ডারবানের কিংসমিডে শচীন তেন্ডুলকর তখন ১১ রানে ব্যাট করছেন, এমন সময়ে চট করে একটা সিঙ্গল নিতে চেষ্টা করলেন। ক্রিজের দিকে ঝাঁপিয়ে পড়লেন শচীন, ঠিক বোঝা গেল না পৌঁছতে পেরেছেন কি না। মাঠে আম্পায়ার সিরিল মিচলি দু’হাতের তর্জনী দিয়ে বাতাসে একটি চতুর্ভুজ আঁকলেন, থার্ড আম্পায়ার রিপ্লে দেখে টের পেলেন, শচীন ক্রিজে পৌঁছতে পারেননি। স্লো-মোশন রিপ্লের সাহায্যে ইতিহাসে প্রথমবার থার্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তটি নেওয়া হল। বছরটা ১৯৯২, পি.ভি. নরসিংহ রাও তখন প্রধানমন্ত্রী, রবি শাস্ত্রী তখন রোগাটে মতো একজন অল-রাউন্ডার, শচীনের বয়স তখন মাত্র ১৯, আর তখন রান আউট থেকে শুরু করে ড্রিংকস বিরতির সময় হল কি না, সমস্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেন আম্পায়াররাই। হ্যাঁ, এরকম একটা সময়ও যে ছিল, তা কল্পনা করা সত্যিই সহজ নয়। ৩০ বছর কেটে গেছে, এখন আম্পায়ারদের বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীদের তালিকাভুক্ত করাই চলে। অথবা, এই শারদীয়ার মরশুমের কথা মাথায় রেখে বলা চলে, তাঁদেরও বিসর্জনের সময় ঘনিয়ে এল।
কিংসমিড রান আউটের প্রায় ২০ বছর পরে ডি.আর.এস. সিস্টেম (ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম বা সিদ্ধান্তের পুনর্মূল্যায়নের ব্যবস্থা) প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রযুক্তির সাহায্যে ভুলত্রুটি যথাসম্ভব কমানোর সিদ্ধান্তের যে বিচক্ষণতা, তা মাঝের বছরগুলোয় ক্রমশই আরও স্পষ্ট হয়ে উঠল। ২০১০-এর গোড়ার দিকে কয়েক বছর প্রযুক্তির ব্যাপারে একটা অস্বস্তি তৈরি হয়েছিল বটে, কারণ তখন দ্বিপাক্ষিক খেলার সিরিজে দলগুলোর অধিকার ছিল ইচ্ছে হলে ডি.আর.এস. সিস্টেম থেকে নিজেদের অপসারিত করে নেবার। এর মূলে ছিল ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক এম.এস. ধোনির বেশ অযৌক্তিক একটা সন্দেহপ্রবণতা; তাঁর মত ছিল, এল.বি.ডব্লিউ. সিদ্ধান্তগুলোর মূল্যায়নে যে বল-ট্র্যাকিং সিস্টেম রয়েছে, তা আদতে যুক্তি বা জ্যামিতির নিয়ম মোটেও মানে না। বিরাট কোহলি যখন অধিনায়কত্বের ভার নিলেন, সেই সময় থেকে ডি.আর.এস. সিস্টেম সমস্ত দলের ক্ষেত্রেই বাধ্যতামূলক বলে ধার্য হল।
প্রযুক্তি যখন আস্তে আস্তে খেলায় ঢুকছে, সেই সময়ে যেসব আম্পায়াররা নিজেদের পেশাগত জীবনের মধ্যগগনে বিরাজ করছেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই কিন্তু বেশ অস্বস্তি বোধ করেছিলেন। নিজের প্রজন্মের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আম্পায়ার সাইমন টফেল স্মৃতিচারণায় জানাচ্ছেন, ‘প্রযুক্তি আমার নিজের মুনশিয়ানা কিছুটা হলেও কেড়ে নিচ্ছে, এ বিষয়ে আমার একটু হতাশা ছিল। এতদিন প্রশিক্ষণ নিয়ে, নিজের সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতাগুলোয় শান দিয়ে, নিজের পেশায় আস্তে আস্তে অনেক দূর অগ্রসর হয়ে (ঠিক যেমন একজন খেলোয়াড়ও হন) আচমকা দেখলাম, আমার এই নিপুণতার জায়গাগুলো, পারফর্ম্যান্সের জায়গাগুলো খেলো হয়ে যাচ্ছে।’
