্তরাল বাস্তব তৈরি করা হয়, যেখানে কোনও লোক হয়তো একটা আপেলের জন্য মারামারি করছিল বলে তাকে ডুবিয়ে মারার আদেশ দেওয়া হয়। কখনও শুধু শব্দে আমরা বুঝতে পারি, একটা ট্রেন এসে থামল এবং সেখান থেকে প্রচুর লোক নামল যারা সন্ত্রস্ত-নিঃস্ব-কাতর। তারা অসহায় আতঙ্কে চেঁচামেচি করতে থাকে, সঙ্গে-সঙ্গে চলতে থাকে নাৎসিদের ধমক, কাউকে-কাউকে তক্ষুনি গুলি করে মারা হয়, কোনও বাচ্চার গলায় ‘বাবা, বাবা’ কান্না-জড়ানো আর্তনাদ শোনা যায়, হয়তো তার বাবাকে এক্ষুনি তার চোখের সামনে খুন করা হল, আমরা পর্দা জুড়ে শুধু দেখতে পাই ছবির কেন্দ্র-পরিবারের কর্তার ভাবলেশহীন মুখ।
আর মাঝে মাঝে সম্পূর্ণ অন্য ধরনের একটা সাদা-কালো ছবিতে দেখানো হয় একটি মেয়েকে, যে সাইকেলে চড়ে এসে মাঠে, ঘাসে বিভিন্ন জায়গায় আপেল এবং অনেকগুলো খাবার রেখে যায়, যাতে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের কর্মীরা কাজ করতে-করতে খেতে পায়। এই মেয়েটি একদিন কুড়িয়ে পায় একটা দোমড়ানো-মোচড়ানো কাগজ, যেখানে লেখা আছে একটা সুর। বাড়িতে সেই সুরের নোটেশন ধরে পিয়ানো বাজায় এবং তার সঙ্গে-সঙ্গে কয়েকটা কথা পর্দায় ফুটে ওঠে। আমরা বুঝতে পারি, এই নরকের মধ্যে থেকেও কোনও ইহুদি একটা আশার সংগীত লিখে চলে গেছে (বা হয়তো মারা যায়নি এখনও, কিন্তু সংগীতটা যাতে বেঁচে থাকে সেজন্য সেটা বাইরে ফেলে গেছে)। এই ছবিটা আলাদা ধরনে দেখানো হয়, কারণ তা আমাদের সিনেমাটার চলতি মানচিত্রের বাইরে, এখানে পোল্যান্ডের কিছু মানুষ ইহুদিদের সাহায্য করতে চাইছে।
হলোকস্ট নিয়ে প্রচুর ছবি তৈরি হয়েছে, ইহুদিদের মেরে ফেলার চূড়ান্ত নৃশংসতা নিয়ে আলোচনা হয়ে চলেছে ও চলবে। কিন্তু এই ‘জোন অফ ইন্টারেস্ট’ ছবির (মার্টিন অ্যামিস-এর বই অবলম্বনে নির্মিত। চিত্রনাট্য ও পরিচলনা: জোনাথন গ্লেজার, ২০২৩) পরিচালক একটা আশ্চর্য শৈলী অবলম্বন করেছেন, সেখানে তিনি দেখাচ্ছেন যেন একটা নিতান্ত সাধারণ পরিবারের আটপৌরে জীবনযাত্রাকে। গৃহস্থদের চাহিদাও একেবারে সাধারণ— টাকাপয়সা, স্বাচ্ছন্দ্য, সন্তানদের সুস্থিতি। তিনি একবারও ক্যামেরাটা কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের মধ্যে না নিয়ে গিয়ে, সারাক্ষণ আবদ্ধ রাখছেন ক্যাম্পের কর্তার পরিবারের মধ্যে। এবং সেখানেও নাটকীয় কিছু ঘটছে না। তারা হাঁটছে চলছে খাচ্ছে আলোচনা করছে গল্প-গুজব করে হাসাহাসি করছে, যেমনটা হয়। এবং সেটাকেই পরিচালক বলতে চাইছেন সভ্যতার একটা ভয়াবহতম দিক— যে-লোকটা প্রত্যেকদিন এতগুলো করে মানুষ খুন করছে, সেই লোকটা বাড়িতে এসে অন্য যে-কোনও গড় মানুষের মতোই