ডাকবাংলা

এক ডাকে গোটা বিশ্ব

 
 
  

"For those who want to rediscover the sweetness of Bengali writing, Daakbangla.com is a homecoming. The range of articles is diverse, spanning European football on the one end and classical music on the other! There is curated content from some of the stalwarts of Bangla literature, but there is also content from other languages as well."

DaakBangla logo designed by Jogen Chowdhury

Website designed by Pinaki De

Icon illustrated by Partha Dasgupta

Footer illustration by Rupak Neogy

Mobile apps: Rebin Infotech

Web development: Pixel Poetics


This Website comprises copyrighted materials. You may not copy, distribute, reuse, publish or use the content, images, audio and video or any part of them in any way whatsoever.

© and ® by Daak Bangla, 2020-2024

 
 

ডাকবাংলায় আপনাকে স্বাগত

 
 
  • বিনিদ্র: পর্ব ২৬


    বিমল মিত্র (August 20, 2021)
     

    পর্ব ২৫

    ১৯৬২ সালটা গুরুর জীবনে একটা স্মরণীয় বছর। এই বছরের জুন মাসেই প্রথম ‘সাহেব বিবি গোলাম’ ছবি মুক্তি পায়। এর আগে গুরু অনেক ছবি করেছে। কোটি-কোটি টাকা উপায় করেছে। কিন্তু ‘সাহেব বিবি গোলাম’ ছবি করেই প্রথম সত্যিকারের মর্যাদা পেলে। এই-ই তার প্রথম এবং শেষ ছবি যা বার্লিনে পাঠানো হল সরকারের তরফ থেকে। সাহিত্যের প্রাইজের ব্যাপারেও যা, সিনেমার প্রাইজের বেলাতেও তাই। আসলে পুরস্কার মানেই তদবির। যার তদবিরের জোর আছে সেই-ই শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক বা শ্রেষ্ঠ অভিনেতা। কিংবা শ্রেষ্ঠ পরিচালক। প্রাইজের ব্যাপারে গুরু চিরকালই ছিল উদাসীন। কি করলে, কাকে ধরলে কি সুবিধে পাওয়া যাবে, সে-সব ব্যাপারে তার বিশেষ একটা আগ্রহ ছিল না। কোনও সভা বা সমিতি বা দলের ওপর অনুরক্তি তার কখনও দেখিনি। ওই একটা জায়গায় আমার সঙ্গে তার খুব মিলতো বলেই আমার সঙ্গে তার অত মিল হয়েছিল।

    যা হোক, সন্ধে হওয়ার সঙ্গে-সঙ্গেই তৈরি হয়ে নিলাম। গীতাও তৈরি হয়ে এল। তাও বাড়ি থেকে বেরোতে বেরোতে প্রায় সন্ধে সাড়ে সাতটা বেজে গেল। পালি হিল থেকে চার্চগেট। ‘ইরোজ’ সিনেমা হাউস। প্রায় ষোলো-সতেরো মাইল রাস্তা। সন্দেহ-আতঙ্ক-কৌতূহল আমাদের দুজনের মনেই। প্রায় কুড়ি লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে ছবি তুলতে। ছবি যদি না চলে তো গুরুর সর্বনাশ হয়ে যাবে। আগে ‘কাগজ কা ফুল’ ছবিতে কয়েক লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। এবারও যদি তাই হয়? তখন আমিও বা মুখ দেখাব কেমন করে?

    ‘ইরোজ’ সিনেমার সামনে পৌঁছিয়ে দেখি রাস্তায় ভিড়ে ভিড়, পুলিশের দল মানুষের ভিড় সরাতে ব্যস্ত। সিনেমা আজকের যুগের মানুষের কাছে বেদ-কোরান-বাইবেল। তা সে আমরা পছন্দ করি আর নাই করি। রেডিও, টেলিভিশন, সিনেমা সমস্তই সাহিত্যকে ভিত্তি করে উন্নীত হলেও, সাহিত্যের সেই অতীত গৌরব নেই, এই সত্যকে অস্বীকার করে এমন ক্ষমতাও কারো নেই। তবু তারই মধ্যে কোনও সিনেমা পরিচালক যখন সাহিত্যিককে তার যোগ্য সম্মান দেয়, তখন আমাদের মনে আনন্দ হয় বইকি।

