সমালোচনা — চলচ্চিত্র; ‘বল্লভপুরের রূপকথা’
পরিচালনা: অনির্বাণ ভট্টাচার্য
চিত্রগ্রহণ: সৌমিক হালদার
সংলাপ ও চিত্রনাট্য: অনির্বাণ ভট্টাচার্য, প্রতীক দত্ত
সংগীত পরিচালক: শুভদীপ গুহ, দেবরাজ ভট্টাচার্য
সম্পাদনা: সংলাপ ভৌমিক
অভিনয়ে: সত্যম ভট্টাচার্য, সুরঙ্গনা বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্যামল চক্রবর্তী, সন্দীপ ভট্টাচার্য, ঝুলন ভট্টাচার্য, শ্যামল সরকার, দেবরাজ ভট্টাচার্য প্রমুখ…
জাত হিসেবে বাঙালির কবজির জোর যত কমছে, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অতীতের রোমন্থন— এটা বুঝিয়ে দেবার জন্য কোনও সমাজবিজ্ঞানী লাগে না। হালফিলের বাংলা ছায়াছবির দিকে আলগোছে তাকালেই চলে। তামিল-তেলুগু রিমেকের জমানা থেকে বেরিয়ে সে এখন পুরনো চাল কী করে ভাতে বাড়ে তার সাধনা করে চলেছে। অনীক দত্ত মশাই সেই যে ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’ আছে প্রমাণ করেছিলেন, সেই ইস্তক সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলেছে। সেই ট্র্যাডিশন থেকে না বেরিয়েও যে কত্তাগিন্নি-আন্ডাবাচ্চা-গেঁড়িগুগলি সহকারে গুষ্টিসুখ উপভোগ করার মতো ছায়াছবি বানানো যায়, তার একটি তাকলাগানো নমুনা আমাদের গোচরে এল। আমরা অনির্বাণ ভট্টাচার্যের পরিচালনায় শ্রীভেঙ্কটেশ ফিল্মসের নতুন ছায়াছবি ‘বল্লভপুরের রূপকথা’র কথা বলছি। বড় পর্দার জন্য বানানো প্রথম ছায়াছবিতেই সাড়া ফেলেছেন অনির্বাণ। জাঁদরেল ও জাঁহাবাজ প্রযোজক সংস্থার তাঁবে থেকেও এমন কাণ্ড ঘটানোর জন্য থিয়েটারওয়ালাদের তরফ থেকে তাঁকে শাবাশি দিই।
মন-ভাল-করা অ্যানিমেশনে রাঙানো টাইটেল সঙের গোড়াতেই অনির্বাণ জানান দিয়েছিলেন যে, আমরা ‘নাটক নিয়ে নতুন ছবি’ দেখতে চলেছি। কোনও রকম রাখঢাক না করে গেয়ে উঠেছিলেন ‘এক যে ছিলেন নাট্যকার / তার নাম বাদল সরকার / বিশ্বজোড়া খ্যাতি / তিনি লিখতেন ক্ষুরধার।’ চোখের সামনে ভেসে উঠছিল কার্জন পার্কে কিংবা অন্য কোনও অঙ্গনমঞ্চে ঢিলেঢালা পাজামা আর হলদে পাঞ্জাবিতে সাদা শ্মশ্রুগুম্ফে শোভিত বাদলকে দেখার মধুর স্মৃতি। বাদল সরকার ঘরানার থিয়েটার থেকে উঠে আসা তুখোড় সংগীতকার শুভদীপ গুহ ওই একটি গানের মধ্যে কত রসের ভিয়েন চড়ালেন তার বিশদ ব্যাখ্যা এখানে থাক। শুধু লেখা থাক— ‘বলো জয় বাদল জয় বাদল জয় বাদল