অন্ধকার নদীর দিকে মুখ করে দুই তরফের দুই কামরায় চুপচাপ বসে আছেন দুই বোন। যে যার ঘরে। বট আর অশত্থ যেমন পাশাপাশি থাকে, সেরকম। দুই বেগম। আমেনা আর মেহেরুন্নিসা। দিনমানেও নিশ্চুপ শান্ত জায়গাটা, দ্বীপের মতো নির্জন। দিনে তবু মুসলমান ফকিরে গান গেয়ে বয়াত আউড়ে শুনশান বাতাসটা যেন পাতলা কাচের মতো ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে যায়। ওগো মা রাজকপালী, রাজার বেটি, বাপসোহাগি রাজার ঝি, দাও গো ভিক্ষা দাও। রাতে পিলখানার দিকের তীর থেকে ভেসে আসে হাতির ডাক, পিলখানার পোষ না মানতে চাওয়া হাতির আর্তনাদ যেন। মাহুতটুলির মাহুতরা নিশ্চয়ই বেয়াড়া হাতির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেনি আর, ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে হয়তো।
নোকরানি গুলজার নীচের মহল। আজকাল ওরা আর আড়াল মানে না, খিলখিলিয়ে হেসে ফেলে, জোরেসোরে কথা বলে। একজন আরেকজনকে বলে, ‘সাচ্চি, বেগমরা দুই বহিন, মায়ের পেটের বহিন। জানো তো আমাদের বেগম ময়ূর পুষতেন, বেজি পুষতেন।’
‘কোন জন? কোন জন?’
কোনও এক বেয়াদপ বাঁদী ফুট কাটে, ‘একজন বেজি পুষলে আরেকজন নিশ্চয়ই সাপ পুষতেন!’
২.
দুই বোন এলেন মধ্যরাতে। পথশ্রমক্লান্ত। অল্পবয়স্ক বাঁদীরা কখন ঘুমিয়ে পড়েছে! বয়স্করা সারারাত্রির জন্য মুখবন্ধ দেগচিতে খাসির নল্লি চাপিয়ে কাঠকয়লার আগুনে ঠিক আঁচ রাখছিল; কমবখত বাঁদী হামেদার ওপর একবার দায়িত্ব পড়েছিল এমনি এক রাতে, আশেক ছিল তার, মাদার বখশ নাম, তা সেই হামেদা মাদার বখশের সঙ্গে পালিয়ে গেছিল সে-রাতে, কাঠের আগুন ছড়িয়ে গেছিল মহলে। পরদিন হবিবুল্লা কালাইগরকে ডাকতে হয়েছিল আগুনে ফুটো হয়ে যাওয়া তামার হান্ডি-দেগচি ঝালাই করার জন্য। সেই থেকে কয়েকজন মিলে রাত জাগে তারা। বুড়ি নোকরানিরা সন্ধ্যারাতে একঘুম দিয়ে উঠেছে দুই পহরের প্রলাপ করবে বলে। পড়িমরি করে এসে ভিড়ল সকলে। কাছে যাওয়া বারণ। আতর-গোলাপ-পানের বিড়ি দিয়ে অভ্যর্থনা বারণ। দূর থেকে দেখল তারা, এলাহি বখশ আর খুদা বখশ দুই প্রকাণ্ডদেহী রক্ষী আড়াল করে দাঁড়াল, ঝালর দেওয়া পালকির আড়াল থেকে মিহি ঘোমটা পরা দুজন মূর্তি যেন হাভেলিতে মিলিয়ে গেলেন, রক্ষীদের মশালের আলোয় তাঁদের ঘোমটার সলমা-চুমকি চিকচিক করে উঠল; যেন ছোট-ছোট এক ঝাঁক চাঁদকুড়া মাছ… ঝিকিয়ে উঠে অন্ধকার নদীর জলে মিলিয়ে গেল। বাঁদীদের জমায়েতে আলোড়ন পড়ে গেল— ওই যায় মরহুম নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার খালা আর মা! অন্ধকারেও বোঝা যায় একজন দোর্দণ্ডপ্রতাপ, আরেকজন ম্রিয়মান— যেন বড় নদী থেকে বের হয়ে এসেছে শাখানদীর রোগা স্রোত। রক্ষীরা বাঁদীদের উদ্দেশে খেঁকিয়ে উঠল— ‘হঠো, হঠো, হঠ যাও!’ ওঁদের দলের ভেতর সবচেয়ে বৃদ্ধা যিনি… নিশ্চয়ই দুই বোনের জয়ীফ আম্মা শরফুন্নিসা হবেন, তিনি নামলেন; ঘুমন্ত মেয়ে কোলে নামলেন কমবয়স্ক এক বেগম— তিনি নিশ্চয়ই দুলহিন বেগম, মরহুম নবাবের বেওয়া লুৎফুন্নিসা বেগম! পালকির পরে পালকি এল, ডুলিতে করে এল কিছু বাঁদীও, বুড়িরা গুনতে ভুল করলেও সকালে কমবয়স্কাদের কাছে হলফ করে বলল— ‘তা একশো তো হবেই, বেশিও হতে পারে!’
মুঘল আমলের এই নওগেরা হাভেলির তিনদিক পানিতে ঘেরা, লোকে তাই ডাকে কসর-ই-জাজিরা। রক্ষীদের মধ্যে জোর গুজব উঠছিল, ‘কসর-ই-জাজিরা’য় মুর্শিদাবাদের মৃত নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার পরিবার এসে উঠবেন এখানে। গত কুড়ি বছর ধরে যারা এখানে আসে— তারা সবাই পতিত নবাব কি নায়েবদের বেওয়া-বেগম আর আওলাদ। সরফরাজ খাঁয়ের মা-স্ত্রী-কন্যা, হোসেন কুলি খাঁয়ের পরিবার। কেউ রক্ষা পায়নি, পায় না। এসেছে যখন পটাপট মরবে। তুলোর শরীর ওঁদের, রোগে-শোকে মরবে।
ভোর হয়ে আসছে জিঞ্জিরায়। সারারাত্রি পাতা-ঝরা মর্সিয়া চলেছে শেষ গাছে-গাছে। কাকলি শোনা যাচ্ছে। নদীর ওপারে ঘাটে জেগে উঠছে মানুষ। এপারে রাতের আগুন নিভে কাঠকুটো কয়লা হয়ে গেছে। জাজিরা প্রাসাদের দেউড়িতে প্রহরী বদল হল। দিনের রক্ষীরা একটু পরেই জোয়ারের আটার সঙ্গে মাসকলাইয়ের বেসন মিলিয়ে দোমিলি রোটি বানাবে। তাদের সর্দার মর্দান আলি বেগের চোখে বর্শার ধাতব ফলার মতো বিঁধছে ঘুম। হেমন্তের সকালে কুয়াশা আর আলোভরা আকাশ যেন নীলাভ মসলিনে মোড়া। সেই আকাশের দিকে তাকিয়ে একটা দার্শনিক কথা মনে এল মর্দান বেগের। ভাগ্যের চাকা বলো কি নেজামতের খেল, এভাবেই পুরোটা ঘুরে আসে। নবাব আলিবর্দি খাঁ একদা সরফরাজ খাঁ-র সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন; আলিবর্দির নাতি সিরাজের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে এবার নবাব হলেন ভাঙখোর মীরজাফর। নামে নবাব মীরজাফর, আসলে আসছে কোম্পানি, আগুনখোর ইংরেজের কোম্পানি, যে-ইংরেজের সামনে শতগুণ বেশি সৈন্য নিয়ে দাঁড়ালেও নবাবদের হারতে হয়! কোম্পানির সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে কত ফকির আমির হল— তবে হ্যাঁ, গিরিয়ার যুদ্ধের নাফরমানির জবাব যেমন পলাশীর যুদ্ধের নাফরমানি, তেমনি করে নবাব মীরজাফরকেও নির্ঘাত এই ভাগ্যচক্রের খেল দেখতে হবে!