    সিনেমা হলের বাইরের ভিড় অতিক্রম করে যখন আমি আর গীতা ভেতরের লবিতে ঢুকলাম তখন গুরুকে দেখলাম হাসিমুখে অতিথি অভ্যাগতদের অভ্যর্থনা করছে। আবরার আলভি, গুরুস্বামী, আত্মারাম, মূর্তি (ক্যামেরাম্যান) সামনে দাঁড়িয়ে আছে। সকলেরই মুখ চেনা। বোম্বাইয়ের সিনেমা-জগতের কেউই বাকি নেই আসতে। সকলকে আমি চিনি না। বলতে গেলে গুরু ছাড়া আর কাউকেই আমার চেনবার কথা নয়। গুরুর পাশ দিয়েই আমি আর গীতা গেলাম। আমাদের অভ্যর্থনা করবার জন্য যে সব লোক নিয়োজিত হয়েছিল, তারা আমাদের খাতির করে ভেতরে বসাল।

    গুরু যেন আমাদের চিনতেই পারলে না। সে তখন আপন আনন্দেই কিংবা আপন দুশ্চিন্তাতেই বিভোর হয়ে আছে। চেহারা দেখেই বুঝলাম আগের রাতটা আমার মতোই বিনিদ্র কাটিয়েছে। তারপর দুপুরে একটু ঘুমিয়েছে। তারপর নিজের জীবনের শ্রেষ্ঠ ছবি নিয়ে সকলের সামনে হাত জোড় করে দাঁড়িয়েছে। আজকের এই উৎসব, আজকের এই জনসমাগম, আজকের এই অভ্যাগতদের করুণার ওপরেই যেন তার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।

    কিন্তু গুরু যেন আমাদের চিনতেই পারলে না। সে তখন আপন আনন্দেই কিংবা আপন দুশ্চিন্তাতেই বিভোর হয়ে আছে। চেহারা দেখেই বুঝলাম আগের রাতটা আমার মতোই বিনিদ্র কাটিয়েছে। তারপর দুপুরে একটু ঘুমিয়েছে। তারপর নিজের জীবনের শ্রেষ্ঠ ছবি নিয়ে সকলের সামনে হাত জোড় করে দাঁড়িয়েছে। আজকের এই উৎসব, আজকের এই জনসমাগম, আজকের এই অভ্যাগতদের করুণার ওপরেই যেন তার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।

    আমি কিছু মনে করলাম না, কারণ এত দুশ্চিন্তা আর অনিদ্রা যার মাথায় সে আমাকে চিনতে পারুক আর না পারুক, তাতে আমার কিছু আসে যায় না। গুরুর ছবি ভালো হলেই হল, গুরুর টাকার লোকসান না হলেই হল, গুরুর সুনাম হলেই হল। তাতেই আমি খুশি। তত্ত্বগত ভুল না থাকে সেদিকে বরাবর তার দৃষ্টি ছিল। এক-একটা কথা বলতে বোম্বাই থেকে টেলিফোন করে পনেরো-ষোল টাকা ব্যয় করতে কুণ্ঠাবোধ করেনি। তা ছাড়া এখান থেকে বোম্বাই যাওয়া-আসা-খাওয়ার জন্য হাজার হাজার টাকা খরচ করেছে সে। আমি এত খরচ করার ব্যাপারে একবার সতর্ক করে দিয়েছিলাম। বলেছিলাম— আপনি এত খরচ করেন কেন? বাজে খরচ?