জয়’ আর ‘জয় সিনেমা জয় থিয়েটার জয় জনতা জয়’-এর ধুয়ো তুলে আমাদের কালেকটিভ আনকনশাসে হরিধ্বনির মাতন তুলে দিল গানখানি। হইহই করে পাণ্ডববর্জিত বাংলার এক লক্ষ্মীছাড়া গ্রাম বল্লভপুরে চারশো বছর আগেকার এক মোগলাই কিসিমের বাড়িতে ঢুকে পড়লাম আমরা। বা বলা ভাল, মোগলাই বাহানা দিয়ে এক গ্রেকো-রোমান স্থাপত্যের ভেতরে সেঁধিয়ে গেলাম আমরা।
খবর নিয়ে জানলাম, নদিয়ার করিমপুরে এই হর্ম্যখানি বিদ্যমান। ‘জলসাঘর’-এ দেখা মুর্শিদাবাদের নিমতিতা রাজবাড়ির চাইতে ঢের ভাল দশায় থাকায় ইনডোর শুটিং-এর ষোলো আনা এখানেই ঘাঁটি গেঁড়ে সেরে ফেলেছিলেন অনির্বাণ। আউটডোর বলতে লাল মাটির দেশ পুরুলিয়ায় সবুজে-শ্যামলে পাহাড়ে-জঙ্গলে ইতিউতি ঘুরেছে সৌমিক হালদারের ক্যামেরা-টিম। হরেকরকমের কোণ থেকে ছবি তুলে হামেশাই এক অদ্ভুতুড়ে শিরশিরানি তৈরি করেছে। এ-ধরনের ছবিকে পিরিয়ড পিস হতে হবেই এমন দিব্যি কেউ দেয়নি বলে আকবর বাদশার আমল আর বারো ভুঁইঞার দখল নিয়ে দু-চারটে কেজো কথা সেরে নিয়েই বাদলের অসাধারণ রম্য সংলাপের খেই ধরে চলতে শুরু করেছে ‘বল্লভপুরের রূপকথা’।
হেরিটেজ ট্যুরিজমের এই সোনাঝরা সন্ধ্যায় চারশো বছরের পুরনো রাজবাড়ি জলের দরে বিক্রি করে কলকাতায় দাঁতের ডাক্তারি করার ইচ্ছে কার হবে জানি না, তবে ১৯৪৭-এর পর জমিদারি উঠে যেতে আভিজাত্যের চোঁয়া ঢেকুর ওঠা রাজাবাবুদের এ ছাড়া বিশেষ উপায় ছিল না। এই ঢাকের দায়ে মনসা বিকোনোর দশা নিয়ে ষাট বছর আগে লেখা ‘বল্লভপুরের রূপকথা’য় রাজবাড়ি বিক্কিরির গল্পের মধ্যে এন্তার ফক্কিকারি আমদানি করেছিলেন বাদল। পরতে-পরতে গেঁথে দিয়েছিলেন অ্যাবসার্ড কমেডির মেজাজ আর র্যামসে ব্রাদার্স ঘরানার চাইতে এক নীচু সুরে বাঁধা হরর ফিল্মের মিশেল। সংলাপ ভৌমিকের সম্পাদনায় বাহাদুরি আছে বলে থিয়েটার আর সিনেমার টাইট-রোপ-ওয়াকিং এক সেকেন্ডের জন্যেও ক্লান্তিকর লাগেনি। আর আধুনিক সিনেমার পদ্ধতিপ্রকরণ দুরন্ত ভাবে ইস্তেমাল করলেও বাদলের লেখার আমেজ থেকে একটুও বেরোননি অনির্বাণ আর তস্য সঙ্গী চিত্রনাট্যকার প্রতীক দত্ত। শুধু মাথায় রেখেছিলেন— যে ‘রঘুদা’ ওরফে রঘুপতি রায়ের প্রেতাত্মাকে ঘিরে ‘বল্লভপুরের রূপকথা’র দ্বিতীয়ার্ধের রস জমাট বাঁধে, সেই রঘুদার ভূতকে থিয়েটারের স্টেজে না আনলেও চলে, কিন্তু রুপোলি পর্দায় গুছিয়ে আনতে