সিগারেট খায়, বা বাচ্চাকে নিয়ে ঘোড়ায় চড়তে যায়, কিংবা মাছ ধরতে যায়। তার বউ ছোট বাচ্চাকে ফুল চেনায়। তারা কেউই ভিলেনের মতো অট্টহাস্য করে না, বা যারা মরছে তাদের নিয়ে একটাও কথা বলে না, যেমন বিজ্ঞানীরা বাড়ি ফিরে ল্যাব-এর গিনিপিগদের নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করে না। অবশ্য একদিন মাছ ধরার সময়ে আচমকা বাবা যখন বুঝতে পারেন, ক্যাম্প থেকে হাড় বা অন্য ওই ধরনের অবশেষ এসে নদীতে পড়ছে, তখন তাড়াতাড়ি বাচ্চাগুলোকে এনে খুব ভাল রগড়ে চান করানো হয়। কিন্তু নিজেদের ক্ষেত্রে কোনও বিশেষ মানসিক সাবানের প্রয়োজন হয় না, এই মৃত্যু-কারখানাকে নিতান্ত একটা প্রয়োজনীয় কর্মক্ষেত্র হিসেবে ধরে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে কোনও ধাক্কা খেতে হয় না। পরিবারে সামান্য কিছু হেঁচকি বা হোঁচট আছে: একজন বাচ্চা সারাক্ষণ বন্দুকের শব্দ করে খ্যালে সৈন্য-পুতুল নিয়ে, একজন বাচ্চা তার সংগ্রহে থাকা ইহুদিদের সোনা-বাঁধানো দাঁত ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দ্যাখে, কখনও বড়দাদা তার ভাইকে একটা ঘরে বন্দি করে দিয়ে হিসহিস করে গ্যাসের আওয়াজ করে খ্যাপায়, কখনও ছোট্ট মেয়ে ঘুমের মধ্যে এদিক-ওদিক হেঁটে বেড়ায়। যখন একটা বাচ্চা ঘর থেকে শুনতে পায়, একজন লোককে এক্ষুনি ডুবিয়ে মারার আদেশ দেওয়া হচ্ছে, সে তার পুতুলকে ফিসফিসিয়ে বলে, আর কক্ষনও এরকম কোরো না, কেমন?
গোটা ছবিটা বলছে, ভয়াবহ কাণ্ড গুচ্ছের দেখানো হল ছবির ইতিহাসে, আমি দেখাব মানুষ ভয়াবহ কাণ্ডের উদ্গাতা হয়েও কত সহজ সিধেসাদা থাকতে পারে, কী অনায়াসে তরিবত করে কেক-পেস্ট্রি খেতে পারে। ছবি দেখতে-দেখতে হুট করে নিজেদের দিকে দৃষ্টি ঘুরে গেলে আমরা বুঝি, প্রতিনিয়ত হয়ে চলা খুন-ধর্ষণ-রাহাজানি-অসংখ্য অন্যায়ের একদম পাশেই, একটা কাঁটাতারওলা দেওয়াল না গড়েই, আমরা কীভাবে আমাদের টিভি-ফ্রিজ-সুইগি-জ্যোমাটোময় আশ্চর্য সুন্দর জীবন গড়ে তুলছি এবং তার জন্য কোনও অনুশোচনা-অনুতাপ-আত্মসমীক্ষার কণামাত্র প্রয়োজন বোধ করছি না। তখন এই ছবির এমন অদ্ভুত চলন-সিদ্ধান্তের যাথার্থ্য স্পষ্ট হয়। এখানে তো দেখানো হচ্ছে একটা উগ্রতম উদাহরণ। কিন্তু কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের সঙ্গে যোগ নেই, এমন বহু জার্মান মানুষ তো সবটা জেনেও দিব্যি গান শুনেছেন, খাবার খেয়েছেন, বাচ্চাকে আদর করেছেন, গল্পের বই পড়েছেন। যেরকমটা আমরা করে চলেছি আমাদের সমাজের বা সমগ্র পৃথিবীর ভয়াবহতম-নৃশংসতম-কদর্যতম সমস্ত দৃশ্য এবং ধ্বনি থেকে মুখ ঘুরিয়ে, মনকে চোখ ঠেরে।