আম্পায়ারের পেশার অধঃপতনের জন্য প্রাথমিক ভাবে প্রযুক্তিকে দায়ী ধরলেও মজার কথা এটাই যে, সাধারণত ক্রিকেটারদের যে ভদ্র ব্যবহার দেখা যায়, সেই ভদ্রতাই এই পেশার কফিনে পুঁতল শেষ পেরেক। ক্রিকেট অত্যন্ত সৌজন্যমূলক, কমনীয় এবং সভ্য খেলা, অন্য কিছু খেলার মতো নয়— যেমন ফুটবল। হাজার হোক, লুইস সুয়ারেজের যতদিন দাঁত আছে আর জিনেদিন জিদানের যতদিন আছে মাথা, ততদিন মাঠে একজন বিচারককে লাগবেই যিনি তর্ক-ঝগড়ার মীমাংসা করে দেবেন। কনট্যাক্ট স্পোর্ট প্রায়শই হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যেতে পারে, তাই রেফারিকে সেখানে বরাবরই প্রায় একজন স্কুল-মনিটরের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে, যিনি ঠিক করে দেবেন গোলটা গোল ছিল কি না, বা অফসাইডটা সত্যিই হয়েছে কি না। হকি (বিশেষ করে আইস হকি, যেখানে সব সময়েই ঝামেলার সম্ভাবনা রয়েছে) থেকে শুরু করে ফুটবল বা বাস্কেটবল, যে সমস্ত খেলায় অপ্রত্যাশিত ভাবে মাথা গরম হয়ে ওঠার সম্ভাবনা আছে, সেখানে একজন রেফারিকে সব সময়েই নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে ময়দানের উপর।
ক্রিকেটের মাঠে খারাপ ব্যবহার বলতে বড়জোর কীই-বা হতে পারে? হয়তো বিরাট কোহলি বেন স্টোকসের নামের একটি ভিন্ন উচ্চারণ করবেন (এর এতগুলো ভিডিও রয়েছে যে একটি বেছে নেবার উপায় নেই), অথবা কিয়েরান পোলার্ড তাঁর ব্যাট ছুড়ে মারবেন মোটামুটি মিচেল স্টার্কের দিকটাতেই (https://www.youtube.com/watch?v=YwMuLyW6xM0)। যেটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটা হচ্ছে ফুটবল বা হকির রেফারির হাতে থাকে হলুদ কার্ড বা লাল কার্ডের মতো অস্ত্র, যা সহজেই একটা গোটা খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিতে মারে। ক্রিকেটের আম্পায়ার খুব বেশি হলে ম্যাচ রেফারির কাছে একটা রিপোর্ট লিখে নালিশ জানাতে পারেন। ক্রিকেট আম্পায়ারের মতো দশা সম্ভবত আর মাত্র একটা খেলার পরিচালকেরই— টেনিস আম্পায়ার। সে খেলায় দুই প্রতিযোগী যতটা দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব, ততটা দূর থেকে খেলেন। লাইনগুলো পাহারা দেয় সাইক্লপসের মতো প্রযুক্তি। সে খেলায় আম্পায়ারের থাকাও যা, না থাকাও তাই। তবে টেনিস আম্পায়ার কিন্তু তাও খারাপ ব্যবহার দেখলে শাস্তি দিতে পারেন পয়েন্ট কেটে নিয়ে। ক্রিকেটের আম্পায়ারের মূল কর্মটি যদি দেখতে হয়, তবে তা হচ্ছে খেলার নৈতিক সত্তার অভিভাবকের কর্ম। ভারতের ব্যাটিং তারকা গৌতম গম্ভীরের মতে, ‘প্রযুক্তি আমাদের আরও নিখুঁত সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে বটে, তবে খেলার যে স্পিরিট বা অন্তর্নিহিত সত্তা, তার কী হবে? এটা কিন্তু একটা বিরাট, বিপুল ব্যাপ্তির জায়গা, তার মধ্যে অনেক ধোঁয়াশা, অনেক ধূসরতা রয়েছে। তাকে চিনতে হলে, বুঝতে হলে কিন্তু রক্তমাংসের মানুষের চেতনার প্রয়োজন।’