পারলে ভুলভুলাইয়ার মজা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। প্রযোজক সংস্থা স্পেশাল এফেক্টের পেছনে আরেকটু পয়সা ঢাললে এই মজা আরও জমাট হত। জাফরান ছাড়া আওয়াধি বিরিয়ানির সোয়াদ পাওয়া যায় না। তবু অনির্বাণ অ্যান্ড কোং যে-পদটি পেশ করেছেন, সেটি তারিয়ে-তারিয়ে দেখার মতো।
শোনার মতোও। আহা! বাদলের সংলাপের মিঠে আন্দাজ কীভাবে আরও দুরস্ত হয়, অনির্বাণ তা জানেন বলে সেসব খুলেছে দারুণ। আবার বাদলকে নিপাতনে সিদ্ধ মানায় ১৫৬১ খ্রিস্টাব্দ যে কিছুতেই ৯৬৭ শকাব্দের (ওটি বঙ্গাব্দ হওয়াই বিধেয়) ধারেকাছে হতে পারে না সেই গুবলেটও বাধিয়েছেন। আসলে যে ১৩৬৮ বঙ্গাব্দের পশ্চিমবঙ্গ এর পটভূমি— ১৩৬৮ শকাব্দের নয়— সেই গোলমালও রয়ে গেছে। তবু বলি, খুঁতো চোখ বাড়িতে রেখে এলে বেড়ে মজার খোরাক পাবেন বুদ্ধিমান বাঙালি দর্শক। পানসে নস্টালজিয়ার চাইতে উইট আর হিউমারের দর অনেক বেশি। এটুকু বোঝার জন্য সাহেব হতে হয় না। ঋষি সুনকও নয়।
এটুকু মাথায় রাখা যেতে পারে যে, প্যারিসে বসে ‘বল্লভপুরের রূপকথা’ লিখেছিলেন বাদল সরকার। ১৯৬৩-র সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে। বাদলের আত্মজীবনী ‘পুরোনো কাসুন্দি’তে আছে— ‘তখন আমার ধারণা— এর থেকে খারাপ নাটক আমি খুব কমই লিখেছি। কলকাতায় অনেক পরে লোকমুখে শুনেছি— আমার শ্রেষ্ঠ রঙ্গনাট্য না কি এইটাই! অর্থাৎ আমার নাটকের মূল্যবিচারে আমি একেবারেই ফেল!’ মনে রাখা ভালো যে, যৌবনে বিলিতি-মার্কিন সিনেমার পোকা ছিলেন বাদল। তাঁর প্রথম দিককার বেশির ভাগ নাটকের আড়ালে হলিউড উঁকি মারছে। ‘বল্লভপুরের রূপকথা’ নাটকের ‘অনুপ্রেরণা’ একটি বহু পুরাতন ‘বিদেশি চলচ্চিত্র’ হলেও ‘নাটকটিকে বোধহয় মৌলিক বলা চলে’ এমনটিই ভাবতেন তিনি। এহেন নাটকের খবর কলকাতায় পৌঁছনো মাত্র কাড়াকাড়ি পড়ে গেছিল। এবং এখন যা ভাবাই যায় না, ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি এ-নাটকের প্রথম প্রযোজনা হয়েছিল বাংলায় নয়, হিন্দিতে— সেই সময়ের এলেমদার দল অনামিকার হাতযশে, ‘বল্লভপুর কি রূপকথা’ নামে। ক’মাসের মধ্যেই খোদ বাদল সরকারের নির্দেশনায় ‘বল্লভপুরের রূপকথা’র প্রযোজনা করেছিল শতাব্দী। রাজাবাজারে সবে গজিয়ে ওঠা প্রতাপ মেমোরিয়াল হলে এই উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয় ২৮ নভেম্বর। যাঁরা তাতে অভিনয় করেছিলেন, তাঁদের একজন আজও আমাদের মধ্যে বহাল তবিয়তে আছেন— পঙ্কজ মুন্সি। ২০ অক্টোবর সন্ধেবেলায় সাউথ সিটির আইনক্সে সবচেয়ে বড় পাঁচ নম্বর স্ক্রিনে ‘বল্লভপুরের রূপকথা’র প্রিভিউ শো দেখতে কলকাতার নাট্যজগতের বড়-মেজ-সেজ-ন-ছোট সব ব্যক্তিত্বই এসেছিলেন। শুরুর আগে বাদল-জায়া বিশাখা রায়ের দু’পাশে থার্ড থিয়েটারের পতাকা আজও ধরে রাখা প্রবীর গুহ, আর নান্দীপটের প্রযোজনায় ‘বল্লভপুরের রূপকথা’র পরিচালক প্রকাশ ভট্টাচার্যদের বসে থাকতে দেখে কী ভালোই না লাগছিল! পঙ্কজকে দেখতে পেলে সোনায় সোহাগা হত।
কিন্তু এহ বাহ্য। শতাব্দী যখন এ -নাটক শুরু করে, তখন কলকাতার হাওয়া সর্বার্থে গরম। নাটকের লিফলেটে বাদল লিখেছিলেন, ‘এ নাটকে অথবা এ নাটক সম্বন্ধে আমার কোনো বক্তব্য নেই।’ টিকিটের ওপর শতাব্দী লিখেছিল, ‘শুধু হাসি, কোন বাণী নেই’। পাটোয়ারি গরজে দড় শ্রীভেঙ্কটেশ ফিল্মসের ব্যানারে অনির্বাণ যে-ছবিটি বানিয়েছেন, সেটি ওই ধ্রুবপদকে মাথায় রেখে। কথা নেই বার্তা নেই, একটু ইয়ের সুড়সুড়ি কিংবা ইয়ের চিমটি কোনওটাই এতে নেই। এই মুহূর্তে সর্বার্থে গরম কলকাতায় ফুরফুরে হাসির আমেজ ছড়িয়েছে সওয়া দু’ঘণ্টার এই নির্ভেজাল ‘ছায়া’ছবি। আগেই বলেছি যে, সেদিনের দর্শকাসনে হাজির ষোলো আনাই ছিলেন সিনেমা-থিয়েটারের খাস তালুকের লোক। অ্যাবসার্ড ফ্যান্টাসির হালচাল সম্পর্কে সবাই কমবেশি ওয়াকিবহাল। দেখতে-দেখতে সবাইকে হেসে গড়াগড়ি দিতে বা মজায় লুটোপুটি খেতে দেখে মনে হল ‘বল্লভপুরের রূপকথা’ নিশানা ভেদ করতে চলেছে। প্রযোজক-পরিবেশকের পিঠ চাপড়ানি পেলে রজত জয়ন্তী বাঁধা!
বছর দেড়েক আগে হইচই ওয়েব প্ল্যাটফর্মের জন্য ‘মন্দার’ বানিয়ে চমকে দিয়েছিলেন যে-অনির্বাণ, সেই অনির্বাণের তুরুপের তাস ছিল কুশীলব-নির্বাচন। ‘বল্লভপুরের রূপকথা’তেও তাই। গ্রুপ থিয়েটারের ভাইবেরাদরির হদ্দমুদ্দ। অনির্বাণ নিজে যেহেতু থিয়েটারের পাকা দর্শক, ফলে কোন স্টেজ অ্যাক্টরের কেমন স্ক্রিন-প্রেজেন্স হতে পারে, এ-নিয়ে মোটের ওপর সাফ ধারণা ওঁর ছিল। এঁদের মধ্যে এক সুরঙ্গনা বন্দ্যোপাধ্যায় (যাঁকে এ-ছায়াছবির নায়িকা বলা যেতে পারে এবং যিনি অভিমানের অভিনয়ে দিব্যি তরে গেছেন) ছাড়া প্রায় কারোর নামের পাশে ফিল্মোগ্রাফি বলে কোনও পদার্থ নেই, তবু ঝুঁকি