    গুরু বলেছিল— বাজে খরচ বলছেন কেন? ছবি যদি ভালো হয় আমার তা হলে সমস্ত টাকা উঠে আসবে—

    সেই ছবি আজ জনসাধারণের দরবারে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছে। এবার বল কেমন লাগছে তোমাদের? যদি ভালো লাগে তোমাদের তাহলে তোমরা আমার প্রাপ্য সম্মান দিও। তার বেশি আমি কিছু চাই না। আর তা ছাড়া, তোমাদের সম্মান পাবার জন্যে অন্য কোনও ষড়যন্ত্রের মধ্যে আমি লিপ্ত হতে চাই না। সমালোচনা? তার জন্য অনেকে লাখ-লাখ টাকা খরচ করে। সমালোচকদের ঘুষ খাওয়াবার রীতিও প্রচলিত। তাদের পত্রিকার প্রশংসায় কয়েক হাজার লোক অন্তত বিভ্রান্ত হয়ে ছবি দেখতে যাবে। তারপরে গালাগালিই দিক আর ছবিকে মাথায় নিয়ে নাচুক, তা নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই। আমি চাই টিকিট কিনুক সবাই। আমার পকেটে টাকা আসুক অফুরন্ত। কিন্তু গুরু সে-জাতের প্রোডিউসার নয়। ছবি করার পর সাংবাদিকদের ঘুষ দিয়ে প্রশংসা কেনবার প্রবৃত্তি তার কোনোকালেই ছিল না। কিন্তু উদ্বেগ ছিল, অনিদ্রা ছিল। ছবি ভালো লাগবে তো? লোক টিকিট কিনে ছবি দেখবে তো?

    আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। গীতাও চুপ করে পাশে বয়সে ছবি দেখছে।

    এক সময় ইন্টারভ্যাল হল। আলো জ্বলে উঠল চারপাশে। চা-কোকাকোলা খাবার ভিড় হল। বোম্বাই-এ ঝেঁটিয়ে মানুষ এসেছে ‘সাহেব বিবি গোলাম’-এর প্রিমিয়ার দেখতে। হঠাৎ গীতা বললে— বিমলদা, আপনি আপনার পাশের সিটের ওঁর সঙ্গে একটু হেসে কথা বলুন, এঁরা ফোটো তুলতে চান—

    পাশে চেয়ে দেখলাম। অন্ধকারে এতক্ষণ নজরে পড়েনি। একজন সুবেশ-সুরূপা মহিলা। বললাম— ইনি কে?

    গীতা যার নাম করলে তিনি বোম্বাই ফিল্ম-জগতের একজন সুবিখ্যাত সুপারস্টার ফিলিম-অ্যাক্ট্রেস, আমার ছবির নায়িকাও বটে। এতক্ষণ নিঃশব্দে ছবি দেখছিলেন। দেখছিলেন নিজের অভিনয়।

    বললাম— আর ফোটোগ্রাফার কোন কাগজের?

    গীতা বললে— ‘স্ক্রিন’-এর, ওদের কাগজে আপনার ছবি ছাপবে—

    আমি আড়ষ্ট হয়ে পড়লাম। ক্যামেরার সামনে আমি যেন কেমন ম্রিয়মাণ হয়ে যাই অকারণে। একটা উপায় বার করলাম। বললাম— তার চেয়ে এক কাজ করুন, আপনি আমার জায়গায় বসুন, আর আমি আপনার জায়গায় গিয়ে বসছি—

    তাইই ঠিক হল। আমরা জায়গা বদলা-বদলি করে নিলাম। গীতা আমার জায়গায় বসে ‘সাহেব বিবি গোলামে’র নায়িকার সঙ্গে কথা বলতে লাগল। ছবি তুলে নিলে ফোটোগ্রাফার। সেই ছবি পরের সংখ্যায় ছাপা হল ‘স্ক্রিন’-এ। দেখা গেল আমি একপাশে অন্য দিকে চেয়ে আছি।

    তারপর আবার ছবি আরম্ভ হল। আবার চলতে লাগল শো। আমি সেই জায়গাতেই বসে রইলাম। আর উদ্গ্রীব আগ্রহে অপেক্ষা করে রইলাম দর্শকদের মতামতের।

    ছবি ভাঙল। নিঃশব্দে বাইরে এলাম। দেখলাম গুরু আবার সেইরকম ভাবেই সকলকে হাসিমুখে বিদায় দিচ্ছে। এবার আমাকে দেখতে পেলে। জিজ্ঞেস করলে— কখন এলেন?