৩.
এক ক্রোশ পর পর দিঘি, মসজিদ, বাদশাহী সড়ক, সে ছিল মুর্শিদাবাদে। কোথায় রইল শাহীমহলে সেই নওরোজের উৎসব আর মীনাবাজার, সেই উত্তাল বসন্তদিনের ফাগুয়া খেলা, সেই বিলাইতি পাম আর ঝাউবাগান! এই জিঞ্জিরা একেবারে ঝাঁটিজঙ্গল। গ্রীষ্মের মুর্শিদাবাদ গনগনে গরম— লু-হাওয়ায় বিষিয়ে যায় শরীর, গরমকালে শরীর স্নিগ্ধ রাখতে শুক্তো খেতেন ওঁরা। ইসলাম খাঁর পত্তন করা এ ঢাকা শহর ছায়াঘেরা, দেড়শো বছরও বয়স নয়। ওখানে ভাগীরথী, এখানে বুড়িগঙ্গা। কোনও-কোনও নদী কাঁদে, যেমন ভাগীরথী। আর কোনও নদী রাগে গর্জায়— যেমন বুড়িগঙ্গা। মওসমের বুড়িগঙ্গা কূলপ্লাবী, তবে বসন্তে হাঁটুজল; লোকে গামলায় করে নাকি পার হয়!
এখানে বুড়িগঙ্গার তীরে চরে বেড়ায় শামুকখোল। হাভেলির তিনদিকের পানি নীলুফর ফুলে আচ্ছন্ন, কাদাজল থেকে গ্রীবা তুলে আছে ঘন সবুজ পদ্মপাতা, শটি ফুল। কুঞ্জে তমালগাছের গাঢ়তা। নিম-সজিনার চিরল-চিরল পাতা তিরতির করে কাঁপে বাতাসে। কাঁঠাল গাছে মুচি আসে, হলদে-কালো কুটুমপাখি এসে বসে কাঁঠালের ডালে। ফাল্গুনে শিমুল গাছটার আঁকাবাঁকা ডাল ভরে গেছিল লাল ফুলে, নসরুল্লার লড়াইয়ের তাগড়া ভেড়াটা ঘুরে-ঘুরে সেই লাল-লাল ফুলগুলো খেত। এত নৈঃশব্দে মানুষের মন উৎকর্ণ হয়ে যেভাবে চিত্তবিলাপ শোনে, আমেনা বেগমের মনও সেরকম। মাঝে মাঝে গভীর দুঃখে আত্রাফ কুলের মেয়েদের মতো ডুকরে ওঠেন তিনি, আল্লার নাম ধরে। খোদা তাঁকে পুত্রবতী হবার সুখ দিয়েছিলেন, কিন্তু কোল খালি করে দিলেন! বড় বোন মেহেরুন্নিসার কোল খালি, প্রাণে ধরে ইকরাম-উদ-দৌলাকে বোনের কোলে দিয়ে দিলেন আমেনা, অথচ সে আমেনার আমানত রাখতে পারল না, ইকরাম-উদ-দৌলা মরে গেল গুটিবসন্তে। যৌবনবয়সে মরল সিরাজ-উদ-দৌলা, আমেনার আরেক পুত্র, বাংলার নবাব; আমেনার কিশোরপুত্র মির্জা মেহদি মরল মীরনের হাতে। এদের মারাল সেই বড় বোন! খোদার দুনিয়ায় এর বিচার হবে না? এই হাভেলিতে আরেক মহলে বসে সেই খুনিয়া গোশত-রুটি গিলছে, কর্পূর-কস্তুরী মাখছে! হাহাকার সামলে নেন তারপর।