নিয়েছিলেন অনির্বাণ। আন্দাজ করি যে, প্রযোজনা সংস্থার অনুমোদনের তোয়াক্কা না করেই কম্মটি করেছিলেন। এর দরুন হল কী, বল্লভপুরের পোড়ো জমিদার বাড়ি কিনতে হালদার পদবিধারী অঁন্ত্রপ্রনার সাজলেন বহরমপুরের দুঁদে নাট্যনির্দেশক-তথা-নট সন্দীপ ভট্টাচার্য। তস্য জায়া সাজলেন ওই বহরমপুরেরই রবীন্দ্র ভবনে পোড়খাওয়া অভিনেত্রী ঝুলন ভট্টাচার্য। দুজনেই একটু সুর চড়িয়ে রেখে রসিয়ে-রসিয়ে পাকা অ্যাকটোর দৃষ্টান্ত রাখলেন। বাইরে কোঁচার পত্তন আর ভেতরে ছুঁচোর কেত্তন অবস্থায় এসে পড়া বল্লভপুরের রাজাবাহাদুর ভূপতি রায় হলেন আনকোরা সত্যম ভট্টাচার্য। এই তিনটে জবরদস্ত কাস্টিং করেই প্রযোজক সংস্থার তাঁবেদার স্টার সিস্টেমের একেবারে বারোটা বাজিয়ে দিয়েছিলেন অনির্বাণ। ভূপতির খাস দোস্ত সঞ্জীবের ভূমিকায় দেবরাজ ভট্টাচার্যকে একটু মেঠো লাগলেও রাজবাড়ির পুরাতন ভৃত্য মনোহরের চরিত্রে লবেজান অভিব্যক্তির রংমশাল ছুটিয়ে দিলেন রঙ্গলোক নাট্যদলের কর্ণধার শ্যামল চক্রবর্তী। এই যিনি মনোহর, ক’মিনিট বাদেই তিনি হরিহর, খানিক বাদেই মনোহরি— যাকে বলে হাইট অফ অ্যাবসার্ডিটি। অনায়াসে ডিস্টিংশন মার্কস নিয়ে বেরোলেন শ্যামল। হেরিটেজ প্রপার্টি বাগানোয় হালদারের সঙ্গে যাঁর রেষারেষি, সেই চৌধুরির ক্যামিওতে তাঁকে টক্কর দিলেন আরেক শ্যামল— শ্যামল সরকার। বল্লভপুরের যে তিন দোকানদার ফাঁপরে-পড়া রাজাবাবুর কাছ থেকে ধারের পয়সা উশুল করার ধান্দায় সে বাড়ির চাকরবাকর হতে এক কথায় রাজি হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে ঝুপো গোঁফের সুমন্ত রায় অভিজ্ঞতার জোরে নজর কেড়েছেন। বাকি দুই বান্দা কৃপাসিন্ধু চৌধুরি, সুরজিৎ সরকারও দিব্যি চলনসই। অনির্বাণ সামনে আসেননি। নেপথ্যে থেকেছেন। কালিদাসের শোলোক আউড়েছেন, গানে গলা মিলিয়েছেন। এন্ড ক্রেডিটে ফিচলেমি করে চেয়ারের পায়া ভেঙে কুপোকাত হয়েছেন।
এখানেই অনির্বাণের ওস্তাদি। নিজেকে জাহির না করে নিজের প্রগাঢ় নাট্যপ্রেম আর পাক-ধরতে-শুরু-করা চলচ্চিত্রবোধ দিয়ে ঘুঁটি সাজাতে পারলে রাজা-উজির নয়, বোড়ে দিয়েও যে কিস্তিমাত করা যায়, ‘বল্লভপুরের রূপকথা’ তার বিজ্ঞাপন হয়ে থাকল। ফের মনে করিয়ে দিল যে বাংলা থিয়েটারের কাছে বাংলা সিনেমার ঋণ কখনই চুকবার নয়। উত্তমকুমার থেকে চঞ্চল চৌধুরি সবই এক গোয়ালের গরু।