    আমি কিন্তু তখনো ভাবছি এ কি হল? ছবি ভালো হল বা খারাপ হল? লোকের কেমন লাগল? কেউ তো কিছু বলছে না। সবাই হাসিমুখে গুরুর কাছে বিদায় নিচ্ছে। বলছে, খুব খুশি হয়েছি, ভেরি গুড!

    সে সব তো ফাঁকা কথা। সে সব কথার কোনও মানে নেই। নিমন্ত্রণ করে ডেকে আনা হয়েছে। তারা কি মুখের ওপর নিন্দে করবে? গুরুর আশে-পাশে তার ভাই আত্মা, গুরুর ডিরেক্টর বন্ধু আবরার আলভি, ম্যানেজার আর কোম্পানির ডাইরেক্টর গুরুস্বামী, তারাও সবাই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সকলকে বিদায় জানাচ্ছে। কিন্তু আসলে যে ছবি কেমন হয়েছে, তা কারো মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে না। অথচ আমি কাউকে জিজ্ঞেস করতে পারছি না সে কথা।

    জনসাধারণের প্রীতির ওপর যাদের প্রতিষ্ঠা নির্ভর করে, তাদের এমনি করেই দুরু-দুরু বুক নিয়ে মুখে হাসি ফোটাতে হয়। এক-একটা বই লিখতে কিংবা ছবি তৈরি করতে কত বিনিদ্র রাত আর কত অক্লান্ত দিন কেটে যায়, কিন্তু সমস্ত দুশ্চিন্তা উসুল হয়ে যায় একটি মাত্র দিনের একটি মুহূর্তে যখন লোকে ‘ভালো’ বলে। এক একটা বই লিখতে আমাদেরও পাঁচ-ছবছর লেগেছে। লিখতে-লিখতে পাঁচ-ছবছরের পরমায়ু হয়তো কমে যাচ্ছে, কিন্তু যখন আবার সেই বই পড়ে লোকের ভালো লেগেছে তখন আবার পনেরো বছরের আয়ু বেড়ে গেছে।

    আমার নিজের জন্য ততটা নয়, যতটা গুরুর জন্যে। গুরুর অবশ্য এ অভিজ্ঞতা প্রথম নয়, আগে আরো পাঁচ-ছখানা ছবি করেছে। প্রতিবার এমনি করে প্রিমিয়ারের দিন দুরু-দুরু বুক নিয়ে মুখে হাসি ফুটিয়েছে। তারপর আসল রায় যা দেবার দিয়েছে জনসাধারণ। যে যত বড় মহাপুরুষই হোক, জনসাধারণের বিচারালয়ে তাকে দাঁড়াতেই হয় আসামী হয়ে। কেউ পায় ফুলের মালা, কেউ নিন্দের। জনসাধারণের প্রীতির ওপর যাদের প্রতিষ্ঠা নির্ভর করে, তাদের এমনি করেই দুরু-দুরু বুক নিয়ে মুখে হাসি ফোটাতে হয়। এক-একটা বই লিখতে কিংবা ছবি তৈরি করতে কত বিনিদ্র রাত আর কত অক্লান্ত দিন কেটে যায়, কিন্তু সমস্ত দুশ্চিন্তা উসুল হয়ে যায় একটি মাত্র দিনের একটি মুহূর্তে যখন লোকে ‘ভালো’ বলে। এক একটা বই লিখতে আমাদেরও পাঁচ-ছবছর লেগেছে। লিখতে-লিখতে পাঁচ-ছবছরের পরমায়ু হয়তো কমে যাচ্ছে, কিন্তু যখন আবার সেই বই পড়ে লোকের ভালো লেগেছে তখন আবার পনেরো বছরের আয়ু বেড়ে গেছে।

