কয়েকটি কবিতা
চাদর
সাদা চাদরের জীবন পেয়েছ তুমি।
অবসর হলে বাসর জাগার রাত
হারমোনিয়ামে মান্না দে মাঝেমাঝে
ফুলের পাপড়ি মুঠো করে রাখা হাত…
গায়ে ঢলাঢলি মিঠে হাসি হুল্লোড়ে
মুচড়ে উঠছে পাট পাট করা ত্বক,
এ-পৃথিবী থেকে একটি রাতের মতো
সোহাগ ফেরারি। আশনাই পলাতক।
সানাইবাদক চলে গেছে ভিনদেশে
সকলেই জানে, বিবাহ যে মরসুমি…
তোমার বন্ধু ডেকরেটারের লোক
সাদা চাদরের জীবন পেয়েছ তুমি।
চ্যাপলিন
তুমি হাঁটো ব’লে জীবন গল্প বলে।
পথিকেরা চেনে, দুঃখের আলাপন।
মনে করে দ্যাখো, কান্না রয়েছে পাশে।
কোনও ছবিতেই চ্যাপলিন একা নন।
এ-শহর বাজি হেরে যেতে বলে রোজ
কাগজে হেডিং রুটি মুড়ে আনে রাতে
ঠান্ডা খাবার খেতে খেতে মেনে নাও,
তুমি যে পারোনি কিচ্ছুটি বদলাতে।
তবু হাঁটো, আর জীবনও গল্প পায়।
বাগান তাকেই ভেবে নেয় সিঞ্চন…
মনে করে দ্যাখো, দুঃখ বসেছে কাছে।
কোনও ছবিতেই চ্যাপলিন একা নন।
উপপাদ্য
দূরে চলে যেতে ট্রেন নয়। মন লাগে।
আকাশ যখন পিথাগোরাসের মতো –
কী জটিল সেই উপপাদ্যের শেষে
একটি জবাব। সামাধান। সংযত।
চিনেছ অন্ধ রুমাল বিক্রেতাকে
রেশম দিয়ে সে অতীত খোদাই করে।
আজ যে তুলছে কাজলের টানা রেখা,
পরের বছর জলপটি হবে, জ্বরে।
তুমি বলো আমি অগোছালো। অবসাদী।
আমি বলি তুমি অবাধ্য। উদ্ধত।
উপপাদ্যেরা ভেঙেচুরে পড়ে থাকে…
আকাশ তখন পিথাগোরাসের মতো।
ছুটি
আমার সময় সরকারি আবাসন।
পুরনো রেলিঙে জং ধরা রোদ্দুর।
কিছু বয়স্ক চাহনি বিছিয়ে থাকে…
আমি ছুটি চাই। লিখে দাও ‘মঞ্জুর’।
কোনও ফেরিওয়ালা নতুন আনে না দিন।
বয়স এখানে পেয়ারায় লাগা দাগ।
কেউ কেউ চেনে নিখিল ব্যানার্জিকে,
যখন বাজান গভীর রাতের রাগ।
আমার সময় চূর্ণ আস্তাবল।
ইতিহাস লেখে মৃত ঘোড়াদের ক্ষুর…
খোর শুয়ে আছে আগুনের ঠিক পাশে।
আমি ছুটি চাই। লিখে দেবে, ‘মঞ্জুর’?