এর উপরেও আর একটা সমস্যা রয়েছে— চলমানতার অভাব। ক্রিকেট আম্পায়ারদের এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ক্যামেরা কিন্তু পিচের দৈর্ঘ্য ধরে বলের গতিপথকে অনুসরণ করতে পারে, টপ এজের সাথে সাথে বাউন্ডারিতে ভেসে যেতে পারে, ফিল্ডার ছক্কা আটকাতে বলটা মাঠের ভেতরে ছুড়ে দিয়ে নিজে বেরিয়ে গেলে, তার সঙ্গে সঙ্গে মাঠ পেরিয়ে আবার ভিতরে ফিরে আসতে পারে। আন্তর্জাতিক ম্যাচে সারি সারি ক্যামেরা যেমন গোটা মাঠে বিরাজ করে, আম্পায়াররা দুজন মিলেও কিন্তু সব জায়গায় উপস্থিত থাকতে পারেন না। তাঁরা উদ্ভিদের মতো একই জায়গায় স্থাণু, ফুটবলের রেফারিদের মতো বলের পাশাপাশি ফরোয়ার্ডদের ছায়ার মতো, মার্কারদের মার্ক করতে করতে তাঁদের দৌড়নোর সুযোগ নেই। হ্যাঁ, ভি.এ.আর. (ভিডিও সহকারী রেফারি) প্রযুক্তির ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে, কিন্তু সেটাও দিনের শেষে নেহাতই একটা সহকারী প্রযুক্তি। ফুটবল রেফারির পা এবং চোখের সাথে পাল্লা দেবে, এমন সামর্থ্য তার নেই।
কারণ তো অনেক, এবং অন্তিম সময়ও আসন্ন, কিন্তু খেলায় আম্পায়ারের অবদান কতটা ছিল? তাঁর ওই ঢোলা কোটের আড়ালে কী এমন সব রহস্য লুকিয়ে ছিল যা তাঁকে করে তুলত খেলার এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ? ক্রিকেটাররা যতই অ্যাপিল করুন, যতই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে চোখ রাঙান, আম্পায়ারদের ক্রমশ অবান্তর হয়ে ওঠার ব্যাপারে সবার আগেই কিন্তু তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
আম্পায়াররা যে ক্রিকেটের খেলায় মানুষী ছোঁয়াটুকু নিয়ে আসেন, মাঠে নেওয়া মুহূর্তের সিদ্ধান্তের খুঁত বা ভুলের জায়গাটুকু তাঁদের জন্যই থাকে, এ কথা স্পষ্ট বোঝা যায়। সমস্ত ক্ষেত্রের মতো, খেলারও নাটকীয়তা অনেকটা নির্ভর করে এই কর্তাব্যক্তিদের সমালোচনা করার উপর, প্রচ্ছন্নভাবে অথচ বোধগম্য ভাবেই তাঁদের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশে। ময়দানে, স্কুলের মাঠে, ক্লাবে ক্রিকেটের যে-যে আঁতুড়ঘরে প্রযুক্তি অধরা থাকবে, সেখানে টিকে যাবেন আম্পায়াররা, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবলুপ্ত হয়ে যাবার পরেও।
মাইকেল হোল্ডিং সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ফাস্ট বোলারদের একজন, যিনি পরবর্তীকালে একজন পূজনীয় ধারাভাষ্যকার হয়ে উঠেছেন। ‘হুইস্পারিং ডেথ’ বলে তাঁর খ্যাতনামা ডাকনামটি কিন্তু একজন আম্পায়ারেরই দেওয়া, যাঁর নাম ডিকি বার্ড। তাঁর বক্তব্য, ‘খেলার ময়দান থেকে খেলার পরিচালক বা অফিশিয়ালরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবেন না, আমি এই আশা রাখি। তবে সত্যি কথা বলতে, ব্যাপারস্যাপার যেদিকে এগোচ্ছে, এমন হলে আমি আশ্চর্য হব না। আমি চাই প্রযুক্তি বরং মানুষের সহযোগিতা করুক, তাকে সরিয়ে তার জায়গাটি আত্মসাৎ না করে।’
