স্থানীয়মন
কে তুমি, দাও দুঃখ এমন চায়ের কাপে ঢেলে?
কার নিরহং বাতাস এমন পেনসিল-সংগ্রহী?
পাহাড়ি পথ, এক বাঁকে কোন স্থানীয়মন ছেলে
স্কুলফেরতা মেঘের মতোই নীরব। অবরোহী।
এ-দৃশ্যে কেউ কপোতাক্ষ নাম রাখেনি জলের
যেমন নদীর ইচ্ছে, গেছে সারল্যে, আনগ্রামে
কেবল কথার কাপাস, যেন ঠোঁটের ক্ষেতে ফলে…
এবং কী নৈঃশব্দ্য রাতে সেনার মতো নামে
দ্যাখো, কোমল বাংলো থেকে নৈশভোজের আলো
ছড়াচ্ছে বস্তিতে, যেন স্রোত বয়েছে দুধের
যে-মৃত, আজ উদযাপিত সেই পাখিরই পালক,
সাবান নিজের সব ধর্ম রাখে না বুদবুদে।
কে তুমি, দাও হিংসা এমন প্রাতঃরাশের পাশে?
কার অকারণ কান্না চলে লং প্লেয়িং-এর মতো?
এসব কেবল পাহাড় জানে, অথচ সন্ন্যাসে
ছেলেটি তার ছেড়েওছিল স্থানীয়মন ক্ষত…
পরিব্রাজক
ষোলোটি বৈরাগ্য নিলে একটি চাওয়া পাবেন।
পরিব্রাজক মেঘের দোকান বলছে তো এমনই।
হুল্লোড় চলেছে সে কোন শহরতলির ক্লাবে…
এসব থেকে অনেক দূরে চাহিদাবন্ধনী
পারেন যদি খুলে রাখতে খরস্রোতার ধারে,
ইবলিশ যেখানে নিজের খুইয়েছিল ঘোড়া,
তাহলে মন শান্ত হবে। সে-বারে দিনচারেক
পার করে এক বালক শেষে মন্ত্র পেল ওড়ার…
আপনিও তেমনই কিছু পেতেও পারেন এবার।
পথের ধারের ফার্ন যেমন বাতাস পেয়ে ওঠে,
দূরের বৃদ্ধাবাসে পরিচারিকা তার সেবা
বিলিয়ে দেয়। চায়ের চাষ মহতী পর্বতে।
ষোলোটি বৈরাগ্য তবে একটি চাওয়া বিলোক…
পরিব্রাজক দোকানি মেঘ এভাবে লোক ডাকে।
শহরতলির ক্লাবে সেদিন কে যেন বলছিল
এ-অঞ্চলে অনেকদিনই দ্যাখেনি আপনাকে।
ডাইরি
ডাইরির শেষ পাতায় লেখা, ‘আবার দেখা হবে’
তারপর জোর বৃষ্টি। তুমি অসাবধানে ভিজো।
মেট্রোতে কে হারাল বই, পরিত্যক্ত ফ্লব্যের
আততায়ীর পিছু নিতেন যেমন টমি লি জোন্স,
তেমন তুমি ছুটবে, কোথায় কে আছে মেঘ বাকি
শহর নিচু হলেই তাদের কুড়িয়ে নেবে মাথায়
এসব দিনে খুব সহজে নেভে না জোনাকি…
এবং কোনও দূরের বন্ধু ধারের চিঠি পাঠায়।
বাজারে নীল আপেল ওঠে বৃষ্টি ধরার পরে,
সন্দেহ তার মিনার খোলে, সুযোগ নিজের ঝুলি
হারানো মুখ কেউ আঁকে ঠিক গোয়েন্দা দফতরে
ডাইরি নিজের মধ্যে লুকোয় অচেনা অঙ্গুলি।
ছুটছ তুমি। থামবে না। মন নির্দেশিকা শোনায়।
বন্দি নজর এড়িয়ে ফের দেখতে পাব কবে?
দু’টুকরো পথ ভিজছে একা বৃষ্টি-আবর্জনায়,
কে জানে কার ভাগ্যে আছে পরিত্যক্ত ফ্লব্যের…
ছবি এঁকেছেন শুভময় মিত্র