মুর্শিদাবাদের মসনদ নিয়ে মেহেরুন্নিসার মতো মাথা না ঘামালেও আমেনা বেগম স্বভাবে অনমনীয় আর দৃঢ়চেতা। কত মানুষের ভরসার আশ্রয়স্থল ছিলেন, কত নিরন্নের মুখে অন্ন তুলে দিয়েছেন, কত মানুষের পার্থিব কামনার পূর্তি ঘটেছে তাঁর ক্ষমতাবতী হাতে। নবাব আলিবর্দির আদরিণী, দিলদরিয়া মানুষটি। বিষন্ন চোখগুলোয় শুধু জীবনের দীপ্তি হ্রাস পেয়েছে। গুলবাগিচা বজ্রপাতের পরে যেমন দেখতে হয়, তেমন— চামেলি ফুল আছে, প্রসন্ন সৌরভ আছে, কিন্তু ডালপালা ভেঙে গেছে; গভীর ছায়া পড়েছে সেই বাগিচায়। বাপের সঙ্গে কতদিন রাজমহলে বাঘ শিকারের সঙ্গিনী হয়েছেন, আর আজ আফিঙের ঝোঁকে সন্ধ্যা থেকেই নুয়ে পড়েন।
সারাদিনের হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পর সন্ধ্যার অবকাশে বাঁদীমহলে আসর জমে যায়। আক্তারি ওড়নার প্রান্ত আঙুলে জড়াতে-জড়াতে গল্পের সুতো খোলে, বুড়ি গল্প বলায় পটু— পিপ্পলের দানার মতো দেখতে লম্বা কালো একটা পোকা এসে সেই সালে মুর্শিদাবাদ ভরে গেছিল, যা কিছুতে লাফিয়ে পড়ে তারই সোয়াদ-খুশবাই সব নষ্ট হয়ে যায়… বিকেলবেলার আসমান হবে দুধলি ফুলের মতো রং…অথচ সেবার বিকেল না হতেই আসমানের গায়ে ‘পাত্থর কে ফুল’-এর লাল রং!
‘সেজন্যই কি গুজব উঠেছিল যে দারুণ দুঃসময় আসছে?’
‘হাঁ রে বহিন। নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা যে মরবেন, সেটা লোকমুখে ছড়িয়ে গেছিল!’
হাতির পিঠে চড়িয়ে নবাব সিরাজের লাশ মুর্শিদাবাদের রাস্তায় ঘোরানো হল…বহুত দফা শুনেও সেই গল্পে ওদের চোখে পানি জমে। শোকে-দুঃখে নাকি রুহানি তাকত বেড়ে যায়! জনম-দুখিয়ারি ছোটি বেগমের পোষা জ্বিন আছে— বলে বাঁদীরা সবাই। বেগমদের ছাদে ওঠা বারণ, তবু ছাদের সিঁড়ির মুখে ছোটি বেগম মাঝে মাঝে বসে থাকেন। আলসের যেখানটা ফাটিয়ে কৃষ্ণবটের চারা উঠছে— সেখানে প্রায় সন্ধ্যাতেই পরি এসে বসে; সলিমা দেখেছে, ছোটি বেগম তার সঙ্গে কী জবানে যেন আলাপ করেন!
৪.
হাম্মামখানা থেকে ফিরে খাস নোকরানি সলিমা এসে বাকিদের কাছে গল্প করে— মলমলের শেমিজের তলায় আমেনা বেগমের বুক-পিঠ সমান হয়ে গেছে, মৃত্যুরোগের চিহ্ন! মোগলরা পরত ওই ‘মলমল-ই-খাস’, সূক্ষ্মতম আব্রু, ছোটি বেগমের গায়ে সেই ভারও সয় না যেন, বিষাদের মুরতি!… বাঁদীরা বেশিক্ষণ দুঃখ করতে পারে না, গুলবদন বলে বসে— ‘আহা, তবু কী রূপ। কী নসীব করে আসে নবাবজাদীরা। প্রত্যেক বেলায় তিন রকমের পুলাও, তিন রকমের রোটি, তিন রকম কাবাব…আমি নবাবের বেটি হলে হররোজ চকবাজারের কালেজি কা সালন খেতাম, আর দুধের রুটি!’