    সুতরাং গুরুর এই দুর্ভাবনার ব্যথা আমি বুঝতে পেরেছি। এ আজ জানা যাবে না। আজকের রাতটা ওদের সকলেরই বিনিদ্র কাটবে। শুধু ওদের নয়, ওদের ছবিতে যারা লক্ষ-লক্ষ টাকা খাটিয়েছে তাদেরও। কিন্তু গুরুর শুধু টাকা নয়, সঙ্গে আছে সুনাম। সুনাম তৈরি করতে সারাজীবন কেটে যায়, কিন্তু সুনাম যেতে সময় লাগে এক সেকেন্ড।

    গীতার মুখের দিকে চেয়ে দেখলাম। তার মুখেও কোনও কথা নেই। তারও তো দুর্ভাবনা রয়েছে, তার গাওয়া গানও আছে এই ছবিতে।

    আর আমি? আমার অবস্থাটা বিচিত্র। আমি ছবির গল্প লিখে খালাস। এ বই লিখে অর্থ-প্রতিপত্তি-প্রতিষ্ঠা, যা পাবার সবই পেয়েছি। এই ছবিটা তো ফাউ। উপরি-পাওনা। এ পেলেও ভালো, না পেলেও লোকসান নেই। কিন্তু তাহলেও আমাত কিছুটা স্বার্থ তো এর সঙ্গে জড়িত। ছবির টাইটেলে গুরু আমার হিন্দিভাষার বইটার ছবি দিয়ে দিয়েছে। বহুদিন ধরে ‘স্ক্রিনে’র পাতায় বড় বড় করে বিজ্ঞাপন দিয়েছে— ‘বিগেস্ট বেস্ট সেলার অব বেঙ্গল’। হিন্দি ছবিতে সাধারণত গল্প-লেখকের নামটা উহ্য থাকে, কিন্তু গুরু আমার বেলায় তা করেনি। মাসের পর মাস কাগজের পাতায় আমার নামটাও বড় করে ছাপিয়েছে। ছবি মুক্তি পাবার আগে সিনেমার কাগজে-কাগজে আমার ছবি, আমার জীবনী, আমার স্বভাব-চরিত্র সম্বন্ধে অনেক কিছু বেরিয়েছে।

    বিশেষ করে মহারাষ্ট্রীয় ভাষার কাগজে আমাকে নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপও বেরিয়েছে। এত কান্ডের পর ছবি যদি না চলে, তখন আমার দায়িত্বও কম নয়। বিশেষ করে আমি যখন গুরুর শুভাকাঙক্ষী বলে পরিচিত হয়ে গিয়েছি।

    সিনেমা-হাউসের বাইরে তখন অসংখ্য জনসমাগম। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই রাস্তার ছেলে-ছোকরা। তারা ভেতরে ঢুকতে পায়নি, কিন্তু সিনেমা-স্টারদের দেখবার আগ্রহ তাদের এখানে টেনে এনেছে।

    তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠে পড়া গেল। আমি, গুরু আর গীতা। রাত তখন একটা। সমস্ত বোম্বাই শহর ঘুমিয়ে পড়েছে।

    গুরু বললে, চলুন, আগে অন্য একটা জায়গায় যাই, সেখান থেকে বাড়ি যাব।—

    — কোথায়?

    গুরু বললে— কে. আসিফের বাড়ি, এই কাছেই।—

    কোথা দিয়ে কোথা দিয়ে গাড়ি চলল বুঝতে পারলাম না। মাঝরাত্রের বোম্বাই শহর। বড় নির্জন, বড় নিরিবিলি জনপদ। এই শহর একটু আগে পর্যন্তও জীবন্ত ছিল, সবে মাত্র অসাড় হয়েছে। শহর ঘুমিয়ে পড়লেও গুরুর ঘুম নেই। সেই অবস্থাতেই আরো ঘুম তাড়াবার জন্যেই বোধহয় আর এক আড্ডার সন্ধানে চলেছে। সঙ্গে গীতা আর আমি। 

    পুনঃপ্রকাশ
    মূল বানান অপরিবর্তিত

     
      পূর্ববর্তী লেখা পরবর্তী লেখা  
     

     

     




 

 

Rate us on Google Rate us on FaceBook