টুকরো লেখা
১.
যখনই বিষাদ বুনবে, মনে রেখো আমাদের কথা।
যেখানে গেছিলে ছেড়ে, সেখানেই হয়েছি পাথর।
শব্দ আর কিছু নয়, ব্যর্থতার ধ্বনিসফলতা…
এখন পসরাহীন মনে হয় বাণিজ্যশহর।
২.
তোমার দূরত্ব থেকে নবীনের গানগুলি ফেরে।
কিছু সে ট্রামের রাস্তা, কিছু পার করে নদীপথ
অন্তরা হারায় তার, ভাঙা সুর কুড়িয়ে আখেরে
লাভ বেশি নেই তার। গান চিরকালই অকপট।
৩.
ছলনা ব্যাধের সঙ্গী। যেরকম রুমাল, তোমার।
ফেলে কবে গেছ আর তারই সুগন্ধের জেরে আমি
এ-শহরে বাসা নিই। আসলে শিকার হই তার…
যে-নিজরহস্য নিয়ে আজও অরণ্যের অনুগামী।
৪.
মনের উপর দিয়ে শব্দ গেলে কাটা পড়ে মন।
অতীতের কিছু শব্দ হঠাৎ ধারালো হয়ে আসে।
তোমার সেলাইদিন, রোদের ফোঁড় কী সুতোপ্রবণ…
অর্ধেক মনের কথা পড়ে আছে জানালার পাশে।
৫.
এখানে মরিচসন্ধে। চোখে লাগে ডুবন্তের লাল।
নেভা রোদ মুঠো করে ছুঁড়ে দিয়ে বালক পালায়…
এখানে বালির নাম ছেলেবেলা। মুঠোর, সকাল।
আমারই কেবল যেন ঘুম ভাঙতে দেরি হয়ে যায়।
৬.
গাছে বোনা স্বপ্নগুলি মালি জানে। তাই এত চুপ।
জল দিতে এসে তাই মুহূর্তের জাতিস্মর সেও।
বৃষ্টির পুরনো জন্ম, গর্ভেরও অতীত নলকূপ
এ-বাগানে এলে তুমি তার কাছে নাম জেনে যেও।
৭.
রান্নাঘরে রোদ রাখো। কাচের বয়ামে অভিমান।
পালকের যত শ্যাম বাতাসে মিলিয়ে যেতে দাও।
কত দিয়ে কেনা হল কে জানে সে বাজারের গান,
নিজেকে অতিথি করো। চোখ বুজে, নিজেকে শোনাও…
৮.
অবিরাম ভালবাসা ভাল নয়। মাঝে তাই সেতু।
নীচে বয়ে চলে জল, কলহ, হতাশা, অবসাদ…
দূরে ট্রেন চলাচল। রাতে যাত্রী বেশি না যেহেতু,
তোমাদের চোখ লেগে ভেঙে যায় পুরাতন চাঁদ।
ছবি ঋণ: সোমনাথ হোর
ছবি সৌজন্যে: গ্যালারি ৮৮