‘নামুরাদ! তোর শ্বশুরাল হতো চুহাবাজারে।’
‘তোর হত বান্দরটুলিতে।’ ক্ষুব্ধ গুলবদন বলে বসে।
হি-হি করে হেসে ফেলে চমন কী ভেবে, সে বলে, ‘আমেনা বেগমের বাপ ছিলেন বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার নবাব… ওই অনেক পরগনা, অনেক জমিন… বুঝলে কিনা! তাঁর সময়ে একবার খাস তাঁতি এমন পাতলা মসলিন ঘাসে বিছিয়ে রেখেছিল— গাইবলদে এসে ঘাস ভেবে খেয়ে গেল; তাঁতির খুব সাজা হয়েছিল! শহর থেকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল তাকে।’
‘তাঁতির শাপ লাগলো কি না কে জানে!’ বলে তোবড়ানো মুখের আক্তারি, আর বলে— ‘এসেই একদিন তীক্ষ্ণ চিখ দিয়ে উঠেছিলেন ছোটি (আমেনা) বেগম, তোরা তো দেখিসনি সেদিন। বিকারের ঘোরে লোকে অমন আওয়াজ করে— ‘আমগাছগুলো সব কাটিয়ে দাও!’’
সে কী কথা! মহলের বাঁদীরা চমকে ওঠে! নওগেরা হাভেলির এক পাশটায় আমবাগিচা, গরমকালে খুশবুতে ম-ম করে আঙিনা, ডাগর ডালগুলোয় ঝুলনা বেঁধে মহলের মেয়েরা দোলে, ছায়ায় বসে কাবুলি পাকায়— সেদিন পাকশালের উনুন জ্বলে না এমনই আমোদ হয় এই আমবাগিচায়…
‘লোকে হাভেলির চৌহদ্দির ঝিগা গাছই কাটে না, তা ফলের গাছে কেউ হাত দেয়!’
বুড়ি আক্তারি নিজেই বেগমের হয়ে রোনাজারি করে ওঠে— ‘ওরে তোরা মায়ের দরদ বুঝবি না রে! ছোটি বেগমকে লোকে হাতে ধরে এনে দিয়েছিল বস্তাবাঁধা আম, খাও-খাও আমেনা বেগম, এ খোশবাগের আম। খুলতেই গড়িয়ে বের হয়ে এসেছিল তার ছেলে নবাব সিরাজের মুন্ডু।’
শিউরে ওঠে বাঁদীরা। কে মেরেছে আমেনা বেগমের অমন উচালম্বা জওয়ান ছেলেটিকে! না, নবাব সিরাজেরই দুধমায়ের সন্তান মোহম্মদী বেগ। বাঁদীরা সবাই একাট্টা হয়ে বলে, ‘এইই হয়। কোলের ছেলে পেট পুরে দুধ পায় না, দাইয়ের দুধ নবাবের ছেলেপুলেদের পেট ভরায়, তা দাইয়ের শেষ দুধটুকু পায় নিজের ছেলে— ওই দুধে মায়ের দুখ আর পুতের ক্ষোভ মিশে বিষিয়ে যায় দাইয়ের ছেলেরা। সেজন্যই নবাবকে অত নিষ্ঠুরভাবে মারতে এতটুকু তকলিফ হয়নি মোহম্মদী বেগের।’
তবে আমগাছগুলো নিষ্কৃতি পেল কী করে! পীরসাহেবের কথায়, বুরহান শাহ শিরওয়ানী, খুব মানে তাঁকে লোকে। খ্যাপা ষাঁড় থেমে যায় বুরহান শাহকে দেখলে, আতিশখানার আগুনে নহর বয়ে যায়। আমেনা বেগম পীরসাহেবের সুপারিশ মেনে নিয়েছিলেন।
(চলবে)
ছবি এঁকেছেন শুভময় মিত্র