আম্পায়ার আর খেলোয়াড়দের মধ্যে একাধিক বন্ধুতার সম্পর্কও গড়ে ওঠে। সাইমন টফেল এবং রাহুল দ্রাবিড় একে অপরের অসম্ভব শ্রদ্ধা এবং স্নেহের পাত্র। বার্ড এখন অশীতিপর বৃদ্ধ, লিডসে থাকেন। হোল্ডিং কিন্তু আজও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক বছর ওঁর সাথে দেখা হত, আমরা যখন লিডসে যেতাম হেডিংলিতে খেলা থাকলে। গত তিন দশক এই প্রতি বছর আলাপচারিতার প্রথাটা আমি বহাল রেখেছি, কেবল এই গত দু’বছর প্রথাটা ভাঙতে হয়েছে কোভিডের কারণে সামাজিক বাবল বজায় রাখার তাগিদে।’ অনেক ক্রিকেটাররা পরে আম্পায়ার হয়ে যান, তাতে এই আবহটা আরও গাঢ় হয়।
ক্রিকেটের অনুরাগীরা খামখেয়ালি আম্পায়ারদের বড় ভালবাসার সাথে গ্রহণ করে নিয়েছেন। যেমন ডেভিড শেফার্ড, যিনি কোনও দল বা ব্যাটসম্যান ১১১ রান করলে লাফিয়ে বেড়াতেন। অথবা নিউজিল্যান্ডের খামখেয়ালি আম্পায়ার বিলি বাউডেন, যিনি বাঁকানো আঙুল তুলে ব্যাটসম্যানদের দেখিয়ে দিতেন প্যাভিলিয়নের রাস্তা। আবার কিছু আম্পায়ারদের উপর রাগ-ঘেন্না করতেও অনুরাগীদের প্রবল আগ্রহ। এর সম্ভবত সবচেয়ে বিখ্যাত উদাহরণ ভারতের ক্রিকেট অনুরাগীদের সাথে স্টিভ বাকনর, ওরফে স্লো ডেথের (ধীরগতি মৃত্যু) সম্পর্ক। ভারতে অনেকে এখনও দিব্যি করে বলতে পারেন, শচীন অন্তত ছ’বার শতরান করতে পারেননি বাকনরের খারাপ সিদ্ধান্তের কারণে। আবার মাঝেমধ্যে আম্পায়াররা জড়িয়ে পড়েছেন বিতর্কেও। মাইক গ্যাটিং-এর সাথে পাকিস্তানের শাকুর রাণার ঝগড়া, অথবা শ্রীলঙ্কার প্রতি, বিশেষ করে মুথাইয়া মুরলীধরণের প্রতি, ড্যারেল হেয়ারের জঘন্য ব্যবহার, ক্রিকেটের মাঠে আম্পায়ারদের কুশ্রীতম ব্যবহারের এসব উদাহরণও রয়েছে। এ ছাড়াও ভারত-পাকিস্তানের খেলায় প্রত্যেকজন আম্পায়ারকেই মারাত্মক রকমের পক্ষপাতী বলে অপবাদ দেওয়া হয়েছে, ১৯৮০-র দশকের মাঝামাঝি ইমরান খান এর সূত্র ধরেই নিরপেক্ষ আম্পায়ার বহাল করার দাবি তোলেন।
আম্পায়াররা যে ক্রিকেটের খেলায় মানুষী ছোঁয়াটুকু নিয়ে আসেন, মাঠে নেওয়া মুহূর্তের সিদ্ধান্তের খুঁত বা ভুলের জায়গাটুকু তাঁদের জন্যই থাকে, এ কথা স্পষ্ট বোঝা যায়। সমস্ত ক্ষেত্রের মতো, খেলারও নাটকীয়তা অনেকটা নির্ভর করে এই কর্তাব্যক্তিদের সমালোচনা করার উপর, প্রচ্ছন্নভাবে অথচ বোধগম্য ভাবেই তাঁদের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশে। ময়দানে, স্কুলের মাঠে, ক্লাবে ক্রিকেটের যে-যে আঁতুড়ঘরে প্রযুক্তি অধরা থাকবে, সেখানে টিকে যাবেন আম্পায়াররা, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবলুপ্ত হয়ে যাবার পরেও।
আম্পায়ারের ব্যাপারে আমার সবচেয়ে প্রিয় স্মৃতি ডাবলিনের ট্রিনিটি কলেজে এক মনোরম খেলার মাঠে কলেজের ছাত্রদের মধ্যে খেলার একটা বিরতিতে। আম্পায়ার ভদ্রলোককে কোনও ভাবেই বৃদ্ধ বলা চলে না, তবে বয়সে তিনি ছিলেন বেশ একটু বড়। দেখেছিলাম, তিনি একজন খেলোয়াড়কে মালিশ-টালিশ করে দিচ্ছেন। পাশেই পড়ে আছে তাঁর ঢোলা টুপি এবং কোট, এবং একটা ছোট্ট ছেলে সেই কোটের পকেট খুঁজে দেখছে, ভিতরে কী আছে। সে এক অন্য যুগের চিত্র, সেখানে আম্পায়ার ভদ্রলোক একেবারে খাপে খাপে মিলে গিয়েছিলেন।