কর্তার যখন বদলির আদেশ আসে, গিন্নি বলেন, আমি কোথাও যাব না, কারণ এখানে আমরা সারা জীবন ধরে যা চেয়েছিলাম তাই পেয়েছি। কথাটার মধ্যে ঢুকলে বোঝা যায়, তিনি বলছেন, যদি অনেক টাকা পাওয়া যায়, যদি অন্য লোকের থেকে চুরি করা জিনিস নিরঙ্কুশ ভাবে ভোগ করার অধিকার পাওয়া যায়, যদি সামাজিক প্রতিষ্ঠা পাওয়া যায়, তাহলে সেই সুখ ছেড়ে আমি যাব কেন? অন্য লোকের দুর্দশা, অন্য লোকের মৃত্যু এদের কাছে এত সহজ এত সাধারণ এত প্রাত্যহিক যে, তার মর্মটা দিব্যি এড়িয়ে-পেরিয়ে জীবনটা সাজিয়ে নিয়েছে। ছবির একদম শেষদিকে হঠাৎ একটা কাট হয়ে আজকের আউশউইৎজ ক্যাম্প দেখানো হয়, যেখানে এই ক্যাম্পে নিহত ইহুদিদের টুপি-জামা-জুতো স্তূপীকৃত, সংরক্ষিত। তার আগে কর্তা সিঁড়ি দিয়ে নামছিলেন, তিনি কি সহসা আভাস পান, ভবিষ্যৎ তাঁকে, তাঁদের কীভাবে মনে রাখবে? তাই কি তিনি সিঁড়ির প্রতিটি ল্যান্ডিং-এ পোঁছে একটু করে বমি করতে থাকেন? জানা যায় না, তিনি সিঁড়ি বেয়ে অন্ধকারে নেমে যান, কিন্তু আমাদের কাছে এই প্রশ্ন হয়তো সহসা ক্লোজ-আপে বড় হয়ে ওঠে, আমাদের অমানবিক ঔদাসীন্যে মোড়া জীবনটা বিবমিষার যোগ্য হয়ে উঠছে না তো?
ইহুদি নিধনযজ্ঞ নিয়ে কেন ছবিতে কোনও নিষ্ঠুর ঘটনা দেখানো হবে না, ছবিতে স্টাইল আরোপ করতে গিয়ে আমি কি যন্ত্রণায় ফালা-ফালা মানুষগুলোর প্রতি অবিচার করে ফেলছি না— এই গোছের প্রশ্ন উঠেছে, কিন্তু বারে বারে যে-বিষয় নিয়ে অসংখ্য ছবি হয়ে গেছে, সেই বিষয়কেই কেমন করে স্বতন্ত্র ধাঁচে চেলে নেওয়া যায়, এ-ছবি তার এক শিক্ষণীয় উদাহরণ হয়ে রইল। ছবিটা একটু একঘেয়ে লাগতে পারে, কারণ পরিকল্পিত ভাবেই এখানে কোনও গল্প রাখা হয়নি, কোথাও কোনও কাহিনি-মোচড় নেই। কারণ পরিচালক বলছেন, আমি তোমাকে একটা পরিবারের সাধারণ দৈনন্দিন একমেটে জীবনযাপন দেখাচ্ছি, ওহো বলতে ভুলেছি, এই পরিবারের লোকেরা জানে যে তারা কিছু নারকীয় ব্যাপারস্যাপার ঘটাচ্ছে কিন্তু তাতে তাদের হোলদোল নেই। তাই তারাও বাগান নিয়ে ভাবে, মাঝে মাঝে পরকীয়া করে এবং তারপর তাড়াতাড়ি যৌনাঙ্গ সাবান দিয়ে ধুয়ে আবার স্ত্রীর কাছে ফিরে আসে। অপূর্ব সুন্দর ফুলগাছের মাটির ওপর একজন চাকর কিছু ছাই ছড়ায়, আমরা বুঝি, এই মানুষ-পোড়া ছাই দিয়ে বাগান বর্ধিষ্ণু হবে। যে-লোক ছাই ছড়ায়, সেও হয়তো জানে এ তার স্বজাতীয়ের ছাই; হয়তো জানে, তার ছাইও একদিন এভাবে শাসকের অপ্রাসঙ্গিক বাগানে ছড়িয়ে যাবে। মানুষের এই নতমাথা পরাজয় অহরহ ঘটে চলেছে বলেই হলোকস্ট প্রাসঙ্গিক, আর মানুষের সমান্তরাল নির্বিকারতা এই বেদনাকে অহরহ অপমান করে চলেছে বলেই এই ছবি অনুধাবনযোগ্য।